আমার তুমি পর্ব-০৫

0
1906

#আমার তুমি
#পর্বঃ৫
#Tanisha Sultana (Writer)

“আমি ঠকে গেছি ভাইয়া। ও আমাকে ঠকিয়েছে।

কেঁদে কেঁদে বলে তুলি।

” কে ঠকিয়েছে বল আমাকে? আমি তাকে খুন করে রেখে দেবো। রেগে বলে তাজ।
“জীমের সাথে কিছু হয়েছে বল আমায়? আমি এখুনি রাইকে তাড়িয়ে দেবে।

” নাহহহহহ।

“তাহলে বল আমায়।

তুলি এবার কান্নার জন্য কথাই বলতে পারছে না। তাজ হাত দিয়ে তুলির চুল ঠিক করে বলে

” ঠিক আছে বলতে হবে না। একটু শান্ত হয়ে তারপর বলিস।

তাজ কিছুখন তুলির সাথে কথা বলে চলে যায়। তুলি দরজা বন্ধ করে দেয়। প্রচুর রাগ হচ্ছে তুলির। নিজের চুল নিজে টেনে ছিড়ে। ফোন ভেঙে ফেলে। তবুও শান্ত হচ্ছে না। হাতের কাছে ব্লাট পায় তা দিয়ে ইচ্ছে মতো হাত কাটে।

বা হাতটা পুরে হ্মতোবিহ্মতো হয়ে গেছে। ফ্লোরে বসে কাঁদছে তুলি।
“কিছু মানুষের বদলে যাওয়া রুপটা খুব ভয়ংকর হয়”

ওভাবেই ঘুমিয়ে পরে তুলি। দরজা ধাক্কানোর শব্দে তুলির ঘুম ভাঙে। হাতটা ওড়না দিয়ে পেচিয়ে দরজা খুলে

“কি রে দরজা বন্ধ করে রেখেছিলি কেনো? (মা)

” এমনি

“এমনি আবার কি

” তোমাকে কেনো বলবো? যাও তো এখান থেকে

চিৎকার করে বলে তুলি। তুলির মা ভয় পেয়ে যায়। কারণ তুলি কখনো এভাবে কথা বলে নি।

“আমি যাচ্ছি তুই ফ্রেশ হয়ে আয়। সবাই তোর জন্য ওয়েট করছে।

তুলির মা চলে যায়। তুলি ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে যায়। তুলির মা তুলিকে খাইয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ জীমকে দেখে তুলি খাবার প্লেট ফেলে দেয়। সবাই চমকে ওঠে

” খাবো না আমি

তুলি উঠে চলে যায়।

বাড়ির সবাই তুলিকে নিয়ে চিন্তিত। সব সময় হাসিখুশি থাকা মেয়েটার হঠাৎ কি হলো? এমন খিটখিটে হয়ে গেছে।

ছাঁদে দাঁড়িয়ে মারিয়ার সাথে হেসেহেসে ফোনে কথা বলছে জীম।

“ভাইয়া

” মারিয়া পরে কথা বলছি

জীমটা ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে বলে

“বল

” তুলির সাথে এমন কেনো করলি?

“আমি তো কখনো তুলিকে বলি নি আমি ও কে ভালোবাসি। জাস্ট লেখাপড়া নিয়ে একটু কেয়ার করেছি। এটা কি আমার খুব বড় ভুল হয়েছে। যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে সরি বলছি আর কি করতে বলিস বল।

” তোকে আমার আর কিছু বলার নেই। তুই তুলির মতো মেয়ের যোগ্য না

“আমি হতেও চায় না। তোদের এই সব আমার আর ভালো লাগছে না। কালকেই চলে যাবো দুরে কোথাও

” হুম সেই ভালো।

তুলি ছাঁদে আসছিলো তাই ওদের সব কথা শুনে ফেলে। দৌড়ে রুমে চলে যায়।

“সত্যি তো জীমতো আমাকে কখনো ভালোবাসি বলে নি। ওর তো কোনো দোষ নেই। সব দোষ আমার। আমিই বোকা। আমি আর কখনো জীমের সামনে যাবো না।

পরেরদিন জীম দেশের বাইরে চলে যায়। তুলি অনেকটা গম্ভীর আর রাগী হয়ে গেছে। কথা খুব কম বলে। সব সময় একা একা থাকো।

একবছর কেটে গেছে। তুলি ছাদে বসে কফি খাচ্ছে। সায়ান তুলির পাশে বসে।

” কি রে

“বল

” নতুন গার্লফ্রেন্ড জুটিয়েছি দেখবি

“নাহহহহ

” কেনো

“এসব থেকে ইন্টারেস্ট উঠে গেছে। করলে রিয়েল লাভ করিস না করলে বাদ দিয়ে দে। কি হয় বলতো মানুষের মন ভেঙে কষ্ট দিয়ে

” কামঅন তুলি। তোর এমন ইমোশনাল কথা বাদ দে। লাইফটা ইনজয় করার জন্য। এখন ইনজয় না করলে কখন করবো

তুলি নিজের হাতের কফির মগটা ফেলে চলে যায়।

সায়ান তুলিকে রাগানোর জন্য কথা গুলো বলেছিলো।

রাত আটটা বাজে। রাস্তার মধ্যে বাইক থামিয়ে বাইকের ওপর বসে আছে তুলি আকাশের দিকে তাকিয়ে। বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে না তুলির। মা বাবা ভাই সবাই শুধু এক কথা বলে কেনো এমন হয়ে গেছে তুলি। এই প্রশ্নের কোনো উওর নেই তুলির কাছে।
কি বলবে মা বাবাকে আমি একটা ছেলেকে ভালোবেসে কষ্ট পেয়েছি। সে আমাকে ভালোবাসে না এই কথা বলবে।
তুলি একটু হেসে বলে

“হায়রে ভালোবাসা। আমাকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে এসেছে। আগে সবাই আমাকে ভালোবাসতো আর এখন সবাই ভয় পায়। ভালোবেসে তাকে আমার তুমি করতে চেয়েছিলাম আর সে হয়ে গেলো অন্যের তুমি। তবে হ্যাঁ জীমকে আমার কাছে আসতেই হবে। হবেই

তুলির ফোন বেজে ওঠে।

” হেলো

“আজ মারিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে

” দারুণ খবর। তা ছেলে কি করে?

“জানি না তো

” জীম বাবুর কি অবস্থা

“এতোখন বাড়ি পৌঁছে গেছে।

” গুড। রাখছি এখন পরে কথা বলবো

“তুই প্লিজ এখন বাড়ি যা

” ঠিক আছে

তুলি গাড়ির হর্ণের শব্দ শুনে। তবুও তুলি ওইদিকে তাকায় না। গাড়ি থেকে একটা লোক নেমে এসে তুলিকে বলে

“রাস্তাটা কি পার্ক না কি? সরে বসুন এখান থেকে।

” কি হলো শুনতে পান না। কালা না কি?

তুলি কিছু না বলে বাইকটা নিয়ে চলে যায়।

আজব মেয়ে তো। এতো কথা বললাম একটা কথাও বললো না। মেবি কথা বলতে পারে না

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে