#অন্তরালে_তুমি_আমি
#পর্বঃ১৭
#Mst_Liza
“অহনা খুব চিন্তায় আছে।তখন টিভিতে ওভাবে সবটা দেখে অস্থির হয়ে আছে।আবিরের ফোনটাও বন্ধ।হয়তো ফোনে চার্জ নেয়।কিন্তু জলির আর ওর সন্তানের কি হলো সেটাতো জানতে হবে? এমনই সময় আবির আসে। এসে অহনাকে বলে জলির তিনটা সন্তান হয়েছে দুটো ছেলে আর একটা মেয়ে।আর তখন ফোনে চার্জ না থাকায় ফোনটা অফ হয়ে গিয়েছিলো।আবিরের বলতে দেরি আছে তো অহনার লাফাতে দেরি নেই।অহনা খুশিতে লাফিয়ে ওঠে। আর পরে যেতে নিলে আবির ধরে বসে।তারপর নিচু হয়ে অহনার পেটে মুখ গুজে আবির বলে,”
—“আমাদের সন্তানের যেন কিছু হয়না অহনা।”
“অহনা আবিরকে ধরে উঠায়।তারপর বলে,”
—“কিচ্ছু হবে না! প্লিজ আবির আর এক মিনিটও দেরি করও না।আমাকে এক্ষুনি জলির কাছে নিয়ে চলো। আমি ওই ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে কোলে নিবো।”
“এদিকে আদি তার দারোয়ানের কাছে সবটা শুনে জলির বাড়িতে আসে।”
“জলি বিছানায় শুয়ে আছে আর পাশে তিনটা দোলনাতে তিনটা বাচ্চা দোল খাচ্ছে।জলির মা তার এক হাতের সাথে তিনটা দোলনায় ওরনা বেঁধে একসাথে দোল দিচ্ছে আরেক হাত দিয়ে জলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর জলি ঘুমাচ্ছে।এমন সময় আদি এসে চিৎকার দিয়ে ওঠে। আদির চিৎকার শুনে জলির বাবা বেড়িয়ে আসে।দেখে আদি এসেছে।আদিকে দেখে জলির বাবার জলির সেই যন্ত্রণায় ছটফট করার দৃশ্যটি মনে পরে যায়।”
“আদি এগিয়ে এসে জলির বাবার কাছে জলির কথা জিজ্ঞাসা করতেই তিনি রেগে আদিকে মেরে বসে।আর সেটা দেখে আদির গার্ডগুলো এগিয়ে আসলে আদি তাদের বাড়ির বাইরে বের হয়ে যেতে বলে।আদির কথা মতো গার্ডগুলো বাড়ির বাইরে চলে যায়।তখন আদি জলির বাবাকে বোঝাতে চেস্টা করে কিন্তু তিনি আদির কোনো কথায় শুনতে চাই না।আদিকে তিনি আবার মারে আর বের হয়ে যেতে বলে বাড়ি থেকে।আদি যায় না জলির বাবাকে বোঝানো বাদ দিয়ে এবার ছুটে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে জলির রুমে যায়।আর গিয়ে দেখে জলি ঘুম।বাচ্চাগুলোও দোলনায় ঘুমাচ্ছে।আদিকে দেখে জলির মা বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ায় আর আদি ছুটে জলির কাছে আসে।জলির মাথার পাশে বসে জলির কপালে একটা চুমু এঁকে দেয়। তারপর জলির মুখটার দিকে চেয়ে দেখে। যে তার জন্য এতোগুলা দিন এতোটা কস্ট সহ্য করেছে।আদি জীবনে জলিকে পেয়ে আজ খুব খুশি।আদির দুচোখ গড়িয়ে সুখের অশ্রু ঝড়ছে।পাশ ঘুরে আদি তিনটা দোলনায় তিনটা বাচ্চাকে দেখে জলির মায়ের দিকে চায়। জলির মা ইশারায় উত্তর দেয় ওরা তোমার আর জলির সন্তান।”
“এমন সময় জলির বাবা রুমে আসে আর আদির শার্টের কলারটা টেনে ধরে উঠিয়ে দাড় করায়। তারপর আদিকে মারতে থাকে। মারতে মারতে বলে তোর মতোন বেঈমানের জন্য আমার মেয়ের জীবনটা নষ্ট হয়ে গেছে।কথা আর মারের শব্দে বাচ্চাদের ঘুম ভেঙে যায়। তিনটা বাচ্চা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। তাদের কান্নার আওয়াজ শুনে জলি জেগে যায়। আর দেখে আদিকে তার বাবা মারছে।জলির মা ছাড়ানোর চেস্টা করছে কিন্তু পারছে না।জলি দেখেই চিৎকার দিয়ে বাবাকে বলে আদিকে আর না মারতে।কিন্তু সে শোনে না।আদিকে মারতে মারতে রক্তাক্ত করে ফেলে।তারপর টেনে হিচরে আদিকে রুম থেকে বাইরে নিয়ে যায়।জলির মাও তাদের পিছনে পিছনে যায়।কিন্তু ছাড়াতে পারে না।উঠে দাড়ানোর শক্তি জলির নেই তবুও চেস্টা করে।আর খাট থেকে পরে যায়।জলি পরে গিয়ে ব্যাথা পাই।চলতে খুব কস্ট হয়।তবুও জলি মেঝেতে ঘেঁষতে ঘেঁষতে বাইরে আসে আর চিৎকার করে বলে ওকে মেরো না বাবা।ওর কোনো দোষ না।ও শুধুই আমাকে ভুল বুঝেছে।প্লিজ ওকে ছেড়ে দাও।”
“জলির বাবা অনেক মেরে আদিকে এক ধাক্কা দিয়ে বাড়ির বাইরে বের করে দেয় আর তখনই আবির এসে আদিকে ধরে বসে।আবির চেয়ে দেখে আদির সমস্ত মুখ রক্তাক্ত হয়ে আছে।আবিরের পাশ থেকে অহনা তাকিয়ে দেখে সিঁড়ির কাছে জলি এসে চিৎকার দিয়ে নামছে।একটু এমন তেমন হলেই জলি পরে যাবে।সেটা দেখে অহনা জলির নাম ধরে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে জলির কাছে যেতে লাগে আর পা পিছলে দোতলা সিঁড়ি থেকে পরে গিয়ে অহনা মাথায় চোর্ট খাই আর জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।”
“আবির দেখে আদিকে ছেড়ে দিয়ে অহনার কাছে যায়।জলির বাবা-মাও ছুটে অহনার কাছে যায়। আবির অহনাকে ডাকে কিন্তু অহনা ওঠে না।আবিরের এখন কান্না পাচ্ছে।কাঁদতে কাঁদতে বলছে,”
—“এটা তুমি কি করলে অহনা? আমি তোমাকে সাবধানে থাকতে বলেছিলাম। আমাদের সন্তানের যদি কিছু হয়ে যায়?”
“জলির বাবা বলে,”
—“আর দেরি করো না আবির ওকে হসপিটালে নিয়ে চলো।”
“আবির অহনাকে কোলে তুলে নিয়ে হসপিটালে চলে যায়। আর জলির বাবাও আবিরের সাথে সাথে যায়। জলির মা জলির কাছেই থাকে।জলিকে ধরে রুমে নিয়ে যেতে গেলে, পারে না।তখন আদি ঢুলতে ঢুলতে সিঁড়ি বেয়ে উপরে আসে আর জলিকে কোলে তুলে নেয়। জলি আদির রক্তাক্ত মুখটাই হাত ছুঁইয়ে কেঁদে ওঠে।আর কেঁদে আদির বুকে নিজের মুখ গুজে দেয়।”
চলবে,,,,,,