#আবদ্ধ_তোমার_মধ্যে
#নিয়াজ_মুকিত
#অন্তিম_পর্ব
সিসিটিভির ফুটেজ চেক করার জন্য বাহিরে বের হয়ে যায় নিদ্র।একরাশ চিন্তা নিয়ে রুমেই বসে থাকি আমি।এক অজানা ভয় গ্রাস করে রেখেছে আমাকে।ভয়টা এই যে অনিক যদি টাকা খাইয়ে সিসিটিভি ফুটেজ ডিলিট করায় তাহলে সারাজীবন নিদ্রের পরিবারের চোখে কলঙ্কিনি হয়ে বেঁচে থাকতে হবে।মনে প্রাণে আল্লাহকে ডাকছি যেন সব ঠিক হয়।
এদিকে নিদ্র উপর থেকে নেমে ম্যানেজারের রুমে চলে যায়।ম্যানেজার তাকে দেখে বসতে বলে।নিদ্র ধপ করে চেয়ারের উপর বসে ফস করে মুখ দিয়ে নিশ্বাস ছাড়ে।নিদ্রের অবস্থা দেখে ম্যানেজার খানিকটা বিনয়ী গলায় বলে,
–“স্যার!কিভাবে আপনাকে সহায়তা করতে পারি?”
নিদ্র এবার এক দৃষ্টিতে তাকায় ম্যানেজারের দিকে।গোলগাল চেহারা,মাথা ইয়াবড় একটা টাক,গাল দুটো ফুলকো লুচির মতো,বয়স ৩৯-৪০ হবে।নিদ্রের এভাবে তাকানোর ব্যাপারটা বেশ অসস্থি যোগায় তার মধ্যে।তাই পুনরায় বলে,
–“স্যার!কিভাবে সহায়তা করতে পারি?”
লোকটা কথায় ঘোর কাটে নিদ্রের।কড়া দৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকিয়ে বলে,
–“আজকের সিসিটিভি ফুটেজটা দেখতে চাই আমি।২০২ নাম্বার রুমে কে প্রবেশ করেছিল সেটা দেখতে চাই?”
ম্যানেজার নিদ্রের দিকে তাকিয়ে কম্পিউটারটা অন করে।তারপর চালিয়ে দেয় ২০২ নাম্বার রুমের সামনের ক্যামেরার দৃশ্য।নিদ্র বেশ মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকে সবকিছু।অনেকক্ষন কেটে যায় কেউ প্রবেশ করছে না রুমে।নিদ্র বেশ চিন্তিত হয় এই ভেবে যে,মিহি কি তাকে মিথ্যা বললো?
এইসময় হঠাৎ ক্যামেরায় দেখা যায় একটা মুখ।নিদ্র সাথে সাথে জুম করতে বলে ম্যানেজারকে।ম্যানেজার জুম করলে নিদ্র দেখতে পায় সেটা অনিক।বুঝতে বাকি থাকে না কে সত্য আর মিথ্যা?সে ম্যানেজারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বের হয় রুম থেকে।অনেক খুশি লাগছে তার,অনেক।নাচতে ইচ্ছে করছে।তবেও রাগও হচ্ছে অনিকের প্রতি।প্রচুর রাগ,দেখা হলে তার অবস্থা খারাপ করে দিবে এই প্রতিজ্ঞা নেয় নিদ্র।
নিদ্র লিফট দিয়ে না উঠে সিড়ি দিয়ে উঠতে শুরু করে।এমন সময় হঠাৎ একটা ভাবনা মাথায় চেপে বসে নিদ্রের।কিন্তু এই ভেবে ভাবনাটাকে বিদায় করার সিদ্ধান্ত নেয় নিদ্র যে,মিহিকে মিথ্যা বললে সে নিজের ক্ষতি করতে পারে।পরক্ষনে আবার মনে করে,চোখে চোখে রাখবো তাকে।শেষ পর্যন্ত নিদ্র সিদ্ধান্ত নেয় মিহিকে মিথ্যা বলবে।আজকের রাতটা,কালকের দিনটা ইগনোর করবে মিহিকে।প্রচুর ইগনোর,পরবর্তি দিনে নিদ্রের জন্মদিন,সেদিন সে মিহিকে মেনে নিবে।সেদিন সম্পুর্ন নিজের করে নিবে মিহিকে।
এসব ভাবতে ভাবতে রুমের দরজার সামনে এসে দাঁড়ায় নিদ্র।আস্তে করে দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে সে।তাকে দেখে শোয়া থেকে উঠে বসি আমি।নিদ্র বেশ গম্ভীর মুখ নিয়ে সোফায় বসে পড়ে।তার মুখ দেখে আমার চিন্তা বেড়ে যায় হরহর করে।যেখানে কিছুক্ষন আগে ৪০% ছিল সেখানে এখন ১৪০% হয়ে যায়।আমি বেশ ভয় ভয় নিয়ে নিদ্রকে বলি,
–“কি হলো?”
নিদ্র মাথা তুলে বেশ রাগী দৃষ্টিতে তাকায় আমার দিকে।আমি আরো বেশি ভয় পেয়ে যাই।নিদ্র কড়া গলায় বলে,
–“ছি.আই ডোন্ট বিলিভ ড্যাট যে,তুমি এত বাজে।তুমি কেন তোমরা দুজনই খুব বাজে?যদি তোমাদের প্লান এরকমই তাহলে শুধু শুধু আমার জীবনটা কেন নষ্ট করলে?কেন আমাকে তোমাদের মাঝে এনে কষ্ট দিলে?”
তার কথা থামিয়ে দিয়ে আমি কথা বলতে ধরলেই সাথে সাথে সে বলে ওঠে,
–“থাক,তোমাকে আর কিছু বলতে হবে না।সিসিটিভিতে আমি দেখেছি কোনটা সত্য কথা আর কোনটা মিথ্যা?ছি.আই হেট ইউ।ডিবোর্সটা হলেই ভালো হতো।”
এই বলে নিদ্র উঠে ওয়াসরুমে চলে যায়।আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি তার যাওয়ার দিকে।শেষ পর্যন্ত নিদ্রও আমাকে ভুল বুঝলো।বিশ্বাস করলো না যে অনিক সত্ত্যিই এসেছিল এখানে।বুক ফেটে কান্না আসছে আমার।আমি সাথে সাথে শুয়ে বালিশ চেপে কান্না করতে শুরু করি।
এদিকে যে নিদ্র লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখছে সেদিকে খেয়াল নেই আমার।আমি মুখে বালিশচাপা দিয়ে একাধারে চোখের পানি ফেলেই চলেছি।নিজেকে খুব একা লাগছে এই মুহুর্তে।কি করবো বুঝতে পারছি না আমি।
নিদ্র ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে পুনরায় সোফায় বসে পড়ে।আমি মাথা ঘুড়িয়ে তাকাই তার দিকে।নিদ্র একবার আমার দিকে তাকিয়ে তারপর অন্যদিকে তাকিয়ে বলে,
–“ডিবোর্স হবে এবার।একবার ভুল করেছি সেই ভুল দ্বিতীয়বার করবো না।”
নিদ্রের কথা শুনে আমি স্লান হেসে বলি,
–“একবার ডিবোর্সের কথা শুনে অনেক কষ্টে নিজেকে ঠিক রেখেছি।কিন্তু আরেকবার ঠিক রাখতে পারবো না।”
আমার এই কথাটা শুনে ঝট করে আমার দিকে তাকায় নিদ্র।আমি বুঝতে পারছি না আমি এটা কি বললাম?এটা কেমন কথা বললাম।কি করতে পারবো আমি?আত্মহত্যা?কিন্তু সেটা মহাপাপ।একালে সুখ না পেলেও পরকালে দুঃখ পেতে চাই না।মুখ বুজে সারাজীবন সহ্য করবো আমি তবুও আত্মহত্যা করবো না।
সেদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়ি আমি।নিদ্র কোথায় ঘুমিয়েছে সেটা জানতে পারি না আমি।জানার চেষ্টাও করি না।
পরেরদিন একটু দেরি করেই ঘুম ভাঙ্গে আমার।তারাতারি করে উঠে বসি আমি।চারদিকে তাকিয়ে নিদ্রকে খুঁজতে থাকে আমার চোখ দুটো।পর মুহুর্তে মনে পড়ে কালকের কথা গুলো।মনটা নিমিষে খারাপ হয়ে যায় আমার।আস্তে করে উঠে খুড়িয়ে খুড়িয়ে ওয়াসরুমে যাই।ফ্রেস হয়ে বের হই একেবারে।বের হয়ে দেখি সোফায় বসে আছে নিদ্র।তাকে উদ্দেশ্য করে বলি,
–“এই হোটেলের কি ছাঁদ আছে?থাকলে আমাকে একটু পৌঁছে দেবেন?”
নিদ্র বেশ খানিকক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
–“ওকে,আসুন।”
এই বলে নিদ্র আমাকে নিয়ে আগাতে থাকে।লিফটে করে একেবারে ছাদে উঠে যাই আমরা।অনেক সুন্দর করে সাজানো রয়েছে সবকিছু।ছাদে উঠেই নিদ্র আমাকে ছেড়ে দিয়ে অন্যদিকে যায়।আমি আরেকদিকে এগোতে থাকি।এগোতে এগোতে একেবারে কোণায় চলে যাই আমি।আর এক পা আগালেই মৃত্যু নির্ঘাত।এমন সময় পিছন থেকে কেউ একজন টান দেয় আমাকে।কিছু বুঝে ওঠার আগেই পরপর দুইটা থাপ্পড় পড়ে আমার গালে।ব্যাক্তিটার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠি আমি।নিদ্র।নিদ্র সাথে সাথে আমাকে বুকে জড়িয়ে নেয়।সাথে বলতে শুরু করে,
–“আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলে কেন?আমি তোমাকে ভালোবাসি,তুমি চলে গেলে কাকে ভালোবাসবো বলো?”
আমি কিছু বুঝতে না পেরে মাথা তুলে বলি,
–“মানে?”
এবার নিদ্র আমাকে জড়িয়ে ধরে প্রথম থেকে সব কাহিনী বলতে শুরু করে।কিভাবে অভিনয় করেছে সেটাও?সবশেষে আমি তাকে বলি,
–“আপনি একজন বিরাট অভিনেতা মি.নিদ্র।এটা কি আপনি জানেন?”
নিদ্র আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
–“দেখতে হবে না কার বর?”
আমিও এবার নিদ্রকে জড়িয়ে ধরে বলি,
–“আমি আজ চলে গেলে কেমন হতো?”
নিদ্র আমার ঠোটের কাছে নিজের ঠোট নিয়ে এসে বলে,
–“চলে যাবে?যেতে দিলে তো,চাইলে যেতে পারবে না।কারন তুমি যে আবদ্ধ আমার মধ্যে আমি #আবদ্ধ_তোমার মধ্যে।এই বাধন কখনো ভঙ্গুর নয়।সারাজীবন দুজন দুজনের মধ্যে আবদ্ধ থাকবো।”
এই বলে ঠোটের সাথে ঠোট মিলিয়ে দেয় নিদ্র।
সমাপ্ত..
#আবদ্ধ_তোমার_মধ্যে
#নিয়াজ_মুকিত
#শান্তনা_পর্ব
কক্সবাজার থেকে ফিরে আসার পরও আমার পা পুরোপুরি ঠিক হয় না।সমস্যা বাধে সেখানেই।আমি অফিস যেতে পারবো না এটা সবাই মানবে কিন্তু নিদ্র সম্পুর্ন সুস্থ মানুষটা কেন অফিসে যেতে পারবে না।এটা নিয়ে প্রশ্ন জাগে সবার মনে।নিদ্র ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে আমার পাশে এসে বসে।আমি তার দিকে তাকিয়ে বলি,
–“আপনি অফিসে যেতে পারবেন না কেন?”
নিদ্র আমার দিকে রাগী চোখে তাকায়।তারপর কড়া গলায় বলে,
–“সেটা বলা যাবে না।আগে বলো তুমি এখনো আমাকে আপনি বলো কেন?”
আমি এবার একটু অসস্থিতে পড়ে যাই।কিভাবে তাকে বলবো যে,আমি তুমি বলতে চাইলেও মুখটা আপনি বলে ফেলে।আমার কাছ থেকে কোনোপ্রকার উত্তর না পেয়ে নিদ্র আবার বলে ওঠে,
–“বলো,কেন আপনি বলো এখনো?”
আমি এবার চোখ বন্ধ করে কারনটা বলেই দেই।নিদ্র ৩সেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে তারপর হো হো করে হেসে ওঠে।তার পাগলের মতো হাসার কারন আমি বুঝতে পারি না।নিদ্র হাসতে হাসতে আমাকে বলে,
–“তারমানে তোমার মনের কথা তোমার মুখ শোনে না।এটা বলতে চাইছো?”
আমি মাথা নাড়িয়ে বলি হ্যা।নিদ্র হাসতে হাসতে উঠে দাঁড়ায়।তারপর অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হতে শুরু করে।আমি এক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে আছি।নিদ্র রেডি হয়ে আমাকে নিয়ে নিচে নেমে আসে।আগে থেকেই ব্রেকফাষ্টের টেবিলে বসে আছে বাবা-মা।আমরা বসতেই আমাদের দিকে নাস্তা এগিয়ে দেয় মা।আমি নাস্তা খেতে শুরু করলেই বাবা-মা একসাথে বলে ওঠে,
–“মিহিমা আমরা দুঃখিত।আসলে তোমাকে ওভাবে বলা ঠিক হয়নি।পরে নিদ্র আমাদের সব বলেছে।তুমি কিছু মনে করো না।”
আমি বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে তারাতারি করে বলি,
–“না না,কি মনে করবো আবার?”
মা এবার মুচকি হেসে আরো নাস্তা দেন আমার প্লেটে।নিদ্র নাস্তা শেষ করে উঠে দাঁড়ায়।সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রওনা হয় অফিসের পথে।এদিকে ব্রেকফাষ্ট শেষ করে মায়ের সাহায্য নিয়ে রুমে পৌছাই আমি।মা আমাকে রুমে নামিয়ে দিয়ে বের হতে ধরলে আমি মাকে উদ্দেশ্য করে বলি,
–“মা,একটা কথা বলতাম?”
মা মুচকি হেসে ঘুড়ে আসে আমার দিকে।তারপর আমার পাশে বসে আমার মাথায় হাত রেখে বলে,
–“বল মা!”
আমি কিভাবে বলবো বুঝতে পারিনা?তারপর চোখ বন্ধ করে বলি,
–“মা,নিদ্র বলেছে সে আর কখনো আমাদের বাসা যাবে না।আর যদি যায়ও তাহলে সাথে সাথে তার মৃত্যু হবে।এখন কি করবো মা?”
আমার কথা শুনে বেশ চমকে ওঠে মা।সাথে সাথে বলে ওঠে,
–“ও যদি এই ওয়াদা করে থাকে তাহলে তাকে নিয়ে যাওয়া কারো পক্ষে সম্ভব না।আমরাও তাকে বলতে পারবো না কারন ছোটবেলা থেকে সে শিক্ষা পেয়েছে ওয়াদা করলে কখনো তা ভাঙ্গা যায় না।এতে আমি সাহায্য করতে পারছি না মা।”
এই বলে মা রুম থেকে বের হয়ে যায়।আমি বেশ চিন্তায় পড়ে যাই কি করবো?মনে হয় না পারবো নিদ্রকে আমাদের বাসা নিয়ে যেতে।
নিদ্রকে ছাড়া সময় গুলো কাটতেই চাচ্ছে না।১মিনিটকে ১ঘন্টা মনে হচ্ছে।শুয়ে শুয়ে বেশ বিরক্ত হয়ে গেছি আমি।নিজের নকিয়া ১২০০মোবাইলটা বের করে সাপ গেম খেলতে শুরু করি।সেখানে বারবার মারা যাওয়ার কারনে বেশ বিরক্ত হয়েই বন্ধ করে দেই।চোখ দুটো বেশ ঘুমে জড়িয়ে এসেছে।বালিশে হেলান দিতেই বন্ধ হয়ে যায় চোখ দুটো।ঘুমিয়ে পড়ি আমি।বাহিরে কি হচ্ছে জানতে পারে না আমার মন,মস্তিস্ক।ঘুমরাজ আমাকে নিয়ে চলে গেছে তার নিজ শহরে।
কারো দরজা খোলার আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায় আমার।চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি নিদ্র।চোখে ঘুম ভাব থাকার কারনে নিদ্রকে দেখতে পারলেও তার জামায় লেগে থাকা রক্ত গুলো দেখতে পারিনি।যখন নিদ্র আমার কাছে চলে আসে তখন তার জামায় রক্ত দেখে বেশ চমকে উঠি আমি।তড়িঘড়ি করে উঠে বসে ভালোভাবে দেখতে শুরু করি নিদ্রকে।সাদা শার্ট রক্তে লাল হয়ে আছে।আমি এবার ফ্যালফ্যাল করে তাকাই নিদ্রের দিকে।নিদ্র ধপ করে বসে পড়ে আমার পাশে।আমি নিদ্রের কাধে হাত রেখে বলি,
–“কি হয়েছে?তোমার শার্টে রক্ত কেন?”
নিদ্র ২সেকেন্ড ধরে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।তারপর দুহাত দিয়ে কপাল চিপে ধরে বলে,
–“অনিক তার প্রাপ্য শাস্তির থেকে অনেক বড় একটা শাস্তি পেয়েছে।”
আমি কিছু বুঝতে না পেরে নিদ্রকে উদ্দেশ্য করে বলি,
–“খুলে বলো তো!”
নিদ্র এবার বলতে শুরু করে,
–“আমি অফিস থেকে ফিরছিলাম,এমন সময় অনিককে দেখতে পাই।তার প্রতি একরাশ রাগ আগে থেকেই জমা ছিল আমার।আমি গাড়ি সাইট করে তাকে ডাকি।সে আমার ডাক শুনে দৌড়াতে শুরু করে।দৌড়াতে দৌড়াতে গিয়ে পড়ে একটা গাড়ির সামনে।ব্যাস বিদায় নিয়ে নেয় দুনিয়া থেকে।সত্ত্যি খুব খারাপ লাগছে।খুব,যদিও তার প্রতি আমার অনেক রাগ তবুও খারাপ লাগছে।”
আমি বুঝতে পারি এখন নিদ্রের খারাপ লাগাটা ভালোবাসার টান।উপরে উপরে যতই ঘৃণা করুক মনে মনে ঠিকই টান ছিল।আমি আবার নিদ্রকে উদ্দেশ্য করে বলি,
–“তার লাশটা কি করলে?”
নিদ্র উঠে দাঁড়িয়ে ওয়াসরুমে যেতে যেতে বলে,
–“পুলিশ নিয়ে গেছে।রোড এক্সিডেন্ট তাদের সন্দেহ হয়েছে তাই নিয়ে গেছে।শোনো এই কথাটা বাবা-মাকে বলবে না।”
আমি নিরবে মাথা নাড়িয়ে হা বলি কিন্তু আমার হা বলাটা নিদ্র দেখতে পায় না।সে তার আগেই ওয়াসরুমে প্রবেশ করে।আমি পুনরায় হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ি।অনিকের জন্য একটু খারাপই লাগছে।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে একপর্যায়ে।নিদ্র আমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে।আমি নিদ্রের মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিচ্ছি আবার সাজিয়েও দিচ্ছি।নিদ্র আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
–“সবকিছুই আছে আমাদের জীবনে শুধু একটা জিনিসই নেই?তাইনা?”
আমি বুঝতে পারছি নিদ্র কিসের কথা বলছে।আমি সেই প্রসঙ্গে না গিয়ে তাকে বলি,
–“তুমি কি আমাদের বাসা যাবে?”
সাথে সাথে নিদ্র উঠে বসে।আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,
–“আমি ওয়াদা ভাঙ্গার ছেলে না।”
এই বলে সে উঠে দাঁড়ায়।আমি তার হাতটা টেনে ধরে বলি,
–“আমাদের যেটা নেই সেটাকে আনতে হবে না।এভাবে চলে গেলে হবে নাকি?”
নিদ্র আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে আবার কোলে শুয়ে পড়ে।তারপর বলতে শুরু করে,
–“শোন,ওয়াদা ভঙ্গ করা ঠিক নয়।মহানবী (সাঃ) ওয়াদা ভঙ্গ কারীদের ঘৃণা করতেন এবং এখনো করেন।নবিজী (সাঃ) বলেছেন,-“আমার উম্মতের মধ্যে ওই ব্যাক্তি সবচেয়ে জঘন্য যে ওয়াদা দিয়ে ওয়াদা ভঙ্গ করে।”
আমি একবার ওয়াদা দিয়েছি সেটা কখনো ভঙ্গ করবো না।নিদ্রের কথা শুনে বেশ খুশি হই আমি।এই খুশির কারনটা কি জানা নেই?নিদ্র আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
–“শুরু করি মিশন!”
আমি বেশ লজ্জা পেয়ে বলি,
–“হু”
সমাপ্ত..