অবহেলা পর্ব-০৫

0
4313

#অবহেলা (পর্ব ০৫)
#রনি_হাসান
.
.
.
আমিঃআগে যখন ডাকার মতো কেউ ছিলো না এখন না ডাকলেও চলবে…!
মিমিঃ….
আমিঃমিমি ঘুমাতে যাও অনেক রাত হয়েছে।আর জাগলে আমাদের সন্তানরি ক্ষতি হবে। অহহ সরি আমাদের না শুধুই আমার
মিমিঃআমাদেরি সন্তান এতে সরি বলার কি আছে…?
আমিঃতুমি তো আর আমার সন্তানকে মেনে নাও নি। সেটা জন্যই ও শুধু আমার সন্তান আর কারো না
মিমিঃআচ্ছা আমরা কি ভালোভাবে শুরু করতে পারি না
আমিঃকি
মিমিঃনতুন সংসার
আমিঃনা সেটা আর সম্ভব না। তুমি ঘুমাতে যাও আর দেরি করো না(বলে ঘুমাতে গেলাম কারন সকালে উঠতে হবে। যাতে কাউকে না দেখতে হই)
মিমিঃচলে গেলো তার রুমে
সকালে
আমিঃ(এখন ৫ঃ২৩মিনিট এখনি উঠতে হবে।
তারাতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে বের হচ্ছি এমন সময় মিমি আসলো)
মিমিঃএত সকালে কোথায় যাচ্ছ…?
আমিঃঅফিসে
মিমিঃআমার জানা মতে এত সকালে কোনো অফিস খুলা থাকে না। তাহলে তুমি কোথাই যাচ্ছো..?
আমিঃনিজের খেয়াল রেখো বাই…
মিমিঃনা খেয়ে যাচ্ছ। দাড়াও তুমার খাবার রেডি করে দিচ্ছি…!
আমিঃনা থাক দরকার নেই। আমি বাহিরে থেকে খেয়ে নিব…!
মিমিঃবেশি ক্ষন লাগবে না তুমি ২মিনিট দাড়াও
আমিঃনা থাক মিমি এত কষ্ট করার দরকার নেই। আর এই বাড়ির কোনো খাবার আমার পেটে হজম হবে না।
মিমিঃকেন….?
আমিঃহোটেলের খাবার খেতে খেতে অভ্যাস হয়ে গেছে তাই। (বলে অফিসে চলে গেলাম)
মিমিঃ……….
(এখন মিমি আমার সাথে কথা বলতে চাই।
হইতো সবাই অবহেলা করে দেখে মিমি করুনা করছে। আমি তো কারো করুনার পাত্র হতে চাই না। আমার সন্তান যখন পৃথিবীর আলো দেখবে তখন তাকে নিয়ে চলে যাবো এই শহর ছেড়ে)
(অফিসে কাজ করছি এমন সময় অচেনা নম্বর থেকে কল আসলো)
আমিঃহেলো….
মিমিঃকি করছো…
আমিঃসরি আপনাকে চিনতে পারলাম না(মিমি এই প্রথম আমাকে ফোন দিল)
মিমিঃআমি মিমি চিনতে পারছো না…
আমিঃহ্যা বলো কেন ফোন করেছ
মিমিঃআমি কি তোমার কাছে ফোন করতে পারি না
আমিঃতুমি তো এর আগে কখনো ফোন করোনি তাই আর ক
মিমিঃএখন থেকে দিব। কি করছিলে
আমিঃকাজ করছিলাম
মিমিঃএখন তো লান্সের সময়
আমিঃহুমম কেন…?
মিমিঃচলো না আজ বাড়িতে লান্স করি
আমিঃসরি মিমি যেতে পারব না। তুমি খেয়ে নিও।(বলে কেটে দিলাম)
কিছুক্ষন পর মিমি আবার ফোন করল
আমিঃহেলো
মিমিঃবাড়িতে আসো প্লিজ
আমিঃ এই ৬মাস যখন বাড়িতে খাবার জুটেনি। এখন বাড়িতে না খেলে আর মরে যাবো না।
মিমিঃসব কিছু ভুলে আগের মতো হয়ে যাও প্লিজ
আমিঃসরি সেটা আর সম্ভব না।আর ফোন করে বিরক্ত করো না
রাতে বাড়িতে গেলাম
আমিঃদরজাই কয়েকবার নক করার পর মিমি দরজা খুলে দিল
আমিঃতুমি এত রাত অব্দি জেগে থাকো কেন…?
মিমিঃতোমার জন্য
আমিঃআমাকে তো সহ্যই করতে পারো না। আজ হঠাৎ আমার জন্য অপেক্ষা করছো।
নাকি আমার খারাপ অবস্থা দেখে করুনা করছো
মিমিঃকরুনা কেন করতে যাবো। আসলে তুমার ভালোবাসাটা এখন বুঝতে পারছি ।
আমিঃমিমি গতবছরে অনেক বলিছি তখন তো একবারও বুঝোনি আজ সবাই আমাকে অবহেলা করছে দেখে তোমার করুনা হচ্ছে।এটাকে ভালোবাসা বলে না(বলে রুমে ফ্রেশ হতে গেলাম)
ফ্রেশ হয়ে আসার পর। দেখলাম মিমিও আমার রুমে কালকের মতো আজও বসে আছে
আমিঃতোমাকে রাত জেগতে মানা করেছি না
মিমিঃআমার ঘুম আসছে না। আমি কি করব
আমিঃআমার সন্তানের জন্য তোমাকে ঘুমাতে হবে।
মিমিঃতাহলে আমাকে ঘুম পারিয়ে দিয়ে হবে।
আমিঃতুমি কি ছোট যে তুমাকে ঘুম পারিয়ে দিব
মিমিঃআমি কিছুই শুনতে চাই না। আমি ঘুমাব আর তুমি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে।নইত ঘুমোব না
আমিঃআমাকে না তুমি ঘিনা করো।তাহলে আমি স্পর্শ করলে তোমার খারাপ লাগবে।
মিমিঃতখন তো রাগের মাথাই বলেছি।আর এখন তুমি যদি আমার কথা না শুনো। তাহলে আমাদের সন্তানের কিন্তু ক্ষতি হবে
আমিঃআচ্ছা বলো কি করতে হবে।
মিমিঃআমার মাথাই হাত বুলিয়ে দিতে হবে। এখন থেকে আমি তোমার কাছে থাকব
আমিঃ(আমি কিছু বললাম না মিমি যা চাচ্ছে সেটা আর এখন সম্ভব না। তারপর মিমির মাথাই হাত বুলিয়ে দিলাম )
মিমিঃ(এত অবহেলা পরেও আমাকে এত ভালোবাসে। আর আমি আগে বুঝতে পারেনি)
আমিঃমিমি এখন ঘুমিয়ে গেছে। আমি বরং সোফায় ঘুমায়
সকালে
মিমিঃএই শুনো
আমিঃহুমম
মিমিঃতুমি সোফাতে কেন ঘুমাইছো
আমিঃতুমি বিছানাই ঘুমিয়েছো। তাই এখানে ঘুমিয়েছিলাম
মিমিঃতাই বলে সারারাত সোফাতে এভাবে ঘুমাবে
আমিঃআমার কাছে এটা কোনো ব্যাপার না
মিমিঃতুমি নিজেকে কেন এতো কষ্ট দাও
আমিঃমিমি শুনো তুমাকে একটা কথা বলি আপন জনরা যখন সবাই কথা বলা বন্ধ করে দেই তখন তার থেকে অবহেলিত ।আর তার থেকে বড় কষ্ট আর কিছুই হতে পারে না।আজ যদি তোমার মা-বাবা ভাই বোন এরা সবাই কথা বলা বন্ধ করে দেই তাহলে তোমার কেমন লাগবে
মিমিঃআমি তো মরেই যাবো
আমিঃআমিও ঠিক বেচে থেকেও মরে গেছি
মিমিঃএই সব আমার জন্য হয়েছে
আমিঃনা তোমার কোনো দোষ নেই।যা ছিলো তা আমার পাপের জন্য হয়েছে। মহান আল্লাহ হইতো আমার এমন শাস্তি দিতে চাই। তাই এমন হচ্ছে।
মিমিঃআমি সবাইকে বলে সব কিছু ঠিক করে দিবে
আমিঃথাক সেটার কোনো প্রয়োজন নেই। এই ৬মাসে আমার সবাইকে চেনা হয়েছে(ফ্রেশ হয়ে অফিসে চলে গেলাম)
(এভাবে কেটে গেলো ২মাস । মিমির চেহারাই অনেক পরিবর্তন আসছে। এখন মিমি ও সন্তানের জন্য নিজের অনেক কেয়ার করে।যাতে সন্তানের কোনো ক্ষতি না হই। আর আমাকে অনেক বার বলেছে যে সব কিছু ভুলে নতুন করে শুরু করতে।কিন্তু আমি না করেছি। কারণ এই ছয় মাসে মিমিকেও ভালো করে চেনা হয়ে গেছে।)
.
.
.
চলবে…………….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে