অবশেষে সন্ধি হলো পর্ব-০৯

0
909

#অবশেষে_সন্ধি_হলো
#পর্ব:৯
#লেখিকা:ইনায়া আমরিন

“বাবা,আমি বিয়ে করতে চাই।”

সোফায় বসে অফিসের গু’রুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো চেক করছিলেন দিদার ইমতিয়াজ।তখনই হ’ঠাৎ করে দীপ্ত এসে পাশে বসে কথাটা বলে। দীপ্তর মুখে বিয়ের কথা শুনে রান্নাঘর থেকে চলে এলেন মাহমুদা। ছেলের হ’ঠাৎ কী হলো?

ফাইল চেক করা ব’ন্ধ করে দীপ্তের দিকে তাকায় দিদার সাহেব।বাবার এমন করে তাকানোতে দীপ্ত খানিকটা অপ্র’স্তুত হয় কিন্তু বুঝতে দেয় না।ভালোবাসতে পারলে ফ্যামিলিকে জানানোর মতো সৎ সাহসও থাকতে হবে।ফ্যামিলির মতামত নিয়ে সবার সামনে নিজের মানুষটাকে নিজের করে নিতে হবে,এটাই বীরপুরুষের কাজ।দীপ্ত সেটাই করবে।

চোখের চশমা ঠিক করে দিদার সাহেব মুচকি হেসে বলে_
“বিয়ে করবে?এটা তো খুব ভালো কথা।”

ছেলের কথায় স্বামীর ইতিবাচক উত্তর শুনে হাসি ফুটলো মাহমুদার। কিছুদিন থেকেই ছেলের বিয়ের কথাটা ভাবছিলেন।বড্ড একা একা লাগে উনার। ছেলের বউ থাকলে ওনার একটা সঙ্গি হতো।এখন তো দীপ্ত নিজেই কথাটা ওঠালো।মনে মনে খুশিই হলেন মাহমুদা, এবার শুধু উর্মির কথাটা উঠাতে পারলেই ষোলকলা পূর্ণ হবে। উর্মি ওনার স্বপ্নের পুত্রবধূ।মনে মনে দীপ্তের সাথে উর্মিকে কল্পনা করেন সবসময়।
কিন্তু উনি তো জানেন না উনার ছেলে উনার এক কাটি উপরে উঠে বসে আছে।

দিদার সাহেব ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন_
“তা তোমার কোনো পছন্দ আছে?নাকি তোমার মাকে বলবো পাত্রী দেখতে?”

মাহমুদা জিভের ডগায় উর্মির নামটা নিয়ে বসে আছেন।স্বামী অনুমতি পেলেই ফটা’ফট বলে ফেলবেন। কিন্তু ওনার মনটাকে ভে’ঙে দিয়ে দীপ্ত বলে_
“পাত্রী দেখতে হবে না।আমি একজনকে পছন্দ করি।”

বুকে হাত দিয়ে সোফায় বসে পড়লেন দীপ্তের মা মাহমুদা।বুক চিন’চিন করছে।উর্মিকে আর ছেলের বউ বানানো হলো না বুঝি।ছেলে মনটা ভে’ঙে দিলো।

“যাক ভালো,আমাদের আর ক’ষ্ট করতে হলো না তবে।তা কাকে মনে ধরেছে আমার ছেলের?আমরা কী তাকে চিনি?”

মুখ কালো করে বসে আছেন মাহমুদা।উনি শুনতে চান না।পারলে কানে হাত দিয়ে রাখতেন। কিন্তু উনাকে অবা’ক করে দিয়ে দীপ্ত বলে_
“পাঁচ তলায় থাকে যে আশফাক আঙ্কেলের মেয়ে উর্মি।”

চ’মকে উঠে মাহমুদা।মুখটা হা হয়ে গেলো। উনার যাকে পছন্দ ছেলেও তাকে পছন্দ করে। একটু আগের ভে’ঙে যাওয়া মনটা জোড়া লেগে গেলো।মুখে ফোটে প্রশান্তির হাসি।এবার উর্মিকে পুত্রবধূ করেই ছাড়বেন।

ছেলের কথায় শুনে সন্তুষ্টজনক হাসি দিলেন দিদার সাহেব।বললেন_
“বাহ আমার ছেলের পছন্দ আছে দেখছি। আসলেই মেয়েটা বড্ড ভালো।”

তারপর স্ত্রীর দিকে চেয়ে বলেন_
“কী?তোমার কোনো আপত্তি আছে?”

মাহমুদা শব্দ করে হেসে বলেন_
“এমন সোনার টুকরো মেয়ে ছেলের বউ হিসাবে পেতে কে না চায়।আমার কোনো আপত্তি নেই,তুমি বললে আমি এখনই যাবো প্রস্তাব নিয়ে।”

বাবা মায়ের এমন উচ্ছাস ঠিক আশা করে নি দীপ্ত।এক কথায় রাজি?তার বাবা মা যে তাকে ঠিক কতোটা ভরসা করে তা ওনাদের কথাতে বোঝা যাচ্ছে। ঠোঁট কা’মড়ে নিঃশব্দে হেসে ফেলে।যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব উর্মিকে নিজের করে নিবে। নিজের কাছে নিয়ে আসবে। কিন্তু তার ভাবনার জল ঢেলে দেয় দিদার সাহেব।তিনি বলেন_

“বিয়ে করবে শুনে খুশি হয়েছি বাবা।তার ওপর মেয়ে পছন্দ করা আছে যাকে আমাদেরও পছন্দ হয়েছে। কিন্তু তোমাকে তো তার জন্য তৈরি হতে হবে। নিজেকে উর্মির জন্য তৈরি করতে হবে।”

বাবার কথার অর্থ ধরতে পারে না দীপ্ত তাই বলে_
“ঠিক বুঝতে পারছি না?”

দিদার সাহেব ছেলের কাঁধে হাত রেখে বোঝানোর ভঙ্গিতে কোমল কন্ঠে বলেন_

“দেখো বাবা,তুমি বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে এসেছো,তোমার বাবার অনেক টাকা পয়সা এসব কেউ দেখতে আসবে না।সবাই দেখতে চাইবে তুমি তোমার যোগ্যতা দিয়ে কতোটুকু অর্জন করতে পারছো।সব পুরুষেরই নিজের একটা পরিচয় তৈরি করা উচিত, নিজের পরিচয়ে পরিচিত হওয়া উচিত আর এটা অধিক সম্মানের।বাবার কী আছে সেটা কেউ দেখবে না,সবাই দেখবে তোমার কী আছে?

আমার যা আছে তাতে তোমার ইনকাম করার প্রয়োজন পড়ে না,আমার সব তো তোমারই তবে তোমার উচিত নিজের একটা পরিচয় তৈরি করা।কেউ আমার যোগ্যতা দিয়ে তোমাকে বিচার করবেনা। তোমার কাজকর্ম আচার ব্যবহারই মানুষের কাছে তোমার পরিচয় তৈরি করে দেবে। এখন যদি নিজের একটা পরিচয় তৈরি না করে বিয়ে করো তাহলে মানুষ কী বলবে?বলবে বাবার টাকায় বউকে খাওয়াচ্ছে।শুনতে ভালো লাগবে সেটা?

আমি চাই তুমি নিজের যোগ্যতায় নিজের একটা পরিচয় তৈরি করো।বুঝতে পেরেছো?”

স্বামীর কথায় মুগ্ধ মাহমুদা,কী দারুণ চিন্তা ভাবনা। কথাগুলো শুনে হাসিমুখে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলেন।

বাবার সব কথা খুব মন দিয়ে শুনেছে দীপ্ত এবং বুঝতেও পেরেছে বাবা কী বলতে চাচ্ছেন।বাবার প্রতিটা কথা যে সত্য সেটা খুব ভালো করে বুঝেছে সে। ঠিকই তো?স্ত্রী হিসেবে উর্মি খুব পারফেক্ট। পড়াশোনা, সাংসারিক জ্ঞান,নম্রতা ভদ্রতা,আদব কায়দা সবই জানে।ওর নিজেরও তো উচিত স্বামী হিসেবে নিজেকে উর্মির জন্য পারফেক্ট তৈরি করা।স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নিজেকে স্বাবলম্বী করা।

বেশিরভাগ মানুষ বিয়ে সময় দেখে মেয়ের কী কী গুণ আছে?কেউ এটা জানতে চায় না ছেলের কী কী গুণ আছে?সংসার তো আর একজন দিয়ে চলে না,দুজনকে দিয়েই চলে।উচিত কাজ হচ্ছে সংসার জীবনে পা রাখার আগে ছেলে মেয়ে উভয়কেই নিজেদেরকে সাংসারিক জ্ঞানে পরিপূর্ণ করা।তবে কেউই সবজান্তা হয় না,কেউই পরিপূর্ণ হতে পারে না।আমরা মানুষ,ভু’ল ত্রু’টি হতেই পারে।তবে সেই ভু’লগুলোকে শুধরে একে অপরকে সঠিকটা বুঝিয়ে দেওয়া,সব রকমের পরিস্থিতি দুজনেই মানিয়ে নিয়ে একে অপরের পাশে থাকাটাই আদর্শ স্বামী স্ত্রীর বৈশিষ্ট্য।

দীপ্ত মনে মনে চিন্তা ভাবনা করে ফেলে।মুখে হাসি টেনে বাবার দিকে তাকায়।বলে_
“কাল থেকে অফিস জয়েন করবো।তোমার ছুটি,এখন থেকে অফিস আমি সামলাবো।তবে প্রথম কয়েকদিন একটু হেল্প করতে হবে।”

যাক ছেলে কথাগুলোর মর্ম বুঝতে পেরেছে।সন্তষ্ট হয়েছেন তিনি,এটাই তো চেয়েছিলেন।দীপ্তের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন_
“অল দ্য বেস্ট বাবা।জীবনে অনেক বড়ো হও।”

.
বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা দিয়ে মাত্র বাসায় ফিরেছে আহনাফ। ইদানিং আড্ডার সময়টা দীর্ঘ হয় তাদের।

ব্যস্ত জীবনে ঢুকে গেলে তো আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার হয় না।তাই যখন সুযোগ থাকে তখন বন্ধুদেরকে সময় দেওয়া উচিত।বন্ধুরা তো আর সবসময় একসাথে থাকবে না।একসময় সবাই নিজেদের মতো ব্যস্ত হয়ে পড়বে।থেকে যাবে এই স্মৃতিগুলো।এগুলো হবে বৃদ্ধ বয়সের একা’কিত্বে সঙ্গী হবে।

বাসায় এসে খাওয়া-দাওয়ার পাট চু’কিয়ে রুমে এসেছে আহনাফ। মোটামুটি ট্রায়াড সে। বিছানায় শরীর এলিয়ে দিয়ে ফোন হাতে নিয়ে অন করে। কিছুক্ষণ ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করে ফেসবুকে ঢোকে। ফেসবুকে ঢুকে নোটিফিকেশন দেখে খ’টকা লাগে।আজকে এতো নোটিফিকেশন কেনো?চেক করে দেখে। প্র’চন্ড বি’ষ্মি’ত হয় সে।তড়া’ক করে শোয়া থেকে উঠে বসে।
মেয়েটার সাহস দেখে অ’বা’ক না হয়ে পারে না।এখন মনে হচ্ছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করাই উচিত হয় নি।প্রথমে তো উর্মির বেস্টফ্রেন্ড বলেই একসেপ্ট করেছিলো। কিন্তু সে কী জানতো মেয়েটা এভাবে জ্বা’লিয়ে মার’বে?

এক ঘন্টা আগে অথৈ ফেসবুকে নিজের ওয়ালে একটা পোষ্ট শেয়ার দেয়।পোষ্টটা এমন ছিলো_

“এক লোকের গুরু’ত্বপূর্ণ জিনিস আজ আঠারো বছর ধরে আমাদের বাড়িতে পড়ে আছে। নিয়ে যাওয়ার কোনো নাম নেই।”

অথৈ পোস্টটা শেয়ার দিয়েছে এটা দো’ষের বিষয় নয়।দো’ষের বিষয় হচ্ছে শেয়ার দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছে_

“Ahnaf Rahman kobe niben?(with sad emoji)”

সেখানে বত্রিশটা রিয়েক্ট।কেউ লাভ দিয়েছে তো কেউ হাহা।আহনাফ চেক করে দেখে সব তার ফ্রেন্ড সার্কেলের মানুষজন সাথে অথৈয়ের ফ্রেন্ডরা তো আছেই। মে’জাজ গর’ম হয়। কমেন্ট বক্স চেক করে। তু’ফান চলছে সেখানে।সবাই তাকে মেনশন দিয়ে এটা সেটা বলেই যাচ্ছে। কেউ কেউ বলে “কী চলে মামা?” তো কেউ বলে “তলে তলে টেম্পু চালাও,আমরা বললেই হর’তাল।”। আবার কেউ কেউ অথৈকে মেনশন দিয়ে “ভাবি ভাবি” করে আল্লাদ করছে।অথৈও সেগুলোতে রিপ্লাই দিয়ে আল্লাদে গা ভাসাচ্ছে।

জ্ব’লে যাচ্ছে আহনাফ এসব দেখে।চ’রম রা’গা’ন্বিত হয়ে অথৈয়ের নম্বারে কল দেয়।

বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে ছিলো অথৈ।পা দোলাতে দোলাতে চিপস খাচ্ছিলো আর সবার কমেন্ট দেখছিলো।সবাই যখন তাকে মেনশন করে ভাবি বলে ডাকছিলো তার কলিজাটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো।কারা কারা তাকে ভাবি ডেকেছে সবাইকে নোট করে রেখেছে।পার্মানেন্টলি আহনাফের বউ হলে তাদেরকে বড়ো একটা ট্রিট দিবে বলে মনে মনে পরিকল্পনা করে রাখে।

তখনই আহনাফের কল আসে।সে তো জানতো আহনাফ এখন তাকে কল দিবে। অনেক ব’কা শুনতে হবে এখন,শুনলে শুনবে এটা কোনো ব্যাপার না তার কাছে। ভালোবাসতে পারলে ব’কাও শুনতে পারবে। ব’কাঝ’কা হোক বা যা-ই হোক কিছুক্ষণের জন্য তো দুজনের ফোন আলাপ হবে।সেই জন্যই তো এই কা’ন্ড করা।তা না হলে আহনাফ যে জীবনেও তাকে ফোন দিবে না সেটা সে খুব ভালো করে জানে।আর সময় ন’ষ্ট না করে ফোন রিসিভ করে।

দু’ষ্টু ভঙ্গিতে হেসে বলে_
“হ্যা শুরু করুন আপনার ওয়াজ মাহফিল।আমি শোনার জন্য আমার কানগুলো নিয়ে অধীর আগ্রহে বসে ছিলাম।”

রিসিভ করার সাথে সাথে এমন ফা’জলামো টাইপ কথা শুনে আহনাফের মে’জাজ চ’টে গেলো।ধ’মকে বলে_

“এক থা’প্পর দিবো,বেয়া’দব।কী পোস্ট করেছো তুমি এটা?সাহস দেখে অবা’ক হয়ে যাচ্ছি।দুই মিনিটের মধ্যে ডি’লেট করবে। ইন ফিউচার,যদি এমন কোনো কাজ করতে দেখেছি তাহলে খুব খা’রাপ হবে।”

ধ’মকে কাজ হয় না।অথৈ হিহি করে হেসে বলে_
“করবো না।ন আকার না। বুঝেছেন?
আর পোস্ট করার কারণ হচ্ছে আমি সবাইকে জানাতে চাই যে আহনাফ রহমান শুধু মাত্র সিদরাতুল অথৈয়ের।বুঝতে পেরেছেন?”

তিন সেকেন্ড চুপ থাকে আহনাফ। তারপর কন্ঠ গ’ম্ভীর করে বলে_
“যদি ডিলেট না করো তাহলে এক্ষুনি আমার নাম্বার থেকে মিসেস হোসেনে আরা বেগমের নাম্বারে কল যাবে।উনাকে জানাতে হবে তো উনার মেয়ে কী কী করে বেড়াচ্ছে।”

এই কথাটা বোধহয় একটু কাজে দেয়।তার মানে এই নয় যে সে অথৈ মাকে ভ’য় পায়। তার মা স্কুলের হেডমিস্ট্রেস।এসব জিনিস তিনি মোটেও পছন্দ করেন না। তার মেয়ের সম্পর্কে উল্টো পাল্টা কথা স’হ্য করবে না। শে’ষে ব’কাগুলো অথৈকে খেতে হবে। আহনাফ যে জেনে বুঝে তাকে ভ’য় দেখানোর চেষ্টা করছে তা খুব বুঝেছে সে।তবে সে এসব হা’মকিধম’কির ধার ধারে না।প্রেমে পড়েছে একটু সাহস তো থাকতে হবে।তাই ভ’য় এক পাশে রেখে সাহসী কন্ঠে বলে_

“দিন ফোন,ভ’য় পাই নাকি আমি।শুনুন, আপনি আমাকে যতোটা স্টু’পিড ভাবেন আমি ততোটা স্টু’পিড না। আপনি যে আমাকে ভ’য় পাওয়ানোর জন্য এটা বলেছেন তা কী আমি বুঝি নি ভেবেছেন?বলার হলে তো আমি যেদিন থেকে আপনাকে বির’ক্ত করি সেই দিনই বলে দিতেন।হুহ,আসছে আমাকে ভ’য় দেখাতে।”কথা বলা শে’ষে মুখে ভেং’চি কা’টে অথৈ।

“তার মানে স্বীকার করছো যে তুমি আমাকে ডি’স্টার্ভ করো,গুড।” বাঁ’কা হেসে কথাটা বলে আহনাফ।

“হ্যা করি তো?আমি আপনাকে ভালোবেসে ডি’স্টার্ভ করি। আপনি যদি আমাকে ভালোবাসতেন তাহলে কী এতো কিছু করতাম?আচ্ছা চলেন একটা ডিল করি।”

ভ্রু কুঁ’চকে মুখোবয়ব গ’ম্ভীরই রাখে আহনাফ, কিন্তু মুখে কিছু বলে না। আহনাফকে চুপ থাকতে দেখে অথৈ বলে_

“আমি তো আপনাকে পুরোপুরি ভালোবাসি। ইটস্ আ হান্ড্রেট পার্সেন্ট লাভ ইউ নো।তো আপনার যদি আমাকে ভালোবাসতে ক’ষ্ট হয় তাহলে আমি আপনাকে ফিফটি পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট দিচ্ছি। আপনি আমাকে অন্তত ফিফটি পার্সেন্ট ভালোবাসা দিন।এতেই আমি খুব খুশি হয়ে যাবো।দিবেন?”

আহনাফ হতভ’ম্ব। কীসের মধ্যে কী ডুকিয়ে দিয়েছে?
শক্ত কন্ঠে বলে_

“আমি তোমার কতো বড়ো জানো?এসব কথা বলতে ল’জ্জা লাগে না?আর এই তোমার পড়াশোনা নেই।সামনে না এইচএসসি পরীক্ষা? সারাক্ষণ তো উড়’নচ’ন্ডীর মতো ঘুরঘুর করো আর বাকিটা সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকো।এখন তো আমার স’ন্দেহ হচ্ছে পরিক্ষায় পাশ করো কী করে তুমি?”

অথৈয়ের মেজা’জ গর’ম হয়।বলে_

“আসছে আমার মুরব্বিটা,উনাকে ভালোবাসতে এখন আমাকে ল’জ্জা পেতে হবে।আর পড়ালেখার কথা বলছেন?আমার পাশ করা নিয়ে কথা উঠিয়েছেন তো?তাহলে একটা সিক্রেট কথা শুনুন।
আমার পড়ালেখাতে একটুও মন বসে না যেহেতু আমার মন আপনার কাছে। তারপরেও মানুষকে বলতে হলেও তো পাশ করতে হবে নাহলে তো আমার নামের পাশে ফে’ল্টুস ট্যাগ লেগে যাবে।তাই ক’ষ্ট করে হলেও পাশ করি।আমার পাশ করার ট্রিকস টা হচ্ছে

“উদ্দিপকের গুরুত্ব অপরিসীম।”

কথাটা বলে হু হা করে হেসে ফেলে অথৈ।হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খায় বিছানায়।হাসির চো’টে চোখে পানি চলে এসেছে। ফোনের অপর পাশে নিচের ঠোঁট কা’মড়ে চোখ মুখ শ’ক্ত করে আছে আহনাফ। সেভাবেই বলে_

“আমি যেনো দেখি পোস্টটা ডি’লেট হয়ে গেছে।”

অথৈ হাসি থামিয়ে বলে_
“আচ্ছা করবো,তবে একটা শর্তে সেটা হলো কালকে আপনার অফিসের প্রথম দিন। আপনি অফিস যাওয়ার আগে আমাকে মেসেজ করে যাবেন।যে “অথৈ,আমি অফিস যাচ্ছি।” ঠিক আছে?”

“আমার ঠে’কা পড়ে নি তোমাকে ম্যাসেজ পাঠাতে যাবো।”
“আমারও ঠে’কা পড়ে নি আপনার কথায় পোস্ট ডি’লেট করতে যাবো।”আবারও সেই পাল্টা উত্তরের ল’ড়াই।

এবার খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে আহনাফ বলে_
“লাস্ট ওয়া’র্নিং,যদি ডি’লেট না করো না?তাহলে সত্যি সত্যি এবার আন্টিকে কল করবো।”

আহনাফের এবারের কথায় বিড়াল হয়ে যায় অথৈ।মিন মিন করে বলে_
“করছি তো।এভাবে বলার কী আছে।মনে হয় আমি ভ’য় পাই।”

কল কে’টে দেয় আহনাফ। ফোনের দিকে তাকিয়ে থেকে মুখ ফুলিয়ে দম ছাড়ে।দু দিকে মাথা নাড়িয়ে বলে_

“পা’গল হয়ে যাবো।”

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে