অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব

1
1392

#অলক্ষ্যে_তুমি #শেষ_প্রহর #Yasira_Abisha (#Fatha)

প্রাক্তনের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে শুনে আমারো প্রায় ১০ দিনের ভিতর বিয়েটা হয়ে গেলো পরশ নামক ছেলেটার সাথে। পরশ একজন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা, দেখতেও বেশ সুদর্শন অমায়িক একজন ভদ্রলোক। ইরাদের থেকে একদম বিপরীত একজন মানুষ, তাকে আমি প্রথম দিকে মেনে নিতে পারিনি খুব কষ্ট হয়েছে। প্রায় ১ বছর সময় লেগেছে। প্রথমে আমি আর পরশ বন্ধু হয়েছি এরপর আস্তে আস্তে আমাদের সম্পর্ক আগে বেড়েছে। মায়ের কসমের কারনে আমি পরশকে আমার অতীত বা কোনোদিন মা হতে পারবো না এই একটা ব্যাপার ও জানাতে পারি নি। দিনে দিনে আমাদের মধ্যে একটা ভালো বোঝাপড়া হয়েছে, আমিও তার অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত রাখি নি যদিও সময় নিয়েছি অনেক কিন্তু আমার এই জীবনের জন্য তো সে দায়ী না। একটা সময় তার প্রতি আমারো ভালো লাগা কাজ করে হয়তো বা তার ভদ্রতা মানুষের প্রতি বিনয়ী ব্যাবহার সব কিছু আমার ভালো লেগেছে সেই থেকে একটা ভালো লাগা শ্রদ্ধা কাজ করেছে আর এই নিয়েই সম্পর্কটাকে আগে বাড়িয়েছি। এখন ইরাদের কথাও আর আগের মতো মনে হয় না, সংসার অফিস সব নিয়েই ব্যাস্ত থাকি। পরশ কিন্তু একদম টিপিক্যাল একজন বাঙালি পুরুষ। আমার ভালো-মন্দ দেখে ঠিকি তবে কোনো প্রেমিকের মতো না। হয়তো বা আমি তার প্রেমিকা না, আমি স্ত্রী এইজন্যই। তার কাছে আমি না কোনো ধরনের আশাও করি না, আসলে ইচ্ছাও করে না আগের মতো প্রেমিকা মনটা নেই তো এইজন্যই। সবকিছুই ঠিকঠাক ভাবে চলছে। একদম স্নিগ্ধ শীতল। তারপরেও এসবের ভেতরে মাঝে মাঝে ইরাদের কথা মনে পড়ে। যখন দেখি কেউ তার বউ বা প্রেমিকার জন্য পাগলামি করে। ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে কাপলদের দেখি স্পেশাল কিছু করতে। কারো মুখে যখন শুনি “সুইটহার্ট” তখন আমার সুন্দর সাজানো গোছানো জীবনটা এলোমেলো হয়ে যায়।
অনেক ফিল্মি ছিলো ও, তাই এখন আমি নাটক ছবি দেখি খুব কম। কোনো প্রেমিকাকে তার প্রেমিক যদি সুইটহার্ট ডাকে আমি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। হুটহাট হাত টেনে ধরে নিজের কথা মানানো, কথা না শুনলেই টেনে কোলে তুলে নেওয়া, আমি জেদ করলে তার থেকেও বেশি জেদ আদুরে ভাবে যেনো আমি কষ্ট ও না পাই আর তার কাজও হয়ে যায় এসব কিছু হুটহাট মনে হয়। কতো বেশি চেষ্টা যে করি এসব একদম মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে তারপরেও জীবনের এমন একটা অংশ ইরাদ যা মুছে ফেলতেও পারি না। এই মানুষটা আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা তো, তাকে ভাবলে কষ্ট গুলো কোথা থেকে যেনো আমার জীবনে ফিরে আসে। ভাবতেই চাইনা একটুও তবুও ভেবে বসি।

.

বেশ কিছুদিন ধরে কিছুই খেতে পারছি না, শুধু বমি আসে মাথাটাও ধরে থাকে, শরীরে শক্তি পাই না একদমই। ভাবছি ডাক্তার দেখাতে হবে হয়তো এসিডিটি হয়ে গেছে। এদিকে পরশ আর ওর মা বাবা ভাবছে আমি প্রেগন্যান্ট। তবে আমিতো জানি সত্যি কোনটা, আমি কোনোদিন মা হতে পারবো না। তারা বারবার এই কথা বলে আর আমার অসহনীয় যন্ত্রণা হয়। প্রায় কিছুদিন পর আমিই ডাক্তার দেখালাম আর ডাক্তার আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো আমি প্রেগন্যান্ট।
তার কথা বিশ্বাস হয় না দেখে অন্য ডাক্তার দেখাই তারও একই কথা আমি প্রেগন্যান্ট এমন ঘটনাতে আমি চমকে উঠি। আমি কিভাবে? প্রেগন্যান্ট হলাম? আমি তো কোনোদিন মা হতে পারবো না। এই জিনিসটা কিভাবে হলো? জানি না আমি কিছুই জানিনা। কিন্তু আল্লাহ হয়তো আমাকে জীবনে একটা সুযোগ দিয়েছেন মা হবার স্বাদ গ্রহণ করার। যেটা আমি হারাতে চাই না, এই সময়টা সবাই আমার খুব যত্ন নিলেন। দেখতে দেখতে নয় মাস কেটে গেলো। একরাতে লেবার পেইন উঠলো, কান্না করছিলাম খুব।
পরশ আমার পাশেই ছিলো, সে আমাকে শান্ত করার জন্য হাতটা ধরলো। আমি ছটফট করছিলাম ব্যাথায়। পরশ ভয়ে আমার হাতটা ছেড়ে দেয়। ভদ্রলোকের চেহারাটায় আমাকে হারানোর একটা ভয় স্পষ্ট ভেসে উঠছে। সে হন্তদন্ত হয়ে গেছে কিভাবে আমার কষ্ট কমাবে চেষ্টা করছে আপ্রাণ। হয়তো আজকে এই জায়গায় ইরাদ থাকলে, ইরাদ আমার হাতটা আরো চেপে ধরতো শক্ত করে। একজন আমার ব্যাথায় প্রশান্তি দেওয়ার জন্য জন্য হাতটা ছেড়ে দিলো, অন্যজন থাকলে আমাকে আরো আগলে ধরতো শক্ত করে, ভরসাটা দেওয়ার জন্য যে যাই হোক আমিও আছি তোমার জন্য। দুইজন লোক যেমন ভিন্ন তেমনি দুইজন লোকের ভালোবাসার ধরন ভিন্ন।

দীর্ঘ সময় ব্যাথ্যা সহ্য করার পর আমার খুব সুন্দর একটা ছেলে বাবু হয় ওর নাম আমি রাখি ইহান, ইরাদের অনেক পছন্দের নাম ছিলো আর ওর রিকুয়েষ্ট ছিলো আমাদের ছেলে হলে ও ইহান রাখবে। আর আমাকে ডাকবে ইহানের মা। আমি তখন রাগ করতাম খুব, আজকে ইহানকে প্রথম কোলে নিয়ে চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে। আজকে আমি আছি ইহান আছে কিন্তু ইহানের বাবা অন্যকেউ। পরশকেও আমি ঠকাচ্ছি না তার কাছে পারমিশন নিয়েই এই নামটা দিয়েছি বাবুকে। রুফাইদা এসেছে আমাদের দেখতে, আমার প্রেম আমার অতীতের একমাত্র বান্ধুবী যে সবটা কাছ থেকে দেখেছে।
– রুহি বাবুর নাম কি রেখেছিস?
আমি চোখটা বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললাম,
-ইহান
আমার কথাটা শুনে রুফাইদার চোখ ভিজে গেছে। রুফাইদা দেখ আজকে আমার কোলে ইহান আছে কিন্তু যে এই নামটা দিয়েছে সে নেই। কেনো আমি অক্ষম ছিলাম? তখন কেনো আল্লাহ আমার সাথে নিষ্ঠুরতম আচরণ করলেন?
– না রুহি তুই কোনোদিন অক্ষম ছিলি না। আর ইরাদ ভাই এখনো এখানেই আছে আমাদের মাঝে। তোর স্মৃতি হয়ে।
রুফাইদার কথা শুনে আমার কলিজার ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে,
-মানে?
– তোর জন্য একটা চিঠি রুহি আর বাবুর জন্য এই গিফট গুলো সবই ইরাদ ভাইয়া দিয়েছেন।
কথাটা বলে রুফাইদা আমার কোল থেকে বাচ্চাকে নিয়ে বলে
” তুই পড় এটা।”
আমার হাত কাপছিলো তবুও আমি পড়ি।

ডিয়ার সুইটহার্ট,
আসসালামু আলাইকুম। আমি সালাম দিচ্ছি, একটু উইর্ড না? জানি কিন্তু সালাম তো শান্তি আমি চাই তুমি দূরে থেকে ও শান্তিতে থাকো। আমি কিন্তু এখন নামাজ ও পড়ি তোমার জন্য দোয়া করি, কোনো দুঃখ তোমাকে যেনো স্পর্শ করতে না পারে। তোমাকে অনেক কাদিয়েছি আমি। অনেক খারাপ আমি তাই না? কিন্তু এই কষ্ট গুলো দিয়ে আমিও কষ্ট পেয়েছি, আই সোয়ের। আমি এটাও জানি আমাকে ছাড়া তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে সেই সময় গুলোতে। কিন্তু এটা প্রয়োজন ছিলো। মনে আছে? আমি সবসময় বলতাম, আল্লাহ চাইলেও আমার থেকে তোমাকে দূর করতে পারবে না, দেখো সুইটহার্ট? এই কথার ফলে আজকে কি হয়েছে? আল্লাহ নিজ থেকেই আমার হাত দিয়ে আমাদের আলাদা করে দিয়েছেন। তুমি না একদম ঠিক বলতে যে আল্লাহ চাইলে সব করতে পারে। আই বিলিভ ইট নাও। বাই দা ওয়ে জানো?
আমার সুইটহার্ট কোনোদিনই অক্ষম ছিলো না, তুমি তো একজন যোদ্ধা। যে জীবনে অনেক কষ্ট করেছে কিন্তু সেগুলো থেকে জয়ী ঠিকি হয়েছে।”

কথা গুলো পড়ছিলাম মনে হচ্ছিলো আমার ইরাদ আমার কাছে এসব বলছে।

“তোমার জীবনেও অধিকার আছে মা হওয়ার কিন্তু আমার বাবা হওয়ার ক্ষমতা ছিলো না। আর এইজন্যই তোমার ওপর এই অপবাদ দিয়ে আমি সড়ে এসেছি, আমি যদি বলতাম সমস্যা আমার মধ্যে তাহলে তুমি কোনোদিন আমাকে ছেড়ে আসতে না। আমার জন্য তুমি বাচ্চার শখটা মাটি করে ফেলতে, আর আমি এটা কিভাবে হতে দিতাম? বলো তো? আমি প্রমিজ করেছিলাম আমার সুইটহার্টকে আমি দুনিয়ার সব সুখ দিবো। সেটা কাছে থেকে হোক কিংবা দূর থেকে হোক। এইজন্যই আমি তোমাকে এতো কষ্ট দিয়েছি, কিন্তু যখন দেখলাম তুমি ৭মাসেও বিয়ের জন্য রাজি হচ্ছো না তখন আমার টেনশন হয়। আর আন্টিকে সবটা বলি এরপরই আমরা ভাবি আমার বিয়ের মিথ্যে খবর দিবো তোমাকে। এবং এভাবেই বিয়ের জন্য রাজি করাবো কিন্তু আমার এই সত্যিটা জানার পর আন্টি নিতে পারেন নি, আন্টি বলেছিলো ” তোমাকে আমি সত্যিটা বলে যেনো আবার এক হয়ে যাই।” কিন্তু আমি না করি, আন্টি তো কোনোদিন আমাকে ছেলের থেকে কম ভাবেন নি, এমন ঘটনা উনি নিতে পারেন নি। সে রাতেই উনি হার্ট অ্যাটাক করেন এরপর বাকিটা তুমি তো জানোই।
সুইটহার্ট এতোদিন পর তোমার চেহারাটা দেখে আমার খুব খারাপ লাগছিলো এতো সুন্দর চেহারাটা এমন ক্লান্ত মলিন হয়ে গিয়েছিলো সহ্য হচ্ছিলো না। তাই তোমার জন্য পরশকে খুজে বের করি। বাইদা ওয়ে, ছেলেটা আমার মতো হট না, একদম চাম্পু টাইপের তাই না? হাহাহা!! চাম্পু না কিউট টাইপের, সৎ একজন মানুষ দেখতেও হ্যান্ডসাম। ঠান্ডা মেজাজের তোমাকে আমার মতো করে জ্বালাবে না, জোর করে কথা শুনাবে না বরং তোমার হ্যান্ডব্যাগ হয়ে চলবে। ব্যাপারটা মাথায় রেখে ওকে চুজ করি তোমার জন্য। ইউ ডিজার্ভ দা বেস্ট। আর হ্যাঁ তোমার চাম্পুর একটা গার্লফ্রেন্ড ছিলো আগে তো কোনোদিন গিলটি ফিল ও করো না যে তোমার পাস্ট ওকে বলো নাই তো কোনো মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। বলার কোনো দরকার ও নেই। সুইটহার্ট তুমি এখন ভাবতে পারো আমি এতো কিছু কিভাবে বুঝতে পারছি এতো দূরে থেকেও? কারণ আমি আমার সুইটহার্টকে বুঝি। তোমার সাথে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় গুলো পাড় করেছি, তুমি কেমন জানো? একটা হাওয়াই মিঠাই কিন্তু অন্যায় দেখলে হয়ে যাও শক্ত কাঠ। আচ্ছা সুইটহার্ট তুমি না কঠিন নীতিমালার একটা বই লিখো সামনে, আমি সব কপি কিনে নিবো৷ হাহাহা।

.

রুহি এই চিঠিটা আমি লিখছি তোমার ডেলিভারির শেষ সপ্তাহে, আমি জানি তুমি টেস্ট ও করো নি ছেলে হচ্ছে নাকি মেয়ে হচ্ছে কিন্তু জানো আমার মনে হচ্ছে তোমার কোল জুড়ে একটা প্রিন্স আসবে। ইহানের মা, ইহানই আসবে প্রথমে। আর আমি জানি ওর নাম তুমি ইহানই রাখবে। আই মিন রেখেছো ও। ইউ উইল বি এ কুইন সবসময়। এই দোয়া করি মন থেকে। রুহি আমাকে খোঁজ করার চেষ্টা করো না কোনোদিন, আমি অনেক দূরে আছি। আমি রুফাইদা বা জিসানের সাথেও সরাসরি দেখা করিনি তাই ওরাও আমার ঠিকানা জানেনা। বাই দা ওয়ে জিসানের গাড়িটা ফাইনালি চেঞ্জ করিয়েছি। শালা আমার ফেভারিট কার নিয়ে তোমার বেস্টফ্রেন্ডকেও বিয়ে করে নিসে। বাংলাদেশ ছাড়ার আগে এই শুভ কাজটা সেড়ে এসেছি আর এবার ওর টাকায়ই গাড়ি কিনিয়েছি।
আমি আজকে কতো কথা বলছি তাই না? আসলে সুইটহার্ট বলার মতো অনেক অনেক কথা আছে কিন্তু সময় আর সুযোগ নেই। আর আমি চাই ও না আর সময় বা সুযোগ আসুক। তুমি জানো তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা, আমি নিজেকে অনেক কষ্টে তোমার থেকে দূরে রেখে আসছি এতো দিন। সবকিছু অনেক সুন্দর আছে এখন পর্যন্ত এসব এরকমই থাকতে দিও প্লিজ৷ তোমার একটু কাছে আসলে আমি কোনোভাবেই নিজেকে ধরে রাখতে পারবো না আর সবকিছু অগোছালো হয়ে যাবে। তাই এসব করো না কোনোদিন। আমি এই দেশেই নেই যেখানে আছি সেখানকার ঠিকানাও আমি দিবো না। তবে জেনে রেখো সুইটহার্ট আমার থেকে বেশি তোমাকে কেউ ভালোবাসতে পারবে না। কারণ আমার লক্ষ্য তুমিই ছিলে, আর অলক্ষ্যেও তুমিই সুইটহার্ট।

ইতি,
তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী।

চিঠিটা পড়ে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। কান্না করছি খুব বেশি। রুফাইদা আমাকে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিচ্ছে। কিন্তু এই মনে কি আদও কেউ শান্ততা দিতে পারবে? ইরাদ তো আমাকে পাগলের মতোই ভালোবেসেছিলো। আর আমি? আমি তো ওর মতো ওকে ভালোবাসতে পারলাম না। কি করলাম আমি? কেনো বুঝতে পারিনি কেনো? সব কিভাবে শেষ হয়ে গেলো। আমার অতীতের মানুষটা এতো ভালোবেসেছে আমাকে। যে আমাকে দূরে গিয়ে একটা গোছানো জীবন উপহার দিয়ে গেছে। আমি কি ভালোবাসি নি? কেনো একটা সুখের জন্য সে নিজের সুখ সবটা বিসর্জন করে দিলো। আমি জানি আর কোনোদিন আমাদের এক হওয়া হবে না তবে আমার জীবনের কোনো পূন্য থাকলে আল্লাহ যেনো সেটার বদলে ইরাদকে সুখী করে। নতুন জীবনটা যেনো ইরাদের ও সুন্দর হয়। আমি খুঁজতে যাবো না তোমাকে কারণ আমি তোমার জীবনটা আর নষ্ট করত্ব চাই না ইরাদ। কিন্তু আমার মনে সারাটা জীবন তুমি থাকবে আমার স্মৃতিতে তুমি থাকবে। আমার ইহানের নামে তুমি থাকবে। তুমি চিঠিতে লিখেছো তোমার মনের কথা গুলো কিন্তু ইরাদ আমি তো আরো অভাগা আমার শেষ কথা গুলো যে তোমাকে বলা হলো না।

ইরাদ এখন আমেরিকায় আছে, রুহির থেকে অনেক দূরে কিন্তু ওর সুইটহার্ট এর জায়গা অন্য কাউকে এখনো দিতে পারে নি। কারণ ইরাদের তো সবটা জুড়ে রুহিই ছিলো, হয়তো সামনে ইরাদের জীবনেও কেউ আসবে যে ইরাদকেও পূর্ণতা দিবে। একা জীবন কাটানো মুশকিল এই মুশকিল থেকে বাচতে সবাই কারো না কারো হাত ধরে ঠিকি।

(সব রুহি আর ইরাদ জীবনে এক হয় না। হয়তো এটাই আল্লাহর নিয়ম, কারণ জোড়া তো ওপর থেকেই আল্লাহ বানিয়ে পাঠায় কিন্তু আমরা মানুষেরা ভালোবেসে ফেলি। এমন কাউকেই ভালোবাসি যার সাথে মিল হয় না কোনোদিন কিন্তু তার জায়গাটা সারাজীবন সে না থাকলেও ফাকাই থাকে। নতুন কেউ এসেও তার জায়গার আশেপাশেও ভিড়তে পারে না। হয়তো এটাই দুনিয়ার নিয়ম। আল্লাহর হুকুম, তবে ভালো থাকুক সব রুহি ইরাদ। এই বিচ্ছেদ গুলো পীড়াদায়ক। তাই হয়তো ভালোবাসার অপর নাম দুঃখ।)

সমাপ্ত।

1 মন্তব্য

  1. বলার ভাষা নেই।।। অসাধারণ লাষ্ট পার্টে এসে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। অনেক হৃদয় বিদারক ছিলো।।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে