আঁধার পর্ব-১৩ | ১৮+ এলার্ট

0
3731

আঁধার

১৩.

( ১৮+ এলার্ট )

ঘুটঘুটে অন্ধকারে পড়ে আছি আমি। অন্ধকারের ঘনত্ব এতো বেশি হতে পারে জানা ছিলো না আমার। এতো অন্ধকারে চোখ ব্যথা করে। মাথার মধ্যে খুটখুট একটা শব্দ হচ্ছে। শব্দের তীব্রতা ধীরে ধীরে বাড়তেছে। কপালের দুপাশের রগের দপদপানি বাড়তেছে। আমি তো এখানে ছিলাম না। বিছানায় মা’য়ের দেয়া কম্বল জড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। তাহলে এখানে আসলাম কীভাবে? ডান হাতের বুড়ি আঙ্গুলে কুটকুট করে কিছু একটা কামড়াচ্ছে৷ হাত সরিয়ে নেয়া উচিৎ আমার। কিন্তু এক চুলও নড়তে পারতেছি না। কেউ আছে কিনা? এই প্রশ্নও করতে পারতেছি না। আশেপাশের অন্ধকারের ঘনত্ব বাড়তেছে। খুটখুট শব্দও বাড়তেছে। সবকিছুই বাড়তেছে। এমনকি হাতের আঙ্গুলের কামড়ের মাত্রাও বাড়তেছে। কতক্ষণ এভাবে চলবে আল্লাহ ভালো জানেন। ইয়া আল্লাহ আমাকে বাঁচাও। মনে মনে দোয়া ইউনুস পড়তে লাগলাম৷ মা বলেন, বিপদে পড়লে এই দোয়া পড়তে হয়। হঠাৎ ক্যাচক্যাচ শব্দ হলো। শব্দের উৎস থেকে তীব্র আলো চোখের উপর এসে পড়াতে। চোখ বন্ধ করতে বাধ্য হলাম। দীর্ঘক্ষণ অন্ধকারে থাকলে এমন হয়। আলোর উৎস থেকে কয়েকজনের চাপাস্বরের কথা কানে আসছে। কিন্তু কী বলতেছে বুঝতে পারতেছি না৷ এতক্ষণে আলো সয়ে গেছে ভেবেই চোখ খুলে তাকানোর চেষ্টা করলাম। দরজার কাছে তিন চারজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। তারা নিজেদের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে তীব্র তর্ক বির্তক করছে।সংখ্যায় তারা চারজন।
কিছু সময় পরে চারজন ভেতরে এসে দরজা আটকে দিল। তারপর তাদেরই একজন লাইট জ্বালিয়ে দিল। লাইটের আলোয় তাদেরকে স্পষ্ট দেখতে পারলাম। ভয়ে ভেতরটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল আমার। আমি মেঝে থেকে উঠে বসার চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু পারলাম না। হাত পা এক ইঞ্চিও নাড়াতে পারলাম৷

” মিলু, এই মিলু! এই মাইয়া এমন হাত পা ছুড়তেছিস ক্যান? এই মিলু এমন গোঙাচ্ছিস ক্যান? ” মা’য়ের কান্নাজড়িত কণ্ঠ কানে আসল। এর অর্থ আমি আমার বাসাতেই আছি। স্বপ্ন দেখছিলাম।

” মা, আমি স্বপ্ন দেখছিলাম। আমার কিছু হয়নি মা। ” কিন্তু মুখ দিয়ে একটা শব্দও বের হলো না।

” হ্যাগো মিলুর বাপ, ডাক্তার ডাকো না ক্যান? মাইয়া কেমন করতেছে। হায় আল্লাহ আমার মিলুর কী হইলো? ” বাবাকে উদ্দেশ্য করে মা বললেন।

” তুমি এতো অস্থির কেনো হচ্ছ? আমি তো মামুনকে ফোন করেছি। তার আসতে তো সময় লাগবে, নাকি? ”

” অস্থির ক্যান হবো না? আমি তো মা, মা’য়ের মন আমার। আল্লাহ জানতেন ও এতো অসুস্থ হবে। তাই ওকে আমার কাছেই নিয়ে আসছেন।”

” ছোট জামাইও কোন আক্কেলে ওকে একা পাঠাল। রাস্তায় যদি কিছু হয়ে যেত? ”

” এই চিন্তা তুমি পরে কইরো। আগে মেয়ে বাঁচাও। জন্ম হওয়ার পরে তো দুই মাস পর্যন্ত চেহারা দেখো নাই। ”

” এই খোঁটা আর কতদিন দিবা? আমি তো বলেছিই আমার চরম ভুল ছিলো। তুমি এই প্রসঙ্গে আর কতদিন আমাকে কথা শুনাবা? ”

” যতদিন না মিলু সুখী না হয়। আমার মেয়েরে আমি সুখী দেখতে চাই। ”

” আল্লাহর রহমতে ও সুখী হবে। তুমি আর কান্নাকাটি কইরো না। মেয়ে এমনিতেই অসুস্থ তার উপর জামাই ফোন রিসিভ করতেছে না। কী যে জ্বালা! ”

বাবা আমাকে নিয়ে চিন্তাও করেন? অবাক হলাম। আমার এখনই ইচ্ছে করছিল বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলি, ” বাবা, তোমাকে আমি ভালোবাসি। ”
বাবাকে কখনো এই কথাটা বলা হয়নি। মনে হয় আর কোনোদিন হবেও না!

( রাসেল )

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

ধানমণ্ডি দুইয়ের রোড ঊননব্বই – এর দশ তলা আলিশান এপার্টমেন্টের সামনে এসে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়লো। ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে ভেতরে ঢোকার সময় দারোয়ানের কাছে সব ইনফরমেশন দিতে হলো। ঢাকার রিচ এলাকা গুলোতে এমনই নিয়ম। এখানে কে আসল আর গেল সেই খেয়াল দারোয়ানের রাখতেই হয়। তা নাহলে চুরি, ডাকাতি, খুন, রেপ যাইই হোক। তার জন্য তাকেই সবচেয়ে বেশি জবাবদিহি করতে হবে। এলিভেটরে উঠে ছয়তলা ফ্লোরের উদ্দেশ্যে নিজেকে প্রস্তুত করলাম৷ দীর্ঘ সাত মাস পরে ওর সাথে দেখা হতে যাচ্ছে।
ছয়া তলায় এসে এলিভেটর থেমে গেল। ভাগ্যিস এলিভেটরে একাই ছিলাম। আশেপাশের মানুষ যত কম দেখবে ততই ভালো। যদিও এরা কে কী করলো দেখে না। আর আমি এখানে আসিই একদিনের জন্য। তারপর ঢাকার কোনো একটা আবাসিক হোটেলে উঠি। সেখানেই আমাদের দেখা হয়। এখানে আসি শুধু ওর জন্য না৷ অন্য একটা কারণ আছে। কলিং বেল চাপ দেয়ার সাথে সাথে দরজা খুলে গেল। হাসিখুশি একটা মানুষ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সাদা রঙের জামদানীতে তাকে ডানাকাটা পরীর মতো লাগছে।
” হয়েছে অনেক দেখেছ। এখন ভেতরে আসো। ” রাকা সুন্দর করে হেসে কথাটা বলল। হাসলে এই মেয়েকে স্বর্গের অপ্সরা মনে হয়। আমার দেখা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারী!
আমি ভেতরে ঢুকে দরজা লক করে দিলাম। ব্যাগ কাঁধ থেকে নামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ” ওশান কই? ”
রাকা শাড়ীর আঁচল ঠিক করতে করতে বলল, ” শ্বাশুড়ি আম্মা জোর করে এক সপ্তাহের জন্য ওকে নিয়ে গেছেন৷ আমি এতো নিষেধ করলাম। শুনলোই না। আর মাহমুদও জোর করলো। ”
” ওহ। তাহলে আমাদের ভালোই হলো। বিরক্ত করার কেউ রইলো না। ”
” হ্যাঁ, এটা ভেবে ওকে পাঠিয়ে দিলাম। কতদিন পর তোমার সাথে দেখা হচ্ছে। একটু নিরিবিলি, শান্তিতে গল্প করতে যদি না পারি। তাহলে তো আসাটাই বৃথা! ”
আসন্ন মুহুর্তের কথা ভেবে মেরুদণ্ড দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। সকালে ঠিক এমন কিছুই হয়েছিল। মিলার হাসি দেখে। ধুর! কার সাথে কাকে মিলাচ্ছি আমি? কোথায় অপ্সরা আর কোথায় গোয়ালিনী!
রাকা শাড়ীর খুলে ফেলে দিল ফ্লোরের উপর। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে ব্লাউজের বোতাম খুলতে লাগলো। আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। ব্লাউজের সবগুলো বোতাম খোলা হয়ে গেল। ব্লাউজও খুলে ফ্লোরে ছুড়ে মারল। সাদা ব্লাউজের নিচে সাদা রঙের চিকেনের ব্রা দেখা যাচ্ছে। সাদা গোলাপের মতো রঙ আর বেলীফুলের মতো ঘ্রাণ ওর ত্বকের। এই এক টুকরো কাপড় ওর বুকের সৌন্দর্য ঢেকে রেখেছে।
রাকা ব্রায়ের একটা স্ট্র‍্যাপ টেনে নিচে নামিয়ে বলল, ” কী শুধু দেখবেই নাকি… ” এভাবে স্বর্গের অপ্সরা কাছে ডাকলে কোন মহাপুরুষ নিজেকে আটকে রাখতে পারে? আমি তো পারিনা। তার উপর আমি তার একজন খাঁটি প্রেমিক!
আমি তার দিকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলাম। একটা সেকেন্ডও অপচয় করা যাবেনা। মরে গেলেও না।

চলবে…( গল্পের লেখিকা এখনো বাকি পর্ব গুলো প্রকাশ করে নাই বাকি পর্ব গুলা প্রকাশ হলে এখানে যোগ করে দেওয়া হবে ততদিনে অপেক্ষা করুন।)

~ Maria Kabir

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে