#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা_মালিহা_খান❤️
#পর্ব-৪১
প্রায় একঘন্টার চেষ্টায় স্বাভাবিকভাবেই ডেলিভারি হলো মায়ার।বাচ্চাদের কান্না শুনতেই একরাশ প্রাণভরা তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো ঠোঁটে।এতোক্ষনের অশ্রুভেজা চোখগুলোতে খেলা করছে এক অনন্যময়ী মাতৃত্বের সুখ।তবে জ্ঞান হারায়নি সে।
ক্লান্ত ভঙ্গিতে বেডে মাথা এলিয়ে দিতেই আরিয়ান তার দিকে ঝুঁকে গেলো।এই একটা ঘন্টা যে সে কিভাবে পার করেছে!একাধারে বাচ্চা আর স্ত্রীর চিন্তা তার মাথায়।
কপালে অধরের স্পর্শ দিতেই মলিনভাবে হাসলো মায়া।কপাল বেয়ে নোনাজল গড়িয়ে পরতেই মায়া আরিয়ানের বাহুতে হাত রেখে বললো,
—“আপনি কাঁদছেন কেনো?”
আরিয়ান মাথা উঠায়না।আজ পর্যন্ত তার কান্না নিজ চোখে দেখেনি মায়া।শুধু দেখেছে তার লাল লাল চোখগুলো।
সে অবস্থাতেই মায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় আরিয়ান।ধীর কন্ঠে বলে,
—“তোমার খুব কষ্ট হয়েছে মায়াবতী?”
মায়া উওর দেয়ার আগেই দরজা খুলে প্রবেশ করলো ড.মিতালী আর একজন নার্স।আরিয়ান দ্রুত মাথা উঠিয়ে তাকালো।তাদের কোলে সাদা টাওয়ালে পেঁচানো বাচ্চারা।ড.মিতালী এসে আরিয়ানের কোলে একজনকে দিতে গেলেই সে আৎকে উঠে বললো,
—“না,না আমি নিবোনা।ওরা ব্যাথা পাবে।আমার হাত শক্ত।”
আরিয়ানের কথা শুনে হেসে দিল ড.মিতালী।তার পিছে এসে দাড়িয়েছে ইতি আর তন্ময়।আরিয়ান তন্ময়কে
উদ্দেশ্য করে বললো,
—“তুই কোলে নে।”
মায়া এতক্ষন চুপচাপ আরিয়ানের কান্ড দেখছিলো।এ পর্যায়ে এসে হেসে ফেললো সে।বললো,
—‘আমাকে উঠিয়ে বসান।আমি কোলে নিবো ওদের।”
আরিয়ান মায়াকে উঠিয়ে বসাতেই ড.মিতালী একজনকে কোলে দিলেন।আরেকজন তখন তন্ময়ের কোলে।ড.মিতালীর ভাষ্যমতে মায়ার কোলেরজন অপরজনের থেকে তিনমিনিটের বড়।বড়জন ছেলে আর ছোটজন হলো মেয়ে।
অদ্ভুত ভাবে বাচ্চাটার দিকে চেয়ে আছে মায়া।তার কোলে তাদের বাচ্চা ভাবতেই অবাক লাগছে।হাত পা নাড়াচ্ছে বাচ্চাটা।মায়া তাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলো।কপালে চুঁমু খেলো।
আরিয়ান মুগ্ধ হয়ে তাকে দেখছে।হঠাৎই তন্ময়ের কোলেরজন কেঁদে উঠে।তন্ময় তার চোখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে,
—“বাবা কোলে নিচ্ছেনা দেখে কাঁদছো প্রিন্সেস?”
উওরে হয়তো আরো জোরে কান্না করে দিলে বাচ্চাটা।তন্ময় এগিয়ে আরিয়ানের দিকে তাকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
—“ভাই,কোলে নেন।আপনি বাবা।আপনিই কোলে নিচ্ছেননা।আপনার মেয়েটাও কাঁদছে।”
আরিয়ান একবার তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে কোলে নিলো তাকে।আশ্চর্যজনকভাবে হলেও বাচ্চাটার কান্না তখনই থেমে গেলো।বাবার বুক ঘেঁষে রইলো সে।আরিয়ান ঠোঁট এলিয়ে হাসলো।একহাতে বুড়ো আঙ্গুল চুষছে বাচ্চাটা আর বড় বড় চোখগুলো ঘুড়িয়ে ঘুরিয়ে আরিয়ানকে দেখছে।
মায়ার ঠোঁটে উজ্জল হাসি।বাবা-মা হওয়ার সুখটা নিজের চোখে দেখছে সে।নিজের বাচ্চা,নিজের একটা অংশকে কোলে নেয়া যে কতটা তৃপ্তিময়!এতো আনন্দ!
_______________
গতকালকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে মায়াকে।শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ মায়া।আর কোন সমস্যা নেই।
বিছানায় বসে একজনকে ফিডিং করাচ্ছে।আরেকজন পাশেই ঘুমিয়ে আছে।ইতি গেছে তার খাওয়ার প্লেটটা নিচে রাখতে।এতক্ষন সেই খাইয়ে দিচ্ছিলো মায়াকে।
জরুরি ফোন আসায় আরিয়ান কানে ফোন নিয়ে ব্যালকনিতে গেছে একটু আগে।অফিস থেকে ফিরেছে সে সন্ধ্যার দিকে।
মায়া অলস ভঙ্গিতে দুই পা ভাঁজ করে বসে আছে।ঘুম আসছে তার।চোখে প্রচন্ড ঘুম।তবুও বাচ্চাটা কাঁদছিলো দেখে ফিডিং করাচ্ছে।নয়তো কথনই ঘুমিয়ে পরতো।ব্যালকনি থেকেই মায়াকে ঘুমে ঢুলে পরতে দেখে দ্রুত ফোন কেটে পকেটে ঢুকিয়ে রুমে আসলো আরিয়ান।বললো,
—“ঘুম আসছে মায়া?তাহলে ঘুমিয়ে পরো।ওকে আমার কোলে দাও।”
মায়া আবছা চোখে তাকালো।জড়ানো কন্ঠে বললো,
—“ক্ষুধা পেয়েছে ওর।কাঁদছিলো তাই খাওয়াচ্ছি।শেষ হলে ঘুমাবো।”
আরিয়ান ছোট্ট একটা শ্বাস ফেললো।মায়ার পিছে বসে তার মাথা নিজের বুকে নিয়ে বললো,
—“ঘুমাও তুমি।ওর খাওয়া শেষ হলে আমি শুইয়ে দিবোনে।”।
মায়া মুচকি হেসে চোখটা বন্ধ করলে সাথে সাথে কেঁদে উঠে পাশে রাখা বাচ্চাটা।দীর্ঘশ্বাস ফেলে সেদিকে তাকায় মায়া।ততক্ষনে খাওয়া শেষ করে মায়ার দিকে তাকিয়ে খিলখিল করে হাসছে তার মেয়েটা।
আরিয়ান মায়ার কোল থেকে তাকে নিয়ে নিজের কোলে নেয়।মায়ার জামা ঠি ক করে দিয়ে বলে,
—“তুমি একটু শোও মায়া।”
—“ওর ডাইপার চেন্জ করে দিতে হবে।।ডাইপারের প্যাকেটটা একটু এদিকে দেননা।”
আরিয়ান জোর করে মায়াকে শুইয়ে দেয়।নিজেই ডাইপারের প্যাকেটটা নিয়ে বলে,
—“আমি করে দিচ্ছি।”
—“আপনি পারবেননা।”
আরিয়ান একেবারে মায়ার চোখের দিকে তাকায়।মুচকি হেসে বলে,
—“এতবড় বাচ্চাটাকে সামলাচ্ছি আর এই পুঁচকে গুলোকে পারবোনা?নিশ্চিন্তে ঘুমাও মায়াবতী।”
মায়া আর কথা বাড়ালোনা।চুপ করে শুয়ে পরলো।মাথাটা ব্যাথা করছে তার।খানিকবাদেই সে অনুভব করলো একটা শক্তপক্ত হাত তার মাথা টিপে দিচ্ছে।ঘুমের মধ্য চোখ না খুললেও সে বুঝতে পেরেছে এটা আরিয়ান ছাড়া আর কেও নয়।
~চলবে~
#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা_মালিহা_খান❤️
#পর্ব-৪২
“আঁধার” শব্দটার মাঝেই লুকিয়ে আছে কিছু সুপ্ত নিকষ কালো রংহীন অনুভূতি।গোটা জীবনটাই যখন একআকাশ আঁধারে ডুবে যায় তখন একটা ক্ষীণ আলোও সেখানে অনেকটা উজ্জল দেখায়।।রাতের অন্ধকার আকাশের বুকে সেই উজ্জল করা ক্ষীণ আলোটা হলো সন্ধ্যাতারা।
_____________
ঘুমন্ত নিষ্পাপ মুখশ্রী।চাঁদের আবছায়া আলোয় এক নিদ্রাচ্ছন্ন মায়াপরী।যার সর্বাঙ্গে বিরাজ করছে সৌন্দর্যের এক অদ্ভুত খেলা।
পাতলা ঠোঁটজোড়ার মাঝখানটায় মৃদু ফাঁক হয়ে আছে।সোজা হয়ে শুয়ে একহাত একপাশে ভাঁজ করে রেখেছে আর আরেকহাত মেলে বাচ্চাদুটোকে বাহুর উপর ঘুম পারিয়ে রেখেছে মায়া।চুপটি করে ঘুমিয়েও আছে দুজনে।
আরিয়ান ঠোঁট এলিয়ে হাসে।জীবন কতটাই না সুন্দর!তার এই ঘুমন্ত পরীটা জীবনে না আসলেও কি সবকিছু এত স্নিগ্ধ লাগতো?একমূহুর্ত অপেক্ষা না করে সজাগ মস্তিষ্ক উওর দিলো,”নাহ্”,কখনোই নাহ্।”
দীর্ঘদিনের অভ্যাসবশত আরিয়ান সর্বপ্রথম ঠোঁট ছোঁয়ায় মায়ার কপালে।মায়ার গাল থেকে হাত না সরিয়েই বাচ্চাদের কপালে চুমু খায়।তার চুমু খেয়ে ছোট্ট আদুরে মেয়েটা একটু নড়েচড়ে উঠে।বারদুয়েক দাঁতহীন মাড়ি দিয়ে ঠোঁট কামড়ে আবারো ঘুমিয়ে পরে।
গালে হিমশীতল হাতের স্পর্শটা অনেকক্ষন যাবতই প্রায় জাগিয়ে তুলছিলো মায়াকে।তবে ঘুমের মাত্রাটা বেশি হওয়ায় চোখ খুলেনি সে।এখন শীতল স্পর্শের সঙ্গে তপ্ত নি:শ্বাসও মুখের উপর আছড়ে পরায় চোখ খুললো সে।তার উপর ঝুঁকে থেকে আধা ইন্চি দুরত্বে অবস্থান করছে আরিয়ান।
হঠাৎই চোখের পলক আটকে যায় মায়ার।আরিয়ানের চোখে ঘোর লাগানো চাহনী।নিমিষেই তাকে লজ্জায় ডুবিয়ে দেয়ার ক্ষমতা আছে সেই দৃষ্টিতে।চোখ নামিয়ে ফেলে মায়া।অষ্পষ্ট কন্ঠে বলে,
—“আপনি…”
বাকি শব্দগুলো বের হবার আগেই তার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয় আরিয়ান।চোখ বন্ধ করে ফেলে মায়া।
এখনও আরিয়ান এভাবে স্পর্শ করলে তুমুল লজ্জা লাগে তার।পাশের হাতটার আঙ্গুলের ভাঁজে আঙ্গুল ঢুকিয়ে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখেছে আরিয়ান।আর এপাশের হাতে বাচ্চারা শুয়ে আছে আর উপরে আরিয়ান।তথাপি নড়াচড়া করার কোনো সুযোগ নেই।লজ্জা নিবারণের জন্য নখের আচড়ে আরিয়ানের পিঠ ক্ষতবিক্ষত করার উপায়ও নেই।
ধীরগতিতে চুমু খাচ্ছে আরিয়ান।কোন হিংস্রতা নেই সে স্পর্শে আর না আছে কোন তাড়াহুড়ো।
মায়া চোখ বন্ধ করেই রেখেছে।আরিয়ান আস্তে আস্তে তার ঠোঁট ছাড়ে।মোহময় কন্ঠে বলে,
—“মায়াবতী,চোখ খুলো।”
নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে মায়া।চোখ মেলে দৃষ্টি নামিয়ে অন্যদিকে চেয়ে থাকে।আরিয়ান তার চেপে ধরে রাখা হাতটা ছাড়ে।ঠোঁটের কাছে এনে একআঙ্গুল দিয়ে হাল্কা স্পর্শে তার কামড়ে ধরা ঠোঁটটা ছাড়ায়।
তবে চোখ মেলায়না মায়া ।আরিয়ান আরো কিছুক্ষন বিনা শব্দ ব্যায়ে তার মুখের পানে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।
ইতিমধ্যেই মায়ার গালদুটো লালবর্ণ ধারণ করেছে।আরিয়ান তার গলায় হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে স্লাইড করে শীতল গলায় বলে,
—“আমার দিকে তাকাও”।
আরিয়ানের শীতল কন্ঠে কেঁপে উঠে মায়া।চট করে তার চোখের দিকে তাকাতেই চারচোখ এক হয়ে যায়।চোখেচোখেই অনুভূতিদের মিলনমেলা হচ্ছে।দৃষ্টির সাথে দৃষ্টি থমকে গেছে।থেমে গেছে সময়।আটকে আছে মূহুর্ত।
বেশ কিছুক্ষন কেটে গেলেও আরিয়ান কিছু বলেনা।একদৃষ্টিতে সে মায়ার চোখের দিকে চেয়ে আছে।
মায়াই চোখ নামিয়ে ফেলে।আমতাআমতা করে নিচু গলায় সে বলে,
—“সরুননা।”
—“কেন?”
—“আপনি জানেননা?”
আরিয়ান ভ্রু উচায়।গালে গাল ঘষে বলে,
—“লজ্জা পাচ্ছো?”
—“সরুন।বাচ্চারা উঠে যাবে।”
আরিয়ান শব্দহীনভাবে হাসে।মায়ার উপর থেকে সরে গিয়ে বাচ্চাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মেয়েকে নিজের কোলে তুলে নেয়।গুটিশুটি হয়ে বাবার সাথে লেপ্টে থাকে সে।
মায়া অকারণেই হাসে।মেয়েটা বাবার খুব আদুরে।ঘুমন্ত অবস্থায় কোলে নিলেও কাঁদেনা।আবার যতই কান্না করুক না কেন বাবার কোলে গেলে চুপ হয়ে যায় সে।মায়া মিষ্টি হেসে ছেলেকে বুকে টেনে নেয়।ছেলেটা আবার তার কাছে থাকতে বেশি পছন্দ করে।
__________________
বাবার বুকের উপর মেয়ে শুয়ে আছে।মেয়ের পিঠে একহাত ঠেকিয়ে আরেকহাতে ফোন চালাচ্ছে আরিয়ান।ছেলেটা তন্ময়ের কোলে।তন্ময়ের কোলে ছেলেকে দিয়ে মায়া গেছে ওয়াশরুমে।সকাল বেলা উঠে ব্রেকফাস্ট টাও করেনি সে।
মেয়েটা খুব চুপচাপ।তবে ছেলেটা খুব ছটফট করে।সারাক্ষণ হাত-পা নাড়ায়।দেখলেই বোঝা যায় খুব দুষ্ট হবে।
চেহারায়ও একটা চন্চলভাব।আর অপরদিকে মেয়েটাকে সেই যে রাতের বেলা আরিয়ান বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছে এখন অবধি উঠেনি।
—“ওদের নাম কি রাখবেন ভাই?একসপ্তাহ তো হয়ে গেলো।”।
তন্ময়ের প্রশ্নে ফোন থেকে চোখ সরায় আরিয়ান।বুকের ছোট্ট পরীটার মুখ দিয়ে লোল গড়িয়ে পরছে।হাত দিয়ে তা মুছিয়ে দেয় আরিয়ান।মৃদু হেসে বলে,
—“কি নাম রাখবো তন্ময়?তুই বল কিছু।”
তন্ময় হাসে।আরিয়ান সবচেয়ে বেশি কনফিউজস থাকে বাচ্চাদের ব্যাপারে।এমনে কত শত মিটিং ডিল করে একদিনে।একভাবায় ডিসিশন নিয়ে নেয়।আর বাচ্চাদের বিষয়ে কোন ডিসিশন নিতে গেলে, কিছু করার আগে একশবার ভাবে।
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে মায়া।তার চোখেমুখে পানি।টাওয়াল দিয়ে তা মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসছে সে।
মোছা শেষে তন্ময়ের দিকে এগিয়ে যায়।দুহাত বারিয়ে বলে,
—“দিন ভাইয়া।আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে।”।
—“আরে না ভাবি।সমস্যা নেই।আপনি যান নাস্তা খেয়ে নেন।ও থাকুক আমার কোলে।”
—“আপনারা অফিসে যাবেননা?”
আরিয়ান বিছানায় হেলান দিয়েই একটু সোজা হয়ে বসে।মেয়েকে সুন্দরমতো জড়িয়ে নিয়ে বলে,
—“তুমি ব্রেকফাস্ট করে নাও।অফিসের দেরি আছে এখনো।যাও”।
মায়া মাথা নাড়িয়ে বের হতে নিলেই হাতে নাস্তা নিয়ে প্রবেশ করে ইতি।টেবিলে রেখে বলে,
—“আপনার খাবারটা আপু।কষ্ট করে নিচে নামতে হবেনা।”
মায়া মুচকি হেসে বসে পরে।সে খাচ্ছে তখনই তন্ময় বলে,
—“বাচ্চাদের নাম ঠিক করেছেন ভাবি?”
মুখে খাবার নিয়েই তাকায় মায়া।বলে,
—“নাতো ভাইয়া।”তারপর আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,”উনি যা বলবেন তাই রাখবো।”
তন্ময় আবারো হাসে।বলে,
—“ভাই তো নিজেই জানেননা”।
মায়া বোকা হাসে।বাস্তবিকই এ বিষয়ে কিছু ভাবেনি সে।অনেকক্ষন গল্পগুজব করলেও নাম ঠি ক করতে পারলোনা তারা।অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো এ নিয়ে পরে কথা হবে।আপাতত থাক!
________________
বিপত্তি বাঁধে মেয়েকে নিয়ে।আরিয়ান কোল থেকে নামাতেই কান্না জুড়ে দিয়েছে সে।চিৎকার করে কান্না করছে।মায়া হাজার চেষ্টা করেও কান্না থামাতে পারছেনা।উপায় না পেয়ে তাকে তাকে আবারো বুকে জড়িয়ে নিল আরিয়ান।কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করতেই কান্না থেমে গেল।শান্ত হয়ে গেলো একদম।
তাকে কোলে নিয়েই মায়ার সাহায্য শার্ট পরলো আরিয়ান।আরিয়ান হাত বাড়িয়ে দিলে তাকে ঘড়ি পরিয়ে দিল মায়া।মেয়ের দিকে তাকিয়ে ক্লান্ত কন্ঠে আস্তে করে বললো,
—“ঘুমিয়েছে?”
আরিয়ান চোখে ইশারায় “হ্যাঁ” বোঝালো।অত:পর যত্ন করে তাকে বিছানায় শুইয়ে দিল।মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো আরিয়ান।পাশেই শুয়ে আছে বড় ছেলে।যদিও মাত্র তিন মিনিটের ছোট বড় তবুও ছোট বলেই হয়তো মেয়েটা একটু বেশি আদুরে।
__________________
বিকেলবেলা মামা-মামি এসেছেন বাসায়।তাদের আসার খবর শুনেই দ্রুত বাড়িতে ফিরছে আরিয়ান।কারণ ইতির কাছ থেকে সে শুনেছে তাদের সাথে এসেছে রাহাতও…
~চলবে~