আনকালচার্ড বউ পর্বঃ-০১

0
6730

আনকালচার্ড বউ পর্বঃ-০১
(অসামাজিক বউ)
লেখক ঃ- আবু জাফর

হাতে এক কাপ চা আর একটা সিগারেট ধরিয়ে বাইরের বারান্দায় গিয়ে বসলো লোকটি।
হাতে খবরের কাগজ চোখ পড়লো একটা হেড লাইনে।স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্ত্রীর আত্মহত্যা।

লোকটির বুকের মাঝে হঠাৎ ব্যথা করে উঠলো। চোখ দুইটা ভিজে গেলো পানিতে।

১০ বছর আগের ঘটনা।
লোকটির নাম আবু। বাবা মায়ের এক মাত্র ছেলে।ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের আদরে আদরে একটা বদ হয়ে উঠেছে।

কিছুদিন হলো ভার্সিটিতে এডমিশন নিয়েছে। কিছু বাজে বন্ধুর সাথেও চলতে দেখা যায়।
সিগারেট মদ কোন কিছুই বাকি নেই।
বাবা মায়ের বাধা নিষেধ মানে না। আর এক বাবা মায়ের এক সন্তান হলে যা হয়।

শুধু মদ আর সিগারেটের নেশাই ছিল না আবুর। আনুপাতিক হারে মেয়ের নেশাও ছিলো প্রচুর।চেহারা ভালো হওয়ায় আর বাবার টাকা থাকাই কোন মেয়েকে পটাতে বেশি দেরি হতো না তার।
মেয়েদের পটিয়ে রুমে নিয়ে রুম ডেট করে ছেড়ে দেওয়াটা তার কাছে সিগারেট ফুরিয়ে যাবার পর সিগারেটের ফিলটার রাস্তাই ফেলে পা দিয়ে পিষে ফেলার মতো ছিল।

এইতো কিছুদিন আগেও একটা মেয়ের সাথে ফ্লাটিং করে ছেড়ে দিলো আবু। মেয়েটা অনেক অনুনয় বিনয় করেও কোন ফল পেলো না

শেষ অবধি মেয়েটা সুইসাইড করেছিলো।লাশটি দেখার মতোও ছিলো না।
ট্রেনের নিচে মাথা দিয়েছিলো।শরীর কেটে কয়েক খন্ড হয়ে গেছিলো। লাশের টুকরো গুলো বস্তায় ভরে নিয়ে গিয়ে দাফন করা হয়েছিলো।

মেয়ে পক্ষ কেস করেও কোন ফল পাইনি। টাকা দিয়ে কেস টা ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হয়।

এভাবে এসব নিয়ে কেটে গেলো তিনটা বছর। ফাইনাল পরীক্ষায় যেভাবে হোক পাশ করে যায় আবু।

বাসা থেকে ব্যবসায় বসতে বললে নানা অজুহাতে এড়িয়ে যায়।

একদিন রাতে আবুর মা বলতেছে

হ্যা গো ছেলেটা তো দিনদিন বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে। এভাবে বেশিদিন তো চলতে দেওয়া যায় না
আবুর বাবা বলতেছে হ্যা আমিও তাই ভাবতেছি আচ্ছা ওকে বিয়ে দিলে কেমন হয়।

আবুর মা বললো আমিও তাই বলতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু ওর মতো ছেলেকে মেয়ে দিবে কে।আচ্ছা তুমি খুঁজে দেখো পাও কিনা।

পরের দিন আবুর বাবা অফিসে যাবার পথে সিগনালে আটকে গেলে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ দেখে একটা মেয়ের কাছে একটা ভিখারি এসে বলতেছে আম্মা দশ টা টাহা দেবেন আম্মা মেলা ক্ষিদে পাইছে।

মেয়েটা টাকা টা বেড় করে হাতে দিতে গিয়ে আবার ব্যাগে ভরে রাখলো।
এইদেখে আবুর বাবা একভাবে তাকিয়ে থাকলো বাইরে।

তারপর আবুর বাবা দেখলো যে মেয়েটি ভিখারিটির হাত ধরে বলতেছে আরেহ আমারও তো ক্ষুধা পেয়েছে। চলেন দুজন আজ একসাথে খাবো।
বলেই বলতেছে আমার সাথে খেতে আপনার কোন প্রব্লেম নেই তো।

ভিখারি টির চোখে জল।
মেয়েটি হাত দিয়ে চোখটা মুছে দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে গেলো ভিখারি টিকে রেস্টুরেন্টের ভিতরে।

এদিকে আবুর বাবাও….

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে