ধারাবাহিক গল্প
অমানিশা
পর্ব: ১৬
আয়ানকে মেসেজ দেবে কিনা ভাবছে রাত্রি। যতবার ফোন হাতে নিচ্ছে কেমন একটা লজ্জা আর দ্বিধা ঘিরে ধরছে ওকে।
সেদিন সুপার শপে কি বোকার মতো কান্না করল ও। এত বড় মেয়ে হয়ে এমন বাচ্চামি কিভাবে করল এটা ভাবতেই নিজের মনেই হাসি পাচ্ছে বারবার।
ও যখন কাঁদছিল আয়ান টিস্যু এগিয়ে দিতে গিয়ে ফিসফিস করে বলেছিল,
ভয় নেই,ও আসলে আমার কাজিন। ওর হাজব্যান্ডকে একটা সারপ্রাইজ গিফট করবে তাই আমাকে নিয়ে এসেছে। দুলাভাই আর আমার জামাকাপড়ের মাপ একই। তাই আমাক সাথে নিয়ে এসেছে।
এই কথায় রাত্রির কান্না একটু কমল।
এভাবে বাচ্চার মতো কাঁদলে আপনাকেতো ভীষণ কিউট দেখতে লাগে!
রাত্রি হেসে ফেলল।
আপনি না রাগ করলে একটা কথা বলি?
বলুন। রাগবো না।
আমি না এভাবে আজীবন আপনার এই বাচ্চামো কিউট মুখটা দেখতে চাই। আপনার আপত্তি না থাকলে বাসায় ফেরার পর আমাকে একবার নক দেবেন।
রাত্রির ভীষণ লজ্জা লাগছে এভাবে ধরা পড়ে যাওয়ায়। ও কোনোরকমে বিদায় নিয়ে চলে এলো।
এরপর দুইদিন চলে গেছে। কিন্তু লজ্জায় আয়ানকে কল করতে পারেনি ও। আজকেও কল করবে কিনা ভাবতে ভাবতে শেষে মেসেজ দিল।
কেমন আছেন?
মিনিট খানেকের মধ্যেই রিপ্লাই আসল,
ওমাই গড! আপনি মেসেজ দিলেন অবশেষে। আমি ভালো আছি।
আপনি?
ভালো আছি।
আমি কিন্তু ঐদিন থেকেই আপনার কলের অপেক্ষায় আছি। যাক কল না হোক মেসেজ তো করেছেন! কিন্তু এতো দেরি করলেন কেনো?
আপনিও তো নক করতে পারতেন।
পারতাম কিন্তু কথা ছিল আপনি নক দেবেন। আমি দিলে আপনি যদি বিরক্ত হতেন। তবে এখন মনে হচ্ছে আমাকেই আগে আগে সব করতে হবে।
জ্বি?
এই যে আপনি নক দিতেই দু’দিন পার করে দিলেন আপনার আশায় থাকলে আমার বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাবে।
আপনি কিন্তু একটু দুষ্টু আছেন।
একটু না রাত্রি, আমি অনেক দুষ্টু। আর আপনার সাথে আরও অনেক দুষ্টুমি করতে চাই।
লেখা পড়েই রাত্রির গাল লাল হয়ে গেল। আয়ান আবার লিখল,
মাকে আপনার কথা বলেছি।
এমা! কি বলেছেন।
বলেছি এই বাসায়তো কান্না করার মতো কেউ নাই। তাই একটা বাচ্চামো করা মেয়ে আনতে চাই। যে মাঝে মাঝে ভ্যা ভ্যা করে কান্না করবে।
হায় খোদা! কেনো যে কান্না করেছিলাম। এখন এটা নিয়ে আমার কত বার যে কথা শুনতে হবে।
হাজার বার,লক্ষ,কোটি বার।
রাত্রি মাকে আয়ানের কথা জানালো। ওর বাসা থেকে যে আসতে চায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে সেটাও বলল। নাজমা খুশি হলেন। এখানে যদি বিয়েটা হয় খুব ভালো হবে। তার আর কোনো চিন্তা থাকবে না মেয়েকে নিয়ে।
নাজমা গোধূলীকে ফোন করে রাত্রিকে দেখতে আসবার কথা জানালেন। সেইসাথে সাব্বিরসহ ঐদিন আসতে বললেন। শুক্রবার আয়ানদের বাড়ি থেকে আসার কথা জানানো হলো।
বৃহস্পতিবার গোধূলি শাশুড়িকে বলল,
মা কাল একটু ঐ বাড়িতে যাব।
ঐ বাসায় যাবা ভালো কথা। রোজ ছুটির দিনেই তো ওখানে গিয়ে থাকছ। এদিকে এই বাসার কি অবস্থা হয়েছে দেখেছো? আমি থাকি অফিসে। ছুটির দিনে কত কাজ থাকে। আজ আর যেতে হবে না। বাসাটা ঝাড়পোছ করতে হবে।
কিন্তু কালতো আপাকে দেখতে আসবে। মা যেতে বলেছেন।
দেখতে আসবে তোমার আপাকে তুমি গিয়ে কি করবে। তুমি থাকলে বরং উলটা পালটা কিছু হবে। তুমি থেকেইতো সাব্বিরের সাথে বিয়েটা এগোয়নি। আপাকে দেখতে আসা ছেলের সাথে তুমি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করলে।
গোধূলির রাগ লাগল। পুরোনো কথা টেনে শাশুড়ি তাকে খোঁটা দিচ্ছে। ও বলল,
আপনার ছেলেরই তো দোষ। উনিইতো আমাকে বিয়ের জন্য পাগল হয়ে গেলেন।
পুরুষ মানুষতো এমন করবেই। মেয়ে দেখলে ছোঁক ছোঁক করাই ওদের স্বভাব।কিন্তু তোমার নিজের বোনের সাথে তুমি কি করছ সেটা ভেবে দেখো।
গোধূলি আর শাশুড়ির মুখের ওপর কথা বলতে পারল না। কারণ এই মহিলাকে একটু ভয় পায় গোধূলী।
রাতে ঘুমানোর সময় সাব্বিরকে বলল,
কাল ঐ বাসায় যেতে চাইলাম মা কথা শুনিয়ে দিলো।
কি বলেছেন?
যা তা বললেন। আপনার সাথে আপার বিয়ে হলো না আমার জন্য এসব।
সাব্বির এসব মেয়েলি বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে চায় না। কিন্তু এই মুহূর্তে গোধূলিকে কিছু বলা যাবে না। ওদের বাসা নিয়ে একটা প্লান আছে ওর। তাই গোধূলিকে খুশি রাখতে হবে আপাতত। তাই সাব্বির কথা ঘোরাতে বলল,
তোমার আপার বিয়ে যার সাথে হচ্ছে তার কথা কিছু জানো?
নাতো।
তোমার আপার সাথে আগে থেকেই ওর পরিচয়। ওরা এক স্কুলেই চাকরি করতো।
তাই নাকি!
হুম, আমারতো মনে হয় ওদের মাঝে রিলেশন আছে। আমার কানে এমন কিছু কথা এসেছে।
কি বলেন! কে বলল?
আরে এসব কথার এমনিতেই পাখা গজায়।
আপা প্রেম করছে!
সেটাই বলছি। তোমার আপা আসলে ভাজা মাছ উলটে খেতে জানে না এমন ভাব করে থাকে অথচ দেখো ঠিকই নিজের পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করেছে। একেবারেই কাটিং টু ফিটিং।
তাইতো বলি,পাত্র দেখার নাটক করে অথচ বিয়ে ভেঙে দেয়। গতবার ছেলেটার সাথে হওয়া বিয়েটা ভেঙ্গে গেল। এতদিনে বুঝলাম কেনো বিয়ে ভাঙছে। আর দোষ হয় আমার।
তোমার ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করছে তোমার বোন। শোনো আমরা না গেলেও বিয়েতো আটকাবে না। আর তাছাড়া আমি ছোট জামাই। ওখানে থাকলে কেমন দেখায়। বড় বোনের বিয়ে হয়নি আর ছোট জামাই উপস্থিত।আমি না গেলেইতো ভালো।
হুম আপনার আর কি। আমি এখানে শুধু খাটলেই আপনার ভালো।
তোমার ঘর তুমিই তো খাটবে। মা বাবা আর কয়দিন থাকবেন। তাছাড়া একটু গুছিয়ে নিতে পারলে তোমাকে নিয়ে আলাদা হবো ভাবছি।
এই কথায় গোধূলি খুশি হলো।
সাব্বির ততক্ষণে গোধূলির শরীর নিয়ে মেতে উঠেছে। যদিও গোধূলীকে এখন আর ভালো লাগে না ওর। নওমির চনমনে শরীরটাকে ভেবে ভেবে কাজ চালিয়ে নেয়। তবে গোধূলীকে আদর করলে সহজেই মানানো যায়।
আয়ানের মা,বাবা,দুই বোন আর দুলাভাই এলো পরের শুক্রবার। নাজমার সাথে আগেই ফোনে কথা হয়েছে আয়ানের মা বাবার। নাজমা সাধ্যমতো আয়োজন করলেন নতুন আত্মীয় হতে যাওয়া অতিথিদের আপ্যায়ন করতে।
সাব্বির না এলেও গোধূলী আসল বিকেলের দিকে। সকালে ঐ বাড়ির সব কাজ শেষ করে তবেই আসার অনুমতি মিলেছে ওর। এমন নয় যে বোনের বিয়ের কথাবার্তায় থাকতে এতোটা আগ্রহ ওর। বরং কি হবে না হবে,কেমন ছেলেকে পছন্দ করল আপা, কিভাবে একটা গোলমাল পাকানো যায় এইসব ওর আসল উদ্দেশ্য এখানে আসার।
নাজমা বললেন,
কিরে জামাই এলো না। ওকেতো বলেছিলাম থাকতে।
ওর কি যখন তখন বললেই আসবার সময় আছে নাকি। আর তাছাড়া আমরা না আসলেও কিছুই আটকাবে না। তোমার বড় মেয়ে আগেই এই ছেলেকে পছন্দ করে রেখেছে আর মাঝ দিয়ে শুধু শুধু পাত্র দেখার নাটক করল।
এসব আজগুবি কথা না বললেই হয় না?
আজগুবি না আম্মা। এই ছেলে আপার সাথে ঐ স্কুলে চাকরি করত। তখন থেকেই জানাশোনা।
তো পরিচিত হলেই যে সম্পর্ক আছে এমনটা তো কথা নেই।
এমনটাই কথা। তুমি আসলে কিছুই বোঝো না। আপাকে সবসময় ফেরেশতা ভাবো।
শোন মা,এসব কথা শুনলে মেয়েটা মনখারাপ করবে। এভাবে ওর সামনে এসব যেন বলিসনা।
গোধূলি মায়ের কথায় মুখ বাঁকিয়ে ঘরে চলে গেল।
গোধূলিই আগ বাড়িয়ে নাশতা দিলো মেহমানদের। সবার সাথে পরিচিত হলো। আয়ানের মা জানতে চাইলেন,
কিসে পড়ো মা তুমি?
গোধূলি চট করে বলল,
আপাতত পড়ছিনা। আমারতো বিয়ে হয়ে গেছে।
ও আচ্ছা। তবে পড়াশোনা বন্ধ করাটা ঠিক হয়নি।
হুম, শুরু করব। আর বলবেন না আন্টি, আপাকে দেখতে এসে ছেলে আমাকে পছন্দ করল। এমন পাগল হয়ে গেলো যে বিয়েটা হয়ে গেলো। সব ভাগ্য। আর তাছাড়া ভালো ছেলেতো আর সবসময় পাওয়া যায় না।
হুম সেটাও ঠিক।
নাজমা আগেই সবকথা জানিয়েছেন ফোনে। তবুও গোধূলির এই আগ বাড়িয়ে কথা বলাতে বিরক্ত হলেন উনি। মেয়েটা অযথাই বড় বোনের সাথে হিংসা করছে। মেয়ের এমন কর্মকাণ্ডে হতাশ লাগল নাজমার।
এসব বলে তেমন পাত্তা না পেলেও গোধূলী হাল ছাড়লো না। আয়ানের বোন আদিতাকে ছাদ দেখানোর নামে নিয়ে গিয়ে টুক করে বলল,
আয়ান ভাইতো আপাকে আগে থেকেই চেনে। আরো আগেইতো প্রস্তাব দিতে পারতেন। মাঝে শুধু শুধুই পাত্র দেখার নাটক করল। এসব টেনশনেই তো আব্বা চলে গেলেন। আগের বিয়েটাতো হয়েই যেত কিন্তু আপার কারণেই ভেঙে গেছে। কি যেন ঝামেলা করেছিল আপা।
তাই নাকি!
হুম । আর পছন্দই যদি আছে তাহলে আবার অন্য ছেলেদের যাচাই বাছাই করার কি দরকার ছিলো। আসলে তখনতো আয়ান ভাইয়ের ভালো চাকরি ছিলো না।এখন যেই দেখেছে আয়ান ভাই ভালো চাকরি পেয়েছে অমনি ভাইয়াকে ধরেছে।
হতে পারে।
হতে পারে কি। এটাই সত্যি। যতই আমার নিজের বোন হোক কিন্তু বিয়েশাদীর বিষয়। সব আগে থেকেই খুলে বলাই ভালো। আয়ান ভাইয়া আর আপাতো একজন অন্যজনকে পছন্দ করে আগে থেকেই তাই হয়তো আপনাদের সব কথা ভাইয়া খুলে বলেনি। আমার কিন্তু এসব পছন্দ না। কোনো কিছু লুকিয়ে বিয়ের মতো কাজ করাটা ঠিক না একদম।
আয়ানের বোন আদিতা হেসে বলল,
হুম,কথাতো ঠিক। বাসায় গিয়ে সব খুলে বলব আমি।
তবে গোধূলি যা কিছুই বলুক আয়ানের পছন্দের ওপর ওর পরিবারের সবার পুরো আস্হা আছে। তাছাড়া রাত্রি আর নাজমার আচরণে খারাপ কিছু চোখে পড়েনি কারো। বরং ওদের আন্তরিকতা মুগ্ধ করল আয়ানের মা বোনকে। আর তাছাড়া আয়ান যেখানে সুখী হবে সেখানেই ছেলেকে বিয়ে দিতে রাজী ওরা।
রাত্রিকে গলায় সোনার চেইন পরিয়ে দোয়া করলেন আয়ানের মা আয়েশা। সেইসাথে বিয়ের সম্ভাব্য একটা ডেট ঠিক করলেন সবাই মিলে।
রাত্রির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
আমার আয়ানের পছন্দ আছে বলতে হয়। ভীষণ মিষ্টি দেখতে তুমি মাশাআল্লাহ।
আয়ানের দুইবোনের সাথেও বেশ ভাব হলো রাত্রির।
গোধূলির ভীষণ হিংসে হলো। এতো চমৎকার একটা ছেলের সাথে আপার বিয়ে হতে চলেছে। তাও আবার প্রেম করে। অথচ কেউ কিছু বুঝতেই পারছে না। শুধু ওকেই সবাই খারাপ ভাবে। আর আপা কি চালাক। ঠিকই সম্পর্ক করে নিজের পছন্দের পাত্র কে বিয়ে করতে যাচ্ছে।
আর সাব্বিরের থেকেও কত ভালো জব করে আয়ান। বিসিএস ক্যাডার। দুই জামাইয়ের মধ্যেতো আপার জামাই সবসময় উপরে থাকবে। আজীবন ওকে হীনমন্যতায় ভুগতে হবে এটা নিয়ে।
রাতে খেতে বসে নাজমা বললেন,
আয়ান ছেলেটা কিন্তু ভীষণ ভালো। আর ওদের সবার ব্যবহার কি চমৎকার। মনে হলো যেন কত আগের চেনা।
গোধূলি বলে উঠল,
কোথায় আর তেমন সুন্দর। সাব্বিরের কাছে কিছুই না। ওর থেকেও খাটো হবে। গায়ের রঙটাও ময়লা।
আহা সাব্বিরের সাথে তুলনা করতে কে বলেছে।
এমনিতেই বললাম। আর একদিনেই মানুষের ব্যবহার কি বোঝা যায় আম্মা। আগে বিয়ে হোক পরে বোঝা যাবে।
তবুও কিছুটাতো বোঝা যায়।
হুম ভালো হলেই ভালো।
রাত্রি গোধূলির এমন বাচ্চামোতে মনে মনে হেসে ফেলল।
রাত্রির বিয়ে ঠিক হবার পর থেকেই গোধূলী ভীষণ রকম হিংসাত্মক আচরণ শুরু করল। কিভাবে রাত্রিকে কষ্ট দেয়া যায়,এ বাড়িতে ওর নিজের আধিপত্য বিস্তার করা যায় সে চিন্তা ঘুরতে থাকল ওর মাথায়।
রাত্রিদের গেস্ট রুমে কোনো এটাচড বাথ নাই। প্লানে আছে কিন্তু তৈরি করা হয়নি। সাব্বির এলে ঐ গেস্ট রুমেই গোধূলিসহ থাকে।
কিন্তু রাত্রির বিয়ে ঠিক হবার পর গোধূলী ভাবল আপার বিয়ে হলে তখন তাদের দু’বোনের এই ঘরে থাকবে জামাইসহ। এটাই এ বাড়ির সবথেকে বড় আর সুন্দর ঘর। দখিন দিকে বেশ বড়সড় জানালা। গরমে হুহু করে বাতাস আসে। কিন্তু গেস্ট রুমটা সে তুলনায় একটু ছোট। তাই এটা বিয়ের আগেই দখল করতে হবে।
তাই একদিন ও বলল,
আপা তুই একা মানুষ। সাব্বির এলে তুই ঐ গেস্ট রুমে গিয়ে থাকবি। সাব্বিরের ঐ রুমে থাকতে সমস্যা হয়।
নাজমা বললেন,
ঐ রুমে কি সমস্যা?
সমস্যা আছে মা। বাথরুম করতে বাইরে আসতে হয়। আর এতো ছোট ঘর। দমবন্ধ লাগে। আমার শশুর বাড়ীতে রুমগুলো সব বড়। এতো ছোট রুমে সাব্বিরের থেকে অভ্যাস নাই।
কি আশ্চর্য! তাই বলে তোর আপা নিজের ঘর ছেড়ে দেবে। তুই আসিস বেড়াতে। এক দুইদিন একটু এডজাস্ট করা যায় না?
আপার ঘর মানে কি? ওটাতো আমারও ঘর। আর তাছাড়া আমি না হয় যেমন তেমন করে থাকলাম কিন্তু জামাই মানুষকেতো আর যেভাবে সেভাবে রাখা যায় না।
রাত্রি বলল,
আচ্ছা মা ঠিক আছে। গোধূলি,আমি ঐ রুমে থাকব তোর জামাই এলে।
তোর জামাই আবার কি কথা আপা।সাব্বির ভাই বলবি ওনাকে।
আচ্ছা বলব। সাব্বির ভাই যেদিন করে আসবে, আমি গেস্ট রুমে থাকব।
উঁহু ,রোজ রোজ এঘর ওঘর না করে একবারে গেলে ভালো হয়। আমিতো প্রায়ই এখানে এসে থাকি। আর তাছাড়া স্কুলে যেতে শুরু করব ভাবছি। তখন এখানেই বেশি থাকতে হবে।
রাত্রি এবার একটু আঘাত পেল বোনের কথায়। সেই সাথে বিরক্ত হলো।
আমার ঘর একেবারে ছেড়ে দেব?
হুম,তুই থাকলে আমার ফোনে কথা বলতে সমস্যা হয়। স্বামী স্ত্রীর মাঝে কত কথা থাকে। একটা প্রাইভেসি আছে না নিজেদের।
নাজমা গজগজ করতে লাগলেন।
রাত্রি হুম বলল ঠিকই কিন্তু মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল ওর। তবে ও যদি এখন রাজী না হয় তবে গোধূলী ঝামেলা করবে আর মাও এটা নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করবে । তাই চুপ করে গেল রাত্রি।
(চলবে)