অভিমানী বিকেল শেষে পর্ব-০৭

0
438

#অভিমানী_বিকেল_শেষে ( সপ্তম পর্ব )
#ঈপ্সিতা_মিত্র
তবে এরপরের দিন রঙ্গন এর ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে গেছিল। তুলি সেদিন কফি নিয়ে ঘরে আসতে দেখেছিল রঙ্গন ফ্রেশ হয়ে ঘরটা অন্ধকার করে শুয়ে আছে চুপচাপ। তুলি এটা দেখে রঙ্গন এর কাছে গিয়েছিল চুপ করে, তারপর আস্তে গলায় জিজ্ঞেস করেছিল,
—–” কি হয়েছে? শরীর খারাপ লাগছে?”
এই কথায় রঙ্গন কিছুটা ক্লান্ত স্বরে বলেছিল,
—–” মাথাটা খুব যন্ত্রণা করছে। একটু বামটা দেবে প্লিজ। ড্রয়ারে আছে।”
এটা শুনে তুলি তাড়াতাড়ি ড্রয়ার থেকে বামটা নিয়ে গিয়েছিল রঙ্গন এর কাছে। আসলে প্রায় দেড় দিন টানা না ঘুমিয়ে কাজ করেছে ছেলেটা! তাই এরকম যন্ত্রণা হচ্ছে স্ট্রেস থেকে। কথাটা ভেবেই তুলি আলতো করে বামটা নিয়ে রঙ্গন এর কপালে হাত দিয়েছিল। কিন্তু রঙ্গন এই স্পর্শে কিরকম থমকে গিয়েছিল হঠাৎ। তুলির নরম হাতের উষ্ণতাকে ফিল করছিল যেন কয়েক সেকেন্ড। মনে হচ্ছিল তুলিকে খুব নিজের করে পেতে। তবে তখনই সেই ফুলসজ্জার রাতের কথাটা মনে পড়ে গিয়েছিল ওর। মনে পড়ে গিয়েছিল তুলি রঙ্গন কে ভালোবাসে না এখনও! তাই নিজেকে সংযত করে বলে উঠেছিল,
—–” আমাকে দাও। আমি লাগিয়ে নিচ্ছি বাম। তুমিও তো স্কুল থেকে এসেছ কিছুক্ষণ আগে! রেস্ট নাও এখন।”
কথাটা বলেই তুলির হাতটা ধরেছিল ও সরিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু তুলি সেই মুহূর্তে জোর করেই রঙ্গন কে আটকে বলেছিল,
—–” তুমি চোখটা বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করো। আর কিছু ভাবতে হবে না।”
কথাটা শুনে রঙ্গন আর কিছু বলতে পারেনি। আসলে এই স্পর্শ, তুলির আলতোভাবে ওর কাছে আসা, সব কিছুই রঙ্গন এর ভীষণ ভালো লাগছিল এই মুহূর্তে। কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে চলে যাচ্ছিল ও হঠাৎ। ক্লান্ত শরীর অবশ হয়ে আসছিল ধীরে ধীরে। মাথার যন্ত্রণাটাও মিষ্টি লাগছিল খুব। তার মধ্যেই ঘুম জড়ানো গলায় ও বলে উঠেছিল,
—–” কি সুন্দর গন্ধ তোমার! এরকম ভাবে কাছে আসো না কেন!”
কথাটা বলেই ঘুমের মধ্যে হারিয়ে গেছিল ও, আর তুলি স্থির হয়ে গেছিল কেমন। খেয়াল করেছিল জানলা থেকে চাঁদের রুপোলি আলো এসে পড়ছে এই মুহূর্তে রঙ্গন এর মুখে। আর ছেলেটা তার মাঝে কেমন শিশুর মতন সরল মুখে ঘুমিয়ে আছে ওর সামনে! কি মায়া লাগছে এখন রঙ্গন কে দেখে ওর! কি দোষ ছিল ছেলেটার! একটু তো ভালোবাসাই চেয়েছিল তুলির কাছ থেকে। তার বদলে তুলি দিনের পর দিন শুধু দূরে সরিয়ে রেখেছে ওকে। কখনো ছেলেটার মনটা বুঝতে চায়নি নিজে থেকে। কথাগুলো ভেবে কেমন চোখটা ভিজে এলো হঠাৎ। খারাপ লাগলো খুব ভেতর থেকে।
তুলি সেই মুহূর্তে রঙ্গন এর কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল আলতো করে। রঙ্গন এর অবচেতনেই আজ প্রথম ভালোবাসলো ছেলেটাকে।

<১৫>
সেদিনের পর থেকে তুলির মনে কিছু একটা বদলে গেছিল! রঙ্গন এর জন্য ফিল করতে শুরু করেছিল ও। তাই ছেলেটার ছোট বড় সমস্ত দরকারের খেয়াল রাখতে শুরু করেছিল নিজে থেকে। রোজ রঙ্গন এর বেরোনোর আগে ওর শার্ট, ওয়ালেট বার করে রাখা, রঙ্গন এর যেটা খেতে ভালো লাগে সেসবের খোঁজ নিরুপমার কাছ থেকে নিয়ে সেগুলো রান্না করা, স্কুলে হাজার কাজের মধ্যেও রঙ্গন কে মেসেজ করে ঠিক সময়ে খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেওয়া, এইসব তুলি ভীষণ মন থেকে করতো। কেন জানে না আজকাল স্কুল থেকে ফিরে ও সারাক্ষণ অপেক্ষা করে থাকতো, রঙ্গন কখন ফিরবে! খুব মন কেমন করতো ছেলেটাকে একবার দেখার জন্য। তারপর রঙ্গন ফিরলে তুলি আজকাল নিজেই কথার ঝাঁপি খুলে বসতো। সারাদিন স্কুলে কি হলো! কেমন কাটলো দিনটা, সব বলতো রঙ্গনকে। আর রঙ্গনও ভীষণ মন দিয়ে শুনতো সব কিছু। আর একটু অবাক হয়ে যেত কখনো কখনো! তুলি নিজের মাপা দূরত্ব নিয়ে আর সরে থাকে না ওর থেকে, এটা বুঝতো ভীষণভাবে। কিন্তু এটা বুঝতে পারতো না এটা ভালোবাসা কি না! আসলে ফুলসজ্জার রাতের কথাগুলো আজও ভোলেনি রঙ্গন। তুলি যে বিয়েটা মা বাবার কথায় করেছিল, ফিল করে না, এটা খুব বড় একটা সত্যি রঙ্গন এর কাছে।
যাইহোক, এইভাবে দুটো মাস কেটে গেছিল ওদের জীবন থেকে। কিন্তু এরপর একটা ঘটনা ঘটলো। রঙ্গন এর বন্ধু অমিওর বিবাহ বার্ষিকীর জন্য একটা পার্টিতে ইনভিটেশন ছিল রঙ্গন আর তুলির। দিনটা সকাল থেকে বেশ ভালোই চলছিল সেইদিন। আজ রঙ্গন এর মেডিক্যাল কলেজের ফ্রেন্ড সার্কেলের সাথে তুলির প্রথম আলাপ হবে। যদিও রিসেপশনে সবাই এসেছিল। কিন্তু সেইভাবে তো কথা হয়নি কারোর সাথে! যাইহোক, সন্ধ্যের সময় তুলি একটা হালকা গোলাপি রঙের পশমিনাতে সেজেছিল। রঙ্গন তো ওকে দেখে প্রথম চোখ ফেরাতে পারছিল না যেন! ও এই শাড়িটা বিয়ের আগে নিজে পছন্দ করে কিনেছিল তুলির জন্য। আর আজ এই শাড়িতে তুলিকে দেখে কেমন স্তব্ধ হয়ে গেছিল হঠাৎ! তুলি ওর তাকিয়ে থাকা দেখে বুঝেছিল সবটা, আর মনে মনে খুশিই হয়েছিল বেশ। আসলে আজ তো ও রঙ্গন এর জন্যই সেজেছে, ওর চোখ দিয়ে নিজেকে দেখবে বলে! সেদিন এইসব ভাবনার ভিড়েই ও রঙ্গন এর খুব কাছে এসে দাঁড়িয়েছিল। তারপর আলতো করে ওর হাতটা ধরে আয়নার কাছে নিয়ে এসেছিল। সেদিন আয়নায় নিজেদেরকে একসাথে দেখে তুলি রঙ্গন এর কানের কাছে গিয়ে এরপর বলেছিল আধো স্বরে,
—–” বেশ মানিয়েছে কিন্তু আমাদের একসাথে! তাই না?”
কথাটায় রঙ্গন যেন ওর এতদিনের অপেক্ষার উত্তর পেয়ে গেছিল হঠাৎ। তুলি কি তাহলে ওকে ভালোবাসে! তুলি কি মন থেকে একসেপ্ট করেছে এই বিয়েটাকে! কথাগুলো যেন নিজের মনেই ভেবে ফেলেছিল রঙ্গন। যদিও তুলিকে ও এইসব বলতে পারেনি সেই মুহূর্তে! শুধু নিস্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল, ব্যাস।
যাইহোক এই ভালো লাগার রেশ নিয়েই দুজনে গিয়েছিল সেদিন পার্টিতে। তবে এখানে এসেই তুলি থমকে গেছিল যেন। পার্টিতে সবার ভিড়ে ওই পুরনো মুখটাকে দেখে। সুপ্রিয়! এখানে কি করছে! কথাটা ভাবতেই অমিয়র কাছ থেকে শুনলো সুপ্রিয় হচ্ছে ওর মামাতো ভাই। যদিও এসব শুনেও তুলি সুপ্রিয় কে দেখে অচেনাই ছিল। কিন্তু মনে মনে ভীষণ এলোমেলো লাগছিল ওর। ইচ্ছে করছিল এক্ষুণি এই পার্টি থেকে রঙ্গন কে নিয়ে বেরিয়ে যেতে! তবে রঙ্গন কে তো আর এইসব বলা যাবে না! তাই ভীষণ চুপচাপ ভাবেই দাঁড়িয়েছিল সবার মাঝে। এর মধ্যে সুপ্রিয়ও ওকে খেয়াল করেছিল দূর থেকে, আর ভিতর থেকে ধাক্কা লেগেছিল যেন। শাঁখা পলা সিঁদুরে সেজে একটা অন্য ছেলের হাত ধরে তুলিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সুপ্রিয়র ভিতরটা জ্বলে উঠেছিল যেন। যেই মেয়েটা একটা সময় শুধু ওকে ভালোবাসতো, সে অন্যের কিভাবে হয়ে যেতে পারে! তুলি কি তার মানে সত্যি ওকে ভুলে গেল! সেই জন্যই একবারের জন্যও আর কোন যোগাযোগ করেনি ওর সাথে! প্রশ্নগুলো কেমন মনের মধ্যে তোলপাড় করছিল ওর, আর একটা অজানা রাগ, ইগো চেপে ধরছিল সুপ্রিয় কে ভীষণভাবে।
যদিও এই সমস্ত কিছুই অজানা ছিল রঙ্গন এর। ও তো তাই নিজে গেছিল সুপ্রিয়র সাথে কথা বলতে। সুপ্রিয়র গান আসলে খুব ভালো লাগে ওর। আর পছন্দের সিংগার কে সামনে পেয়ে আলাপ না করে কি থাকা যায়! ও তো তুলিকেও বলেছিল সুপ্রিয়র সাথে কথা বলার জন্য সঙ্গে যেতে। কিন্তু তুলি কেন জানে না ভীষণ চুপ ছিল আজ এখানে এসে! ও কারোর সাথেই বিশেষ কথা বলছিল না প্রথম থেকে। তাই রঙ্গন আর বেশি জোর করেনি ওকে।

যাইহোক, এইভাবেই সন্ধ্যেটা এগিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ একজন ওয়েটারের হাত থেকে একটা সফ্ট ড্রিংস এর গ্লাস উলটে পড়লো তুলির শাড়িতে। আর এত সুন্দর শাড়িটায় দাগ পড়ে গেল একটা! তুলি এরপর সঙ্গে সঙ্গেই ওয়াশ রুমের দিকে গেল শাড়িটা ধুয়ে পরিষ্কার করতে। কিন্তু এখানে এসে পা টা আটকে গেল যেন ওর! সুপ্রিয় এই ফাঁকা ওয়াশ রুমে ওর সামনে দাঁড়িয়ে। যেন ওর জন্যই অপেক্ষা করছে। তুলি এটা দেখেই বেরিয়ে যাচ্ছিল সেই মুহূর্তে, কিন্তু সুপ্রিয় হঠাৎ ওর হাতটা ধরে ফেললো দরজা আটকে। তুলির এবার ধৈর্য্য টা কেমন শেষ হয়ে গেছিল যেন। ও তাই সমস্ত শক্তি দিয়ে টান মেরে হাত টা ছাড়িয়ে নিল নিজের, তারপর ভীষণ রেগেই বললো,
—— ” তোমার সাহস কি করে হলো আমার হাত ধরার! কি মনে করো কি নিজেকে!”
তুলির কথাটা শুনে সুপ্রিয় একটু তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো,
——” তাই! আমি কি মনে করি নিজেকে! একটা সময় তো এই হাতটা ধরার জন্যই পাগল হয়ে যেতে! আর আজ বিয়ে হতেই আমি অচেনা হয়ে গেলাম!”
তুলি কথাটা শুনে খুব কঠিন গলায় বললো,
——” হ্যাঁ, তুমি অচেনাই। আর আমি এটা মনেও করতে চাই না যে কোনোদিন আমি তোমাকে চিনতাম!”
এই উত্তরটায় সুপ্রিয় কেমন বেহিসেবী হয়ে বললো,
—–” এত সহজ নয় আমাকে ভুলে যাওয়া! আমি সুপ্রিয় সেন। এই দেশের হাজার হাজার লোক আমাকে চায়। আমার গানকে ভালোবাসে। আর তাদের মধ্যে তুমিও একজন। আর এসব তুমি রাগে বলছো। আসলে তো তুমি এই বিয়েটা করেছিলে কারণ আমি তোমাকে রিজেক্ট করেছিলাম, সেই জন্য। কিন্তু আমি জানি, তুমি আজও মনে মনে আমাকেই ভালোবাসো। আর তুমি আমাকে ছাড়া একটুও ভালো নেই।”
কথাগুলো ভীষণ ইগো থেকে বলেছিল সুপ্রিয়। আসলে তুলির কাছ থেকে এই ব্যবহারটা ও মানতে পারছিল না ঠিক। কোথাও একটা পৌরুষত্বে গিয়ে লাগছিল ওর।
কিন্তু তুলি এসব শুনে ভীষণ অসহ্য হয়ে বলেছিল,
—–” ইউ আর সিক! সেলফ অবসেজড একটা মানুষ। তুমি কারোর ভালোবাসার যোগ্য না। ইউ ডিসর্ভ নথিং… আমার জীবনে আসলে সব থেকে বড় ভুল তুমি। তোমার মতন মানুষের জন্য যে আমি কোনদিন ফিল করেছিলাম, এটা ভেবে আমার নিজেরই লজ্জা হয় এখন।”
কথাগুলো বলেই তুলি চলে যাচ্ছিল সেই মুহূর্তে, কিন্তু সুপ্রিয় আচমকা ওর হাতটা জোরে টেনে ওকে নিজের কাছে নিয়ে এলো হঠাৎ। পুরো শরীরটা জ্বলছে এখন কেমন অপমানে। আর সেই রাগ নিয়েই সুপ্রিয় কেমন ঝাঁপিয়ে পড়লো তুলির ওপর; জোর করে নিজের ঠোঁটটা চেপে ধরলো তুলির ঠোঁটে। নিজের সমস্ত শরীরের শক্তি দিয়ে তুলির আটকে রাখলো নিজের কাছে। আর এই সময়েই ওয়াশ রুমের দরজা খুলে রঙ্গন ভিতরে আসতেই স্থির হয়ে গেল যেন! তুলি অনেকক্ষণ ভিতরে ছিল বলে রঙ্গন চিন্তা করেই এসেছিল এখানে, তবে তুলিকে এইভাবে সুপ্রিয়র সাথে দেখে কেমন পৃথিবীটা থমকে গেল ওর চারিদিকের। শরীরটা ঘেন্নায় গুলিয়ে উঠলো যেন। সুপ্রিয় যদিও ততক্ষণে ছেড়ে দিয়েছে তুলিকে রঙ্গনকে দেখে। কিন্তু তুলি ভিতরে ভিতরে কেমন শেষ হয়ে গেল হঠাৎ। রঙ্গন ওকে এই অবস্থায় দেখে কি ভাবলো! ও কি ভুল বুঝলো তুলিকে! কথাটা ভেবেই ও প্রায় কেঁদে উঠে বললো,
—–” রঙ্গন, ও আমায় জোর করছিল! ট্রাস্ট মি! আমি জানতামও না সুপ্রিয় এখানে ওয়াশ রুমে আছে! আমি সত্যি!”
ওর কথাটাকে শেষ না হতে দিয়েই সুপ্রিয় এবার নিজের রাগ আর ইগো থেকে বলে উঠলো,
—— ” জোর! কিসের জোর! যা করেছি তোমার ইচ্ছাতেই করেছি। আর বিয়ের আগে তোমার সাথে আমার এত বছরের রিলেশন এর কথা বলেছো হাজবেন্ড কে? বলেছো আমার পারফিউমের গন্ধ, আমার ঠোঁটের নরম স্বাদ তোমার কত ভালো লাগতো! বলেছো যে তুমি আমাকে পাগলের মতন ভালোবাসো!”
কথাগুলো কেমন তীক্ষ্ণ স্বরে বললো সুপ্রিয়। কিন্তু রঙ্গন এত কিছু শোনার পর আর এক সেকেন্ড দাঁড়ালো না ওখানে। রাগে ঘেন্নায় শরীরটা টলে যাচ্ছে ওর। এই মুহূর্তে কোনভাবে নিজেকে সামলে ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে এলো রঙ্গন। তারপর জোরে পা চালিয়ে ওই ফাইভ স্টার হোটেলের অডিটোরিয়াম থেকে নিচে নেমে এলো পার্কিং এ। তারপর কোনদিকে না তাকিয়ে গাড়িতে উঠে স্টিয়ারিং এ হাত দিল। আজ এই ভাঙা চোরা শহরে কোথাও একটা হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হলো ওর, যেখানে কেউ আর কাউকে ঠকাবে না!

তবে তুলি সেদিন সুপ্রিয়কে ঠাস করে একটা থাপ্পড় মেরেছিল এরপর। ওর মতন নোংরা মানুষ আর কাউকে দেখেনি তুলি! একটা সময় যে এরকম একটা ছেলেকে ভালোবেসেছিল, এটা ভেবেই নিজের ওপর রাগ হচ্ছিল ওর। সারা শরীর কাঁপছিল যেন বিতৃষ্ণায়।
কিন্তু যা শেষ হওয়ার সেটা কি শেষ হয়ে গেল! ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে রঙ্গনকে এরপর পার্টিতে দেখতে না পেয়ে তুলির এটাই মনে হয়েছিল। ও কেমন এলোমেলো হয়ে ছুটে এসেছিল এরপর পার্কিং এরিয়ায়। কিন্তু খেয়াল করেছিল রঙ্গন এর গাড়িটা ওকে না নিয়েই খুব জোরে বেরিয়ে গেল সামনে থেকে। তারপর তুলির চোখের পলকে মিলিয়ে গেল দূরে রাস্তায়। তবে তুলির চারিদিকটা সেই মুহূর্তে ভীষণ আবছা হয়ে এলো যেন! তাহলে কি রঙ্গন ওকে বিশ্বাস করলো না! ভুল বুঝলো এইভাবে! প্রশ্নগুলো কেমন কাঁচ বেঁধার মতন মনে এসে বিঁধলো।
আজ রাত নটায় লাইভ থাকবো এই পেজে। সবাই সঙ্গে থেকো কিন্তু। কিছু প্রশ্ন থাকলে, বা নিজের কোনো গল্প বলার থাকলে লিখে ফেলো কমেন্ট সেকশনে। 😊

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে