#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ৭
#তানিশা সুলতানা
আবির আর খেতে পারছে না। যা ছ্যাঁকা খেয়েছে তাতেই পেট ভরে গেছে।
“আবির খাচ্ছো না কেনো? একটু আগে তো না খেতে পেয়ে মরেই যাচ্ছিলে?
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সাদি।
আবির কটমট চোখে তাকায় সাদির দিকে।
” সত্যিই তো
খাচ্ছো না কেনো? খাবারটা কি ভালো লাগছে না?
অন্য কিছু বানিয়ে দেবো?
সাবিনা বেগম বলেন।
আবির অপ্রস্তুত হাসে।
“না না আন্টি ঠিক আছে খাচ্ছি তো।
মুখে খাবার পুরে বলে আবির।
তখনই আবার ছোঁয়া পরিকে কোলে করে নিচে নামে। সাদি চোয়াল শক্ত করে দাঁড়ায়।
আবির তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার দিকে।
” শাশুড়ী
সাবিনা বেগম চোখ পাকিয়ে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। ছোঁয়া মাথা নিচু করে ফেলে।
“এখানে কেনো তুমি?
” আসলে পরি চিপস খাবে। কিন্তু বাসায় চিপস নেই। তাই ভাবছিলাম দোকান থেকে কিনে নিয়ে আসি।
রিনরিনিয়ে বলে ছোঁয়া।
“আন্টি ও কে?
আবির প্রশ্ন করে।
“কেনো বাবা ওর সম্পর্কে তুমি কেনো জিজ্ঞেস করবে? আর আমিই বলবো কেনো?
সাবিনা বেগম কড়া দৃষ্টিতে তাকায় আবিরের দিকে।
আবির থমথমের খেয়ে যায়। যেমন ছেলে তার তেমন মা।
” না মানে আসলে
আবির আমতা আমতা করে বলতে নেয়।
“ইয়ে মানে আসলে এসব কথা আমার আর
” শাশুড়ী আমি বলে দিচ্ছি।
সাবিনা বেগমকে থামিয়ে বলে ছোঁয়া। এক গাল হেসে এগিয়ে আসে।
“এরকম ইয়ে মানে আসলে এসব কথা আমার আর আমার ছেলে পছন্দ এটা। এটা চৌধুরী বাড়ি। এই বাড়ি ইয়ে মানে আসলো এসব চলে না।
ঠিক আছে না শাশুড়ী?
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। শাশুড়ী অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার দিকে।
আবির গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে আছে। এই মেয়েটার কথা বলার স্টাইলও ভালো লেগে গেছে ওর।
” এই ছেলে তোমার খাওয়া শেষ হলে বিদেয় হও।
ধমক দিয়ে বলে সাবিনা বেগম। ছোঁয়া চমকে ওঠে।আবির কোনো রকমে হাত ধুয়েই হুট মুর করে বেরিয়ে যায়।
সাদি রুমে চলে যায়।
“এই মেয়ে তোমার কি কোনো দিন কান্ডব ঙ্গান হবে না?
যাও রুমে। বাড়িতে চিপস না থাকলে অন্য কেউ দোকানে যাবে। তোমাকে যেতে কে বলেছে?
শাশুড়ীর ধমক শুনে ছোঁয়া রুমে চলে যায়। পরি কেঁদে ফেলে। ও ভেবেছে ওকেই বকা দিয়েছে।
🥀🥀
রাতে রান্না করার ভয়ে ছোঁয়া পরিকে নিয়ে ছাঁদে চলে যায়। শশুড় মশাইয়ের ফোন নিয়ে এসেছে। ছোঁয়ার একটা বাটন ফোন। আজকে শশুরের কাছে বাইনা করেছে একটা স্মার্ট কিনে দেওয়ার জন্য। আর তিনি বলেছে কালকেই কিনে দেবে। ছোঁয়ার খুশি আর দেখে কে?
এখন দুজন মিলে কার্টুন দেখবে বলে ঠিক করেছে। আর ছাঁদে আসার কারণ হলে যাতে কেউ ডিস্টার্ব না করে।
রাতে খাবার টেবিলে সবাই উপস্থিত। ছোঁয়া পরিকে নিয়ে একটু আগেই নিচে নেমেছে। আর তখনই সাবিনা বেগম ছোঁয়াকে কাজে লাগিয়ে দিয়েছে। শশা কাটতে হচ্ছে ছোঁয়াকে।
আর সবার খাওয়া হলে গেলে বাসনও ওকেই মাজতে হবে। দুঃখে কান্না চলে আসছে ছোঁয়ার। বাড়ি থাকতে একটুও কাজ করতে হতো না। মা আর আপিই সব কাজ করতো। কিন্তু এখানে দজ্জাল শাশুড়ী একটার পর একটা কাজ দিয়েই যাচ্ছে
সাদি সবাইকে কিছু বলতে চাই। তাই খাবার সামনে নিয়ে বসে আছে খাচ্ছে না।
সবাই চলে আসার পর সাদি লম্বা শ্বাস নেয়।
” বাবা কিছু বলতে চাইছি।
“হুমম বলো
খাবার মুখে পুরে বলেন উনি।
” কালকে সকালেই ঢাকা চলে যাবো আমি।
“সে কি রে? মাএ তিন দিন হলে বাড়িতে এসেছিস আর এখনই ঢাকায় যাবি। কেনো?
সিফাত জিজ্ঞেস করে।
” আমি ওখানেই থাকবো। এইরকম সস্তার জবে আমার পোষাবো না।
“আর তোর বউ?
সাদির প্লেটে ডাল দিয়ে বলেন সাবিনা বেগম।
” ও তো অনেক ছোট। সংসারের কিছু বোঝে না। তুমি নাহয় ওকে শেখাও সংসার কিভাবে করতে হয়। শিখে গেলে নিয়ে যাবো।
মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে সাদি।
ছোঁয়া এক পাশে দাঁড়িয়ে শুনছে সব।
“আমিও ওকে রাখতে পারবো না। তুই ওকে শেখাবি কি করে সংসার করতে হয়। শাশুড়ীর সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়। তারপর এখানে এনে রেখে যাবি।
কর্কশ গলায় বলেন উনি।
” মা তুমি কি শুরু করলে বলবে?
বিরক্ত হয়ে বলে সাদি
“কিছুই শুরু করি নি। সিফাত কাল চলে যাবে। তুইও চলে যাবি। আর এই বুরো মায়ের ঘাড়ে রেখে যাবি তোর ছোট বউকে। আর সিফাত রেখে যাবে ওর মেয়েকে।
আমি কি মানুষ না? আমার কি কোনো সখ আহ্লাদ নেই?
ছেলে ছেলের বউ নিয়ে আমারও সংসার করতে ইচ্ছে করে।
সিফাত মায়ের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকায়। সত্যিই মাকে বলার মতো কিছুই নেই ওর।
” তোমার এসব ইমোশনাল ড্রামা বন্ধ করো তো। জাস্ট বিরক্ত লাগে আমার।
তোমার বড় ছেলেকে বলো তার বউ কোথায় তাকে নিয়ে আসতে। তারপর তার সাথে সংসার করো।
সাদি হনহনিয়ে চলে যায়। সুলাইমান চৌধুরী স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে। সিফাত মাথা নিচু করে আছে।
“তোমারা কেনো খাচ্ছো না? তারাতাড়ি খাবার শেষ করো।
কঠিন গলায় বলেন উনি।
ছোঁয়ার চোখে পানি চলে আসে। মায়ের সাথে কেউ এমন ব্যবহার করে।
” মা আমি বিয়ে করতে পারবো না। আমি তোমার সখ আহ্লাদ মিটাতে পারবো না। তুমি পরির মুখের দিকে তাকাও না মা। দেখে কতো মায়া মেয়েটার মুখে। ওকে নিয়েই তোমার সখ গুলো পূরণ করো না মা।
রিনরিনিয়ে বলে সিফাত।
সাবিনা বেগম কিছু বলে না।
“এই মেয়ে তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছে কেনো?
খেতে বসো।
ছোঁয়াকে বলেন উনি।
ছোঁয়া হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে নেয়।
” খিধে নেই আমার।
সাবিনা বেগম কিছু বলে না। নিজের ঘরে চলে যায়। মানুষটা খুব কঠিন মনের। সবাইকে নিজের কষ্ট দেখায় না উনি।
ছোঁয়া সাদির রুমে আসে। কানে হেডফোন গুঁজে বেলকনিতে বসে আছে তিনি। ছোঁয়ার ভীষণ রাগ হয়। মাকে কথা শুনিয়ে এখানে এসে গান শোনা হচ্ছে।
দাঁত কটমট করে সাদির দিকে আসতে যায়। একটু আগেই সাদি হাত ফসকে পানির বোতল পড়ে অনেকটা পানি পড়েছিলো ওখানে। ছোঁয়া সেটা খেয়াল করে না।
হনহনিয়ে আসতে গিয়ে ঠাস করে পড়ে যায়। ধাপ করে শব্দ হওয়াতে সাদি পেছনে তাকায় ছোঁয়াকে পরে থাকতে দেখে বোঝা শেষ। এই মেয়েটা আবার পড়ে গেছে।
কান থেকে হেডফোন খুলে সাদি। ছোঁয়া চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে আছে।
“পবলেম কি?
সাদি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে ছোঁয়াকে। ছোঁয়া চোখ খুলে। খুব বেশি ব্যাথা পায় নি।
গোল হয়ে বসে ছোঁয়া।
” আপনার পবলেম কি? বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানেন না?
কোথাও যাওয়া হচ্ছে না আপনার। এখানেই থাকবেন। ভরা সংসার চাই আমার শাশুড়ীর। তো তাকে তাই দিতে হবে।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আমি মা হবো আর আমার শাশুড়ী দাদিমা হবে।
এভাবে বারো বছরে বারোটা নাতি দিবো শাশুড়ীকে। তারপর তার সংসার ভরে যাবে।
বুঝলেন?
এক নাগারে কথা গুলো বলে ছোঁয়া। সাদি কপালে তিনটে ভাজ ফেলে তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার দিকে। এতে ফালতু কথা বলে কি করে মেয়েটা?
“তোমার কি আমার হাতের চর খেতে ইচ্ছে করছে?
হাত দেখিয়ে বলে সাদি।
” আমি ভয় পাই না আপনাকে। আমি যা বলেছি তাই হবে। আমার শাশুড়ীকে ভরা সংসার দিতেই হবে। নাহলে আপনাকে নেরা করে দেবো আমি।
রাগে ফুসফুস করতে করতে বলে ছোঁয়া।
“আই নিড অনেক গুলা বেবি।
চলবে
#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ৮
#তানিশা সুলতানা
“আমার বেবি চাই মানে চাই।
লাগবে মানে লাগবে।
এখন মানে এখনই
বলেছি মানে বলেছি
না করলে কান্না করবো মানে করবোই
বলে দিলাম।
” মনে ভয় দর নাই তোমার?
ভ্রু কুচকে বলে সাদি।
“ওমা
ভয় কেনো পাবো? আমি তো হিরো আলমকেই ভয় পায় না। আর আপনাকে ভয় পাবো
হুহহহহ
ছোঁয়া কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ঠাস করে গালে থাপ্পড় পড়ে। গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে থাকে সাদির দিকে। এটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না৷ সিরিয়াসলি?
শুধুমাএ ভয় পায় না বলে চর মারবে? আর চর মারলেই ছোঁয়া ভয় পেয়ে যাবে?
মগের মুল্লুক না কি?
” ইডিয়েট
দুই হাতে মাথা চেপে ধরে বলে সাদি। ভীষণ বিরক্ত লাগছে।
ছোঁয়ার চোখ দুটো টলটল করছে। যেকোনো সময় গড়িয়ে পরবে।
“যাও এখানে থেকে?
ধমক দিয়ে বলে সাদি।
এবার ফুঁপিয়ে ওঠে ছোঁয়া। গাল থেকে হাত সরায়। পাঁচ আঙুলের ছাপ বসে গেছে। ফর্সা গালটা লাল হয়ে গেছে। ভীষণ ব্যাথা করছে।
রাগে দুঃখে ছোঁয়া সাদির ডান হাতটা টেনে নেয়। তারপর তাতে কামড় বসিয়ে দেয়। এতে জোরে কামড় বসায় যে সব গুলো দাঁত বসে যায়।
সাদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। ইচ্ছে করছে ঠাটিয়ে আরেকটা চর বসিয়ে দিতে।
” এই মেয়ে
সাদি গর্জন তুলে বলে। চোখ দুটো মুহুর্তেই লাল হয়ে গেছে।
ছোঁয়া মনে মনে ভীষণ ভয় পেয়ে যায়। তবুও বুঝতে দিচ্ছে না।
সাদি ছোঁয়ার যাওয়ার দিকে এক পলক তাকিয়ে হাতের দিকে তাকায়।
“কুকুর না কি তুমি?
ছোঁয়া দাঁত কটমট করে। হাত শক্ত করে। সাথে সাথে অপর গালে আরেকটা চর পরে।
এবারের চারটা আরও জোরে দিয়েছে। দুই গালে হাত দিয়ে শব্দ করে কেঁদে ফেলে ছোঁয়া। জীবনে মা বাবাও কখনো মারে নি ছোঁয়াকে। ফাস্ট টাইম চর খেলো।
দুই গালে দশটা আঙুলের ছাপ পরে গেছে। এলার্জি থাকায় গাল দুটো টানা দিয়ে ফুলে উঠেছে।
” এখন থেকে যাও
সাদি চোখ বন্ধ করে কানে হেডফোন গুঁজে বলে।
ছোঁয়া সাদির দিকে এক পলক তাকায়। মানুষটা এতো নিষ্ঠুর কেনে? একটুও কি মায়া হয় না?
এভাবে কি করে মারতে পারলো ছোঁয়াকে? একবারও হাত কাঁপলো না?
সাদি চোখ খুলে দেখে ছোঁয়া এখনো বসে আছে।
“এই মেয়ে যেতে বলেছি না?
ধমক দিয়ে বলে সাদি। ছোঁয়া কেঁপে ওঠে।
সাদির হাত থেকে হেডফোন নিয়ে সেটা বেলকনি দিয়ে ফেলে দিয়ে ভৌ দৌড় দেয়। এক দৌড়ে রুমের বাইরে চলে যায়।
দুই সেকেন্ড সময় লাগে সাদির বুঝতে ওর সাথে ঠিক কি হলো?
প্রিয় হেডফোন এটা সাদির। খুব স্পেশাল মানুষ গিফট করেছিলো এটি। কখনোই কাছ ছাড়া করে না।
এক লাফে উঠে দাঁড়ায় সাদি। বেলকনি রেলিং ধরে উঁচু ঝুঁকি দেয় দেখার জন্য কোথায় পরেছে।
ইটের ওপর পরেছে আর তিন টুকরো হয়ে গেছে।
স্তব্ধ হয়ে যায় সাদি। দু পা পিছিয়ে যায়। রাগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়। ওইটুকু একটা পুচকে মেয়ের এতোটা সাহস হয় কি করে?
আজকে ওই মেয়েটাকে দেখে নেবে সাদি। উল্টো করে ঝুলিয়ে বেঁধে রাখবে। কতো বড় সাহস।
” ডিসগ্রাসটিং
হাতের দিকে তাকায় সাদি।
ছোঁয়া শাশুড়ীর ঘরে চলে যায়। ভীষণ কান্না পাচ্ছে। কান্না করার মতো একটা নিরাপদ জায়গা দরকার।
সাবিনা বেগম বিছানায় গোল হয়ে বসে পরিকে পড়াচ্ছে। বাচ্চা মেয়েটা সবে কথা শিখেছে এখনই তাকে পড়া শেখাচ্ছে।
তার ছেলে মেয়ের বেলায়ও এমনটাই করেছে। কথা বলা শেখার পরই পড়তে শিখিয়েছে। শুধু পারে নি সাদিকে শেখাতে। জন্মের পর থেকেই ছেলেটা ঘাড় ত্যারা।
হওয়ার মিনিট কয়েক পরেই ওকে ঘাড় সোজা করে শোয়ায় আর তখনই সাদি ঘাড় ব্যাকা করে নেয়। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও ঘাড় সোজা করে শোয়াতে পারে নি।
ছোঁয়া শাশুড়ীর কোলে মাথা রেখে হু হু করে কেঁদে ওঠে। সাবিনা বেগম ছোঁয়ার দিকে সরু চোখে তাকিয়ে থাকে। হলো কি মেয়েটার?
“মাম্মা
পরি ডাকে ছোঁয়াকে। ছোঁয়া কথা বলে না। কাঁদতে ব্যস্ত ও।
সাবিনা বেগম হাত রাখে ছোঁয়ার মাথায়।
তখনই সিফাত আর শশুড় মশাই রুমে ঢুকে। ছোঁয়াকে কাঁদতে দেখে শফিক চৌধুরী হকচকিয়ে যায়।
” কি হয়েছে ছোঁয়া কাঁদছো কেনো?
ছোঁয়ার পাশে বসে বলে।
শশুড় মশাইয়ের আহ্লাদী কথা শুনে ছোঁয়ার কান্নার গতি বেরে যায়। উঠে বসে।
ছোঁয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে ওনারা। দুই গাল অসম্ভব ফুলে গেছে। দশ আঙুলের ছাপ স্পষ্ট।
“কেনো মারলো তোমায়?
শাশুড়ী গম্ভীর গলায় বলে।
ছোঁয়া চোখের পানি মুছে ফেলে। পরি ছোঁয়ার গায়ের সাথে লেপ্টে আছে। ছোঁয়াকে কান্না করতে দেখে বেচারা ভয় পেয়ে গেছে।
” শাশুড়ী বললো না ওনার ভরা সংসার চাই?
তাই আমি ওনার কাছে বেবি চেয়েছিলাম। আর তাই উনি আমাকে মেরেছে।
ফুঁপিয়ে বলে ছোঁয়া।
সিফাত হেসে ফেলে। শাশুড়ী কপালে হাত দিয়ে বসে। টই মেয়েকে উনি কি করে মানুষ করবে? ১৬ বছরের মেয়ে এতোটাই বাচ্চা হয়? সাবিনা বেগমের তো পনেরো বছরে বিয়ে হয়েছিলো কিন্তু উনি তো এমন ছিলেন না।
শফিক চৌধুরী ছোঁয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। খুব খারাপ লাগে মেয়েটার জন্য। যদি উনি সিমিকে পছন্দ না করতো তাহলে এইটুকুনি মেয়েকে বিয়ের বোঝা বইতে হতো না।
“আমার ছেলেটা
” আমি বাড়ি যাবো। আমার বাবাকে এনে দিন। আমি মায়ের কাছে যাবো। এনে না দিলে আমি একাই চলে যাবো।
ছোঁয়া বলে।
“এই রাতের বেলায় বাড়ির বউরা বাড়ির বাইরে যায় না।
সাবিনা বেগম কড়া গলায় বলে।
ছোঁয়া পরিকে কোলে করে উঠে দাঁড়ায়।
“কোথায় যাচ্ছো?
ছোঁয়া শাশুড়ীর কথার উওর দেয় না। সোজা চলে যায় সাদির রুমে। এই রুমটা তো ওই লোকটার একার নয়। এটা ছোঁয়ারও রুম।
পরিকে বিছানায় বসিয়ে দেয় ছোঁয়া। মেয়েটা চুপচাপ আছে। কোনো কথাও বলছে না।
ছোঁয়া চোখের পানি মুছে পরির পাশে বসে। এখনো ফুঁপিয়ে যাচ্ছে।
” মাম্মা খাবো।
পরি ছোঁয়ার কোলের মধ্যে বসে বলে।
পরির মুখের দিকে তাকায় ছোঁয়া। এইটুকুনি হয়ে গেছে মুখটা। হয়ত খুব ভয় পেয়েছে।
“কি খাবে মা? বল?
ছোঁয়া পরির মুখের হাত বুলিয়ে বলে।
” নুডলস
পরি আলতো হেসে বলে।
“আচ্ছা তুমি বসে আমি বানিয়ে আনছি।
পরি মাথা নারায়। ছোঁয়া ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে সাদির কিচেনে চলে যায়। সেখানে প্রয়োজনীয় সব কিছুই রাখা থাকে।
সেই দিন ছোঁয়া দেখেছে।
চটপট নুডলস রান্না করে ফেলে। নুডলসটা বাটিতে ঢালতে গিয়ে গরম কড়াইতে হাত লেগে যায় ছোঁয়ার। আহহহ করে আর্তনাদ করে ওঠে। কিন্তু এই চার দেয়ালের মধ্যেই থেকে যায় ছোঁয়ার আর্তনাদ। কেউ শুনতে পায় না।
কোনোরকমে নুডলসটা বেরে নেয় ছোঁয়া। বা হাত দিয়ে ধরে পরির সামনে রাখে।
সাদি তখন রুমে আসে।
” মা হাত দিয়ে খেতে পারবে?
ছোঁয়া জিজ্ঞেস করে। পরি ছোঁয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। আসলে কি বলবে বুঝতে পারছে না।
“পারবে না।
ছোঁয়া অসহায় মুখ করে তাকায় পরির দিকে।
সাদি ফোন দেখছে।
“ছোঁয়া চোখ মুখ খিঁচে পরির মুখে তুলে দেয় খাবার।
” মাম্মা গরম
পরি ছোট ছোট চোখ করে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। ছোঁয়া চোখ খুলে।
সাদির নজর যায় ছোঁয়ার হাতের দিকে।
“ইডিয়েট
বিরবির করে বলে সাদি।
” মাম্মা এসো পাপা খাইয়ে দেবে।
সাদি হাত বারিয়ে বলে। পরি এক গাল হেসে ছোঁয়ার হাত থেকে নুডলসের বাটি নিয়ে সাদির কাছে চলে যায়। মেয়েটা ভীষণ ভালোবাসে সাদিকে। কিন্তু মাঝেমাঝে সাদির ব্যবহারে ভীষণ ভয় পেয়ে যায়।
ছোঁয়া ভ্রু কুচকে পরির দিকে তাকায়।
“যে রান্না করলো তাকেই পাত্তা দিলো না?
ছোঁয়া টানটান হয়ে শুয়ে পড়ে। ভালো লাগছে না। বেশি কান্না করায় মাথা ব্যাথা করছে। এখন একটা লম্বা ঘুম দরকার। হাতে আর গালে ভীষণ জ্বালা করছে। কিন্তু ছোঁয়া পাত্তা দিচ্ছে না। এর থেকেও ঢের বেশি জ্বালা করছে ছোঁয়ার মনে।
সাদি পরির সাথে গল্প করছে আর খাইয়ে দিচ্ছে পরিকে
খাওয়া শেষ হলে ছোঁয়ার পাশে শুয়িয়ে দেয়। ততখনে ছোঁয়া ঘুমিয়ে পরেছে। নজর যায় ছোঁয়ার দিকে৷
মুখটা বাঁকা করে ঘুমিয়ে আছে৷ দুই গাল ফুলে গেছে। হাতটা লাল হয়ে গেছে।
সাদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
ডয়ারে থাকা মলম বের করে ছোঁয়ার গালে আর হাতে লাগিয়ে দেয়।
তারপর ছোঁয়ার গালে হাত রেখে তাকিয়ে থাকে ছোঁয়ার মুখের দিকে।
” সরি
মনে মনে বললেও মুখে বলতে পারে না সাদি।
চলবে
#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ৯
#তানিশা সুলতানা
এই প্রথমবার সাবিনা বেগমের চোখে পানি দেখলো তনু। মায়ের কান্না দেখে একদম ভালো লাগছে না। হাজার বার জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছে বলছে না। একদম পাথরের মতো বসে আছে।
সাহেলা বেগম (সাগরের মা। তনুর কাকিমা)
উনি রান্না করছে। এতখন সাবিনা বেগমকে সান্ত্বনা দিচ্ছেলো।
পরি তনুর গা ঘেসে বসে আছে। ছোঁয়া এক পাশে দাঁড়িয়ে হাত কচলাচ্ছে। আর মনে মনে নাগীন ড্যান্স দিচ্ছে।
সাদি রাতের বেলায়ই চলে গেছে। সকাল বেলা কল করে জানিয়েছে উনি এখন ঢাকায় আছে। কবে বাড়ি ফিরবে জানা নেই।
সেই থেকে সাবিনা বেগম কান্না করছে।
“মা কান্না কেনো করছো? বলবে প্লিজ? এভাবে ভালো লাগছে না।
তনু এবার চরম বিরক্ত হয়ে বলে। সাবিনা বেগম নরে চরে বসে। মনে হয় এতখনে হুঁশশ ফিরেছে। আঁচল দিয়ে চোখের পানি মুছে নেয়। এক পলক তাকায় ছোঁয়ার দিকে।
“সাহেলা রান্না কতদুর।?
নাক টেনে বলেন সাবিনা বেগম।
” এই ভাবি প্রায় শেষ।
শেষ রুটিটা তাওয়াই দিয়ে বলেন উনি।
“শাশুড়ী আমি বাড়ি যেতে চাই। বাবাকে আসতে বলে দিয়েছি।
ছোঁয়া রিনরিনিয়ে বলে।
” ঢাকা যাবে তুমি এখন। বাড়ি যাওয়া হবে না তোমার।
কর্কশ গলায় বলেন উনি। ছোঁয়ার মনটা খারাপ হয়ে যায়। যে চলে গেছে তার কাছে কেনো যাবো? আশ্চর্য।
“মা কি বলছো তুমি?
তনু বলে।
” কেনো তুই শুনলি না আমি কি বললাম? তুই ওকে নিয়ে যাবি।
“পাগল হয়ে গেছো তুমি? সবে ওকে স্কুলে ভর্তি করালাম। এখন যদি ও চলে যায় তাহলে পড়াশোনার কি হবে?
” পাড়াশোনা পরেও করতে পারবে। কিন্তু স্বামী হাত ছাড়া হয়ে গেলে আর ফেরত পাবে না।
মায়ের কথা শুনে তনু দমে যায়। ছোঁয়া বড়বড় চোখ করে তাকায় শাশুড়ীর দিকে।
ওই রাহ্মসটাকে ধরে রাখতে হবে?
“আমার ছেলেকে ইমপ্রেস করতে পারো না? বউ থাকতে চলে গেলো কিভাবে?
ছোঁয়ার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলেন তিনি। ওনার কাছে মনে হচ্ছে সব দোষ ছোঁয়ার।
” এভাবে বলছেন কেনো? উনি চলে গিয়েই তো ভালো হয়েছে।
আস্তে করে বলে ছোঁয়া। ছোঁয়ার কথা সাবিনা বেগমের কানে পৌছায় না। পৌঁছালে এতখনে ধুয়ে দিতো ছোঁয়াকে।
“এভাবে দাঁড়িয়ে কেনো আছো? জলদি রেডি হয়ে নাও। আর সারাক্ষণ আমার ছেলের সাথে চিপকে থাকবে। বুঝেছো?
ছোঁয়া মনে মনে রেগে যাচ্ছে কিন্তু প্রকাশ করছে না।
” বলছিলাম কি
আজকে বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। কালকে যাবো?
একটু সাহস বাড়িয়ে বলে ছোঁয়া। সাবিনা বেগম ভ্রু কুচকে কিছুখন চিন্তা করে।
“কালকে না। আজকেই যাবে। এখনি বাড়িতে চলে যাও। সারাদিন ওইখানে থাকবে। তারপর সন্ধায় ঢাকার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরবে।
ছোঁয়া দাঁত কটমট করতে করতে রুমে চলে যায়। এই মহিলার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। একবার বাড়ি যাই তারপর আমাকে আর খুঁজেই পাবে না। ঢাকা আমি কিছুতেই যাবো না। ওই হনুমানের কাছে যাওয়ার থেকে বিষ খেয়ে মরা ভালো।
দশ মিনিটে রেডি হয়ে বেরিয়ে আসে ছোঁয়া। এতোটা তারাহুরো করে রেডি হয়েছে যে চুলটা আঁচড়াই নি।
পরিকেন্দ্র ছেড়ে কিছুতেই যাবে না। তাই পরিকেই সাদা একটা ফ্রক পরিয়ে নেয়।
তারপর সিফাতের রুমে যায়।
সকাল সাতটা বাজে। এখনো উনি ওঠে নি। ছোঁয়া দুবার দরজায় নক করে।
“এসো
ঘুর জড়ানো কন্ঠে বলে সিফাত।
ছোঁয়া গুটিগুটি পায়ে ভেতরে ঢোকে। সিফাত চোখ ডলে উঠে বসে।
” ভাইয়া আমি বাড়ি যাচ্ছি। তো পরিকে নিয়ে যেতে চাই।
“নিয়ে যাবে?
সিফাত একটু চিন্তা করে বলে।
” হুমমম
“চোখে চোখে রেখো। আর আমি কল দিলে রিসিভ করো। দুই একবার ভিডিও কল দিও। ওকে না দেখে আমি থাকতে পারি না।
একটু হেসে বলে সিফাত। ছোঁয়াও একটু হাসে।
” আসবে কবে?
“আজকেই আসবো।
” আচ্ছা যাও। মাম্মামকে একবার রুমে পাঠিয়ে দিও।
“আচ্ছা
ছোঁয়া চলে যায়।
এই বাড়িতে ছোঁয়ার কোনো জামা নেই। যা আছে সব এই বাড়ি থেকে দিয়েছে। এগুলো নিয়ে যাওয়া যাবে না।
শুধু পরির কয়েকটা জামা নিয়ে নেয়।
পরিকে কোলে করে বাইরে এসে দেখে ড্রাইভার দাঁড়িয়ে আছে। ছোঁয়া গাড়িতে উঠতেই গাড়ি ছেড়ে দেয়। ভীষণ ভালো লাগছে ছোঁয়ার। পাঁচদিন পরে আজ বাড়ি যাচ্ছে। বাবা মা আপিকে পাঁচটা দিন দেখে না।
পরি জানালা দিয়ে বাইরের পরিবেশ দেখেছে। এই মেয়েটা সব বাচ্চাদের থেকে আলাদা। কথা কম বলে কাঁদে না। আহ্লাদ করে না। অভিযোগও করে না।
শুধু মায়া ভরা চোখে তাকিয়ে থাকে। যেনো ওর চোখে মুখ কাউকে খুঁজে।
আধঘন্টার মধ্যে বাড়ির গেইটে গাড়ি থেমে যায়। ছোঁয়া পরিকে কোলে নিয়ে গাড়ি থেকে নামে। ডাইভার এতোএতো ফল মূল মিষ্টি একটার পর একটা বাড়ির ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে।
ছোঁয়া দরজায় টোকা দেয়। বাড়িটা খুব ছোট। ইটের দেওয়াল থাকলেও মাথার ওপরে টিনের ছাঁদ।
ড্রাইভার দাঁড়িয়ে আছে ছোঁয়ার পাশে। দরজা খুললে এগুলো ভেতরে দিয়ে চলে যাবেন।
ছোঁয়ার মা দরজা খুলে দেয়। মেয়েকে দেখে খুশিতে কেঁদে ফেলে। ছোঁয়া মা কে দেখে এক গাল হাসে।
ড্রাইভার।
” ভেতরে আসতে দিবা না মা?
ছোঁয়া বলে ওঠে।
নাজমা বেগম মুচকি হেসে দরজা থেকে সরে যায়।
ড্রাইভার একে একে সব জিনিস ভেতরে রাখে। নাজমা বেগম অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এতো কিছু?
“শশুড় মশাই দিয়েছে।
ছোঁয়া বলে।
” মা পরিকে কোলে নাও। ও তোমার নাতনি।
পরিকে কোলে দিয়ে দেয় ছোঁয়া পরিকে উনি এতখনে খেয়ালই করে নি। ছোঁয়ার কোলেই ছিলো তবুও চোখ পড়ে নি। চোখ দুটো ছিলো শুধু ছোঁয়ার মুখের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
“বাবা কই গো মা? আপি কোথায়? দাদিমা কোথায়?
এক তালা প্রশ্ন করে ছোঁয়া।
নাজমা বেগম এখন পরির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। বেচারি ঘুমিয়ে পড়েছে।
” ও মা কি জিজ্ঞেস করলাম?
ছোঁয়া চেঁচিয়ে বলে। চমকে ওঠে নাজমা বেগম।
“ককি বলেছিস?
” আপি কোথায়?
“রুমেই আছে।
” আচ্ছা আমি যাচ্ছি। তুমি যাও পরির জন্য দুধ গরম করে দিয়ে এসো। আর হ্যাঁ বেশি বেশি আদর করবা ওকে। আমি কল করলে আগে ওর কথা জিজ্ঞেস করবে। বাড়িতে আসলে ধপ করে কোলে নিবে কেমন?
নাজমা বেগম হেসে ফেলে। মেয়েটা একদম আগের মতোই চঞ্চল আছে।
“হাসলে হবে না। বলো?
” আচ্ছা বাবা আচ্ছা।
“হুমমম
এখন আমি ওকে নিয়ে রুমে যাচ্ছি তুমি দুধ নিয়ে আসো। আমি ফিলটার আনতে ভুলে গেছি। তুমি বাবাকে কল করে ফিলটার আনতে বলো।
ছোঁয়া পরিকে কোলে করে রুমে চলে যায়।
সিমি কানে হেডফোন গুঁজে বিছানায় শুয়ে বই পড়ছিলো। ছোঁয়া পরিকে সিমির পাশে শুয়িয়ে দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
সিমি প্রথমে হকচকিয়ে গেছিলো। পরে ছোঁয়াকে দেখে মুচকি হাসে।
” কেমন আছিস বোনু?
শান্ত গলায় বলে সিমি।
“তুমি চমকে যাও নি আমাকে দেখে?
মুখ ভার করে বলে ছোঁয়া।
” চমকেছি তো
“তাহলে এতো শান্ত রিয়াকশন দিলা কেনো?
সিমি উওর দেয় না। ছোঁয়ার কপালে চুমু দিয়ে সোজা হয়ে বসে। বইটা বন্ধ করে হেডফোন খুলে রাখতে গিয়ে নজর পড়ে পরির দিকে।বুকটা ধক করে ওঠে সিমি।
” আপি আমার মেয়ে।
কোলে নাও
ছোঁয়া ঘুমন্ত পরিকে সিমির কোলে দিয়ে দেয়। পরি নরেচটে ছোট্ট দুই হাতে সিমির গলা জড়িয়ে ধরে।
কথা বলতে ভুলে গেছে সিমি। অনুভূতিহীন হয়ে গেছে। মস্তিষ্ক কাজ করছে না। এই ছোঁয়াটা এতো টানছে কেনো?
ছোঁয়ার ফোন বেজে ওঠে। স্কিনে জ্বলজ্বল করছে শাশুড়ী নামটা। বিরক্ত হয় ছোঁয়া। এই মহিলার সমস্যাটা কি?
ছোঁয়া দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ফোনটা রিসিভ করে কানে দেয়।
“বলুন শাশুড়ী।
কথা বলতে বলতে রুমের বাইরে যায়।
” সিফাত আর তনু যাচ্ছে। ওদের সাথে এখনি যাবে তুমি। রেডি হয়ে নাও।
আকাশ ভেঙে পড়ে ছোঁয়ার মাথায়। মাএই এলো। এখনো ভালো করে কারো সাথে কথা বললো না। এখনি যেতে হবে?
“বলছিলাম কি
” কিচ্ছু বলছিলে না তুমি। যদি না যাও না তাহলে আমি যাবো তোমাকে নিয়ে ঢাকায়।
ছোঁয়া খট করে ফোন কেটে দেয়। কান্না পাচ্ছে। ভীষণ কান্না পাচ্ছে। একটা দিনও শান্তিতে থাকতে দেবে না?
চলবে