#অবশেষে_সন্ধি_হলো
#পর্ব:২
#লেখিকা: ইনায়া আমরিন
দুবাই এয়ারপোর্টে নির্দিষ্ট স্থানে বসে আছে আশফাকুর রহমান। জীবনের অনেকটা সময় প্রবাসে কা*টিয়েছেন। পরিবার পরিজন ছেড়ে। এবার যাচ্ছেন নিজ মাতৃভূমিতে।অপেক্ষা করছেন কখন দেশে ফিরবেন।কখন পরিবারকে স্বচক্ষে দেখতে পারবেন।কখন ছেলেমেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরবে।বুক ধু’কপু’ক করছে।খুশিতে বার বার আ’প্লুত হয়ে উঠছেন।বি’ষ্মি’ত হয়েছিলেন যখন শুনেছেন তার ছেলেমেয়ে এয়ারপোর্টে আসছে তাকে নেয়ার জন্য। তখন দেশের ফেরার আনন্দটা দশগুণ বেড়ে গেলো। একটা সময় যাদের জন্য ক’ষ্ট করেছেন,নিজের শখ আল্লাদ বিস’র্জ’ন দিয়ে জীবনের এতোটা সময় প্রবাসে কা’টিয়েছেন,তারা নিজেদের মতো সুবিধা ভো’গ শে’ষে তার পিঠেই ছু’রি বসিয়েছে।আর যাদের প্রতি উদাসীন ছিলেন,খামখেয়ালিপনা করে দূরত্ব বাড়িয়েছেন সেই ছেলেমেয়ে আর স্ত্রীই আজ তার পাশে আছে।এগুলো ভাবলে ক’ষ্টে চোখ ভিজে আসে।অতীত মনে পড়লে অনুতাপে বুকটা মোচ’ড় দিয়ে ওঠে। অনেকগুলো বছর আগে স্ত্রী সন্তানের সাথে সৃষ্ট দূরত্ব আজও বহাল আছে। কিন্তু আর না,যেহেতু দূরত্বটা ওনার দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে সেহেতু এই দূরত্ব ঘো’চানোর দায়িত্বটাও ওনার।আর এবার দেশে ফিরে সেটাই করবেন।হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে ভেজা চোখ মুছে উঠে দাঁড়ালেন আশফাকুর রহমান। লম্বা একটা নিঃশ্বাস ফেলে মুখে হাসি টানলেন। ফ্লাইটের সময় হয়ে এলো,এবার ফেরার পালা। আরেকটুখানি অপেক্ষা মাত্র।
.
আজ সন্ধ্যা সাতটা দশ মিনিটে দুবাইয়ের প্লেনটি ল্যান্ড করবে। উর্মির মুখের হাসি সরছে না।বাবা আসার আনন্দে বুক ধ’ড়ফ’ড় করছে। কতো বছর পর বাবাকে দেখবে।অন্যরকম অনুভূতি যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।বাবা আসার খুশিতে আজ টিউশনি থেকেও ছুটি নিয়েছে।বিকেলেই তৈরি হয়ে আহনাফের ঘরে ছুটে গেলো,তাকেও তৈরি হতে বললো।আহনাফ এতো তাড়াতাড়ি যেতে চাচ্ছিলো না। সন্ধ্যে ছয়টার পর যাওয়ার চিন্তা করছিলো। কিন্তু বোনের এই উচ্ছাস দেখে আর না করার ইচ্ছে হয় নি।সেও গেলো তৈরি হতে। উর্মির অধরকোণে হাসি নিয়ে চলে গেলো রান্না ঘরে, মায়ের কাছে।
নানা পদ রান্না করছেন রাবেয়া।সাথে তার হেল্পিং হ্যান্ড রহিমা খালা।তিনি প্রতিদিন ছুটো দু একটা কাজ করে দেয়।বাদ বাকি সব কাজ উর্মি আর রাবেয়াই করে। কিন্তু আজ বিদেশ থেকে সাহেব আসছে শুনেছে।তাই তিনি আগ বাড়িয়ে রাবেয়াকে সাহায্য করতে এসেছেন,সাথে চলছে ওনার মুখ।কার বাড়িতে কে কোন চালের ভাত রান্না করেছে সেই খবরও আছে রহিমা খালার কাছে।এমন কোনো খবর নেই যা তার ঝুলিতে নেই।তিনি নিজেকে এলাকার ছোটখাটো সাংবাদিক ভাবেন এবং এই নিয়ে প্রচুর গর্বও করেন।
উর্মি ঘুরে ঘুরে সব দেখছে আর ইয়া বড়ো করে নিঃশ্বাস টেনে মায়ের করা সুস্বাদু রান্নাগুলো ঘ্রান নিচ্ছে সাথে প্রশংসা করতে ভুলছে না।
এর মধ্যে রুম থেকে বেরিয়ে এলো আহনাফ। শার্টের হাতা গোটাতে গোটাতে আসছে। উর্মি তাকিয়ে থাকে তার সুদর্শন ভাইয়ের দিকে।তার কাছে তার ভাইকে ঠিক তার বাবার মতো দেখতে লাগে।। অবশ্য সবাই তা-ই বলে। উজ্জ্বল ফর্সা গায়ের রং। লম্বা,চ’ওড়া শ’ক্তপো’ক্ত শরীরের গড়ন।চেহারার গ’ম্ভী’র্যতা যেনো সৌন্দর্য আরো ফুটিয়ে তোলে।এক দেখায় আকৃষ্ট হওয়ার মতো।
উর্মির সামনে এসে আহনাফ বলে,”চল।” রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলো রাবেয়া। উর্মি মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে,”আমরা যাচ্ছি আম্মু।”
মাথা নাড়লেন রাবেয়া। তারপর আহনাফের দিকে তাকিয়ে বলে_
“আশা করবো কোনো প্রকার বে’য়া’দবি তোমার দ্বারা হবে না। সবসময় মাথায় রাখবে সব কিছুর আগে উনি তোমার বাবা।তোমার আর উর্মির আচরণের উপর নির্ভর করে কতটুকু ভালো শিক্ষা আমি তোমাদেরকে দিতে পেরেছি।”
আহনাফ মায়ের দিকে তাকিয়ে দৃ’ঢ়’তা বজায় রেখে বলে_
“আমার মায়ের দিকে আঙুল তোলার মতো কোনো কাজ হবে না আমার দ্বারা। নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।”
চোখে হাসলেন রাবেয়া।ছেলেমেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন_
“সা’বধা’নে যেয়ো,বাবাকে নিয়ে আবার সা’বধা’নে ফিরে এসো আমার কাছে, অপেক্ষায় থাকলাম।”
.
রাস্তার একপাশে দাড়িয়ে আছে আহনাফ উর্মি।একটা সিএনজি পেলেই উঠে পড়বে। হ’ঠাৎই সামনে একটি সাদা গাড়ি উপস্থিত হলো।ডোর খুলে বেরিয়ে এলো দিপ্ত।মুখে হাসি নিয়ে এগিয়ে আসছে তাদের দিকে।দিপ্তকে দেখে আহনাফও এগিয়ে গেলো।ভাইকে যেতে দেখে ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে গেলো উর্মি।দিপ্ত কাছাকাছি এসে হাত মেলায় আহনাফের সঙ্গে,বলে_
“কেমন আছো?কোথাও যাচ্ছো নাকি তোমরা?”
দিপ্ত আহনাফ দুজনেই সমবয়সী।তাই পরিচয় হওয়া থেকে দুজন দুজনকে তুমি বলেই ডাকে।’তুই’ ডাকার মতো তেমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তাদের নয়,তাই তুমিটাই বহাল আছে। আহনাফ সহজ স্বাভাবিকভাবেই উত্তর দেয়_
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। একটু এয়ারপোর্ট যাচ্ছিলাম।”
দিপ্ত একপলক উর্মির পানে চেয়ে তারপর বলল_
“এয়ারপোর্ট?কেউ আসছে নাকি?”
“হ্যা,আব্বু আসছে। উনাকেই রিসিভ করতে যাচ্ছি।”
দিপ্ত খানিকটা উচ্ছাস প্রকাশ করে বলল,”তাই না কি? আমিও উত্তরা যাচ্ছিলাম ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে।ভালোই হলো,চলো তোমাদেরকে ড্রপ করে দেই।”
আহনাফ মাথা নাড়িয়ে বলে,”না না প্রয়োজন নেই। তুমি যাও।”
“আহা,চলো তো।একই জায়গায়ই তো যাচ্ছি, একসাথে গেলে সম’স্যা কোথায়?চলো গাড়িতে ওঠো।”
আহনাফ আর না করে না। উর্মিকে ইশারায় উঠতে বলে নিজেও বসে। উর্মি ভেবেছিলো না করে দেবে কিন্তু মুখে ওপর বললে খা’রা’প হবে ভেবে বলে নি।ছোট শ্বাস ফেলে পেছনে যেয়ে বসে।আহনাফ বসে দিপ্তের পাশের সিটে তারপর পকেট থেকে ফোন বের করে স্ক্রল করতে থাকে।দিপ্ত ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট করে। গন্তব্য এয়ারপোর্ট।
পেছনের সিটে বসে ব্রু কু’চকে ভাবছে উর্মি,”এটা কী কো-ইন্সিডেন্স ছিলো?” তারপর হ’ঠাৎ সামনের মিররে তাকালো।তার কেনো জানো মনে হলো দিপ্তের চোখ মিররে ছিলো।আর মিররটা তার দিকেই ফেরানো।সে কী বেশি ভাবছে?হয়তো তাই। মনের ভু’ল ভেবে ভাবনা গুলোকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিলো।বাবার কথা ভাবতে লাগলো।আর কতক্ষন জানো?একটু পর পর সময় দেখে সে।তর সয় না আর।
ঠোঁট কা’মড়ে ড্রাইভ করছে দিপ্ত। একটু পর পর তার চোখ গুলো ঠিকই মিররে চলে যাচ্ছে। আজকে একটু বেশিই দেখছে না?সুযোগ পেয়েছে সেটা কী হাতছাড়া করা যায়?উহুম।তাই যতোবার সুযোগ পাচ্ছে ততোবার স্নিগ্ধ মুখটা মুখস্থ করে নিচ্ছে। একটু আগের কথা মনে পড়ে মুচকি হাসে।মনে মনে নিজেকেই নিজে বাহবা দিয়ে বলল_
“আজকাল ভালোই এক্টিং করতে পারিস তুই দিপ্ত।”
.
টার্মিনাল -২এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে আহনাফ উর্মি।
অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে উর্মি।চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এতো মানুষের মাঝে বাবাকে খুঁজছে।এখনই তার বাবা বের হবে।সাথে আছে আহনাফ তবে সে নি’র্বি’কার।ভেতরে কি চলছে তা বাহির থেকে বোঝার উপায় নেই। ছোটবেলা মায়ের হাত ধরে এভাবে এসেছে এয়ারপোর্ট বাবাকে রিসিভ করতে। আশফাক সাহেব যখন বের হতেন সবার আগে আহনাফের চোখে পড়তেন।বাবাকে দেখা মাত্র আহনাফ ঝ’ড়ের বেগে ঝাঁ’পিয়ে পড়তো। ছোট্ট আহনাফ বাবাকে পাওয়ার আনন্দে হু হু করে কেঁদে ফেলতো,ছাড়তেই চাইতো না।অথচ আজ সে পুরোপুরি নি’র্বি’কার।হয়তো পরিস্থিতির স্বীকার।
হ’ঠাৎ করে উর্মি আহনাফের হাত খা’মচে ধরে। চি’ৎকার করে বলে,”ভাইয়া আব্বু।”
আহনাফের বুকটা ধ’ক করে উঠেই আবার নিভে গেলো।নিচে দিকে তাকিয়ে আছে,শুকনো ঢোক গিলল। উর্মি আহনাফকে ছেড়ে দৌড়ে গেলো বাবার কাছে। একটু সময় নেই নি,ঝাঁ’পিয়ে পড়ে বাবার বুকে।
আশফাকুর রহমান অনেক্ষণ আগেই বেরিয়েছেন।তিনিও আসে পাশে তাকিয়ে তার কলিজার টুকরো গুলোকে খুঁজছিলেন। হ’ঠাৎ কেউ এসে এভাবে জা’প্টে ধরায় টাল সামলাতে না পেরে দু পা পিছিয়ে যান।মেয়েকে দেখে মুখে বিস্তর এক হাসি ফুটে উঠল। দুহাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে বুকের সাথে। বুকের ভেতর অনেক বছর ধরে সৃষ্ট দা’বা’নলে বর্ষন নামলো বোধহয়।মেয়েকে জড়িয়ে ধরে তাই মনে হলো আশফাকুর রহমানের।কী যে শান্তি!
উর্মির কান্না থামার নাম নেই।তার কান্নার তীব্রতা এতো যে আশফাক সাহেবের শার্টের একটা অংশ ভিজে গেছে। শুধু উর্মি নয় কাঁদছেন তিনিও।তবে নিঃশব্দে,যে কান্নার আওয়াজ বাহিরে আসে না। আবেগঘন হয়ে পরপর কয়েকবার মেয়ের কপালে চুমু খেলেন। কিছুক্ষণ পর চোখ মুছলেন। উর্মিও বাবাকে ছেড়ে দাড়ালো,চোখ মুছে সেও। আশফাক সাহেব আশে পাশে তাকিয়ে বলে,”একা এসেছো,মা মনি?”
উর্মি দু পাশে মাথা নেড়ে কান্না ভেজা কন্ঠে বলে,”না,ভাইয়া এসেছে তো।” তারপর হাত দিয়ে পেছনে আহনাফের দিকে তাক করে। আশফাক সাহেবের দিকেই তাকিয়ে ছিলো আহনাফ।উনি তাকাতেই চ’ট করে চোখ ফিরিয়ে চারপাশে তাকায়। অনেকগুলো বছর পর ছেলেকে দেখে চোখ জুড়িয়ে গেলো আশফাক সাহেবের।মেয়েকে তো তাও ভিডিও কলে দেখতেন কিন্তু ছেলে ভিডিও কল তো দূর এমনিতেই কোনো যোগাযোগ রাখে নি।সেই আহনাফ আজ কতো বড়ো হয়েছে। প্রা’প্তবয়’স্ক পুরুষে পরিণত হয়েছে।তার সুদর্শন ছেলেকে মন ভরে দেখেন তিনি।তার ছেলে,তার আহনাফ। আবারো চোখ ভিজে যাচ্ছে। কিছুতেই কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না। অপেক্ষা করলেন না আর।এগিয়ে গেলেন ছেলের দিকে।
আশফাক সাহেবকে এগিয়ে আসতে দেখে নড়েচড়ে দাড়ায় আহনাফ।কেমন হাঁ’সফাঁ”স লাগছে তার। কিছুতেই তাকাচ্ছে না আশফাক সাহেবের দিকে।এমন লাগছে কেনো?সং’কোচ? কিন্তু এই সং’কোচের কারন? অনেক বছরের দূরত্ব?নাকি অতীত?
আশফাক সাহেব আহনাফের সামনে দাঁড়ালেন। আহনাফকে দেখার জন্য মাথা খানিকটা উঁচাতে হচ্ছে ওনাকে।ছেলে এখন তার চেয়ে লম্বা হয়ে গেছে কি না। আহনাফের মুখের একপাশে কাঁপা কাঁপা হাত রেখে ভা’ঙ্গা ভেজা কন্ঠে বললেন_
“আহনাফ,বাবা আমার।”
পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আহনাফ। ভেতরের অবস্থা করুন।সে কী দূ’র্বল হয়ে যাচ্ছে বাবার সামনে। আশফাক সাহেব নিজেই জড়িয়ে ধরে আহনাফকে। হিস’হিসি’য়ে কান্নার শব্দ শুনতে পাচ্ছে আহনাফ।চোখ জোড়া ব’ন্ধ করে নেয়।কিন্তু নিজে জড়িয়ে ধরে না।অনেকগুলো বছর পর বাবা ছেলের আলিঙ্গন।হোক তা একপাক্ষিক।
দিপ্ত এসেছে মাত্র।ওদেরকে রেখে কিছুক্ষণের জন্য অন্যদিকে ঘুরে এলো সে। বন্ধুর দোহাই দিয়ে ওদের সাথে এসেছে অথচ ব্যাপারটা পুরোটাই ছিলো বানোয়াট। শুধু মাত্র একজনকে দেখার লো’ভে। কিন্তু এখন যদি পুরোটা সময়ই ওদের সাথে থাকে তাহলে আহনাফের স’ন্দেহ হতে পারে।তার ধারণা আহনাফ প্রচুর বুদ্ধিমান এবং বিচক্ষণ।ধরে ফেলতেও পারে।তাই গাড়ি নিয়ে আধা ঘন্টার ঘুরঘুর করেছে আশেপাশে।যেনো সে ভাবে বন্ধুর সাথে দেখা করতে গেছে।
উর্মি আহনাফকে দেখতে পেয়েছে সে।বলেই দিয়েছিলো টার্মিনাল ২ এর সামনে থাকবে তারা।তাই সোজা এখানেই চলে এসেছে তবে এতো মানুষের ভিড়ে ওদেরকে খুঁজতে একটু বেগ পেতে হয়েছিলো বটে।এখন পেয়ে গেছে তাই সেদিকেই এগিয়ে গেলো।
আহনাফ আশফাক সাহেবকে ছেড়ে দাড়ালো। উর্মিও এগিয়ে এলো তাদের কাছে। আহনাফ আস্তে করে উর্মিকে বলে,”আমি দিপ্তকে কল করছি।ওনাকে নিয়ে আয়।” এর মধ্যেই দিপ্ত এসে হাজির হয়েছে।এসেই আশফাক সাহেবেকে সালাম দিলো। আহনাফ উর্মির সাথে দাড়ানো দেখে ধরে নিলো ইনিই ওদের বাবা। আশফাক সাহেব সালামের উত্তর নিয়ে মুখে হাল্কা হাসি টেনে বলে,”তোমাকে তো ঠিক চিনলাম না?”
আহনাফ কিছু বলছে না।তাই উর্মি দিপ্তের আগেই বলে,”উনি আমাদের বাড়িওয়ালার ছেলে,আব্বু।আমরা একসাথেই এসেছি।”
বোঝার ভঙ্গিতে মাথা নাড়ে আশফাক সাহেব। তারপর দিপ্তের দিকে চেয়ে হাসিমুখেই জিজ্ঞাসা করে,”তোমার নাম কী বাবা?”
দিপ্তও ভদ্রতার সহিত বলে_
“মাহবুব ইমতিয়াজ দিপ্ত।”
মাথা নেড়ে মুচকি হাসে আশফাক সাহেব। দিপ্ত আবার বলে,”আপনাকে দেখে ক্লান্ত লাগছে আঙ্কেল।”তারপর উর্মির দিকে তাকিয়ে বলে,”তুমি আঙ্কেলকে নিয়ে গাড়িতে বসো।আমি আর আহনাফ লাগেজগুলো নিয়ে আসছি।”
আহনাফ আগেই চলে যায় লাগেজ আনতে।সেই দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ’শ্বাস ছাড়ে আশফাক সাহেব। ছেলেটা তাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। একটা কথাও বলে নি।এমনটাই হওয়ারই কথা।
“চলো আব্বু।”
উর্মি ডাকে তার দিকে তাকায় আশফাক সাহেব। মুচকি হেসে মেয়ের সাথে যান। দিপ্তও যায় আহনাফকে সাহায্য করতে।মনে মনে আওড়ায়_
“হ্যান্ডসাম শশুড়।”
নিজের কথায় নিজেই হেসে ফেলে।
চলবে…