আমার তুমি পর্ব-০১

0
3576

#আমার তুমি
#পর্বঃ১
#Tanisha Sultana (Writer)

আজ এইচএসসি রেজাল্ট দিয়েছে। তুলি একটা না দুইটা না তিন তিনটা সাবজেক্ট এ ফেল করেছে। পুরো দেবেন্দ্র কলেজে মাএ তিনজন ফেল করেছে। সেই তিন জন হলো তুলি তুলির বেস্টু তমা আর জিসান। স্যার ওদের ডেকে অনেক কিছু বলেছে।

বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে তুলি। ভেতরে যাওয়ার সাহস হচ্ছে না। কারণ তুলির মা তুলিকে ইচ্ছে মতো বকবে। তুলির ভাই ভার্সিটিতে গেছে আর বাবা অফিসে এখন কেউ বাঁচানোর মতো নেই। তুলি মনে মনে দোয়া দুরুদ পরতেছে। দরজা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে তুলির মা এদিকে আসছে তাই তুলি পালানোর জন্য ভৌ দৌড় দেয়।

ঠাস করে একটা গাড়ির সাথে বারি খেয়ে পরে যায় তুলি। হাতে সামান্য ব্যাথা পায়

“কোন চোখ ছাড়া রোহিঙ্গারে। দিলো তো কোমরটা ভেঙে। একেতে ফেল করেছি তারপর আবার ভাঙা কোমর এখন আর আমার বিয়েটা হবে না। চিরকুমার থাকতে হবে আমার। শালা হনুমান। তোকে তো আমি টাকলা করে দে

সামনের মানুষটারে দেখে তুলির কথা আটকে যায়। লম্বা ফর্সা চাপ দাঁড়ি ওয়ালা একটা সুদর্শন পুরুষ তুলির সামনে দাঁড়ানো।

” আমি রোহিঙ্গা আমাকে টাকলা করে দেবে তুমি

রেগে দাঁত কিরমির করে বলে।
তুলি দাঁড়িয়ে একটা নিষ্পাপ স্মাইল দিয়ে বলে

“আআআসসসলে আমি

” তোতলা না কি তুমি? কথা বলতে পারো না? গরুর মতো রাস্তা দিয়ে দৌড়ানোটা বন্ধ করো। যতসব ইডিয়েট।

তুলিকে ঝারি মেরে লোকটা গাড়ি নিয়ে চলে যায়।

“তাইবা তাজনিম তুলিকে ঝাড়ি মারলো ওই রোহিঙ্গাটা। একে তো আমি দেখে নেবো। মুখে মধু ঢুকিয়ে দেবো বলে দিলাম।

দেয়াল টপকে বেলকনি দিয়ে রুমে ঢুকে তুলি

” উফ বাবা বাঁচলাম।

“আমি থাকতে তুই কি করে বাঁচবি

তুলি পেছনে তাকিয়ে দেখে তুলির একমাএ কাকার একমাএ সায়ান তুলির মা বাবা ভাই দাদু সবাই দাঁড়িয়ে আছে

” তততোমরা এএএখানে

তুতলিয়ে বলে তুলি

“তোর লজ্জা করে না

রেগে বলে তুলির মা

” মা লজ্জার কি আছে?

“ঠিকি তো আমার কুইন খামোখা লজ্জা পেতে যাবে কেনো?

” থামো তুমি

তুলির মায়ের ধমকে তুলির বাবা চুপ করে যায়। সায়ান তুলির মা কে উৎসাহ দিয়ে বলে

“কাকিমনি তুলি তিনটা সাবজেক্ট এ ফেল করেছে। তুমি এতো ভালো ডাক্তার আর তোমার মেয়ে কি না ফেলটু ভাবা যায়

তুলির মা তো আরও খেপে যায়।

” মোটুর বাচ্চা মোটু চুপ থাক

“দেখো কাকিমনি

” তুলি

চুপ হয়ে যায় তুলি।তুলির মা ইচ্ছে মতো বকে তুলিকে। তুলি রুম থেকে বেরিয়ে চলে যায়। আসলে এখন একটু রাগ না দেখালে তুলির মা আরও বকবে তাই চলে যায়। সায়ান বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে চলে যায়।

ছাঁদে বসে তুলি ফেসবুকের নিউজ ফিল্ডে ঘুরাঘুরি করছে। ইনবক্স শুন্য। তুলির আবার একটা স্পেশাল ক্রাশ আছে যাকে প্রায় তিন বছর যাবৎ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিয়ে রেখেছে কিন্তু ভুল করেও এক্সেপ্ট করে না। তুলি ক্রাশের আইডিতে ঢোকে। প্রোফাইল পিকটা তিন মিনিট আগে চেঞ্জ করছে।

“ও মাই গড আজ আমি আমার ক্রাশের গাড়িতে ধাক্কা খাইছি। ধুর আগে কেনো মনে পরলো না তাহলে বলতে পারতাম ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করতে। আমি সত্যি একটা ইডিয়েট।

তুলি সায়ানের রুমে চলে যায়। সায়ান আজ তুলিকে বকা খাইয়িছে সায়ানকে তার শাস্তি দেবে।

” তুই আমার রুমে কেনো?

“তুই আমারে বকা খাওয়াইলি কেনো?

” ফেল করছিস কেনো?

“ফেল করা একটা আর্ট যেটা সবাই পারে না।

” হুম তাও ঠিক

“হুম

” তুই আমার ৩৮ নাম্বার ব্রেকআপ করাইছিস। ওই গার্লফ্রেন্ডের শোকে আমি সিগারেট খাইছি

“ও রে আমার সোনা রে

” যা তুই এখান থেকে

“ভাই আমারে একটা সিগারেট দে আমি চলে যামু

” তুই সিগারেট দিয়া কি করবি

“খামু

” কোন দুঃখে

“ক্রাশ এক্সেপ্ট করে না

সায়ান হু হা করে হেসে ওঠে

” তোর ক্রাশ তোরে জীবনেও এক্সেপ্ট করবো না

“হারামি অভিশাপ দেস কে

” অভিশাপ না। রাইয়ান রহমান জীমের তো মেয়ের অভাব পরছে যে তোরে এক্সেপ্ট করবো

তুলি সায়ানের চুল টেনে দেয়। তারপর যেতে যেতে বলে

“জীম তো আমারই হইবো। ওরে আমি পটামু তাও আবার ২০২১ সালের মধ্যে

” অপেক্ষায় রইলাম দেখার

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে