অবহেলা পর্ব-০৬

0
3878

#অবহেলা (পর্ব ০৬)
#রনি_হাসান
.
.
.
অফিসে কাজ করছি এমন সময় পিয়োন আসল
পিয়োনঃস্যার আমাকে ডেকেছে
আমিঃওকে আসছি
তারপর স্যার ওখানে গেলাম
আমিঃস্যার আসব
স্যারঃহ্যা আসো
আমিঃহঠাৎ কি জন্য ডেকেছেন
স্যারঃডেকেছি এই কারনে যে তোমার প্রমোশন হয়েছে চিটাগাং এ।
আমিঃস্যার সত্যিই বলছেন
স্যারঃহ্যা সত্যিই বলছি।তোমার কাজের প্রতি আগ্রহ দেখে প্রমোশন দেওয়া হয়েছে। আর এভাবে চলতে থাকলে তোমার জীবনে ভালো কিছু করতে পারবে আমি সিউর।
আমিঃজ্বী স্যার দোয়া করবেন।
স্যারঃঅবশ্যই
তারপর কাজে মনোযোগ দিলাম
অফিসের কাজ করছি এমন সময় মিমির ফোন থেকে ফোন আসলো
আমিঃহেলো
মিমিঃতুমি কোথায়
আমিঃঅফিসে কাজ করছি কেন
মিমিঃতুমি দেরি না করে হাস্পাতালে চলে আসো
আমিঃওকে আসতাছি…
তারপর হাস্পাতালে গেলাম। এখানে মা ভাইয়া ভাবি ফারিয়া সব সবাই আসছে।আমি জানি কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করলে তার উত্তর পাবো না।
ভাবলাম ফারিয়াকে বলি।যে ভাবা সেই কাজ
আমিঃফারিয়া…..
ফারিয়াঃকথা বলছে না
আমিঃকেরে এই ভাইয়ার সাথে কথা বলবি না
ফারিয়াঃতুমি নোংরা মানুষ। আর আমি এমন মানুষদের সাথে কথা বলি না।
আমিঃআজকে না একটু কথা বল তারপর আর কোনো দিন কথা বলতে হবে না।
ফারিয়াঃআচ্ছা বলো
আমিঃদেখতো মিমি কেমন আছে
ফারিয়াঃআচ্ছা দেখছি
কিছুক্ষণ পর
ফারিয়াঃভাইয়া তুমার একটা খুশির খবর আছে
আমিঃকি
ভাবিঃফারিয়া তুমাকে মানা করার পর এই বাজে মানুষটির সাথে কথা বলছো
আমিঃভাবি..
ভাবিঃচুপ আর কোনো কথা না
আমিঃতোমারা আমাকে এখনো এত ঘিনা করো(বলে মিমির কাছে গেলাম তারপর যা দেখলাম….)
দেখলাম মিমির পাশে সুন্দর ফোট ফোটে বাচ্চা কান্না করছে।মিমির জ্ঞান ফেরেনি তারপর মা ভাবি ফারিয়া এরা মিমিকে দেখতে গেলো। আমি জানলা থেকে সরে গেলাম।হঠাৎ মিমিকে দেওয়া কথা মনে পড়ে গেলো। ফারিয়া আসলো )
ফারিয়াঃভাইয়া তোর ছেলেটা দেখতে খুব সুন্দর হয়েছে…!
আমিঃধন্যবাদ আজকে কথা বলার জন্য। ভালো থাকিস আর মনে না কথা বলতে পারব
ফারিয়াঃকেন
আমিঃএমনি। তুই যা ভাবি দেখলে তোকে বকা দিতে পারে।
(আজ আমি অনেক খুশি।যে বলে বুঝাতে পারব না! এই খুশি শুধু আমার জন্যই।)
মিমি তো আমাকে আগেই বলেছে সে নাকি কোনো জানোয়ার সন্তান রাখতে চাই না।তাহলে মিমি তো খুশির হবার কথা না।মিমির দায়িত্ব এখন শেষ। মিমিকেও কথা দিয়েছিলাম আমাদের সন্তান যখন পৃথিবীর আলো দেখবে।তখন মিমিকে মুক্ত করে আমার সন্তান কে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাবো। আজ তো মিমির দায়িত্ব শেষ তাহলে এখানে থেকে আর কি হবে। আর আমার মা বলে আমি নাকি পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করি।তাহলে কি দরকার এখানে থেকে। চলে যা-এই ভালো। আর থাকব না এই অবহেলার শহরে।
কিন্তু যাবার আগে একটা চিঠি দিতে হবে। যে ভাবা সেই কাজ।চিঠি লেখে আমার সন্তান কে নিয়ে চলে গেলাম অজানা শহরে…
কয়েক ঘন্টা পর
মিমিঃআমার সন্তান কোথাই…..
পরিবারে সবাই চুপ হয়েছে।কেউ কিছু বলতে পারছে না
মিমিঃতুমারা কথা বলছ না কেন…?(কান্না ভাব চলে আসছে)
মাঃআসলে কি বলব
ভাবিঃআমি বলছি। রনি চলে গেছে তোমার সন্তান কে নিয়ে। কোথাই গেছে কেউ জানে না
মিমিঃকি বলছো ভাবি(কান্না করে)
ভাবিঃহ্যা এটাই সত্যিই
মিমিঃনা এটা কিছুতেই হতে পারে না(কান্না অবিরাম চলছে)
মাঃআসলে আমাদের উচিত হইনি এতোটা অবহেলা করা। এরজন্য হইতো সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে
ভাবিঃমিমি তোমার জন্য এই চিঠি রেখে গেছস(বলে সবাই বাহিরে গেল)
তারপর মিমি পড়তে শুরু করল
প্রিয়ঃমিমি
তোমাকে প্রিয় কেন বললাম জানো….?
তোমাকে অনেক ভালোবাসতাম কিন্তু তুমি
তো আর ভালোবাসাটা বুঝলে না।একটা ভুলের জন্য দূরে সরিয়ে দিয়েছ।একটাবার ও
বুঝতে চেস্টা করেনি।আমি কেমন আছি..!
মিমি তুমি হইতো জানো না…! তোমার সাথে বাজে ব্যবহার করার কারণে আমাকে জেলে ৩দিন রিমান্ডে অসহ্যকর শাস্তি পেতে হয়েছে। তারপর বাড়িতে আসলাম দেখলাম সবাই আমাকে এড়িয়ে চলে কেউ কথা বলে না। যারা আমাকে ছাড়া খেতো না।আর তখন আমি গেলে টেবিল থেকে উঠে যেতো।
মিমি তূমিও তো আমার গায়ে হাত তুলেছো
কই আমি তো কিছুই বলিনি
শুধু একটা ভুলের জন্য সব সহ্য করতে হয়েছে আমাকে।তারপর কিছুদিন যাবার পর জানতে পারলাম। আমি বাবা হতে চলেছি সেদিন অনেক খুশি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম তুমি হইতো এই খুশিতে আমাকে মাপ করে নতুন করে শুরু করবে। কিন্তু না সেটা আর হলো না উল্টো আমাদের সন্তানকে গালি দিলে। সেদিন তোমার অইসব কথা শুনে সারারাত ঘুমাতে পারিনি।
শুধু এটাই ভাবতাম সন্তানটা কি শুধু আমার
আজ আমার কথা রেখেছি। তোমাকে বলেছিলাম না আমাদের সন্তান যখন পৃথিবীর আলো দেখবে তখন তাকে নিয়ে চলে যাবো। আজ সেটাই করলাম
কিছুদিন পর জিফোর্স পেপার পাঠিয়ে দিব
আর আজ থেকে আমার পৃথিবীতে আমি আর আমার ছেলে থাকবো।আর কাউকে লাগবে না আমাদের । ভালো থেকো আল্লাহ হাফেজ….!
মিমিঃএটা তুমি কি করলে আমি তো চেয়েছিলাম নতুন করে শুরু করতে কিন্তু তার আগে তুমি চলে গেলে(কান্না করে)
একদিন পর হাস্পাতাল থেকে বাড়িতে আসলো সবাই
ভাইয়াঃমা…
মাঃহ্যা বল
ভাইয়াঃশুনলাম ছোট নাকি চলে গেছে
মাঃহ্যা
ভাইয়াঃমা ও তো একটা অন্যায় করেছে বলে তোমরা ওর সাথে খাওয়া থেকে শুরু করে কথা বলা পযন্ত বন্ধ করে দিয়েছ। আর তোমরা তার সাথে প্রতিদিন অন্যায় করে গেছো সেটা কি তোমাদের ভুল হইনি। তোমাদের উচিত হইনি তাকে এতোটা অবহেলা করা।
.
.
.
চলবে……………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে