#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৭
,
,
,
,
,
–তাদের বিয়ে হয়ে গেছে মানে কি(চিল্লায়ে মদের গ্লাস আছাড় মেরে)
—স্যার(কাপা কাপা কন্ঠে)
—কি স্যার কি হ্যা আজ কয়দিন হলো তাদের বিয়ের(তাচ্ছিল্যের সুরে)
—এ এ এক সপ্তাহ(গলায় কথা আটকে যাচ্ছিলো)
—বাহ তালিয়া(দুই হাত দিয়ে তালি মেরে) প্রথমে তার বিয়ে অন্য কারো সাথে ঠিক হলো তারপরে তার বিয়ে ওর সাথে না হয়ে অন্য কারো সাথে হয়ে গেলো এখন সে তার সাথে সংসার ও করছে আর আমি কিছু জানিনা। আমার স্বপ্ন বধূ অন্য কারো ওয়াহ ওয়াহ (ভূবন কাপানো হাসি দিয়ে)
—স্যার আমাকে মাফ করে দেন(কাপা কাপা কন্ঠে)
—হুম সরি সসসসস রিইই,,,,(টেনে)তুই মনে হয় ভুলে যাচ্ছিস দ্বিপ আমার ডিক্সেনারিতে সরি বলে কোন শব্দ নাই(চাবুক হাতে নিয়ে)
__________
ব্যান্ডেজ বদলাতে এসেছে আজ নওশিন আর আকাশ।নওশিন কে ভিতরে ঢুকিয়ে আকাশ বাহিরে ওয়েট করছিলো।
নার্সঃআপনি অনেক লাকি ম্যাম(ব্যান্ডেজ করতে করতে)
নওশিনঃকেনো(অবাক চোখে)
নার্সঃএতো কেয়ারিং আর সুইট হাসবেন্ড পেয়েছেন(মুচকি হেসে)
নওশিনঃআপনার এমন কেনো মনে হলো(বিস্ময় নিয়ে)
নার্সঃওমা আমি কেন পুরো হস্পিটাল দেখেছে সেদিন আপনার জন্য আপনার হাসবেন্ড এর পাগলামী।
নওশিনঃ——–
নার্সঃআপনি যেদিন এক্সিডেন্ট হয়েছিলো সেদিন একটা মেয়ে আপনাকে নিয়ে এসেছিলো প্রচন্ড ব্ল্যাডিং হছিলো আপনার কোন মতেই আটকানো যাচ্ছিলোনা ডাক্তার রা সব ভয় পেয়ে গেছিলো।পরে অনেক চেষ্টার পরে আপনার ব্লিডিং বন্ধ করে কিন্তু মাথা থেকে অতিরিক্ত ব্লিডিং হওয়াই স্নায়ু কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলো।
সেদিন আপনাকে দেখতে কেউ না আসলেও পরেরদিন হতদম্ভ হয়ে আপনার হাসবেন্ড এসেছিলো।দেখে একদম পাগল মনে হচ্ছিলো।ডাক্তার নার্স কাউকে বাদ রাখেনি ২ দিন পুরো হস্পিটাল মাথায় তুলে রেখেছিলো
তার শুধু একটাই কথা সেটা ছিলো “যেভাবেই হোক আমার মায়ারানী কে ঠিক করতেই হবে তার যদি কিছু হয় তাহলে পুরো হস্পিটাল আমি আগুল লাগায় দিবো”
সব ডাক্তার রা তো ভয় পেয়ে যায়।প্রথম মনে হয় কোন পেশেন্ট ছিলেন সার জন্য পুরো হস্পিটালের সবাই দোয়া করেছে। এমন কি আপনার জ্ঞান ফিরাতে ডাক্তার রা নিজে সবাই কে মিষ্টি দিয়েছে।২ টা দিন আপনার পাশ থেকে কেউ মিস্টার আকাশ কে সরাতে পারেনি।
নার্স এর মুখে সব শুনে যেনো থ মেরে যায় নওশিন কি বলবে ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা সে।তাই মুখ বন্ধ রাখায় শ্রেয় মনে করে।।
—-
দুইজনে গাড়িতে চুপচাপ বসে আছে কারো মুখে টু শব্দ টাও নাই। হঠাৎ গাড়ি ব্রেক কষায় খানিকটা নড়ে উঠে নওশিন।সে মনে করে বাড়িতে পৌছায় গেছে।সিটবেল্ট খুলে বের হতে নিলেই আকাশ এক টানে নওশিন কে নিজের কোলের উপর নিয়ে আসে।
নওশিনঃএটা কি ধারণের অসভ্যতামি(নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে)
আকাশঃব্যাপার কি সুইটহার্ট। এতো রাগ কেনো ঠিক বুঝলাম না তো(নওশিন এর ঘাড়ে নিজের নাক ঘষে)
নওশিনঃছাড়ুন আমাকে মিস্টার আকাশ(নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
আকাশঃউফফ সুইটহার্ট তুমি যানো যতক্ষন না আমি তোমাকে ছাড়ছি ততোক্ষন তুমি চেয়েও পারবানা আমার থেকে ছাড়া পেতে।(চোখ টিপ দিয়ে)
নওশিনঃআপনার এই সব অসভ্যতামী আপনার গার্লফ্রেন্ড দের পছন্দ হলেও আমার এই সব পছন্দ না মিস্টার সো লিভ মি(চিৎকার করে)
আকাশঃওহ তো এই ব্যাপার এই জন্য মায়ারানীর এতো রাগ। এই জন্য বুঝি গাল দুইটা এমন লাল হয়ে আছে(গাল এ আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে)
নওশিনঃআপনার মনে হয় আমি ওইসব ফালতু মেয়েদের থেকে জেলাস দেন ইউ আর রং(মুখ ঘুড়িয়ে নিয়ে)
আকাশ হো হো করে হেসে দেয় যেনো কোন জোক্স শুনানো হয়েছে তাকে।
আকাশঃআমি তো বলিনি ইউ আর জেলাস ওর হোয়াট সুইটহার্ট (ভ্রু কুচকে ঠোঁটে লেগে আছে দুষ্টু হাসি)
নওশিন মুখ ফুলায়ে বসে থাকে চুপ চাপ।আকাশ হাসে। নওশিনকে নিজের দিকে ঘুরায়ে নিজের দিকে টেনে গাড়ি স্টার্ট করে আরেক হাত দিয়ে নওসিনের মাথাটা নিজের বুকে নেই।চিল্লাচিল্লি করে নওশিম এর ও মাথা ব্যাথায় ব্যাথা করছিলো তাই বেশি কিছু না বলে চুপচাপ চোখ বন্ধ করে নেয়
আকাশঃমাথা ব্যাথা করছে
নওশিনঃহাম
আকাশঃতখন যে মেয়েটা আমাকে হাগ করে ছিলো সেটা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়।তার বিয়ে হয়ে গেছে একটা ছেলেও আছে বিদেশের কালচারে যেহেতু বড় হয়েছে সে জন্য এই সব তার জন্য কিছুই না।এই সব গার্লফ্রেন্ড আমার লাইফে কোন দিন ও ছিলোনা। ছিলো এক,,,,,,,
আকাশ আর কিছু বলতে যাবে কিন্তু নওশিনের কোন সারাশব্দ না পেয়ে নওশিনের দিকে তাকায়ে দেখে নওশিন ঘুম।
আকাশঃসুইটহার্ট সুইটহার্ট। কেনো এতো মায়াই ঘেরা তুমি। তোমাকে শাস্তি দিতে যে বড্ড মায়া হয় বাট আমি কি করবো বলো তুমি নিজের কষ্ট নিযে বেছে নিয়েছো। আই এম সরি(ভয়ংকর হাসি দিয়ে)
———–
আরিয়ানঃকি হয়েছে সকাল থেকে খাস নি রুম থেকে বের হচ্ছিস না কারো সাথে কথা বলছিস না কি হয়েছে(আরুশির সামনে বসে)
আরুশিঃকই কি হবে কই দিন পরে পরিক্ষা তাই পড়ছিলাম আর কি(ভাংগা গলায় চোখ নিচু রেখে)
আরিয়ানঃআচ্ছা তাই তাহলে চোখ তুল
(আরুশির দিকে তিক্ষ্ণ নজর নিক্ষেপ করে)
আরুশিঃতুমি বাসায় আসেছো তার মানে ছোয়ার খবর পেয়েছো
আরিয়ানঃহ্যা ছোয়া ভালো আছে এবার মুখ তুল কথা ঘুরাস না
(দৃঢ় কন্ঠে).
আরুশিঃতুমি যাও তো আমার অনেক পড়া বাকি যাও।
আরিয়ান আর কিছু না বলে নিজেই আরুশির মুখ তুললো উপরে। আরিয়ান অবাক হয়ে দেখছে।ফর্সা গাল দুইটা লাল হয়ে আছে নাক টার ও একই অবস্থা।আরিয়ান আলতো হাতে আরুশির চশমা খুলে পাশে রাখলো
আরিয়ানঃকি হয়েছে কিসের কান্না করেছিস।জামাই মরেছে বুঝি(দুই গাল নিজের দুই হাতে আগলে নিয়ে)
আরুশিঃকি সব বলো কান্না করবো কেন মাথা ব্যাথা করছিকো তাই এই অবস্থা(কথা ঘুরায়ে)
আরিয়ানঃবলবি নাকি নিজের উপায়ে বের করে নিবো কোনটা(শক্ত গলায়)
আরুশিঃকিছু হলে তো বের করবা বলো ত। কিছু হয়নাই
(আরিয়ান এর চুল নেড়ে)
আরিয়ান আর কিছু না বলে রেগে মেগে বের হয়ে যেতে নিলে আরুশি বলে উঠে।
আরুশিঃজানো তোমাকে আর অনিমা কে একসাথে খুব সুন্দর মানায়
আরিয়ানঃমানে (ভ্রু কুচকে)
আরুশিঃহুম আজকে দেখলাম সবাই তোমার আর অনিমা আপুর বিয়ের কথা বলছিলো। সবার মুখে একই কথা একদম মেড ফোর ইচ আদার
(স্মাইল করে)
আরুশির ঠোঁটে হাসি থাকলেও মনের ভিতর তুফান বয়ে যাচ্ছে।
আরিয়ানঃআমার আর অনিমার বিয়ের কারন
আরুশিঃওতো কিছুতো জানিনা শুধু এই টুকু শুনলাম যেহুতু নওশিনের বিয়ে অনুভবের সাথে হলোনা তো কি আরিয়ান এর বিয়ে অনিমার সাথে হবে।এতে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে আমাদের মেয়ে আপনাদের বাড়িতে যেতে পারেনি তো কি আপনাদের মেয়ে আমাদের বাড়তে আসবে আর আরিয়ান ও পছন্দ করে অনিমাকে।(শেষের কথা টা বলতে যেয়ে আরুশির গলা টা ধরে আসছিলো)
আরিয়ান যেয়ে আরুশিকে চেয়ার থেকে তুলে আরুশির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবায় দেয়।আরুশি এতো ক্ষনে নিজেকে যেইটুকু সামলে রেখেছিলো সেটাও এবার বাধ ভাংগলো।চোখ জোড়া দিয়ে গড়াতে লাগলো অশ্রু ধারা।
আরিয়ানঃএতো অভিমান পুষে রেখেছিলি একটা বার জিজ্ঞেস করতি
আরুশিঃকি জিজ্ঞেস করতাম হ্যা কি জিজ্ঞেস করতাম এটাই যে কালকে অনিমা আপনার বাইকে কি করছিলো আপনি তাকে কোলে করে কেন নিয়ে গেছিলেন বলেন এটা জিজ্ঞেস করতাম(কান্না করতে করতে)
আরিয়ানঃকালকে যখন নওশিনের সাথে কথা বলছিলাম তো ফোন কানে ছিলো খেয়াল ও ওদিকেই ছিলো এক হাত দিয়ে ড্রাইভ করছিলাম হুট করে কোথায় থেকে অনিমা বাইকের সামনে চলে আসে কন্ট্রোল করতে পারে হালকা ধাক্কা লেগে যায় আর সে পড়ে যায়।না পেরে তাকে কোলে করে বাইকে উঠায়ে তাকে বাসায় পৌছে দি এই
আরুশিঃব্যাথা পেয়েছিলো রিক্সা করে দিতা
(ফুপাতে ফুপাতে)
আরিয়ান দেখলো কোন মতেই অভিমানীর অভিমান ভাংছে না তখন না পেরে আরিয়ান এক হাত দিয়ে আরুশিকে বুকে টেনে নিয়ে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। কান্না বন্ধ করে চোখ দুইটা আবেশে বুজে নেয়।সারা শরীরে অদ্ভুদ এক কম্পন হচ্ছে তার এ কেমন সুখ,,,,,,,,
চলবে!!!!!