আঁধার ভিড়ে সন্ধ্যাতারা পর্ব-২৯+৩০

0
3211

#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা_মালিহা_খান❤️
#পর্ব-২৯

স্বভাবতই ব্রেক কষলো আরিয়ান।গাড়ি থেমে গেলো।আজকাল এই অভ্যাসটা হয়েছে তার।রাগ উঠলে আগে গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিত এখন আর তা করেনা।মায়া থাকে সাথে।যদি আ্যক্সিডেন্ট হয়ে যায়,এই ভয়ে গাড়ি থামিয়ে দেয়।
একটা শুকনো ফাঁকা ঢোক গিললো মায়া।কিন্তু আরিয়ানের বাহু থেকে মাথা উঠালো না।
আরিয়ান গম্ভীর কন্ঠে বললো,
—“আগে বলোনি কেন?”

—“আপনি বলেছিলেন আপনি রাগ করবেন না।”

আরিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থাকে।গলার স্বর নামিয়ে শান্ত কন্ঠে বলে,
—“রাগ করিনি,বলো।কি করেছে ও?”

—“রাগ করেননি তো গাড়ি থামালেন কেন?স্টার্ট দেন।যেতে যেতে বলি।”

আরিয়ান ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে গাড়ি স্টার্ট দেয়।মায়া মুচকি হেসে বলে,
—“আস্তে চালিয়েন হ্যাঁ?জোরে চালালে আমার ভয় করে।”

আরিয়ান সামনের দিকে তাকিয়েই বলে,
—“জানি আমি।,,,বলো এখন।”

মায়া সবটাই খুলে বলে আরিয়ানকে।রাহাত যা যা বলেছিলো সবকিছু।আরিয়ানের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে।ফর্সা চেহারা লাল হয়ে যায়।দাঁতে দাঁত চেপে ড্রাইভিং করতে থাকে।
মায়াও কিছু একটা বলতে যেয়েও বলেনা।চুপচাপ আরিয়ানের একহাত জড়িয়ে ধরে বাহুতে মুখ লুকিয়ে রাখে।
ভেবেছিলো আরিয়ানকে বলবেনা কথাগুলো।কিন্তু না বলেও থাকতে পারলোনা।কেন জানি কথাগুলো লুকাতে ইচ্ছা করছিলোনা।যাক!এখন বলেছে তবেই শান্তি লাগছে।

গাড়ি থামে অপরিচিত একটা জায়গায়।মায়া মাথা উঠিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়।অনেকটা পার্কের মতো জায়গা।গাছপালা আছে।তবে নির্জন,পার্কে তো মানুষ জন থাকে।ভ্রু কুচকে সে বলে,
—“এটা কোথায়?”

আরিয়ান জবাব না দিয়ে বেরিয়ে যায়।মায়ার পাশের দরজা খুলে হাত বাড়িয়ে বলে,
—“বের হও।”

আরিয়ানের হাত ধরে বেরিয়ে আসে মায়া।গাড়ির দরজা আটকে দিয়ে সামনে হাঁটা ধরে আরিয়ান।
মায়া চারিদিকে তাকিয়ে বলে,
––”কোথায় যাচ্ছি?”

আরিয়ান উওর না দিলেও সামনে তাকাতেই উওর পেয়ে যায় মায়া।সামনে রাহাত দাড়িয়ে আছে।তার পাশে আরো দুইজন ছেলে।সবার হাতেই সিগারেট।মায়া আরিয়ানের কাছে ঘেঁষে যায়।আরিয়ান কে দেখে বাকি দুইজন ছেলে হাত থেকে সিগারেট ফেলে দিলেও রাহাত ফেলেনা।আরিয়ান সামনে গিয়ে তাদের ইশারা করতেই প্রায় দৌড়ে পালিয়ে যায় ছেলে দুটো।রাহাত তখনো ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ছে।
মায়া হাল্কা কেঁশে উঠতেই সিগারেটটা নিচে ফেলে পা দিয়ে পিঁশে ফেলে রাহাত।আচমকাই আরিয়ান তার গলা চেপে ধরে।গাছের সাথে হেলান দিয়ে ছিলো রাহাত।সেখানেই ঠেষে ধরায় ছুটতে পারে না সে।

—“মায়াকে ভালোবাসিস তাইনা?”

রাহাত উওর দিতে পারেনা।শ্বাস আটকে আসছে তার।চোখ বড় বড় করে ছাড়তে ইশারা করে সে।আরিয়ান গাছের থেকে আলগা করে আবারো পিছে ঠেকিয়ে সজোরে বাড়ি দিয়ে গলা ছাড়ে।কাঁশতে থাকে রাহাত।কাশির থেকে মনে হয় হাল্কা রক্তও বেরিয়ে আসে।আরিয়ান তার গালে ঘুষি মারে।শুকনো পাতার উপর পরে যায় রাহাত।মায়া খিঁচে চোখ বন্ধ করে।রাহাত জড়ানো কন্ঠে বলে,
—“হ্যাঁ,ভালোবাসি।অনেক ভালোবাসি।কি করবে তুমি?”

আরিয়ান পাশ থেকে একটা বড় পাথর হাতে তুলে।মায়ার হাত ছাড়িয়ে রাহাতের সামনে ঝুঁকে পাথরটা মুখ বরাবর ধরে বলে,
—“ওর দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস করেছিস তুই।তাই তোর এই মুখটাই রাখবোনা।পাথরের আঘাতে বিভৎস করে দিব।”বলে পাথরটা দিয়ে মুখে বাড়ি দিতে নিলেই মায়া তার বাহু ধরে ফেলে।অস্থির কন্ঠে বলে,

—“আপনি আমাকে প্রমিস করেছিলেন।”

থেমে যায় আরিয়ান।মনে পরে,মায়াকে সে প্রমিস করেছিলো আর কখনো হিংস্র হবেনা।আর পাথর দিয়ে কারো মুখ থেতলে দেয়া হিংস্রতার ই পরিচয়।উঠে দাড়ায় সে।পাথরটা ছুড়ে ফেলে রাহাতের বুকের উপর পা রেখে বলে,

—“শুধু ওর জন্য বেঁচে গেলি আজকে।নয়তো তোকে কথা বলার অবস্থায় রাখতামনা।মাইন্ড ইট্।”

মায়া তার বাহুর শার্ট টেনে বলে,
—“চলুন বাসায় যাই।”

আরিয়ান পা দিয়ে একটা বুকে বাড়ি মেরে মায়ার হাত ধরে উল্টোদিকে ঘুরতেই রাহাত বলে,
—“আমার অনুভূতিগুলো আপনার কাছে একেবারই মূল্যহীন মায়া?”

মায়া দাড়ায়।ঘাড় ঘুরিয়ে বলে,
—“আপনার অনুভূতি গুলো আমার কাছে কখনোই মূল্যবান ছিলোনা তাই মূল্য অমূল্য হিসাবে না যাওয়ার শ্রেয়।,,,এসব অহেতুক অনুভূতি সামলানো শিখা উচিত আপনার।দয়া করে আর বিরক্ত করবেননা প্লিজ।”

বলেই মায়া ঘাড় ঘুড়িয়ে নেয়।রাহাত ম্লান হেসে বলে,
—“আপনি যখন বলেছেন তখন আর কখনোই কিছু করবোনা।কথা দিচ্ছি।”

মায়া কোনো অভিব্যক্তি প্রকাশ করেনা।আরিয়ানের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়।
_________________
বাসায় ফিরেই শাওয়ার নিতে ঢুকেছে মায়া।আরিয়ান খালি গায়ে বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে আছে।একহাত কপালে ঠেকানো।
এর মধ্যই বাধলো বিপত্তি।মাত্র তোয়ালে পেচিয়ে গা ভিজিয়েছে মায়া তখনই আর গরম পানির বের হচ্ছেনা।কয়েকবার সুইচটা চালু-বন্ধ করলো।কিন্তু কোনো লাভ হলোনা।তার উপর সে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে পারেনা।শীত লাগে।কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায়।পানিতে হাত দিয়ে দেখে বরফ ঠান্ডা।এভাবে কতক্ষন ভেজা শরীরে দাড়িয়ে থাকা যায়।উপায় না পেয়ে।হাল্কা করে দরজা খুলে মায়া।মুখ বের করে আরিয়ানকে শুয়ে থাকতে দেখে গলা বাড়িয়ে ডাকে,
—“একটু এদিকে আসেননা।”

কপাল থেকে হাত সরায় আরিয়ান।মায়াকে এভাবে দেখে মুখ বের করতে দেখে উঠে বসে বলে,
—“কি হয়েছে?”
—“গরম পানি বের হচ্ছেনা।গিজারে সমস্যা মনে হয়।ঠিক করে দিয়ে যান।”

আরিয়ান ভ্রু কুচকে এগিয়ে যায়।দরজার সামনে দাড়িয়ে বলে,
—“দরজা না খুললে ঢুকবো কিভাবে?”

মায়া বোকা হেসে পিছে দাড়িয়েই খুলে দেয়।দরজা দিয়ে নিজেকে আড়াল করে রেখেছে।লজ্জায় লাল হয়ে গেছে গালদুটো।আরিয়ান ভেতরে ঢুকে।সারা ওয়াশরুম জুড়ে মিষ্টি গন্ধ।তীব্রভাবে মায়ার শরীরের মোহনীয় ঘ্রানটা নাকে লাগছে।মায়ার দিকে তাকিয়ে একটা ফাঁকা ঢোক গিলে আরিয়ান।মায়ার চোখে মুখে পানি লাগা।ভেজা চুলগুলো লেপটে আছে।চুল দিয়ে গড়িয়ে পরছে পানি।দরজার পিছে দাড়ানো তবুও সে বুঝতে পারছে মায়ার শরীরে শুধু তোয়ালে পেঁচানো,ফর্সা কাঁধ বেরিয়ে আছে।আরিয়ান দৃষ্টি সরিয়ে নেয়।গিজারে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ কিছু একটা করে।তারপর মেইন সুইচ বন্ধ করে আবার চালু করে।গিজারের লাইট জ্বলে উঠে।
মায়া ঠোঁট এলিয়ে বলে,
—“ঠিক হয়ে গেছে মনে হয়।”

আরিয়ান তার দিকে তাকায়।এগিয়ে গিয়ে দরজায় হাত রেখে দুষ্টু হেসে বলে,”ঠি ক তো হয়েছেই কিন্তু তুমিতো আমার মাথা নষ্ট করে দিলে মায়াবতী।”বলে মায়ার হাত ছাড়িয়ে দরজা লাগিয়ে দেয় আরিয়ান।
লজ্জায় দুহাতে টাওয়াল আকড়ে ধরে মায়া।তার টাওয়ালটা হাঁটু অবধিও যায়নি।তার উপর ভেজা শরীর।
আরিয়ানের গায়ে জামা নেই।লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছে মায়া।
আরিয়ান তার কোমড়ে হাত রাখতেই কেঁপে উঠে চাপা স্বরে বলে,
—“কি করছেন?বাইরে যান”

আরিয়ান তাকে কোমড় টেনে কাছে আনে।কাঁধ থেকে ভেজা চুল সরিয়ে দিয়ে চার আঙ্গুল দিয়ে গলার সাইডে স্লাইড করে।ঠোঁট কামড়ে ধরে মায়া।আরিয়ান তাকে কোণা থেকে সরিয়ে ঝর্ণার নিচে দাড়া করায়।একহাত দেয়ালে রেখে ঝর্ণা ছেড়ে দেয়।মুহূর্তেই ভিজে যেতে থাকে দুজনে।আরিয়ানের খালি বুকে হাত রাখে মায়া।একহাত কাঁধে আর একহাত বুকে।
চোখের উপর পানি পরায় ঠি কমতো তাকাতে পারছেনা।পিটপিট করে তাকিয়ে বলে,
—“আ..আপনি…

আরিয়ান তার ঠোঁটে হাত রাখে।আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করে বলে,
—“তোমার শরীরের গন্ধটায় কেমন যেন একটা মাদকতা আছে মায়াবতী।নিজেকে একদমই আটকাতে পারছিনা।”
বলে মায়ার গালে চুমু খায় আরিয়ান।মুখ নামিয়ে কাঁধে ঠোঁট ডুবায়।মায়া কোনরকম বারণ করেনা।আরিয়ান কাছে আসায় তার ঠোঁট আরিয়ানের খালি বুক স্পর্শ করেছে কয়েকবার।অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে শরীরে।গরম
পানি পরছে তবুও কেমন একটা কাঁপুনি দিচ্ছে শরীরে।খানিক পরে আরিয়ান মুখ উঠায়।গালে নাক ঘষে ঠোঁটের কোঁণায় ছোট্ট করে চুমু দিয়ে বলে,
—“জলদি শাওয়ার নিয়ে নাও।বেশিক্ষন ভেজা শরীরে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে।”

—“আপনিও তো ভিজে গেছেন।”

—“সমস্যা নেই।রুমে চেন্জ করে নিচ্ছি।”

বলে তাকে ছেড়ে দাড়ায় আরিয়ান।আপাদমস্তক একবার মায়ার সারা শরীরে চোখ বুলায়।মায়া টাওয়াল আকড়ে ধরে দেয়ালের সাথে লেপটে থাকে।আরিয়ানের এভাবে তাকানোয় আরো বেশি লজ্জা লাগে।
আরিয়ান ধরা গলায় বলে,
—“তুমি অনেক সুন্দর মায়াবতী।অনেক বেশি সুন্দর।”বলে এগিয়ে এসে তার গালে হাত রেখে কপালে ঠোঁট ছুইয়ে দিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।

মায়া সেভাবেই কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকে।আরিয়ান সুন্দর বলতে কেমন সুন্দর বুঝিয়েছে সেটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তার।
এগিয়ে গিয়ে দরজাটা আটকে দেয় সে।আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেই হেসে ফেলে।গালের লাল আভাটা মনে হয় আজ সারাদিনেও সরবেনা।

~চলবে~

#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা_মালিহা_খান❤️
#পর্ব-৩০(ভালবাসা দিবসের বিশেষ পর্ব)

ভার্সিটির পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত পরশু।টানা পনেরদিনের পরীক্ষা শেষে বেশ ক্লান্ত মায়া।এই কয়দিন রোজ তাকে ভার্সিটি নিয়ে গিয়েছে আরিয়ান।সকালের অফিস বাদ দিয়ে তিনঘন্টা বসে থেকে তাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে বিকেলবেলা অফিসে গিয়েছে।ফিরতো রাতের বেলা।তবে শত ব্যস্ততার পরেও মায়াকে রোজ রাতে বুকে নিয়ে ঘুমাতে ভুলেনি।ক্লান্ত শরীরে বাসায় ফিরে সর্ব প্রথম মায়ার কপালে উষ্ণ স্পর্শ দিতে একদিনও দেরি হয়নি।

আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে বিছানায় একা অবস্থায় পেলো মায়া।প্রতিদিন আরিয়ানের বুকেই ঘুম ভাঙে তার।সে যতক্ষন না উঠে ততক্ষণ আরিয়ানের ঘুম ভেঙে গেলেও ও উঠে না।তবে আজকে কই গেলো?
গায়ের কম্বল সরিয়ে উঠে বসলো মায়া।রুম অন্ধকার করা।সে উঠে গিয়ে পর্দা সরিয়ে দিলো।অনেকটা বেলা হয়ে গিয়েছে।কাল রাতে খুব মাথা ব্যাথা করছিলো।আরিয়ান বেশ রাত পর্যন্ত মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছে।শেষে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে মনে নেই।
আড়মোড়া ভেঙে কাবার্ড খুললো সে।ভালো লাগছেনা।শাওয়ার নিলে হয়তো একটু ফ্রেশ লাগবে।জামাকাপড় নেয়ার উদ্দেশ্য কাবার্ড খুলতেই ভ্রু সংকুচিত হয়ে এলো তার।কাবার্ডের একটা কর্ণারে শাড়ি রাখা,সাথে কাঁচের চুরি,কানের দুল,গলার লকেট,সাজগোজের প্রসাধনীসহ সম্পূর্ণ তৈরি হতে মেয়েদের যা যা লাগে সেসব রাখা আছে।কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে শাড়িটা হাতে নিল মায়া।বেশ সুন্দর!লাল শাড়িতে লাল সুতা আর স্টোনের কাজ করা তবে কেমন যেন ঝিকমিক করছে শাড়িটা।আলোর রিফলেক্ট পরলে একেবারেই ছোট ছোট পাথর গুলা জলজল করছে।মুখে প্রশস্ত হাসি ফুটে উঠলো মায়ার।এতসব কিছু কিনলো কখন আরিয়ান আর এখানে রাখলোই বা কখন।শাড়ির ভাঁজ খুলতেই একটা একটা কাগজ নিচে পরে গেল।মায়া শাড়িটা একহাতে ধরে দ্রুত ঝুকে গিয়ে কাগজটা উঠালো।কাগজটা চোখের সামনে মেলতেই চোখ আটকে গেলো লেখা গুলোর মধ্যে,

আমার মায়াবতী,
তোমাকে প্রিয় বলে সম্মোধন করছিনা কারণ তুমি আমার প্রিয়র থেকেও অনেক বেশি কিছু।”প্রিয়” নামক ছোট্ট একটা শব্দে তোমাকে বিশ্লেষণ করার যৌক্তিকতা আমি খুঁজে পাইনি।তোমাকে”আমার”বলতেই শান্তি লাগে।তুমি শুধুই আমার।সম্পূর্ণই আমার।
সে যাই হোক,জিনিস গুলা খুব শখ করে কিনেছি আমি।এসব কখনোই কিনা হয়নি এই প্রথমবার কিনেছি,জানি তোমার পছন্দ নাও হতে পারে তবুও তোমাকে এগুলা পরতে হবে।এক ঘন্টার জন্য হলেও পরতে হবে।শুধু আমি একনজর মনভরে দেখবো তারপর না হয় খুলে ফেলো সব।
আর যদি একদমি পরতে ইচ্ছে না হয় তবে পরোনা।তোমার উপর রাগ করার স্বাধ্যি নেই আমার।তবে কষ্ট পাবো।সেই কষ্ট লাঘব করার জন্যও আবার সেই তোমাকেই লাগবে।তাই বলছি,পারলে আমার ইচ্ছেটা রেখো।আমার দেয়া রুপে নিজেকে সাজিও।

বি:দ্র:জিনিসগুলো তোমাকে সামনাসামনিই দিতে চেয়েছিলাম।কিন্তু দেয়া হলোনা।অফিসে খুব জরুরি একটা কাজের জন্য বেরিয়ে পরতে হলো।ভেবেছিলাম তোমার ঘুম ভাঙিয়ে তারপর দিব।কিন্তু কি হলো জানো?পাক্কা পঁচিশমিনিট সময় নিয়েও তোমার ঘুমন্ত শরীরে একটা টোঁকা পর্যন্ত দিতে পারলাম না।যদি তুমি জেগে যাও অথচ আমি কিন্তু তোমাকে জাগানোর চেষ্টাই করছিলাম।কি অদ্ভুত তাইনা?

নিশ্চয় ভাবছো,আমি এতো কাব্যিক হলাম কবে?কাবার্ডের বামপাশের ড্রয়ারটা খুলে দেখ।উওর পেয়ে যাবে।

ইতি তোমার,
“আপনি”

এতক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মতো চিঠিটা পরলেও শেষে এসে হেসে ফেললো মায়া।আরিয়ান নিজেকে “আপনি”বলে সম্মোধন করেছে কারণ আজ পর্যন্ত আরিয়ানকে সে “আপনি”ব্যাতিত অন্যকোনো নামে ডাকেনি।নাম ধরেতো কখনোই না।মুখে প্রশস্ত হাসি টেনে চিঠিটা স্বযত্নে ভাঁজ করলো মায়া।পুনরায় কাবার্ডের রেখে দিল।শাড়িটা রেখে বাকি জিনিস গুলা দেখতেই সবচেয়ে বেশি অবাক হলো ব্লাউজ দেখে।শাড়ির সাথে ম্যাচ করা লাল ব্লাউজ তাও আবার একদম ওর মাপ মতো।
চিঠির লাস্টের কথাটা মনে পরতেই তড়িঘড়ি করে বামপাশের ড্রয়ারটা খুললো সে।সাথে সাথেই কতকগুলো মুড়ানো কাগজ তার পায়ের কাছে গড়িয়ে পরলো।হতভম্ব হয়ে চেয়ে রইলো মায়া।প্রায় বিশ পচিশটা মুড়ানো কাগজ দিয়ে ড্রয়ের ভরা।মানে আরিয়ান কতবার যে চিঠি লিখেছে আর কেটেছে সেটারই হিসাব।পুনরায় একচোট হেসে নিয়ে কাগজগুলো আবারো ড্রয়েরে ঢুকিয়ে রাখে মায়া।
অত:পর একটা থ্রিপিস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
গোসল শেষে চুল শুকাচ্ছে তখনই দরজায় নক করার শব্দ হলো।ইতির কন্ঠ শোনা যাচ্ছে,
—“ম্যাম,আপনি উঠেছেন?”
—“হ্যাঁ ইতি।আসো।
দরজা খুলে প্রবেশ করলো ইতি।তার হাতে খাবারের প্লেট।মায়া তোয়ালেটা কোনোরকম মাথায় পেঁচাতেই
ইতি বললো,
—“আমি চুল মুছে দেই ম্যাম।আপনি খান।স্যার আপনাকে সময়মতো খাইয়ে দিতে বলেছে।”

মায়া মৃদু হেসে বিছানায় বসলো।ইতি মায়ার হাতে প্লেট দিয়ে তার পিছে বসে আস্তে আস্তে মাথা মুছতে লাগলো।

—“আপনি কত লাকি ম্যাম!”

—“কেনো?”

—“এই যে আরিয়ান স্যার আপনাকে এত ভালোবাসেন।কারো ভালোবাসা পাওয়া অনেক সৌভাগ্যর ব্যাপার।”

মায়া লাজুক হেসে মুখে খাবার তুলে নিল।হঠাৎ কিছু একটা মনে পরতেই সে বললো,
—“তুমি শাড়ি পরাতে পারো ইতি?”
ইতি খানিকটা ঝুকে সন্ধিহান কন্ঠে বললো,
—“জি পারি।কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্ন?”
—“না কিছুনা।চুল মুছো।”

________________
রাত ৯টা
মায়ার হাতে লাল কাঁচের চুরি,স্টোনের লাল কানের দুল,গলায় একটা ছোট্ট লকেট।চোখে শুধু কাজল দেয়া আর গাঢ় লাল লিপস্টিক।যদিও লিপস্টিকটা একটু কেমন যেন লাগছে মায়ার।কখনো এতো গাঢ় কালার লাগায়নি সে।সুন্দর তবে মনে হচ্ছে আরিয়ানের পছন্দ হবেনা।
এখন শুধু শাড়িটা সম্পূর্ণ পরা বাকি।পায়ের কাছে বসে কুচি ঠিক করছে ইতি।তার মুখে দুষ্টু হাসি।একটু পরপরই মায়াকে এটা ওটা বলে চেতাচ্ছে সে।
কুচি গুঁজে দিয়ে আঁচলটা জড়িয়ে দিতেই একদম তৈরি হয়ে গেলো মায়া।

ইতি তার চুলগুলো আঁচরে দিতে দিতে বললো,
—“আরিয়ান স্যারতো এমনিতেই আপনাকে চোখে হারায়।আজকে যে কি হবে?”বলেই ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো।

মায়া চোখগুলো ছোট ছোট করে বললো,
—“তুমি মনে হচ্ছে খুব এক্সপেরিয়েন্সড।”

ইতি জিভ কেটে বললো,
—“ধ্যাত্,কিসব বলছেন?”

—“আর তুমি যে আমাকে এতক্ষণ ধরে চেতাচ্ছ?”

ইতি বোকা হেসে আর কিছু বলেনা।মায়ার চুলগুলো আচড়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।মায়া একবার ঘড়িতে তাকায়।নয়টা বেজে বিশ মিনিট।সাড়ে নয়টা বা দশটার মধ্যই অফিস থেকে ফিরে আরিয়ান।
মায়া ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ায়।এখান থেকে বাড়ির মেইন গেট সম্পূর্ণ দেখা যায়।আরিয়ানের গাড়ি ঢুকলে এখান থেকেই দেখতে পারবে।

বেশ খানিকটা সময় পার হয়ে গেলেও আরিয়ানের দেখা নেই।মায়া অধৈর্যভাবে কিছুক্ষন পায়চারি করে।ঘড়ির কাঁটা দশটা ছুইছুই।ক্লান্ত একটা নি:শ্বাস ফেলে ব্যালকনির এককোণে রাখা দোলনায় বসে পরে সে।উদ্বেগ নিয়ে সদর দরজার দিকে চেয়ে থাকে।আরো অনেকক্ষন পার হয়ে যায়।আরিয়ান ফেরেনা।


পৌনে এগারোটার দিকে বাড়িতে ফিরে আরিয়ান।গাড়ি থেকেই দেখতে পায় নিজের রুমের লাইট অফ ব্যালকনিও অন্ধকার।একটা দীর্ঘ:শ্বাস ছাড়ে আরিয়ান।মায়া মনেহয় ঘুমিয়ে পরেছে।দ্রুত বেরিয়ে পরণের ব্লেজার খুলতে খুলতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে থাকে।রুমে ঢুকে বুঝতে পারে সেখানে কেউ নেই।লাইট বন্ধ।মায়া কি তাহলে ওয়াশরুমে?ব্লেজারটা বিছানায় রেখে লাইট জ্বালায় আরিয়ান।ওয়াশরুমের দরজায় টোঁকা দিয়ে বলে,”মায়া?তুমি ভেতরে?”
উওর আসেনা।দরজার লক ঘুরাতেই খুলে যায় সেটা।নাহ্ ভেতরে নেই মায়া।তবে?ব্যালকনির দরজাও আটকানো।রোজ তো রুমেই থাকে।তবে কি মায়া তার দেয়া জিনিসগুলো দেখে রাগ করলো?মুহুর্তেই নিজের উপর বিরক্তি ছেঁয়ে গেল আরিয়ানের।শুধু শুধু কেন যে ওসব করতে গেলো?তার বোঝা উচিত ছিল মেয়েটা এখনো খুব ছোট।”চাপা কষ্ট নিয়ে তার পাশের রুমের দিকে পা বাড়ালো।সেখানেও মায়াকে না পেয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট হয়ে উঠলো তার।দ্রুত নিজের রুমে এসে ব্যালকনির দিকে পা বাড়ালো।মায়া বাগানে থাকলে ওখান থেকে দেখা যাবে।
ব্যালকনির কাঁচের দরজা খুলতেই থমকে গেলো আরিয়ান।গোল দোলনায় পা ভাজ করে গুটিশুটি হয়ে ঘুমোচ্ছে মায়া।পরণের শাড়ির আচঁল কাঁধ থেকে পড়ে গেছে।দু হাত কোলের উপর রেখে ঘাড় কাত করে ঘুমিয়ে গিয়েছে সে।
আরিয়ান বেশ কিছুক্ষন সময় মায়ার দিকে মুগ্ধ নয়নে চেয়ে থাকলো।মেয়েটাকি আজ তার জালে তাকেই জব্দ করবে?তাকে পাগল করার প্রতিজ্ঞা করে সাঁজতে বসেছিলো মনে হয়।ঠোঁট কামড়ে মায়ার কাছে এগিয়ে যায় সে।মায়াকে শাড়ি পরলে এতোটা সুন্দর লাগবে আগে জানলে জীবনেও শাড়ি কিনতোনা সে।

মায়ার দিকে ঝুকে গিয়ে তার আচঁলটা কাঁধে উঠিয়ে দেয় আরিয়ান।তার জন্য অপেক্ষাময়ী এক অতি আবেদনময়ী রমনী মায়া।আরিয়ান তার দু গালে হাত রেখে কপালে গভীরভাবে ঠোঁট ছোঁয়ায়।
গালে ঠান্ডা হাতের স্পর্শে আর কপালে চিরচেনা অধরের ছোঁয়ায় ঘুমাচ্ছন্ন তন্দ্রা কেটে যায় মায়ার।পিটপিট করে তাকাতেই বুঝে আরিয়ানের চিবুক তার চোখের সামনে।আরিয়ান তখনো তার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে রেখেছে।মায়া ঘুম ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে,
—“আপনি সত্যিই এসেছেন?নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি?”

আরিয়ান চুম্বনরত অবস্থাতেই হেসে ফেলে।ঠোঁট সরিয়ে বলে,
—“সত্যিই এসেছি ঘুমন্ত পরি।”

মায়া নড়েচড়ে উঠে।হাত নাড়ানোয় কাঁচের চুড়ি তে শব্দ হয়।ঘাড় ঠি ক করে সোজা হয়ে বসে চোখ কলাতেই নিলেই আরিয়ান তার হাত ধরে ফেলে বলে,”কাজল ছড়িয়ে যাবে”।
মায়ার ততক্ষনে হুঁশ হয় সে যে সেজেগুজে বসে আছে।লজ্জা লাগলেও মুখে প্রকাশ করেনা।দৃষ্টি নিচে নামিয়ে বলে
—“এত দেরি করলেন কেন?”

আরিয়ান তার দোলনার দু পাশে হাত রেখে আছে।মায়ার কথায় একহাত দিয়ে আবারো মায়ার পরে যাওয়া আচঁল ঠি ক করে দিয়ে বলে,
—“তুমি কি জানো তোমাকে কতটা সুন্দর লাগছে?”

মায়া মুদ্রিত নয়নে আরিয়ানের দিকে তাকায়।মুখের চুলগুলো কানের পিছে গুঁজে দিয়ে চুপ করে থাকে।আরিয়ান উঠে দাড়ায়।ঘরের লাইট নিভিয়ে দরজা লক করে আসে।ব্যালকনির হলুদ বাতিতে লাল শাড়ি পরিহিত মায়াকে দেখে আরো একবার হৃদপিন্ডটা লাফিয়ে উঠে তার।ততক্ষনে উঠে দাড়িয়েছে মায়া।
আরিয়ান মৃদু হেসে তার কাছে যেয়ে দাড়ায়।পকেট হাতরে একটা বক্স বের করে।বক্সটা খুলে কিছু একটা বের করে মায়ার সামনে একহাঁটু গেড়ে বসে যায়।নিজের হাত বাড়িয়ে মায়াকে ইশারা করে।মায়া জিজ্ঞাসু নয়নে
তাকিয়ে আরিয়ানের হাতের উপর হাত রাখে।আরিয়ান একটা সাদা পাথরের জলজল করা আংটি মায়ার অনামিকা আঙ্গুলে পরিয়ে দিতে দিতে বলে,
—“আমার মায়াবতীর জন্য ছোট্ট একটা ভালোবাসার প্রতীক।”বলে হাতের উল্টো পিঠে ঠোঁট ছোঁয়ায় আরিয়ান।

মায়া বিস্মিত নয়নে হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে।খুশিতে কান্না পাচ্ছে তার।আরিয়ান উঠে দাড়িয়ে মায়াকে বুকে জড়িয়ে নেয়।ধীর কন্ঠে বলে,
—“এটার জন্যই দেরি হচ্ছিল মায়াবতী।অর্ডার দিয়ে ছিলাম এক সাইজের ওরা বানিয়েছিলো এক সাইজ বেশি।এখন আংটি কাটিয়ে সাইজ মতো করে আনলাম।ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো।কিন্তু এতরাতে আর বাইরে বের হতে ইচ্ছে করছেনা।তোমার উপর চাপ হয়ে যাবে।”

মায়া কিছু উওর দেয়না।আরিয়ানের বুক থেকে মাথা সরাতে ইচ্ছে করছেনা।দু হাত দিয়ে আলতো করে আরিয়ানের পিঠ আকড়ে ধরে।আরিয়ান তার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতেই হাল্কা ফুঁপিয়ে উঠে মায়া।

—“আরে কাঁদছো কেন?কাজল নষ্ট হয়ে যাবে মায়া।”

মায়া চুপ হয়ে যায়।আরিয়ান তাকে বাহু ধরে ছাড়ায়।মায়ার শাড়ি আবারো এলোমেলো হয়ে গেছে।এবার না পেরে আচঁল কাঁধে উঠিয়ে নেয় মায়া।শাড়ির ফাঁক দিয়ে মসৃন কোমড় দৃশ্যমান হয়ে উঠে।আরিয়ান ঠোঁট কামড়ে সেদিকে তাকিয়ে বলে,
—“আমাকে কি মারার প্ল্যান করেছো আজ?”

—“মানে?”

আরিয়ান মায়ার উন্মুক্ত কোমড়ে হাত গলিয়ে দেয়।শীতল স্পর্শে কেঁপে উঠে মায়া।আরিয়ান একহাত বাড়িয়ে ব্যালকনির লাইট নিভিয়ে দেয়।মায়াকে রেলিং এর সাথে হেলান দিয়ে কাঁধের আচঁল সরিয়ে সেখানে মুখ ডুবিয়ে দেয়।মায়া চোখ বন্ধ করে ফেলে।উষ্ণ আবেগে তাকে ভরিয়ে দিতে থাকে আরিয়ান।
নিজের তৃষ্ণা মিটিয়ে মুখ উঠিয়ে ফেলে।জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে মায়াকে ছেড়ে দাড়ায়।

চাঁদের ক্ষীণ আলো এসে পরেছে ব্যালকনিতে।মায়া তখনো চোখ বন্ধ করে রেখেছে।আরিয়ান শার্টের উপরের দুটো বোতাম খুলে দোলনায় বসে।মায়ার হাত টেনে তার কোলে বসায়।প্রচন্ড লজ্জায় নিয়েই আরিয়ান কাঁধে মাথা রাখে মায়া।আরিয়ান মোহনীয় কন্ঠে বলে,
—“আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখ মায়াবতী,এই এত বিশাল কালো আঁধারে ঢাকা আকাশে সবচেয়ে উজ্জল যে তারাটা দেখতে পাচ্ছো না?সেটা হচ্ছে সন্ধ্যাতারা।তেমনি আমার অন্ধকার জীবনের সেই একমাত্র সন্ধ্যাতারাটা হচ্ছে তুমি।”

—“আকাশের সন্ধ্যাতারাটা আমি হলে আপনি কি জানেন?আপনি হলেন ওইযে ওই চাঁদটা।যে কিনা প্রতিনিয়ত আমার জীবনে আলো ছড়াচ্ছেন।”

আরিয়ান ঠোঁটে প্রশস্ত হাসি টেনে বলে,
—“আংটি পছন্দ হয়েছে?”

—“খুব বেশি”।

আরিয়ান তার চুলে নাক ঘষে।চুল থেকে শ্যাম্পুর ঘ্রাণ আসছে।নেশা ধরে যাচ্ছে আরিয়ানের।চুলে নাক ডুবানো অবস্থাতেই মায়া জড়তা নিয়ে বলে,
—“আপনি আমাকে আদর করেননা কেন?”

—“আমি আদর করিনা?আমি চুমু খেলেইতো তুমি লজ্জায় শেষ হয়ে যাও।তারপরও রোজ নিয়ম করে কয়বার চুমু দেই বলতো?”

মায়া মাথা নুইয়েই বলে,
—“আমি এই আদরের কথা বলিনি।যেটার কথা বলছি সেটা আপনি বুঝতে পারছেন,আমি জানি।”

আরিয়ান তার চুল থেকে নাক সরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে,
—“তুমি এখনো ছোট মায়া।”

—“আমি ছোট না।আমার আদর লাগবে”

—“পাগলামি করোনা।”

মায়া হুট করেই আরিয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে মুখ তার দিকে ঘুড়িয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়…

~চলবে~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে