অপ্রাপ্তি পর্ব-১৪

0
1210

#অপ্রাপ্তি 💔
#ইবনাত_আয়াত
~ পর্ব. ১৪

আজ আকাশ টা মেঘলা। হালকা কালো মেঘে ভরে আছে নীলিমা। তাহসিন আমায় ছাদে নিয়ে এলেন। কিন্তু ছাদে গিয়েই চমকে উঠলাম। কারণ? সেখানে ছিল আদিল ভাইয়া আর জেমি ভাইয়া। সাথে তাদের দুই ফ্রেন্ড ইন্দ্রা আপু আর নীশা আপু। আর সাথে আমার প্রিয় ফ্রেন্ড সাদিয়া, নীরব, সূর্য আর জেরিন। অধর দুটো একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। দুইটা বছর, নাহ্ নাহ্ তিন টা বছর ওদের থেকে দূরে ছিলাম। দেখিনি ওদের। তারা ‘সারপ্রাইজ’ বলেই দৌড়ে এসে ঝাপটে জড়িয়ে ধরল। সাদিয়া বলল, ‘কেমন আছিস রে ক্রাশ প্রিন্সেস?’

নাক মুখ কুঁচকে বললাম, ‘হোয়াট?’

‘আরে? ক্রাশ খেয়েছিলি মনে নেই?’

ইশারায় ধাক্কা দিলাম, ‘চুপ!’

‘আচ্ছা আচ্ছা। কেমন আছিস? আমাদের তো ভুলেই গেলি।’

‘আছি আলহামদুলিল্লাহ্। নাহ্ রে তোদের ভুলব? ইম্পসিবল।’

‘তাহলে এতদিন খোঁজ নিস নি কেন?’

‘যেখানে বাবা মায়ের খোঁজ নেওয়ার অবস্থায় ছিলাম না সেখানে তোদের খোঁজ নিতে পারতাম?’

জেরিন বলল, ‘ওই জানুয়ার টাকে আমি আগে থেকেই সন্দেহ করেছিলাম। দেখ আমার সন্দেহই সত্যি বের হলো।’

সূর্য বলল, ‘তুই তো ওর চক্করে আমাদের ভুলেই গিয়েছিলি।’

নীরব বলল, ‘ও ভুলে যায় নি। ওই রিশান পিশানের বাচ্চাই ওকে ভুলে যেতে বাধ্য করেছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে। বিয়ে করেছে। দুই বছর অত্যাচার করেছে। পরকীয়ায় জড়িয়েছে। দিন শেষে সেই ছেড়ে দিয়েছে।’

তাহসিন বললেন, ‘তাই তো কবি বলেছেন, বিয়ের আগে প্রেম করো না।’

হেসে উঠল সবাই। আমিও জোরপূর্বক হাসলাম। আদিল ভাইয়া বলল, ‘কী ইবনাত আন্টি? আপনি তো ভুলেই গেছেন দেখি আমাদের। প্রেমিকা আপু!’

মুখ ফুলিয়ে বললাম, ‘ভাইয়া! আপনারাই তো চলে গিয়েছিলেন।’

‘স্যরি স্যরি দোষ তো আমাদেরই ছিল।’

তাহসিন বললেন, ‘তো এভাবে দাঁড়িয়েই কথা বলবি? রিল্যাক্স হয়ে বস।’

ছাদে চেয়ার টেবিল ছিল। তাতে সবাই লাইন ধরে বসে পড়ল। কিছুক্ষণ ভালোমন্দ কথা চলল। জেরিন মাঝে বলে উঠে, ‘এত কিছু করল ওরা তোর সাথে। কেন ওদের পুলিশে দিতে পারলি না?’

‘পুলিশ কী করবে জেরিন? রিমান্ডে নিবে? জেলে দিবে। শেষে ঠিক’ই টাকার জোড়ে ছাড়িয়ে নেবে। আর? কিন্তু রব প্রদত্ত শাস্তি গুলো এমন যে তার থেকে তোরা কখনোই বাঁচতে পারবি না। আল্লাহ্ জানে তার প্র’তারণায় কত’রাত কেঁদেছি আমি। কত’রাত জায়নামাজ ভিজিয়েছি আমি।’

‘এটলিস্ট অপমান তো করতে পারতি।’

‘ওই বাড়িতে থাকা কালীন কম অপমান করিনি।’

‘তো এখন কী করবি?’

‘কিছুই করব না। শুধুই দেখে যাব।’

‘দেখে যাবি মানে?’

‘ওই রিশানের হাল এতটা ভালো হবে না। আমি জানি।’

সবাই চুপ করে রইল। হাসলাম। বললাম, ‘এতদিন পর দেখা হলো, কোথায় আড্ডা দিবি তা না এসব নিয়ে কথা তুলছিস?’

‘তা আর কী? সাদিয়া তো আগের কথা তুলতেই ভালোবাসে।’

‘এই এই! বে-আদব! আমার নাম দিবি না। তুই বলিস নি?’

‘তোর থেকে শুনেই তো বললাম।’

তাহসিন মাঝে বললেন, ‘হয়েছে হয়েছে ঝগড়া করা বন্ধ করো।’

সবাই ভালোই সময় কাটালাম। খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। খাওয়া দাওয়া শেষে আরো একটা আড্ডার আসর জমল মুরুব্বী, বাচ্চা-কাচ্চা সহ।

.

অফিস শেষে রুমে প্রবেশ করতেই রমণীর হাসিমাখা মুখ নজরে এলো রিশানের। মোবাইল ফোনেই তার দৃষ্টি নিবদ্ধ। রিশান নামক প্রাণীটা যে এসেছে তার কোন খেয়ালই নেই। আজকাল প্রায় সময় তার চোখ মোবাইলেই নিবদ্ধ থাকে৷ রিশান কারণ খুঁজে পায় না কিছু বলার। শার্ট, টাই খুলে আলনায় ঝুলিয়ে রেখে ক্লান্ত দেহটা বিছানায় এলিয়ে দিল। ইশির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ইশি! এক গ্লাস শরবত দিতে পারবে? খুব গরম লাগছে।’

ইশি মোবাইলে দৃষ্টি রেখেই জবাব দিল, ‘উফ রিশান! দেখছো না ক্লান্ত লাগছে তাই বসে আছি। রুমিকে বলো।’

‘রুমি নেই ইশি। ও ভার্সিটি গেছে।’

‘তাহলে আম্মুকে বলো।’

‘ইশি মাথা খারাপ করছো কিন্তু। আম্মুর বয়স হয়েছে এসব করার শক্তি তার আছে? তা ছাড়া রাতদিন তো ঘরেই বসে থাকো। কিসের ক্লান্তি এত তোমার?’

‘রিশান। আমি এখানকার কাজের মেয়ে নই যে ওই ইবনাতের মতো উঠতে বসতে কাজ করব। আমি এখানকার বউ।’

‘বউ তাতে কী হয়েছে? রুমি কী কাজ করে না?’

‘ও আমার ছোট। তাই কাজ করতেই পারে। আমার আদেশ তো অবশ্যই পালন করবে।’

‘আর আমি তোমার স্বামী। সো তোমাকে আমার আদেশ পালন করতেই হবে।’

‘উফ রিশান! আগের ধ্যান-ধারণা নিয়ে পড়ে আছো এখনো? এখন হচ্ছে মর্ডান যুগ। এসব আছে নাকি এখন?’

‘ইশি তোমাকে যেই কাজ টা করতে বলেছি সেটাই করো এত কথা আমি শুনতে চাই না।’

‘আমি পারব না। পারলে নিজে বানিয়ে খাও।’

‘ইশি!!’

‘উফ!’

বলেই ইশি উঠে ব্যালকনিতে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা আটকে দিল। রিশান দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করল। আজকাল ইশি যেন ওকে পাত্তাই দেয় না। মাও অসুস্থ হয়ে গেছে। রুমিও বা কত খাঁটবে? হঠাৎ মনে পড়ল ইবনাত ও তো খেঁটেছে। ও একটু করলে কী যায় আসে? ইশিও সারাদিন শুয়ে বসে আর বাহিরে ঘুরাঘুরি করে কাঁটায়। বিষয়টা রাহেলা বেগমই বলেছে তাকে। কিন্তু সে পাত্তা দেয় না আর বলে যে, ও ইবনাত নয়, ও ইশি।

ফ্রেশ হয়ে মিহিরের রুমের দিকে এগিয়ে গেল রিশান। দরজা আটকানো। ডাকল, ‘মিহির!’

ভেতর থেকে আওয়াজ এলো, ‘কে?’

‘আমি, তোর বড় ভাইয়া।’

‘ওহ্ আচ্ছা ভাইয়া? দাঁড়াও আসছি।’

মিহির এসে দরজা খুলে দিল। রিশান বলল, ‘সারাদিন কী করিস রুমের ভেতর?’

‘কী আর করব? বসে থাকি।’

‘আচ্ছা একটা কাজ করবি?’

‘কী?’

‘আমায় একটু কফি বানিয়ে দে।’

‘কেন তোমার বউ নেই? তোমার বউকে বলো না।’

‘মিহির! আমি তোকে বলেছি।’

‘আর আমি তোমার বউকে বলতে বলেছি।’

‘ও পারবে না তাই তোকে বলছি।’

‘কেন পারবে না? ক্লান্ত লাগছে নাকি তার?’

‘হ্যাঁ।’

‘কেন কী এমন করেছে যে ক্লান্ত লাগছে? সারাদিন তো রুমেই কাঁটিয়েছে হেসে হেসে কথা বলে।’

‘মানে? কার সাথে?’

‘আমি কী জানি কার সাথে।’

রিশান চিন্তায় ডুব দেয়। একটু পর বলল, ‘তুই দিবি?’

‘আমি কেন দেব? আমি তো এই বাড়ির মেয়ে। আর এই বাড়ির বড় বউকেই সব কাজ করতে হয়। সে কাজ না করলে তার তো ভাতই জোঁটে না।’

রিশান বুঝতে পারল মিহির সেই কথার মাধ্যমে ইবনাতের কথা বুঝিয়ে দিচ্ছে। রিশান কিছু না বলে প্রস্থান করল। মিহির তাচ্ছিল্য হাসল। বলল, ‘ভাবী.. মানে ইবনাত আপুর সঙ্গে খুব অন্যায় করেছ ভাইয়া। এবার সেই অন্যায়গুলো তোমাদের সাথেও হবে।’

.

রাতের শুরু। চারপাশ জোনাকির আলোয় ভরে আছে। চাঁদ আর তারা তো আছেই। ব্যালকনিতে বসে আছি। তাহসিন প্রবেশ করলেন। এক পলক তার দিকে তাকিয়ে আবারো বাহিরে নজর দিলাম৷ তিনি বললেন, ‘মন খারাপ?’

‘নাহ্!’

‘তাহলে? এভাবে বসে আছো কেন?’

‘এমনি। কিছু বলবেন?’

‘কী বলব?’

চুপ করে রইলাম। পাশের ভাস টেবিলে থাকা ফোন টা বেজে উঠল। উঠিয়ে দেখলাম ‘মিহির’ নাম টা জ্বলজ্বল করছে। মুখে হাসি ফুঁটিয়ে রিসিভ করে কানে লাগালাম, ‘হ্যালো মিহির।’

‘কেমন আছো আপু?’

‘আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?’

‘ভ-ভালো নেই আপু।’

মিহিরের কান্নামিশ্রিত গলা শুনে কিছু টা খারাপ লাগা কাজ করল। বললাম, ‘কী হয়েছে মিহির? তোমার কন্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেন? আর ভালো নেই মানে?’

মিহির কেঁদে বলল, ‘আ-আমার বিয়ে ঠিক করবে বলছে আপু।’

‘মানেহ্?’

‘হ্যাঁ। তিন মাসের মধ্যেই।’

‘কী বলছো এসব?’

‘আমি জানি না আমি কী করব। যদি কোন বুড়ার সঙ্গে করে? আমি বাঁচবো না আপু।’

‘এভাবে বলো না মিহির। আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। তুমি চিন্তা করো না নিশ্চয়ই তিনি কিছু করবেন।’

‘আমার আর কিছুই ভালো লাগছে না। এই বাড়িটাও যেন শ্মশানে পরিণত হয়েছে।’

‘মানে?’

‘তোমার সঙ্গে কতা অন্যায়ের হিসাব আল্লাহ্ নিচ্ছেন আপু।’

‘আমি কিছু বুঝলাম না মিহির।’

‘এই বাড়ির কেউই ভালো নেই। ওই ইশি আসার পর থেকে সব সুখ শান্তি নষ্ট হয়ে গেছে। আব্বু আম্মু আজকাল কথা বলে না। ছোট ভাবী আর ছোট ভাইয়াও সারাক্ষণ ঝগড়াঝাঁটি করে। নিশাত আপু সারাদিন মোবাইল নিয়ে বসে থাকে রুমের কোণে। আর ওই ইশি তো যেন ঘরের রাণী। সারাদিন বাহিরে ঘুরে বেড়াবে। বিকেলে এসে টাইম টু টাইম খাবার খুঁজবে। আর তাদের মাঝেও ভালো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। আজ ভাইয়া এসে দেখলাম কফি খুঁজছে। ইশি নাকি দিচ্ছে না। ও নাকি ভাইয়ার কোন কথাই শুনছে না।’

হাসলাম। বললাম, ‘বলেছিলাম না এই পরিবার শান্তি পাবে না কখনো। আমার সাথে যা করেছে তা কখনোই ক্ষমার যোগ্য না। আর রিশান? সে তো কখনোই কারো কাছে সুখ পাবে না। সে আমার সাথে যা করেছে, তা আমি কখনোই ক্ষমা করব না।’

‘হুম আপু। আচ্ছা তুমি স্কুলে আসছো না? আমার সঙ্গে দেখা করবে?’

‘তো তুমি এখানে আসো না। এখানে আসলেই তো পারো।’

‘না আপু। এখন দূরে কোথাও যেতে পারব না। তবে কাছাকাছি কোথাও যেতে পারি। তাই বলছিলাম।’

‘আমি আর ক’দিন পরেই স্কুল কন্টিনিউ করতে পারি। তখন নাহয়?’

‘আচ্ছা আপু। ভাইয়া কেমন আছে?’

‘আহ-হ্যাঁ ভালো আছে।’

‘হিহি! দিন কেমন কাঁটছে ভাইয়ার সাথে?’

‘যাহ্ দুষ্ট। কী বলো এসব?’

‘হিহি। আচ্ছা আপু রাখি। আল্লাহ্ হাফেজ।’

‘আল্লাহ্ হাফেজ।’

ফোন কাঁটতেই তাহসিন বললেন, ‘কে ছিল ওটা?’

‘মিহির।’

‘মিহির কে?’

‘র-রিশানের বোন।’

‘কী বলো? ওর সঙ্গে সম্পর্ক আছে?’

‘হ্যাঁ ও খুব ভালো মেয়ে। যখন সবাই আমার বিরুদ্ধে ছিল তখন ও আমার পাশে ছিল। আমাকে বোনের মতোই ভালোবাসে।’

‘কিন্তু কী হয়েছে? মনে হলো কাঁদছিল।’

‘হ্যাঁ। ওর নাকি বিয়ে ঠিক করছে ওর বাবা মা।’

‘তো কাঁদার কী আছে?’

‘ও মাত্র এস’এস’সি দিয়েছে। আর ভাবছে তার বোনের মতো যদি কোন বয়স্কর সঙ্গে বিয়ে দেয়?’

‘ওর তো এখনো আঠারো পুর্ণ হয়নি তাই না?’

‘নাহ্। তবে দু’মাস পরেই পূর্ণ হবে। আর তিন মাসের মধ্যেই নাকি পাত্র ঠিক করে ফেলবে।’

‘কিছু করবে?’

‘কী করব? ওদের মেয়ে। কিছুই করার নেই আমার। আর আমি ওই বাড়িতে যাচ্ছি না। কখনো না।’

তাহসিন কিছু বললেন না। নিরবে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলাম দু’জন। তাহসিন একটু পর বললেন, ‘রাত তো কম হলো না ইবনাত। যাও শুয়ে পড়।’

‘আর আপনি?’

‘ঘুম আসছে না আজ। তুমি যাও।’

‘উহু! আপনিও আসুন।’

‘পরে যাচ্ছি ইবনাত।’

‘ঠিক আছে তাহলে আমিও যাচ্ছি না।’

‘ইবনাত!’

‘বললাম তো। যাব না। আপনি রাত জেগে আকাশ দেখবেন আর আমি ঘুমাব? উহু।’

‘বড্ড জেদি তুমি।’

‘আগের মতো।’

‘কিন্তু তোমার চাঞ্চল্যতা তো দূর হয়ে গেছে হৃদরাণী।’

হৃদরাণী। শব্দটা তিন বার শুনেছি তার থেকে। কী বুঝাতে চেয়েছেন উনি?

‘চাঞ্চল্যতা তো সে তিন বছর আগে থেকেই চলে গেছে আমার। এখন শুধু রাগ আর জেদ টাই বাকি আছে। হয়তো এটাও চলে যাবে।’

‘এই! একদম এসব বলবে না। ঠাঁটিয়ে চড় মারব ধরে একদম। রাগ জেদ যাবে না। উল্টো চাঞ্চল্য টা ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে তোমাকে। নয়তো আমি আছি অ্যাকশন নিতে ওকে?’

ভীতু দৃষ্টিতে তাকালাম তার দিকে। তাহসিন হেসে ফেললেন। সেই আগের হাসিটা। উফ! খালিই তাকিয়ে থাকতাম তখন। কিন্তু? এখন তো সে আমার স্বামী। চাইলেই তো সবসময় তার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি। আপন করে নিতে পারি। কিন্তু.. কোন অদৃশ্য শক্তি বাঁধা দিচ্ছে আমাকে। তাহসিন আবারো বললেন, ‘এই মেয়ে আসো। রুমে আসো।’

‘আসছি।’

[চলবে.. ইন শা আল্লাহ্]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে