#অবহেলা (সমাপ্তি পর্ব ০৮)
#রনি_হাসান
.
.
.
মিমিঃ তুমি খাচ্ছো না কেন…?
আমিঃএই বাড়ির খাবার গত ৬ বছর যখন খাইনি আর খাবোও না
মিমিঃখাবারের প্রতি এতো রাগ কিন্তু ভালো না। আর হ্যা বলছিলাম ইসান আমার কাছে থাক আজকে
আমিঃনা সেটা সম্ভব না
মিমিঃআমার ভুল আমি বুঝতে পারছি।সে আমি অনেক অনুতপ্ত। তুমি প্লিজ না করো না
আমিঃযদি ইসান তোমার কাছে থাকতে চাই তাহলে না করব না
আমিঃইসান তোমার বাবার কাছে থাকবে নাকি অপরিচিত কারো কাছে
মিমিঃকি বলো তুমি… আমি অপরিচিত
আমিঃহ্যা ঠিকই বলছি ইসানের কাছে তুমি অপরিচিতই
আমিঃইসান বাবা তুমি কি এনাকে চিনো(মিমিকে দেখিয়ে)
ইসানঃহ্যা বাবা চিনি এনি আমার মা
আমিঃও তাহলে তোমার জালে ফাসিয়েছো
মিমিঃইসান সামনে কি বলছো এসব…
আমিঃইসান তুমি যদি এনা সাথে থাকো তাহলে বাবাকে হারাবে
বলো তোমার কাকে লাগবে বাবা না মা…
ইসানঃআমার বাবাকে লাগবে
মিমিঃইসান তোর মার কাছে আসবি না
ইসানঃমা তোমার চেয়ে বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসে
আমিঃকি বুঝতে পারছেন….?
মিমিঃএই ৬ বছরে যা কষ্ট পেয়েছি তার থেকে আজ আমাকে মেরে ফেলো আর ভালো লাগছে না স্বামী সন্তানকে দূরে রেখে
আমিঃমিমি তুমি এখন আসতে পাড়ো ইসানের অসুবিধা হচ্ছে
মিমিঃতারিয়ে দিচ্ছ
আমিঃতারিয়ে কেন দিব সেই অধিকার আমার নেই। এখন তো এই বাড়ির মেহমান মাত্র আজ আছি তো কাল নেই
মিমিঃতারপর মিমি কান্না করতে করতে চলে গেলো
এভাবে ১দিন কেটে গেলো
সকালে
ইসানকে রেডি করে আমিও রেডি হচ্ছি এমন সময় মিমি আর মা আসলো
মাঃএত সকালে রেডি হচ্ছিস কেন
আমিঃএকটু বাজারে যেতে হবে
মাঃকেন
আমিঃবেক ফাস্ট করতে যাচ্ছি…!
মাঃবাবা তুই আমাদের উপর রেগে আছিস আর ইসানকেও কিছু খেতে দিচ্ছিস না(কান্না করে)
আমিঃমা আমি যেখানে খাবো না সেখানে আমার ছেলেও খাবে না
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
মিমিঃইসানকে অন্তত্য খেতে দাও
আমিঃসরি সেটা আর হচ্ছে না
বাজারে বেক ফাস্ট করতে গেলাম
হোটেল থেকে খেয়ে আসার পর
মিমিঃইসান বাবা এদিকে আই
আমিঃনা ইসান যাবে না
মিমিঃতুমি এমন করছো কেন
আমিঃআমি এমনই (খেয়াল করলাম মিমির চোখে কনে পানি জমো হয়েছে তাতে আমার কি)
কিছুক্ষন পর মিমি আসলো
মিমিঃতুমি কি আমার কষ্টটা একটুও বুঝবে না
আমিঃতোমার আবার কি কষ্ট… (একটু খুজা মেরে)
মিমিঃইসানকে আমার কাছে আসতে দিচ্ছো না তুমিও ভালোভাবে কথা বলছো না এতে কি আমার কষ্ট হই না
আমিঃ…..
মিমিঃএই ৬ বছরে কিভাবে কাটিয়েছি সেটা আমি জানি।এমন কোনো রাত নেই তোমাদের কথা মনে করে কান্না না করেছি
আমাকে একটু আপন করে নাও প্লিজ আর পারছি না(কান্না করে)
আমিঃদেখো মিমি আমাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই যে তোমাকে আপন করে নিব আর তোমার এইকথা এখন বলে কি লাভ
মিমিঃআমি তো আর ডিফোর্স পেপারে সাইন করেনি
আমিঃ….
মিমিঃতুমি প্লিজ আজকে ইসানের কাছে থাকতে দাও প্লিজ…!
আমিঃ(আজকে কেন জানি মিমির কথাই বিবেকে বাধলো। আমি ইসানের প্রতি অন্যায় করছি তার মার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছি না ঠিক হচ্ছে না)
মিমিঃকি দিবে না ইসানকে আমার কাছে…
আমিঃআচ্ছা নিয়ে যাও
মিমিঃইসান তোর মার কাছে আসবি না(বলতে দেরি ইসান যেতে দেরি করল না)
আমিঃ(খেয়াল করলাম মিমি ইসানকে পেয়ে অনেক খুশি আর ইসান ও। হইতো আজ তার মাকে পেয়ে সেও খুশি)
মিমিঃইসান বাবা আমাকে ছেড়ে আর যাবি না তো(বুকে জড়িয়ে)
ইসানঃনা আম্মু। তোমাকে ছেড়ে আর যাবো না
মিমিঃতাহলে আম্মু কে একটা পাপ্পি দাও তো
ইসানঃউম্মমা
আমিঃ(তাদের মা ছেলের কান্ড দেখে অনেকটাই ভালো লাগছে। আর সব চাইতে বড় কথা হলো ইসান অনেক খুশি। এতো খুশি আগে কখনো দেখেনি)
মিমিঃতোমাকে অনেক ধন্যবাদ
আমিঃকেন
মিমিঃএই যে ইসানের কাছে আসতে দিলে
আমিঃইসানের জন্য আমি সব কিছুই করতে পারি
তারপর মিমি ইসানকে নিয়ে গেলো
সারাদিন এভাবে কেটে গেল রাতে
মিমিঃইসান ঘুমিয়েছে
আমিঃনা
মিমিঃচলো মা খেতে ডাকছে
আমিঃআমি খাবো না
মিমিঃচল তো (হাত ধরে)
আমিঃএই নোংরা মানুষ কে কেন স্পর্শ করছো কেন
মিমিঃকি বলছো এসব
মিমিঃআমার স্বামী কে স্পর্শ করছি।কোনো নোংরা মানুষ কে স্পর্শ করছি না।
আমিঃতুমি আমাকে কবে থেকে স্বামী মানছো…?
মিমিঃ
আমিঃমিমি সব কিছু এত সুজা না একবার লাথি মেরে ফেলে দিয়ে আবার তাকে সরি বলে সমাধান করা
যখন জেল থাকে ছাড়া পেয়ে তোমাকে বিয়ে করলাম। তখন সব সময় তোমার কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আর আমার একটা ভুলের জন্য বাড়ির সবাই কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে
আমি ভেবেছিলাম হইতো রেগে আছে। কিছু দিন পর সবাই আমার সাথে কথা বলবে।এবং তুমিও আমাকে মেনে নিবে।
আমাকে তোমরা এতোটাই ঘৃণা করতে
তোমরা সবাই এক সাথে খেতে বসতে
আমাকে একটুও ডাকতে না।যদি আমি নিজ ইচ্ছাই যেতাম তবে তোমরা উঠে যেতে। এতে কি আমার কষ্ট হইনি
এভাবে একদিন না পুরো ৬ছয় মাস কেটে গেছে তার মধ্যে কি একবারও খুজ খবর নিয়েছো
মিমিঃ…..(কান্না করে যাচ্ছে)
আমিঃমিমি আমার পরিবার না হই রেগেছিল।আমি তো তোমার বিয়ে করা। স্বামী ছিলাম সেই ভালোবাসার টানে কি একবারও কাছে এসেছো। যখন দেখলে কেউ আমার কাছে আসে না। তখন ভালোবাসার টানে না করুনা করতে আসতে তুমি
মিমিঃপ্লিজ চুপ করো আর নিতে আর পারছি না(কান্না করে)
আমিঃতবে আজ কেন খাবারের এতো ডাকছো।
মিমিঃআমি তোমার পায়ে পরছি প্লিজ এসব বলে কষ্ট বাড়িয়েও না(কান্না করে)
আমিঃতোমার সাথে একটা ভুল করে যা শাস্তি তা পেয়ে গেছি আর কোনো রকম কষ্ট আমি নিতে পারব না।আর যা বুঝতে পারলাম আমাকে ভালোবাসার মতো কেউ নেই
মিমিঃএসব কথা বলে আমাকে আর কষ্ট দিও না(কান্না অবিরাম চলছে)
আমিঃআর হ্যা ইসান যদি তোমার কাছে থাকতে চাই তাহলে ওকে রেখে আমি চলে যাবো
মিমিঃনা এটা করো না। আমার তোমাকে ও লাগবে
আমিঃনা মিমি সেটা আর সম্ভব না।আর দেখলাম ইসান তোমাকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে। আচ্ছা ইসান কে তুমি ঘুম পারিয়ে দাও আমি সোফাতে ঘুমাচ্ছি
মিমিঃসোফাতে ঘুমাতে হবে না।এসো এক সাথে থাকি
আমিঃনা মিমি নতুন করে মায়ার জালে পরতে চাই না
তারপর মিমি আর ইসান খাটে ঘুমাল
আমি সোফাতে ঘুমালাম
মাঝরাতে মিমি আমার পা জড়িয়ে কান্না করছে
মিমিঃতুমি কেন এতো কষ্ট পাচ্ছ।আর আমাকে কষ্ট দিচ্ছো। সব ভুল বুঝাবুঝি বাদ কেন বাদ দিচ্ছো না কেন
আমিঃকি ব্যাপার মিমি মাঝরাতে পা জড়িয়ে কেন কান্না করছো
মিমিঃআর নিতে পারছি এই মান অভিমানের জীবন
আমিঃঘুমাতে যাও (মিমির এই কান্না সত্যিই বলছে সে আমাকে কাছে পেতে চাই কিন্তু আগের কথা মনে পরলে নিমিষেই মন খারাপ হয়ে যাই)
মিমিঃতুমি যদি এবার আমাকে ফেলে চলে যাও তো আমার মরা লাশ দেখে যেতে হবে তোমাকে
আমিঃআমার জন্য কেন জীবন দিতে চাইছো
মিমিঃআমিও যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি
আমিঃআজ ৬ বছর পর বলছো
মিমিঃতুমি এখান থেকে যাবার পর আমি বুঝতে পারছি। তোমাকে কতটা মিস করেছি
আমিঃ(আমি বুঝতে পারছি মিমি যা বলছে সত্য বলছে।কারণ তার চোখের পানি মিথ্যা বলতে পারে না)
আমিঃতুমি ঘুমাতে যা প্লিজ
মিমিঃতুমিও আসো প্লিজ
আমিঃমিমি তুমি যাও আমি এখানে ঠিক আছি।
মিমিঃএসো (মিমির জোরাজোরিতে না করতে পারলাম না)
মাঝখানে ইসানকে রেখে ঘুমালাম
সকালে
আমিঃইসান বাবা…
ইসানঃ……….
মিমিঃওকে ডাকছো কেন…?
আমিঃআজকেই আমাদের বাড়িতে রওনা হতে হবে
মিমিঃতুমি পাগল হইছো
আমিঃএখানে আর থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না।
মিমিঃ৫ বছর পর বাড়িতে আসলে আর এখন দুইদিন থেকে চলে যেতে চাইছো
আমিঃএখানে থেকে কি হবে
মিমিঃতুমি কি ভুলে গেছো তোমার পরিবার এখানে আর তুমি তাদের ফেলে দূরে চলে যেতে চাইছো। এবং কি আমার কথা একবারও ভাবে না
আমিঃএই পরিবারে আমাকে ভালোবাসার মতো কেউ নেই তাহলে কার জন্য থাকব
মিমিঃ……
তারপর ফ্রেশ হয়ে ইসানকে রেডি করে বের হচ্ছি এমন সময় মা ফারিয়া ভাবি মিমি সবাই আমার সামনে দাড়ালো
মাঃবাবা কোথায় যাচ্ছিস
আমিঃআমাকে বাড়িতে ফিরতে হবে…
মাঃএটা কি তোর বাড়ি না
আমিঃ……..
মাঃবাবা আর কত রাগ করে থাকবি। সব ভুলে আগের মতো হয়ে যা
আমিঃমা আমার দেরি হচ্ছে যেতে হবে
মাঃঅনেক পর বাড়িতে আসলি আর এই বাড়ির পানি পযন্ত খেলি না।
আমিঃআগে যখন খাবার জুটেনি এখন না খেলেও চলবে
মাঃবাবা আর রাগ করে থাকিস না
আমিঃতোমাদের উপর আমার কোনো রাগ নেই
মাঃতাহলে খাচ্ছিস না আর এখন চলে যেতে যাচ্ছিস কেন
আমিঃ……
মাঃআমাকে ক্ষমা করে দে বাবা
আমিঃকি বলছো মা ছেলের কাছে মার কোনো ভুল নেই
যা করেছো ভালোই করেছো
মাঃতুই চলে যাবার মিমিও অনেক কেদেছে আর ওকে কষ্ট দেস না
মিমিঃতুমি এবার যদি আমাকে ফেলে যেতে চাও তাহলে আমার লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে
ফারিয়াঃভাইয়া আর রাগ করে থেকো না প্লিজ
ভাবিঃআমাদের ভুল আমরা বুঝতে পারছি। তুমি প্লিজ আমাদের ক্ষমা করে দাও
আমিঃ(সবাই বলছে আমাকে কিন্তু তারপরও শুনছি না ইসান কে বের হচ্ছি এমন সময় মিমি চাকু নিয়ে সামনে দাড়ালো )
মিমিঃতুমি যদি আর একপা বাড়াও তাহলে এই চাকু দিয়ে সুসাইড করব(কান্না করব)
ইসানঃআব্বু মা কান্না করছে আমরা আর যাবো না এখানেই থাকবো
আমিঃ(ইসানের দিকে চেয়ে আর কিছু বলতে পারলাম না।)
মাঃবাবা এখন রাগ করে থাকিস না। আমার দাদু ভাই বলছে এখানে থাকবে।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে। তোমরা যা বলবে তাই হবে।(আর না করতে পারলাম না)
তারপর মান অভিমান শেষ করে দিলাম। আর ভালো লাগছে না এই একা জীবন।
মিমিঃকি মহারাজ রাগ তাহলে ভাজ্ঞল
আমিঃইসানের জন্য কিছু বলতে পারলাম না
মিমিঃহুমম আমিও চেয়েছিলাম তুমি থাকো
আমিঃতুমি চাইলে তো আর থাকতাম না
মিমিঃএর জন্য তো ইসানকে বলে রেখেছিলাম
আমিঃকি ইসানকে আগেই বলেছিলে
মিমিঃহ্যা। আমি জানতাম ইসান বললে তুমি সে কথা রাখবে।
(আমাকে ধাক্কা মেরে বিছানাই ফেলে দিয়ে)
আমিঃআমায় বিছানাতে ফেলে দিচ্ছো কেন..?
মিমিঃকেন দিয়েছি এখন বুঝতে পারবে(বুকে উপর উঠে)
আমিঃকি করছো
মিমিঃএক্টু আদর করছি।
আমিঃলাগবে না তোমার আদর।
মিমিঃআমি আদর করা ছাড়া কে করবে শুনি
আমিঃআগে কোথাই ছিলো এত আদর
মিমিঃআগেটা এখনটা সম্পুর্ণ পাবে(বলে লিপ কিস করলো পুরো ৩ মিনিট
আমিঃতুমি পাগল হয়েছো এভাবে কেউ লিপ কিস করে আমার ঠোঁট কেটে ফেলছো
মিমিঃকই দেখি তো(দুস্টুমির হাসি দিয়ে)
আমিঃএখান আবার হাসছো দাড়াও দেখাচ্ছি…।।
—(সমাপ্ত)—