#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ৯
#Tanisha Sultana (Writer)
কাজের জন্য সায়ানের বাংলাদেশ আসা দুদিন পিছিয়ে যায়। সায়ান কেমন অস্থির হয়ে আছে
তুলিকে হার্ট করে এখন আমিই কষ্ট পাচ্ছি। বেশি কথা বলুক পাগলামি করুক তবুও ও আশেপাশে থাকলে খুব ভালো লাগে। মনটা ভালো হয়ে যায়।
সায়ান মনে মনে ভাবছে কথা গুলো
সায়ান
মনা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে। সায়ান সোফায় বসে ছিলো। মনা সায়ানের পাশে বসে
কি হয়েছে? মন খারাপ?
মনা সায়ানের দুগালে হাত দিয়ে বলে।
নহহহ
তাহলে?
“এমনিতেই
” এমনিতেই তো চুপচাপ?
“হুম
মনা সায়ানের কাঁধে মাথা রাখে
” আই এম সো হ্যাপি
“কেনো?
” কেনো আবার আপদ বিদেয় হয়েছে। এবার আমি আর তুমি অনেক ঘুরবো শপিং করবো এন্ড রোমান্স করবো
সায়ান মনা ছাড়িয়ে একটু দুরে গিয়ে বসে
“মনা তুমি আমায় সত্যি ভালোবাসো তো
মনা ঘাবড়ে যায়।
” এ হঠাৎ এই কথা বলছে কেনো? সায়ান কি কিছু বুঝতে পেরেছে? সায়ান বুঝে গেলে তো ঝামেলা। ওই তুলি সায়ানের মনে সন্দেহ ঢুকিয়েছে না কি সায়ানই আমার পিছু নিয়েছে। ওহহ গড এবার করবো কি
মনা মনে মনে ভাবছে।
সায়ান মনার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
“এসব কি বলছো সায়ান? আমি য়ে তোমাকে কতোটা ভালোবাসি সেটা নিয়ে তোমার সন্দেহ আছে? তুমি এতো চেঞ্জ হয়ে গেছো? নিজের রক্ত দিয়ে বাঁচিয়েছি তোমায়?
সায়ান মনাকে হালকা জড়িয়ে ধরে
” আই এম সরি মনা। আসলে তোমায় একটা ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলাম একটা ছেলের সাথে তাও আবার হাত ধরে
“আআমার ফ্রেন্ড
” ওহহহ
🌺🌺
রাগে নিজের রুমে পায়চারি করছে তুলি
“আমার গায়ে হাত তুললো। তাইবা তাজনিন তুলির গায়ে। এতো বড় সাহস।এখনো নাকের রক্ত শুকায় নাই। সায়ান মাহবুবরে এবার তুলির রনোচন্ডি রুপটা দেখাবো। শালা হনুমান একটা।
আমারই ভুল হয়েছে জোর করে বিয়ে করে।
সেদিন তুলির বাবা আর সায়ানের বাবা সায়ান তুলিকে কোলে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ছিলো এটা নিয়ে চাপ দেয়। তুলিও নেকা কান্না শুরু করে দেয়। পরে ওদের চাপে বিয়ে করতে রাজি হয় সায়ান।
সায়ানের বাবা মা তুলিকে দেখতে এসেছে৷ শশুড় শাশুড়ীর সামনে গাল ফুলিয়ে বসে আছে তুলি
” তুলি। শাশুড়ী বলে
“তোমার ছেলে আমার গায়ে হাত তুলেছে একদম তোমাদের বাড়িতে আমাকে যেতে বলবা না। ওই মনা খালাম্মার জন্য আমায় মারলো।
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে তুলি।
শশুড় তুলির মাথায় হাত বুলায়
” ওকে উচিৎ শিক্ষা দেবো। তুমি শান্ত হও
তুলি দুরে গিয়ে বসে
“সিমপেথি দেখাতে হবে না। মন থেকে ক্রাশকে ডিলিট করে দিয়েছি। তবে হ্যাঁ সায়ান যদি আমার আমার কাছে এসে মাথা ঠুকে হ্মমা চায় আমি ভেবে দেখবো।
তুলি হনহনিয়ে রুমে চলে যায়।
পরেরদিন সন্ধায় সায়ান বাসায় আসে। দরজায় নক করে মা দরজা খুলে
” কি চায়?
“মা আমি তোমার ছেলে
” তুলিকে না নিয়ে এলে বাসায় ঢুকতে পারবে না
মা মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেয়
“এ কি জ্বালায় পরলাম
সায়ান তুলিদের বাসায় যায়। তুলির মা দরজা খুলে দেয় কিন্তু কথা বলে না। সায়ান তুলির রুমে চলে যায়। তুলি ফ্লোরে মাথা রেখে খাটের ওপর পা রেখে নিক্স দেখছে। সায়ান ঠাস করে বিছানায় সুয়ে পরে। অনেকটা জার্নি করে সায়ান বেশ ক্লান্ত।
তুলি সায়ানের দিকে এক নজর তাকিয়ে আবার টিভিতে মন দেয়
” তুলি এক গ্লাস পানি দেবে
তুলি শুনেও না শোনার ভান করে।
“আন্টি এক গ্লাস পানি দেন তো
জোরে তুলির মাকে বলে। তুলির মা দৌড়ে পানি নিয়ে আসে। সায়ান এক ঢোকে পুরো পানিটা খেয়ে ফেলে।
তুলির মা চলে যায়।
” তুলি বাড়ি চলো
তুলির কথা টা কানে তুলে না
“এই মেয়েটা এতো জেদি আর রাগী কেনো? এতো তেজ আসে কোথা থেকে? এখন যে কি করে নিয়ে যাবো
সায়ান বিরবির করে বলে
” কিছু বলছি তোমায়
তুলি কানে হেডফোন দেয়
“এই তেরা মেয়েকে বলে কিছু হবে না।
সায়ান তুলির হেডফোন খুলে দেয়
” কিছু বলছি আমি
“হু আর ইউ?
তুলির এমন প্রশ্নে সায়ান হা হয়ে যায়। তুলির কপালে হাত দিয়ে দেখে
” আর ইউ ওকে
তুলি সায়ানের হাত ধরে বলে
“ধরলি কেন তুই আমারে? কে তুই? ধরাধরি করতে ভাল্লাগতেছে?
” তুলি
“ওই নাটক করবি না। ছ্যাছড়া কোথাকার
সায়ান হা হয়ে শুনছে
” তুলি আমি সায়ান?
“তো কি আমি নাচবো
” আমি তোমাকে নিতে এসেছি
“নিয়ে পাচার করে দেবেন না কি? মতলব খারাপ
” তুলি আমি তোমাকে আমার বাড়িতে নিয়ে যাবো
“আপনাকেই চিনি না আপনার বাড়ি যাবো কেনো
” আই এম সরি। আর কখনো তোমার গায়ে হাত তুলবো না
সিরিয়াল হয়ে বলে সায়ান।
“কিহহহ তুই আমার গায়ে হাত দিছিলি? তোর কতো বড় সাহস।
” এভাবে কাজ হবে না
সায়ান তুলিকে কোলে তুলে নেয়।
“না মা আমাকে
তুলি সায়ানের গায়ে চর থাপ্পড় দিচ্ছে কিন্তু সায়ান নামাচ্ছে না। তুলিকে কোলে করে বাইরে আসে
” আন্টি ওর লাগেজটা পাঠিয়ে দেবেন
বলেই সায়ান চলে যায়। তুলকে কোলে করেই বাড়িতে ঢুকে আর রুমে নিয়ে যায়। তুলি তো চিল্লিয়েই যাচ্ছে।
ধপাস করে খাটে ফেলে দেয় সায়ান
“ও মা গো আমার কোমরটা ভেঙে গেলো গো আল্লাহ গো মরে গেলাম। কেউ একটু হেলেপ করো এই লোকটা শিশু নির্যাতন করছে
সায়ান দুকানে হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে
” একটু থামো প্লিজ
তুলি থেমে যায়।
“দেখো কি করেছো রাহ্মসী একটা
তুলিকে হাত বুক দেখিয়ে
” তো আপনি আমাকে কিডন্যাপ করলেন কেনো? থাকবো না এখানে?
তুলি বিছানা থেকে নামতে যায়।
সায়ান তুলিকে বিছানার সাথে চেপে ধরে
“এক পা নরলে পা ভেঙে রেখে দেবো বলে দিলাম।
সায়ান ওয়াশরুমে চলে যায়।
” পা ভেঙে দেবে। হনুমান একটা। জন্মের মতো মনার নাম ভুলিয়ে দেবো তোকে। ওয়েট এন্ড সী😎
তুলি ওয়াশরুমের দরজার কাছে তেল ফেলে
“আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলে এবার মজা বুঝো।
আমি বরং একবার ট্রাই করি জামাই কেমনে পরবে
তুলি ট্রাই করতে গিয়ে ধপাস হয়ে পড়ে যায়। কিছু পরার শব্দে সায়ান দরজা খুলে দেখে তুলি পরে গেছে হাতে তেলের বোতল। সায়ানের আর বুঝতে বাকি নেই তুলি ওকে ফেলে দেওয়ার জন্য এমন করে।
সায়ান হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে। তুলি কাঁদছে। কোমরে প্রচুর ব্যাথা পেয়েছে
” এ্যাঁ আমি আর কখনো মা হতে পারবো না
“কেনো?
” তোরে কমু কেন? তুই যা ওই খালাম্মার কাছে
তুলি একা একা উঠার চেষ্টা করছে পারছে না। সায়ান ধরতে যায়
“মেয়ে দেখলেই গায়ে হাত দিতে মন চায় তাই না
সায়ান দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” নাহহ আরও অনেক কিছু করতে মন চায়
“চাইবোই তো তুই তো একটা লুচ্চা
” বড় তোমার থেকে আমি সম্মান দিয়ে কথা বলো
“কচু সম্মান দেবো তোরে আমি। হনুমান একটা
তুলি একা একা উঠে দাঁড়ায়। বেডে গিয়ে বসে
” আসলেই আমি গাঁধা। কি দরকার ছিলো ট্রাই করার। আমি পচা তুলি। জামাই তো পড়লোই না😭
বিরবির করে বলছে আর কাঁদছে
সায়ান ফোন দেখতে দেখতে বলে
“মরা কান্না জুরার কিছু নেই। এখানে কেউ মরে নাই
” হ মরলেই তো খুশি হইতেন😭
চলবে