#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১
#Tanisha Sultana (Writer
রাত বারোটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট। সায়ান রুমে ঢুকে ভয় পেয়ে যায়। কারণ ওয়াশরুম থেকে পানি পরার শব্দ আসছে। সায়ান আবার ভুতের ভয় পায়। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে
“ককককে ওওওখানে?
ওয়াশরুমের দরজা খোলার শব্দে সায়ান আরও ভয় পেয়ে যায়। এই বুঝি ভুতে ঘাড় মটকে দেবে। ভয়ে সায়ান চোখ বন্ধ করে ফেলে।
তুলি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে সায়ানকে দেখে থমকে যায়
” ওয়াও হবু ভাবি বলেছিলো সুন্দর কিন্তু আমি তো দেখছি মারাক্তক সুন্দর।
মেয়েলি কন্ঠ শুনে সায়ান চোখ খুলে। প্লাজু আর টিশার্ট পরা ভেজা চুলে টাওয়াল হাতে একটা রমনীকে দেখে সায়ান চোখ বড়বড় করে।
“হু আর ইউ
” আপনি মারাক্তক সুন্দর। এতো সুন্দর মানুষ হয়। আমি তো প্রথম দেখাই ফিদা হয়ে গেলাম আল্লাহ কি সুন্দর গো। আল্লাহ আপনারে খালি আমার জন্য এতো সুন্দর করে বানিয়েছে।
“আমি জিজ্ঞেস করেছি আপনি কে?
বিরক্তি নিয়ে বলে সায়ান
” গুড কোশ্চেন আমি কে? আমি তাইবা তানজিন তুলি। সবাই তুলি বলে ডাকে। আপনি চাইলপ তাইবা বলে ডাকতে পারেন। আর আমি এগারো ক্লাসে পড়ি
“হোয়াট
” এগারো ক্লাস মানে বুঝেন নাই। আরে ইন্টার ফাস্ট ইয়ার। এটা তো বাচ্চারাও বুঝে যাবে আর আপনি বুঝলেন না। আপনি তো দেখি বলদ
“কিহহহহ বলললে
সায়ান রেগে বলে
” কালা না কি? ক্রাশ কালা হলে সমস্যা নাই। আমি শুধু বলেই যাবো আপনি বকতে পারবেন না। সত্যি একটা কথা বলি আপনি দেখতে মারাক্তক সুন্দর হলেও। একটু বলদ টাইপের। তবে বেপার না আমি ঠিক করে নেবো। যাই হোক আবার পরিচয় পর্বে আসি। বাবার নাম তুহিন চৌধুরী। দাভাইয়ের নাম আদর। মায়ে
“সাট আপ
সায়ান জোরে একটা ধমক দেয়। তুলি ভয় পেয়ে দুপা পিছিয়ে যায়। বুকে থুথু দিয়ে জোরে শ্বাস নিয়ে বলে
” আল্লাহ গো আর একটু হলে পরাণটা বেরিয়ে যেতো। বাচ্চা মেয়েটাকে কেউ এভাবে ধমক দেয়? দেখেন কতো কিউট আমি। এরকম একটা কিউট টুনুমুনু বেবিকে বকতে আপনার খারাপ লাগছে না৷ নেহাত আমি গুড গার্ল না হলে কান্না করে দিতাম
সায়ান চুল টেনে রাগ কন্ট্রোল করে বলে
“তো মামনি তুমি এখানে কি করবো
” নাউজুবিল্লাহ ছিছি হবু বউকে কেউ মামনি বলে
“হবু বউ
” হুম। কাল আপনার বোন আই মিন আমার হবু ভাবি বলেছিলো আপনি খুব ভালো দেখতে তাই আমি আজ দেখতে এসেছিলাম। আমার তো আপনাকে দারুণ লাগেছে তাই ভাবছি শুভ কাজটা তারাতড়ি সেরে ফেলবো। এরকম একটা হট ছেলেকে কেউ হাত ছাড়া করে
তুলির কথা শুনে সায়ানের কাশি উঠে যায়। তুলি মোরা এনে মোরার ওপর দাঁড়িয়ে সায়ানের মাথায় ফু দেই
“সাট সাট সাট
মাথায় চাটি মারে আর বলে। সায়ান একটু দুরে সরে যায়
” এগুলো কি
“কাশি কমাচ্ছি
” বের হবা তুমি
“নাহহহ
” লাস্ট বার বলছি বেরিয়ে যাও আমার রুম থেকে
” কেনো বের হবো? আর আপনি কেমন মানুষ হ্যাঁ আমি আপনার বোনের হবু ননদ সম্পর্কে আপনাদের হবু আত্মীয় আর আপনি এমন রুড বিহের করছেন। ইটস নট ফেয়ার
“আল্লাহ এ কার পাল্লায় পরলাম। কোন পাগল কপালে জুটলো
সায়ান বিরবির করে বলে।
” কি বললেন?
“মা মা
সায়ানের মা দৌড়ে আসে
” কি হয়েছে?
“এই মেয়েটা কে? আর এখানে কি করছে?
” তুলি তুমি এখানে
“হুম আন্টি এই রুম টা ভালো লাগলো তাই এখানে এসেছি। দেখেন না কেমন বিহেব করছে৷ দুবার ধমক দিয়েছে।
” সায়ান ওকে বকেছিস কেনো?
“অতিরিক্ত কথা বলে। পাগল একটা
” আন্টি আমায় পাগল বললো। তোমার ছেলেটা হট হলেও প্রচুর পাঁজি
সায়ান আর সায়ানের মা চোখ বড়বড় করে তাকায়। আন্টি কাশি দেয়
“মা একে আমার চোখের সামনে থেকে সরাও
” আমি যাবো না
তুলি বিছানায় বসে পড়ে।
“তুমি যাবে না তোমার ঘাড় যাবে
সায়ান তুলির হাত ধরে টেনে বের করে দিয়ে ধারাম করে দরজা বন্ধ করে দেয়
” দেখলে আন্টি ইনসাল্ট করলো?
“হুম
” তোমার এই নিরামিষ হট ছেলেকে আমার চায়
“কিহহহহ
” হুম
তুলি হনহনিয়ে চলে যায়।
সকালে তুলির ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়। উঠে কোনোরকম ফ্রেশ হয়ে বাইরে গিয়ে দেখে। জিসান সায়ানের ভাই। নিশি সায়ানের বোন। আদর তুলির ভাই। আর সায়ানের মা ব্রেকফাস্ট করছে।
“সায়ান কোথায়?
তুলি জিজ্ঞেস করে।
” ব্রো তো কখন বেরিয়ে গেছে (জিসান)
“আমি আসছি
তুলিও দৌড় দেয়
” বোন আমরা এখন বাড়ি যাবো
“তুই যা আমি বিকেলে চলে যাবো
তুলি দৌড়ের ওপর বলে চলে যায়।
🌺🌺
” এইয়ে মামনি রাস্তা ঘাটে পুরুষ নির্যাতন করছেন কেনো?
পার্কে সায়ান আর সায়ানের গার্লফ্রেন্ড বসে ছিলো। মনা সায়ানকে কিছ করতে যাচ্ছিলো তখন পেছন থেকে তুলি বলে। মনা সায়ান পেছনে তাকায়
“হু আর ইউ
মনা রেগে বলে
” আমি যেই হই। আপনি কি কাজটা ঠিক করছেন। একটা শিশু নির্যাতন করছেন।বাই এনি চান্স যদি আমি পুলিশে কমপ্লেন করি জানেন আপনার কি অবস্থা হবে?
“তুমি এখানে কি করছো?
সায়ান দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” শিশু আই মিন পুরুষ নির্যাতন রোধ করতে এসেছি। ভাগ্যিস এসেছিলাম না হলে তো আপনার কলঙ্ক লেগে যেতো। এই কলঙ্ক ঢাকতে আপনি সুইসাইড করতেন। কি বস থ্যাংক্স বলেন
সায়ানের কাঁধে হাত রেখে বলে। সায়ান ধাক্কা দিয়ে হাত সরিয়ে দেয়
“ইডিয়েট
” সবাই বলে
“সায়ান তুমি চেনো একে?
মনা জিজ্ঞেস করে
” ও মা চিনবে না কেনো? কাল রাতে কতো কথা হলো। কি গো বলেন
“সাট আপ
সায়ান আবার ধমক দেয়।
” আল্লাহ হেলেপ করো। এই লাটসাহেব তো কথায় কথায় ধমক দেয়। বাই দা ওয়ে এই খালাম্মা টা কে?
“আমি সায়ানের গার্লফ্রেন্ড মনা😎
তুলি তো হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। সায়ানের গায়ের ওপর গিয়ে পরছে। মনা সায়ান দুজনেই বিরক্ত হয়ে তাকাচ্ছে তুলির দিকে
” সিরিয়াসলি এই খালাম্মা আপনার গার্লফ্রেন্ড। আরে একে তো আন্টির থেকে বাজে দেখতে। চয়েস খারাপ আপনার।
মনা রেগে বলে
“সায়ান
” আরে আমি জানি ওনার নাম সায়ান এতো জোরে জোরে বলতে হবে না
“তুমি যাবে এখান থেকে
” কেনো যাবো। আর এই যে আন্টি আপনি এবার কিন্তু বড়সড় একটা বাঁশ খাইবেন
সায়ান মনা দুজনেই একসাথে বলো
“বাঁশ
” ইয়েস বাঁশ। কজ সায়ান এবার সুন্দরী শান্তশিষ্ট ভালো কিউট সুইট তুলিকে পেয়ে গেছে এবার আপনার সাথে ব্রেকআপ করবে
“সাট আপ তুলি
সায়ান কিছুটা জোরে বলে
” আপনার সাট আপ আপনার পকেটে রাখেন। আমাকে কথা বলতে দিন।
সায়ান মনার হাত ধরে বলে
“মনা চলো এখান থেকে এই মেয়েটা একটা পাগল
” আপনি আবার আমায় পাগল বললেন? পাগল হলেও আপনার হবু বউ হুম
“বিয়ে করলে আমি মনাকেই করবো। কজ সি ইজ মাই লাভ
সায়ান মনার দিকে তাকিয়ে বলে
” ও আল্লাহ গো কতো ডক কইরা ইংরেজি কয় আমার ক্রাশ। এই পোলা তো আমারে পাগল করে দেবে
“ইউ
মনা তুলির দিকে এগিয়ে যেতে নেয় সায়ান হাত ধরে আটকে দেয়
” বাদ দাও তো চলো
সায়ান মনার হাত ধরে যেতে নেয়
“বেবি রাতে দেখা হচ্ছে
সায়ান মনা দাঁড়িয়ে যায়।
“রাতে দেখা হচ্ছে মানে (মনা)
” খালাম্মা এটা আমার আর ক্রাশের পারসোনাল মেটার নাক গলান কেন? ক্রাশ লাভ ইউ উম্মমমমমমমমা বাই
তুলি এক দৌড়ে চলে যায়
“আল্লাহ কি ডেঞ্জারাস মেয়ে রে। এর হাত থেকে বাঁচবো কেমনে? এতো আমাকে জ্বালিয়ে পুরিয়ে মারবে।
রাতে তুলি বাবা মাকে বলে সায়ানদের বাড়িতে দিয়ে আসার জন্য কিন্তু ওনারা তুলিকে যেতে বারণ করে দিয়েছে। যদিও বাড়িটা কাছে। পায়ে হেটে হেঁটে যেতে ছয় সাত মিনিট লাগে।
তুলি এবার ভাবছে যাবে কি করে। পরে বুদ্ধি বের করে নিশি আর জিসানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বলে। বাবা মা নিশি কে দেখলে আর আটকাবে না। হবু বউমা বলে কথা।
সায়ান বেলকনিতে বসে মনার সাথে কথা বলছে
” প্রেম জেগেছে আমার মনে বলছি আমি তাই
তোমায় আমি ভালোবাসি তোমায় আমি চায়
সায়ানের রুম থেকে সম্মিলিত কন্ঠে গানের সুর ভেসে আসছে
“মনা পরে কথা বলছি
সায়ান ফোন কেটে দেয়
” এতো রাতে আমার রুমে কে গান গায়
সায়ান এগিয়ে যায়। দেখে জিসান তুলি আর নিশি উচ্চ শুরে গান গাইছে
“আল্লাহ আবার এই মেয়ে