#আমার তুমি
#পর্বঃ২ # ক্রাশের সামনে অপমান
#Tanisha Sultana (Writer)
“হেই ইউ এখানে কি চাই? কার পারমিশনে এই রুমে ঢুকেছো?
চোখ মুখ শক্ত করে বলে জীম। তুলি জীমের কাছে এগিয়ে গিয়ে দুই হাত আলতো করে জীমের দুই গালে রাখে। জীম তো অবাক
” হচ্ছেটা কি?
চিৎকার করে বলে জীম। তুলি হকচকিয়ে গাল ছেড়ে দেয়
“তার মানে স্বপ্ন না সত্যি। বাবার ফ্রেন্ডের ছেলে আমার ক্রাশ উফ
তুলি ওর পরিবারের সাথে তুলির বাবার ফ্রেন্ডের বাসায় দাওয়াত খেতে এসেছে। বাবা মা গল্প করছে তুলির বোরিং লাগছিলো তাই বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলো।হঠাৎ এই রুমটার দিকে চোখ পরে আার ঢুকে পরে।
জীম গোছল করে গাওয়াল পরে বেরিয়ে তুলিকে দেখতে পায়।
” এই ইডিয়েট
তুলি জীমের মুখ চেপে ধরে।
“প্লিজ চেঁচাবেন না মামনি খুব বকবে
জীম তুলির হাত ধরে বলে
” কথায় কথায় গায়ে হাত দাও কেনো? দুর থেকে কথা বলতে পারো না।
“ঠিক আছে। প্লিজ চেচায়েন না
মানতির সুরে বলে তুলি। জীম এক ঝটকায় তুলির হাত ছাড়িয়ে দেয়
” ইউ নো হোয়াট আমার রুমে ঢোকার সাহস কারো হয় না। তুমি সেই সাহসটা দেখিয়েছো
“কি ঝালেলায় পরলাম রে বাবা রুমে ঢোকা নিয়ে এতো কিছু। আল্লাহ তোমার এই নিরিহ বান্দাকে বাঁচাও।
তুলি মনে মনে বলছে।
” মামনি
“প্লিজ
জীম ভ্রু কুচকে তুলির দিকে তাকায়। তুলি আমতা আমতা করে বলে
” না মানে আগে ড্রেস পরে নিন তারপর সবাইকে ডাকেন। এইভাবে দেখলে কি না কি ভাববে
“সাট আপ
জীমের ধমকে তুলি কেঁপে ওঠে।
” কথায় কথায় খালি ষাঁড়ের মতো হামবা হামবা করে। নেহাত ক্রাশ তা না হলে রোহিঙ্গা কেম্পে পাঠিয়ে দিতাম হুম।
বিরবির করে বলে তুলি
“আউট
” কিহহহহ
“আউটটটটটটটটটট
তুলি এক দৌড়ে বেরিয়ে যায়। দরজার বাইরে গিয়ে বুকে হাত দিয়ে হাঁপাতে থাকে
” থ্যাংক্স গড অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। এই ক্রাশটা এতো তেতো কেনো? আর একটু হলেই প্রাণটা বেরিয়ে যেতো।
“তুমি এখানে কি করছো?
জীমের বোন রাই বলে। তুলি রাইয়ের দিকে তাকায়
” আসলে… ঘুরে ঘুরে…. দেখছিলাম। থেমে থেমে বলে তুলি।
রাই একটু হেসে বলে
“আর এই দিকে এসো না। এটা আমার ব্রো এর রুম। আর ওর রুমে কাউকে ঢুকতে দেয় না। বাই চান্স কেউ ঢুকলে সাংঘাতিক বাজে সিনক্রিয়েট করে।
” তা আর বলতে। যে ধমকটাই না খেলাম। একদম হাফ পেট ভরে গেছে। তুলি মনে মনে বলছে।
“হেই কি ভাবছো? রাই তুলিকে একটু ধাক্কা দিয়ে বলো।
” কিছু না চলো মামনির কাছে যায়।
“হুম চলো।
সবাই এক সাথে ডিনার করতে বসেছে। তুলি তুলির বাবা মা ভাই জীমের মা বাবা রাই আর জীম।
তুলি জীমের সামনাসামনি বসেছে। জীম নিচের দিকে তাকিয়ে খেয়েই যাচ্ছে। ওর আশেপাশে যে আরও মানুষ আছে তাতে ওর কিচ্ছু আসে যায় না। তুলি জীমের দিকে তাকিয়েই আছে আর মাঝে মাঝে একটু একটু খাচ্ছে।
” ইশশশ এই প্রথম ক্রাশকে কাছ থেকে দেখছি। যদি সময়টা এখানেই থেমে যেতো। কি সুন্দর করে খাচ্ছে।
“তুলি তোমার রেজাল্ট কি? জয় খেতে খেতে প্রশ্নটা করে।
তুলির বিষয় খায়। ভাবনা গুলো এক পাশে রেখে একটু পানি খায়।
” কি বলো? জীমের মা বলে।
তুলি পরেছে মহা বিপদে। ক্রাশের সামনে কি করে ফেল করার কথা বলবে। তুলি তো ঘামতে শুরু করেছে। জীম একবার তুলির দিকে তাকায়।
“কি বলতে পারছো না। ফেল করেছি। আমি গুড ফর নাথিং। আমাকে দিয়ে ভালো কিছু হবে না। জীম তুলির দিকে তাকিয়ে বলে।
তুলির তো এবার লজ্জায় মরে যাওয়ার মতো অবস্থা।
” কি বলবো বলুন প্রচুর ফাঁকিবাজ মেয়ে। সারাক্ষণ হাহা করে বেড়ায়। পরতে বসে না কলেজে যায় না। ফেল তো করবেই। তুলির মা বলে।
“এমন করে বলিয়েন না সামনে বছর ঠিক পাশ করবে তাই না মামনি। জীমের বাবা বলে।
তুলি মাথা নারায়।
” ধুর ক্রাশের সামনে অপমান হতে হলো। যদি একটু পড়তাম তাহলে এই দিনটা দেখতে হতো না।
“রাই আমার রুমে কফি পাঠিয়ে দিস
জীম রাইকে কথাটা বলেই হনহন করে চলে যায়। তুলিও উঠে যায়।
রাই কফি বানাচ্ছে তুলি রাইয়ের পাশে বসে আছে। তুলি জীমের কথা ভাবছে।
” তুলি চল। তাজ তুলিকে ডাকে।
“কোথায় যাবো? তুলি বেখেয়ালে বলে
” কোথায় যাবি মানে বাড়ি যাবি। আমরা কি এখানে থাকতে এসেছি না কি? তাজের কথায় তুলি লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
“চলো
তুলি রাইয়ের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে যেতে নেয়। তাজ আগে আগে হাটছে তুলি পেছনে পেছনে
” হেই
জীমের কন্ঠে তুলি দাঁড়িয়ে যায়। পেছনে তাকায়
“ফোনটা রেখে এসেছিলে আমার রুমে। ইডিয়েট কোথাকার। লিসেন নেক্সট টাইম তোমাকে যেনো আমাদের বাড়িতে না দেখি। স্টুপিট
জীম ঝাড়ি মেরে চলে যায়
” সব সময় আমার সাথে এমন বিহের কেনো করে? আমি তো কিছুই করি নি। দুচোখে দেখতে পারে না আমাকে। ধুর
তুলি গাড়িতে বসে। তাজ ডাইভ করছে। তুলি জানালা দিয়ে জীমের রুমের দিকে তাকায়। জীম কারো সাথে ফোনে কথা বলছে
“এই রোহিঙ্গাকে এতো ভালো কেনো লাগে? সারাক্ষণ দেখতে ইচ্ছে হয়। আর উনি আমাকে দেখলেই রেগে যায়।
তুলি মনে মনে ভাবছে আর জীমের রুমের দিকে তাকিয়ে আছে। যত দুর পর্যন্ত দেখা গেছে ততক্ষণই তাকিয়ে ছিলো তুলি।
রুমে বসে হাতে ফোন নিয়ে বসে আছে তুলি। রাইয়ের ফোন থেকে লুকিয়ে জীমের নাম্বার নিয়ে এসেছে। নতুন ছিমটা ফোনে ঢুকিয়ে জীমের নাম্বারে ডায়াল করে। একটুখানি রিং হতেই কল রিসিভ করে
” কে
………
“রং নাম্বার
ফোন কেটে নাম্বার ব্লক করে দেয় জীম
তুলি জোরে জোরে শ্বাস নেয়
“ভাগ্যিস আমাকে গিলে খায় নি। চিনতে পারে নি। চিনতে পারলে খেয়ে ফেলতো৷ আমি আর ওনাকো কল দেবো না।
চলবে