অবশেষে পর্ব-১২ এবং শেষ পর্ব

0
2173

#অবশেষে
#written_by_sumaiya_karim
||অন্তিম-পর্ব||
আদ্র কে কল টা তন্নি ই করেছে। কল রিসিভ করার পর তন্নি বলে,
–‘ভাইয়া তুমি কি করেছো এটা? আমি আসার পর জানতে পারছি ভাবী নাকি এসেই অনেক কান্নাকাটি করছে। তারপর যে রুমে ঢুকেছে এখনো আর কোনো সাড়াশব্দ নাই। সবাই মিলে অনেক ডাকাডাকি করেছি কিন্তু কোনো রেসপন্স পেলাম না। আমার অনেক ভয় হচ্ছে রে ভাইয়া। ভাবী যদি রাগ করে নিজের ক্ষতি করে ফেলে তাহলে কিন্তু তুমি কখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না। আমার খুব টেনশন হচ্ছে! এবার তুমি কি করবা তুমি জানো!’

এটা শুনেই আদ্রর হাত থেকে ফোন টা অটোমেটিক্যালি পড়ে যায়। সবার বুঝতে বাকি রইল না যে নিশ্চয়ই কোনো খারাপ কিছু ঘটেছে। রাতুল এগিয়ে আসে,

–‘কিরে আদ্র কে ফোন করেছিলো? আর কি বললো?’

–‘আমাকে এক্ষুনি যেতে হবে। দেরি হলে পরে অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আমি আসি!’

–‘আরে.. আদ্র বলে তো যা!’

আদ্র দৌড়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে যায়। রাতুল বিষয় টা কিছু টা আঁচ করতে পেরে সায়নের দিকে রেগে তাকায়। সায়নের ও চোখাচোখি হয়ে যায়।চোখ নামিয়ে নেয় সায়ন। আর রাতুল রেগে সেখান থেকে বের হয়ে যায়।

তন্নি কে আসতে দেখে আয়রা খানিকটা চমকায়। অন্যদিকে দৃষ্টি নিয়ে সেই একভাবে তাকিয়ে থাকে। মনের আকাশ কালো মেঘে পরিপূর্ণ। তন্নি আয়রার পাশে বসে শিতল শান্ত কন্ঠে বলে,

–‘ভাবী?’

–‘হ্যাঁ!’

–‘ভাইয়ার উপর রাগ করেছো?’

–‘যেখানে কোনো অধিকার নাই। প্রেম ভালোবাসা নাই সেখানে রাগ করা নিতান্তই বোকামি!’

–‘তুমি চলে আসার পর ভাইয়া আমাকে সব বলেছে!’

–‘প্রথমে জিসান কে নিয়ে দোষারোপ করেছে আর এখন রাতুল ভাই কে নিয়ে ছিহ!’

–‘ওহ তোমাকে তো বলাই হয় নি। আসলে ভাবী ভাই কে ভুল বুঝিয়ে দিয়েছে সায়ন ভাইয়া!’

–‘মানে?’

–‘শোনো তাহলে…

সায়নের ব্যাপারে সমস্ত টা একে একে বর্ণনা করলো তন্নি। আয়রা সব শুনে আঁতকে উঠলো। তবে তার খারাপ লাগছে রিয়ার জন্য।

–‘রাতুল ভাইয়া আমাকে সাহায্য করতে এসে নিজেই অপদস্থ হলেন আর রিয়া হসপিটালে। মানে এটা কি কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কাজ? এদের কি করে বন্ধু বলে? যে বন্ধু হয়ে অন্য বন্ধুর খারাপ করতে একবার ও ভাবে না!’

বিন্দু পরিমান রাগ হয় আয়রার। রাগে নাকের ডগা লাল বর্ণ ধারণ করে আছে।

–‘শান্ত হও ভাইয়া তো ওখানেই গেছে!’

–‘ওহ আচ্ছা ভালোই!’

–‘কি ভাবলে?’

–‘দেখো তন্নি আমার মনে হয় না তোমার ভাই আমার সাথে হ্যাপি থাকতে পারবে তাই বেটার এটা হয় যে আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে যাক। তাছাড়া তোমার ভাইয়ের তো আমার উপর বিশ্বাস ই নাই। যেই সম্পর্কে বিশ্বাস নামক গুরুত্বপূর্ণ খুটি টাই শক্ত নাই সেই সম্পর্কে আর এগোনো ঠিক হবে না!’

তন্নি অনেক ভাবে মানানোর চেষ্টা করে কিন্তু আয়রা একেবারেই নারাজ।

–‘আচ্ছা তুমি কি ভাইয়া কে ভালোবাসো?’

এই প্রশ্নের উত্তর টা আয়রার ও জানা নাই। তবে এতো গুলো দিন তাহলে সে কি শুধুমাত্র আদ্রর সাথে কারণ জানতেই থেকে ছিলো নাকি অন্য কোনো কারণ ও আছে? আসলেই কি সে আদ্র কে ভালোবাসে নাকি না? কোনটা? দোটানায় পড়ে আয়রা জবাব দেয়।

–‘হয়তো ভালোবাসি হয়তো ভালোবাসি না!’

–‘যে কোনো একটা বলতে হবে!’

–‘আমাকে একটু একা থাকতে দিবা তন্নি। মাথা যন্ত্রণা করছে!’

রাশেদা সব শুনে বললো,

–‘তন্নি নিচে আসো তো একটু!’

আয়রা ভয় পেয়ে ধরপড়িয়ে উঠে তার চাচি এ ব্যাপারে কিছু শুনলো কিনা জেনে। তন্নি এটা দেখে বলে,

–‘বসো এখানে রিল্যাক্স। উনারা কিছুই জানেন না। ফ্রেশ মাইন্ডে তুমি এখানে ভাবো যে কি করবা তারপর আমাকে জানাবা!’

তন্নি আয়রা কে দরজা বন্ধ করে দিতে বাধ্য করলো কেন বুঝতে পরে নি আয়রা। তবে দরজা বন্ধ করে দিয়ে সে বিছানায় বসে কিছুক্ষণ পা দোলাতে থাকে।

আদ্র যত দ্রুত সম্ভব আয়রাদের বাসায় আসে। আদ্র যখন আসে তখন অনুপমা বাসায় ছিলো না। রাশেদা তাকে প্রতিবেশীর বাসায় পাঠিয়ে দেন। আদ্র এসে দেখতে পায় ড্রয়িংরুমে তন্নি আর রাশেদা বসা। ওরা দুজন আদ্র কে দেখে সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে যায়। আদ্র কে বেশ উদগ্রীব দেখাচ্ছে।

–‘আয়রা কোথায়? দরজা খুলছে? ওর কিছু হয় নি তো?’

আদ্রর মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে সে খুব টেনশনে ছিলো। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে রয়েছে। তন্নি রাশেদার দিকে তাকায় একবার। রাশেদা চুপটি মেরে মুচকি হাসে। এক পক্ষের উত্তর উনি পেয়ে গেছেন। ফলাফল চমৎকার।

–‘কি হলো কিছু বলছেন না যে? চাচি আম্মু আয়রা ঠিক আছে তো?’

–‘জানিনা। তুমি ই গিয়ে দেখো। দরজা সেই যে বন্ধ করেছে আর খোলে নি!’

আদ্র তাড়াহুড়ো করে উপরে আয়রার রুমের সামনে যায়। আর নক করতে থাকে। হঠাৎ এমন করায় আয়রা পিছন ফিরে তাকায়। তার হাতে সেই পুরোনো ডায়রি টা। আর ডায়রির ভাজে রয়েছে আদ্রর ছবি। অপলক নয়নে অবলোকন করতে ব্যস্ত ছিলো আয়রা। আর নিজেই নিজের মধ্যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত ছিলো যে সে কি সত্যিই আদ্র কে ছাড়া থাকতে পারবে? প্রশ্ন টা নিজেকে করতেই ভেতর থেকে তোলপাড় শুরু হয়েছে গেছে।

আদ্র নক করেই যাচ্ছে। মুখে কোনো কথা নেই। আয়রা বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে দিতেই আচমকা আদ্র কে দেখে চমকায় আয়রা। ভাবে চোখের ভুল। কিন্তু হঠাৎ ই আদ্র তাকে আরো চমকে দিয়ে খুব শক্ত করে জাপটে ধরে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয়। আয়রা রোবটের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকলো। আর কি হচ্ছে বুঝতে চেষ্টা করলো। আদ্রর এমন কর্মে আয়রার সারা শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যায়। আদ্র যতটা সম্ভব আয়রা কে খুব শক্ত করে নিজের সাথে মিশিয়ে রাখার চেষ্টা করে। যেনো ছেড়ে দিলেই সে হারিয়ে যাবে। এতোটাই শক্ত করে ধরে যথ আয়রার কষ্ট হচ্ছিল। এটা বুঝতে পেরে আদ্র তাকে ছেড়ে দেয়।‌

আর লাগাতার বলতে থাকে,

–‘তুমি ঠিক আছো তো আয়রা? আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। আসলে আমি তোমার সাথে এতোদিন যা করেছি ঠিক করিনি। আমাকে মাফ করে দাও!’

আয়রা চুপ করে থম মেরে রইল। আদ্র আয়রা কে ভালো করে একবার দেখে বললো,

–‘থ্যাঙ্ক গড। জানো আজ যদি তুমি নিজের কিছু করে ফেলতে আমি কখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না। এই ব্যথা কুড়ে কুড়ে খেলো আমাকে। তন্নি যখন আমাকে বললো যে তুমি এসে কান্নাকাটি করে দরজা বন্ধ করে বসে আছো আমি তখন খুব ভয় পেয়ে গেছি। ভয়ে আমার জান বেরিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। আমার মনে হচ্ছিলো এই বুঝি তোমাকে হারালাম।’

আয়রা ভ্রুঁ কুঁচকে তাকালো। আর আদ্রর কথা বুঝতে চেষ্টা করলো। তন্নি মিথ্যা কেন বললো বুঝতে পারলো না।

–‘কি হলো কথা বলবে না আমার সাথে?’

তখনি রুমে ঢুকলো তন্নি আর রাশেদা। তাদের প্ল্যান এটা ছিলো তা বলে দিলে আয়রা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলে,

–‘তোমারা এটা করে মোটেও ঠিক করো নি। যে মানুষ টি আমাকে বিশ্বাস ই করে না সে আমাকে ভালো কি করে বাসতে পারে? আমি বিচ্ছেদ চাই এটাই ফাইনাল।’

–‘আয়রা আমার কথা শোন…

–‘ভাবী আরে কোথায় যাচ্ছো!’

তন্নি আর রাশেদা আয়রার পেছন পেছন যেতে নিলে আয়রা নিষেধ করে দিতে বলে,

–‘আমাকে আমার মতো ছেড়ে দাও। আমার জীবনের সিদ্ধান্ত আমি নিবো জোড় করলে ভালো হবে না একদম!’

রাশেদা আর তন্নি থেমে যায়। আর সামনে অগ্রসর হয় না। আদ্র বেপোরোয়া হয়ে বিছানায় মাথায় হাত দিতে বসে পড়লো। চোখ টকটকে লাল রূপ ধারণ করেছে। আয়রার কথা গুলো সত্যি ই কড়া ছিলো। কিভাবে মেনে নিবে আদ্র নিজেও বুঝতে পারছে না। তবে আয়রার এই কথা গুলো নিজের মধ্যে এক হাহাকার নিমিশেই মেতে উঠেছে তা সে ভালো করেই বুঝতে পারছে। মনে থেকে একটা কথা ক্রমাগত ভেসে আসতে থাকলো,

–‘আচ্ছা আমাদের মাঝে কিছু কি ছিলো?
হ্যাঁ হয়তো ছিলো!
স্নিগ্ধ এক প্রেম-ভালোবাসা ছিলো অকাল লগ্ন শেষে,
আমি ও কি তাহলে তোমাকে হারালাম অবশেষে?’

আফসোস হচ্ছে ভীষণ আদ্রর। সঙ্গে প্রশ্নের উত্তর টাও খুঁজে বেড়ালো। হঠাৎ ই আদ্রর চোখ যায় নিচে পড়ে থাকা ডায়রিটার দিকে!

আয়রা ছাঁদে গিয়ে নিশ্চুপে চোখের পানি বিসর্জন দিতে থাকে। মুখে সে যা বলছে তা মনের কথা নয়। জেদ ধরে এমন কথা বলেছে সে। তবে এটা বেশ বুঝতে পারছে আদ্র কে ছাড়া থাকা তার পক্ষে কঠিন। একটু একটু করে খুব ভালোবেসে ফেলেছে তাকে। ভালোবাসা কে ছেড়ে দূরে থাকবে কি করে সে জানে না! তবে এই সিদ্ধান্ত টা কঠিন তার জন্য! আদ্রর জন্য ও কি তা? আচ্ছা আদ্র ও কি তাকে ভালোবাসে? নাকি সব মিথ্যা? আদ্রর চোখে যে সে শূন্যতা হাহাকার হতাশা দেখতে পেলো তাও কি মিথ্যা? নাকি সত্যি!

আদ্র ডায়রি টা পরে বুঝতে পেরে আয়রা তাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসতো। ডায়রিতে সব উল্লেখ করা আছে। আয়রার ভালোবাসা গুলো কতো সুন্দর তা সে ডায়রি টা হাতে না পেলে হয়তো বুঝতো না। আদ্র কেন এতোদিন জিসানের জন্য আয়রার সাথে অন্যায় টা করেছে তার জন্য নিজের উপর ই রাগ হতে থাকলো। তন্নি পেছন থেকে বললো,

–‘ভাইয়া এখন কি করবা?’

–‘আয়রা আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না!’

–‘আর তুমি?’

–‘আমি ও না। এতোদিন যা করেছি তার প্রায়শ্চিত্ত তো আমাকেই করতে হবে! আয়রা কই?’

–‘ছাঁদে!’

–‘আচ্ছা দেখছি!’

–‘এটা কি?’

আদ্রর হাতের ডায়রি টার দিকে ইশারা করে।

–‘তুই নিজেই দেখ!’

আদ্র ঠোঁটে একফালি হাসি লেগে আছে।

এই হাসি কেন তন্নি বুঝতে পারলো না।

–‘তোর ভাবী তোর ভাইয়ের ই থাকবে বুঝলি সাকচুন্নি।’

তন্নির নাকের ডগায় টোকা মেরে হাসে আদ্র। আর ছাঁদে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। তন্নি পেছন থেকে চেঁচিয়ে বলে,

–‘অল দ্যা বেস্ট!’

আদ্র ছাঁদে যায় আর দেখে আয়রা ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলেছে। আদ্র বুকের বা পাশে চিন চিন ব্যথা অনুভব করে। আর ঠোঁটের কোণে হাসি গায়েব হয়ে যায়। সে নিশ্চুপে পা ফেলে আয়রার সামনে যায়। আয়রা আদ্র কে দেখে বলে,

–‘কেন এসেছেন আপনি! চলে যান এখান থেকে!’

–‘সত্যি ই চাও কি আমি চলে যাই?’

–‘হ্যাঁ চাই!’

–‘সত্যি?’

–‘হ্যাঁ!’

–‘তাহলে চোখে পানি কেন?’

আয়রা চুপ থাকলো দেখে আদ্র আয়রার কানে কানে ফিসফিস করে বললো,

–‘ভালোবাসো আমাকে?’

আয়রা একটু দূরে সরে যায় আর পেছন ফিরে থাকে। বস্তুত সে ইগনোর করতে চেয়েছিলো। আদ্ৃ আবারো আয়রার সামনে গিয়ে আলতো করে তার চোখের পানি মুছে দেয় আর গালে হাত রেখে বলে,

–‘কি হলো বলো! ভালোবাসো আমাকে?’

পুনরায় চুপ থাকাতে আদ্র তার উত্তর পেয়ে যায়। ছাঁদের একপাশে ফুলের গাছ ছিলো। তার মধ্যে একটা গোলাপ খুব সুন্দর ফুটে ছিলো আদ্র হুট করে সেদিকে চলে যায়। আয়রা তাকিয়ে দেখলো।

আদ্র ফুল টা ছিড়তে যায় আর হাতে কাটা ফুটার ভান করে ব্যথায় ‘আউচ্’ বলে হালকা চিৎকার দেয়। আয়রা তাড়াতাড়ি আদ্রর কাছে এগিয়ে এসে বলে,

–‘কি হলো? কাটা ফুটে গেছে!’

–‘না ভালোবাসা ফুটেছে! তুমি ভালোবাসো না তাই গোলাপের কাটা ভালোবাসা দিচ্ছে কি আর করা ফুটা কপাল আমার!’

আদ্রর হাত ধরে দেখে একদম ঠিকঠাক আছে। তাই সে হালকা রেগে গাল ফুলিয়ে পেছন ফিরে যায়। আদ্র ফুল টা খুব সাবধানে ছিড়ে হাতে নিয়ে হাটু গেড়ে আয়রার সামনে বসে পড়ে আর বলে,

–‘আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো! সেই ভালোবাসা থেকে কি আমাকে ক্ষমা করা যায় না? ক্ষমা না করতে পারলে সেটা কেমন ভালোবাসা? আমি সত্যি বলছি আর কখনো এমন করবো না। নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার একটা সুযোগ অন্তত দাও আমাকে আয়রা প্লিজ! আই প্রমিজ আর কখনো এমন কিছু করবো না যাতে তোমার চোখের পানি ঝরে! ভেবে দেখলাম আমিও তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। যেটা আমি এতোদিন রাগে ক্ষোভে বুঝিনি সেটা এখন বুঝেছি। আর সেটা হচ্ছে আমি তোমাকে ভালোবাসি। ডু ইউ লাভ মি আয়রা?’

আয়রা চুপ থাকলো। অনেক্ষণ পর কি ভেবে যেনো তার সব রাগ পানি হয়ে যায়। আয়রা কে তাও চুপ করে থাকতে দেখে বলে,

–‘ফুল টা নাও তো!’

আয়রার হাতে ফুল টা দিয়ে দুই হাতে কান ধরে আয়রার সামনে হাটু গেড়ে বসে আদ্র। ছোট্ট বাচ্চাদের মতো করুন কন্ঠে বলে,

–‘সরি আর কখনো এমন হবে না ৩ সত্যি বলছি। খুব বিশ্বাস করবো এবং ভালোবাসবো তোমাকে। একটা বার মাফ করে দাও আমাকে!’

আয়রার এবার যেনো হেসে ফেলে। এবার আদ্র আয়রার পা ধরতে গেলে আয়রা চোখ বড় বড় করে দূরে সরে যায়।

–‘এটা কি করছেন আপনি! উঠুন বলছি!’

আদ্র দুষ্টুমি করে বলে,

–‘উঠতে পারছি না!’

আয়রা আদ্রর হাত টেনে ধরে উঠাতে গেলে আদ্র উঠে আয়রা কে জড়িয়ে ধরে। কানে কানে ফিসফিস করে বলে,

–‘আই লাভ ইউ!’

–‘টু!’

–‘টু কি?’

–‘জানিনা!’

–‘জেনে বলো!’

–‘আই লাভ ইউ টু!’

–‘আর কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা মনে ভুলে ও আনবে না। বাঁচলে একসাথে বাঁচবো আর মরলে..

আয়রা আদ্রর মুখ চেপে ধরে,

–‘চুপ!’

আয়রা পরম প্রশান্তির স্থান আদ্র বুকে ভালোবাসায় মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে নেয়। এতোদিন পর মনে হচ্ছে সে খুব ভালো আছে। মনে হচ্ছে এটাকেই বুঝি বলে অবশেষে পূর্ণতা!

ভালোবাসা শুধু ভালোবাসতে শিখায় না ক্ষমা করতেও শিখায়। তা না হলে এ কেমন ভালোবাসা? আর অনুতপ্ত হলে তো আল্লাহ ও তার বান্দা কে ক্ষমা করে বান্দারা কেন নয়! ভালোবাসা কে ক্ষমা করে দিলে যদি ভালো কিছু পাওয়া যায় তবে হোক না চমৎকার কিছু! দোষের কি?

আদ্র আর আয়রা কে এক হতে দেখে তন্নি খুশিতে লাফিয়ে উঠে। রাশেদা কে জানায় প্ল্যান সাকসেসফুল। অনেক কিছুর পর অবশেষে এক হলো দুজন। ভালো থাকুক ভালোবাসা। ভালোবাসা সুন্দর! আর সব ভালোবাসা গুলোই পাক পূর্ণতা!

||সমাপ্ত||

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে