#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৬
,
,
,
,
,
সদর দরজা খুলে ২ দিন পরে নিজের ছেলেকে দেখে শান্তি পান মিসেস নিলিমা।ছেলেকে আবেগে জড়ায় ধরার পূর্বেই ছেলের পিছন থেকে বেরিয়ে আসা নিল গোল জামা ব্যান্ডেজ করা মেয়েকে দেখে কিছুক্ষন থমকায় মিসেস নিলিমা বেগম।দুই কদম পিছিয়ে যায় উনি।আর একধাপ নিতে গেলেই কার্পেটে বেধে পরে যেতে নিলে আকাশ ধরে ফেলে।নিলিমার পুরো শরীর কাপছে উহু পরে যাওয়ার ভয়ে না। এতোবছর পরে মায়াভরা সে মুখটা দেখে।
কাপা কাপা পায়ে এগিয়ে গেলেন তিনি ভীত সে মেয়েটার দিকে।নিলিমা বুঝতে পারে মেয়েটা তাকে ভয় পাচ্ছে কিন্তু কেনো সেটা সে ঠাওর করতে পারেনা।
তিনি বুকে নেন নওশিন কে।এতোবছর পরে যেনো তার বুকটা শান্ত হয়। তার বুক থেকে যেনো বড় একটা পাথর নেমে যায়।তিনি নওশিন কে বুক থেকে তুলে কপালে চুমু খায়।আবেশে চোখ বন্ধ করে নেয়।তার মনে হচ্ছে তার মা তাকে এই চুমু টা দিলো চোখ দুইটা ছোলছোল করে উঠলো তার এইদিকে নিলিমা নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে না পেরেই কেদেই দিলো।নওশিন ভরকে গেলো
নওশিনঃএমা আন্টি আপনি কান্না করছেন কেন প্লিজ কান্না করবেন না। আমার আশা কি আপনার পছন্দ হয়নি কিন্তু আপনি তো আমাকে,,,সে যায় হোক আপনি বললে আমি এখান থেকে চলে যাচ্ছি।(বিচলিত হয়ে)
এই কিছু মহূর্তেই মহিলাটাকে নিজের মায়ের আসনে বসিয়ে দিয়েছিলো নওশিন। সম্পর্ক দৃষ্টিতে তো মা ই হয় সে নওশিনের। তাইতো সহ্য হয়নি মায়ের কান্না তার।
এইদিকে নওশিনের মুখে আন্টি শুনে আকাশ আর মিসেস নিলিমা দুইজনে অবাক।তাহলে কি নওশিন নিলিমাকে চিনতে পারেনি।কই নিলিমার তো নিজের মেয়েকে চিনতে ভুল হয়নি তাহলে নওশিন ভুলে গেলো। জন্ম না দিক ১২ টা বছর নিজের বুকে আগলে রেখেছিলেন তিনি এই বাচ্চা টাকে তাহলে।
নিলিমা আকাশের দিকে তাকায়। আকাশ তাকে চোখের ইশারায় শান্ত হতে বলে। ছেলের ইশারা পেয়ে মিসেস নিলিমা নিজেকে শান্ত করে নিলো
নিলিমাঃএমা তুই,,,, সরি ভুল করে বেরিয়ে গেছে তুমি ভিতরে আসো।
নওশিনঃআপনি আমাকে তুই করেই বলুন আন্টি(মুচকি হেসে)
নিলিমাঃতাহলে তুই ও আমাকে আন্টিনা বলে মামনি আর তুমি করে বল
নওশিন মাথা নেরে হ্যা বলে ভিতরে ঢুকার জন্য এক পা নিতেই বাথায় চিৎকার করে উঠে
নিলিমা ঘাবড়ে যান। আকাশ নিজের কপাল নিজে ঠুকে সে এক মহূর্তের জন্য ভুলেই গেছিলো নওশিনের অবস্থা।
আকাশ পাজাকোলে তুলে নেয় নওশিন কে।আর নিজের রুমে নিয়ে যায়।বেডে শুয়ায় দিয়ে কিছু না বলে বেরিয়ে যায়।উদ্দেশ্য মায়ের কাছে যাওয়া।
নওশিন আকাশের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।আর ডুব দেয় ৩ দিন আগের ঘটনায়।
সেদিন নওশিন হোস্টেলের ভিতরে না যায়ে চোখের পানি মুছে মেন রোড ধরে হাটা ধরে উদ্দেশ্য তার এখান থেকে কোথাও দূরে চলে যাওয়া। মেন রোড হওয়াই গাড়ি চলাচল করছিলো অতিরিক্ত মাত্রায়। নওশিনের কোন খেয়াল ছিলোনা রাস্তার দিকে সে তো নিজের জীবনের ছোক কোষতে ব্যস্ত ছিলো।হঠাৎ এক গাড়ি এসে তাকে ছুড়ে ফেলে রাস্তায়
ভাগ্য ভালো ছিলো সেখান দিয়ে হোস্টেলের এক কর্মচারী এক মেয়ে উনাকে চিনে ফেলে সেদিন এই মেয়েটাই নওশিনকে ড্রেস এনে দিয়েছিলো আর আজকে যে সে আসবে সেটাও ম্যানেজার তাকে জানিয়েছিলো তাকে দেখাশুনার দ্বায়িত্ব ও পড়েছিলো তার ঘাড়েই।
সে নওশিনকে মানুষের মাধ্যমে হসপিটালে এডমিট করায়।আর ম্যানেজার কে ফোন দেয়।।।।।।। সেদিন হয়তো মেয়েটার জন্য বেচে গেছিলো নওশিন।সে জন্য কৃতজ্ঞ থাকবে সে আজীবন কিন্তু কোথাও একটা খোচখোচানী রয়ে যায়। ইশ সেদিন যদি মেয়েটা তাকে না বাচাতো তাকে না হসপিটালে নিয়ে যেতো কতো না ভালো হলো এই অসহ্যকর দুনিয়া থেকে মুক্তি পেতো। কারো মাথায় আর বোঝা হতে হতোনা তাকে।
মনে মনে এইসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমাই পরে টের পায়না নওশিন।
———–
আকাশ নিলিমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে
নিলিমাঃছোয়া মা এখানে কেন আর তার এই অবস্থায় বা কেন। কি লুকাচ্ছিস আমার কাছ থেকে আকাশ
আকাশ প্রথম থেকে সব খুলে বলে হঠাৎ বিয়ে এক্সিডেন্ট সব। সব শুনে মিসেস নিলিমা থমকে যান।
নিলিমাঃভাবি(নওশিন এর আসল মা)সব সময় চাইতো নওশিন যেনো তোর বউ হয়।ছোট থেকে মেয়ের জামাই বলেই ডাকতো তুইও ঘন্টার পর ঘন্টা ভাবির পেটে মাথা রেখে তোর বউ এর সাথে কথা বলতি।কিন্তু তারপরে আহান এর পাগলামী আর তোর গম্ভীর স্বভাব দেখে ভেবে ছিলাম গল্পটার মোর হয়তো অন্য কিছু হবে কিন্তু মাঝখানের এক ঝড় সব গোলমাল করেও হয়তো ঠিক করে দিলো।(জোড়ে নিশ্বাস ত্যাগ করে)
আকশের বুকটা হঠাৎ ভারী হয়ে গেলো। আসলেই তো আজকে যদি আহান থাকতো তাহলে আসলেই গল্পটা ভিন্ন হতো সব ভিন্ন হতো।নওশিন বউ হতো ঠিক কিন্তু তার না তার ছোট ভাইয়ের।।।।
নিলিমাঃঈশান এই সব জানে(ভ্রু কুচকে)
আকাশঃনাহ তার সাথে আমার কোন যোগাযোগ নাই সে কোথায় তাও জানিনা। খুজার চেষ্টা করেছি কিন্তু সে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে।
নওশিনঃকেমন আছিস ভাইয়ু(নরম গলায়)
আরিয়ানঃআমার কথা ছাড় তুই কেমন আছিস সেটা বল
নওশিনঃভালো আছি ভাই।
আরিয়ানঃআকাশ তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করে খুব???(করুন গলায়)
নওশিনঃআকাশ কে(অবাক হয়ে)
আরিয়ানঃআকাশ কি তাহলে তার আসল পরিচয় দেয়নি বোনুকে কিন্তু দিলে বা কি নওশিনের তো ১২ বছর আগের কোন সৃতিই মনে নাই। আকাশ এর কি অজনা সেটা(নিজের মনে মনে প্রশ্ন করে)
নওশিনঃআমার যার সাথে বিয়ে হয়েছে তার কথা বলছো কি(নিচু গলায়)
আরিয়ানঃহুম।কেন তুই তার নাম জানিস না
নওশিনঃনাহ। তার সাথে কথা হয়েছে কিন্তু তার নাম শুনা হয়নি
আরিয়ানঃভিডিও কল দিচ্ছি ধর তোকে দেখবো
নওশিন নিজের ভাইয়ুকে দেখতে পাবে দেখেই আর কোন কথা না ভেবে ভিডিও কল দিয়ে দেয় সে ভুলেই যায় তার এক্সিডেন্ট এর কথা। ভিডিও কল দিতেই আরিয়ান নওশিনের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখে অস্থির হয়ে যায়।
নওশিন সব খুলে বলতেই সে বলে সে কালকে আসছেন্তাকে নিয়ে যেতে কিন্তু নওশিন রাজি হয়না আকাশ আর যায় করুক তার জন্য অশান্তি হয়না। সে চায়না পুনরায় সেখানে যেয়ে সবাইকে জ্বালাতন করতে। সে আরিয়ান কে আসতে বলে তাকে দেখতে তার সাথে কথাও আছে কিন্তু তাক নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেতে না।
কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দেয় নওশিন।আকাশ কে মনে মনে ধন্যবাদ দিলো।ঘুম থেকে উঠে দেখে আকাশ ফোন এগিয়ে দিচ্ছে তার দিকে কিছুক্ষন তব্দা মেরে রইলেও পরে একপ্রকার ফোন টা ছিনিয়ে নেয় নওশিন আকাশের থেকে।
———-
ঘুম থেকে উঠে নিজেকে শক্ত কোন বাধনে আবদ্ধ দেখে ভ্রু কুচকে যায় নওশিনের মাথা তুলতেই কারো কমল ঠোঁটের স্পর্শ নিজের কপালে পেয়ে বেক্কল সেজে যায় সে
মাথা টা সরাতেই তার চোখ আটকে যায় আকশের ধূসর রাঙ্গা চোখের মনিতে।কেন যেনো মনে হয় মুখটা তার চিনা খুব কাছের কারো মুখ। বহুবার এই চোখে ডুবেছে সে। কিন্তু ভেবে পায়না
আকাশঃজানি আমি খুব হ্যান্ডসাম এই ভাবে চোখ দিয়ে ধর্ষন করা কোন মানেই হয়না
নওশিনঃওই ওই চোখ দিয়ে ধর্ষণ মানে কি হ্যা। নিজে যে তাকিয়ে ছিলেন তার বেলায়(লজ্জা ঢেকে গলা টা উচু করে)
আকাশ সাথে সাথে নওশিনের গলায় নিজের মুখ ডুবায় দেয়।ঠোঁট দিয়ে ধীরে ধীরে কামড় দেয় কিস করতে থাকে।নওশিন এর সারা শরীর অবশ হয়ে যায় মহূর্তে। নিজেকে ঠিক রাখতে না পেরে দুই হাত দিয়ে আকাশের চুল খামচে ধরে সে।।
চলবে!!!