অনুরাগ (১ম অংশ)

0
7559

অনুরাগ (১ম অংশ)
লেখিকাঃ #Israt_Jahan

ঘড়িতে রাত ১১ টা বেজে ১৫ মিনিট। বিছানার মাঝ বরাবর বধু বেশে বসে আছে শ্রুতি।কখন যে পুলক বাসায় ফিরবে আর কখন যে শ্রুতি কে দ্বিতীয়বারের মত বধু সাজে দেখে চমকে উঠবে সেই অপেক্ষাতে বসে প্রহর গুণছে মেয়েটা।আজ তাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী।বিয়ের আগে থেকেই শ্রুতি ভেবে রেখেছিল প্রতি বছর ঠিক এই দিনে নতুন বউ সেজে বাসরঘর সাজিয়ে পুলককে সে চমকে দেবে।আর পুলক মুগ্ধ নয়নে তার প্রেয়সীর মুখটা দেখবে।আর তারপর ঠিক প্রথম বাসররাতে পুলক ওকে যেভাবে কাছে টেনে নিয়ে খুব খুব ভালোবেসেছিল আজও ঠিক সেইভাবেই ওর কাছে আসবে।উফ! ভাবতেই শ্রুতি লজ্জায় কেঁপে উঠছে।বিছানা থেকে নেমে দেয়ালে টাঙানো ছবিগুলো দেখছে।সেন্টমার্টিনে তোলা ছবিগুলো, যখন ওরা বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমাতে গিয়েছিল তখনকার ছবি। আরো কিছু ছবি রয়েছে যেগুলো ওদের ভার্সিটি পড়াকালীন দুজন চুটিয়ে প্রেম করত সেই সময়কার ছবি।একটা ছবিতে শ্রুতি ক্যাম্পাসের মাঠে বসে মনযোগ দিয়ে একটা বই পড়ছে আর পুলক পলকহীন ভাবে ওকে দেখছে।পাশ থেকে নিশাদ ফোন থেকে টুপ করে ছবিটা ক্লিক করে ফেলে।আজকে নতুন করে শ্রুতি ওদের সাজানো রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছে। সারা রুমে নীল দ্যুতি ছড়িয়ে একটা অন্যরকম পরিবেশ তৈরি করেছে।শ্রুতির খুব আনন্দ হচ্ছে।মনে হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষটা ওই।সাদা চাদরের ওপর লাল গোলাপের পাপড়িগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।ইচ্ছা করছে এখনই পুলকটাকে কান ধরে টেনে নিয়ে আসতে। আজ এত সময় নিচ্ছে কেন বাসায় ফিরতে কে জানে?তারউপর আজ চাঁদনিরাত।এমন রাতে আর কতক্ষণ একা বসে থাকা যায়?ছেলেটা যে কী পরিমাণ জ্বালায় আজ কাল!রুমে এলে প্রথমে জোড়ে দুটো ঘুষি দিবে পুলকের পেটে।
তারপর জড়িয়ে ধরে ওর কানে কানে বলবে,
-‘ শুভ বিবাহবার্ষিকী পুলক সাহেব।শুভ হোক তোমার আর তোমার বউ এর বিবাহিত জীবন। ‘
এসব ভাবনার মাঝে দরজায় নক পড়ল। হঠাৎ দরজার নক শুনে শ্রুতি চমকে উঠল।হার্টবিট ওঠানামা করতে শুরু করেছে ওর।ধুকধুকানি শব্দটা নিজের কানেই শুনতে পাচ্ছে মনে হচ্ছে।এত লজ্জা লাগছে কেন?সেই প্রথমবারের মত অনুভূতিটা।মৃদু ঘাম সৃষ্টি হয়েছে শ্রুতি’র নাকে আর কপালে।ধুত্! অনেক নাটক হয়েছে।গিয়ে তো দরজাটা খুলতে হবে। নতুন বউ সেজেছে বলে তো সে আর নতুন বউ নয়।তবু সে লজ্জাটাকে আড়াল করতেই পারছেনা।দ্রুত পায়ে হেঁটে ঠোঁটের কোণে চাপা হাসি রেখে দরজাটা খুলল শ্রুতি।

ঈষাণঃ শুভ বিবাহবার্ষিকী ম্যাম।

হাসিমাখা মুখে ঈষাণ ফুলের তোড়াটা এগিয়ে দিল শ্রুতি’র দিকে।তোড়াটা হাত থেকে নিয়ে শ্রুতি বলল,
-‘ বাব্বাহ্ তাহলে আপনি শেষ পর্যন্ত এসেছেন এস.পি সাহেব? ‘
-‘ নাহ্ আসিনি তো।আমার ভূত এসেছে। ‘
-‘ আচ্ছা ড্রয়িংরুমে গিয়ে বস আমি আসছি।তানিয়া,নিশাদ,রবিন,মেঘলা ওরা সবাই সোফাতেই ঘুমিয়েছে নাকি? ‘
-‘ না আড্ডা চলছে এখনো।আমি তো ভাবলাম পুলক বোধহয় রুমেই আছে। আর এতক্ষণে আপনাদের….। ‘
-‘ এই যাহ্ কিসব বলিস!যা আমি আসছি। ‘

ঈষাণ চলে যেতে গিয়েও থেমে গেল।
তারপর বলল,
-‘ একবার রুমে ঢুকতেও দিলিনা? ‘
-‘ ওহ্ স্যরি ভাই।আয় আয় ভেতরে আয়। ‘
-‘ মাই গড!এত চমৎকার করে সাজিয়েছিস রুমটা।ইচ্ছে তো করছে বাসরটা আমিই সেড়ে যাই। ‘
-‘ এই কী যে বলিস না তুই।তোর মুখে কিছুই আটকায়না।বদের হাড্ডি আছিস এখনো। ‘

ঘোর লাগানো চোখে তাকিয়ে আছে ঈষাণ শ্রুতি’র পানে।ধীর পায়ে হেঁটে এসে শ্রুতি’র সামনে দাঁড়াল।তারপর বলল,
-‘ খুব সুখে আছিস তাইনা? ‘
-‘ হ্যাঁ রে খুব।জানিসই তো পাগলটা কী পরিমাণ ভালোবাসে আমায়। ‘
-‘ বাই দ্যা ওয়ে।দানুণ লাগছে তোকে। ‘
-‘ থ্যাংক ইউ মহাশয়। ‘
-‘ আয়…ড্রয়িংরুমে আছি। ‘
————————
মেঘলাঃ কী ব্যাপার বল তো?রাত বারোটা বাজতে চলল প্রায়।আমরা কত প্ল্যান করেছিলাম পুলক কে সারপ্রাইজ দেওয়ার।ব্যাটার এখনো আসার নাম গন্ধ নেই?
শ্রুতিঃ বুঝতে পারছিনা।এমন তো কখনো করেনা ও।

পুলকের নাম্বার ডায়াল করছে শ্রুতি আর কথাগুলো বলছে।

ঈষাণঃ পেলি?
শ্রুতিঃ না।রিসিভ করছেনা তো ফোন।

নিশাদ গর্জনরত কন্ঠে শ্রুতিকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-‘ ধ্যাত্তেরিকা।মেয়ে মানুষগুলো এমন ন্যাকা স্টাইলের কেন?টেনশানের ঝুড়ি খুলে বসেছিস একদম।প্রাইভেট কোম্পানির জব। কাজের চাঁপ বেশি থাকলে দেরী হতেই পারে।আর তাছাড়া ঢাকার রাস্তা তো আর তোর বেডরুমের ফ্লোর না। ‘

মেঘলা নিশাদের গায়ে চাপড় দিয়ে বলল,
-‘ এই বাজে বকিস না তো।টেনশান হওয়ারই বিষয় এটা।যেহেতু ও এমন লেট করে বাসায় কখনোই ফিরেনা।আর ওদিকে তানিয়া আর রবিনকে দ্যাখ।যেন প্রেম করার জন্য ডেকে আনা হয়েছে ওদের। দুজনে এক সাইডে বসে সেই তখন থেকে গুজুর গুজুর করে চলেছে। ‘

শ্রুতির কারো কথাই কানে ঢুকছেনা। এক নাগাড়ে কল করে যাচ্ছে পুলকের ফোনে।

ঈষাণঃ শ্রুতি?
শ্রুতিঃ হ্যাঁ বল।
ঈষাণঃ তাহলে আমি উঠি।আমার ডিউটি আছে বারোটার পর থেকে।পুলক আসলে বলিস আমার কথা।আর মন খারাপ করিস না হয়তো জরুরি কোনো কাজে আটকে পরেছে।চলে আসবে এক্ষণি।
মেঘলাঃ থেকে যা না আজ আমাদের সাথে।রাতে আমরা পাঁচজন আমাদের ঘরোয়া পার্টি ইনজয় করব।আর ওরা বাসরঘর।
শ্রুতিঃ হ্যাঁ।আজকে রাতে এখানেই থেকে যা।আর ডিনারও তো করলিনা।

শ্রুতি কথাটা কেবল বলার প্রয়োজন তাই বলল।ওর ধ্যান তো রয়েছে হাতের ফোনটার ভিতর।পুলকের জন্য বড্ড চিন্তা হচ্ছে ওর।ঈষাণ এক নজরে তাকিয়ে দেখছে শ্রুতি কে।কী মিষ্টিই না লাগছে মেয়েটা কে আজ।ঈষাণ নিজেই চোখ সরাতে পারছেনা।পুলক আজ তাহলে কী করবে?

মেঘলাঃ কীরে থাকবি তো?

মেঘলার ডাকে ঈষাণ স্তম্ভিত থেকে বেরিয়ে এল।বলল,
-‘ শ্রুতি যখন বলেছে।তখন তো থাকাই যায়। ‘
-‘ ওয়াও গ্রেট।আমরা আজ অন্নেক মজা করব সারারাত।তোকে তো ফ্রি পাওয়া বর্তমান সো টাফ। ‘

রাত ১ টা ২০ মিনিটে পুলক বাসায় ফিরল।ঈষাণ তখন ডাইনিং এ পানি খেতে এসেছে।পুলক ঈষাণকে দেখে থেমে গেল।

ঈষাণঃ কীরে এই তোর আসার সময় হলো?
পুলকঃ তুই?
ঈষাণঃ কেন?আসা কী অন্যায়?
পুলকঃ আরে না না।অন্যায় কেন হবে? হঠাৎ করে দেখলাম তো।কেমন আছিস বল?আর কী মনে করে এই গরীবের বাসায় পা রাখলি তাও আবার এত রাতে?

ঈষাণ পুলকের কাছে এগিয়ে এসে ঘড়ি দেখে বলল,
-‘ এক ঘন্টা বিশ মিনিট আগে তোর আর শ্রুতি’র প্রথম বিবাহ বার্ষিকী পার হলো।শুভ বিবাহবার্ষিকী। ‘
-‘ ওহ্ স্যরি দোস্ত।এক্সট্রিমলি স্যরি।আমার আসলে খেয়াল ছিলনা।রাতে খেয়েছিস তো?রবিন নিশাদ ওরা সবাই এসেছে না? ‘

ঈষাণ পুলকের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর ভাবে বলল,
-‘ হুম।সবাই এসেছে। ‘
-‘ চল ওদের সাথে দেখা করে আসি।অনেক অপেক্ষা করতে হলো তোদের।স্যরি রে। ‘

পুলক সবার সাথে দেখা করার জন্য সামনে এগোতেই ঈষাণ পুলকের বাহু ধরে বাঁধ সাধল।তারপর ওর সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
-‘ এই মুহূর্তে আমাদের অপেক্ষার থেকে শ্রুতি’র অপেক্ষার দামটা বেশি।আর স্যরিটাও ওকেই আগে বলা উচিত।ওদের সাথে সকালে দেখা করলেও চলবে। ‘

পুলক শুধু মাথা নাড়াল।ঈষাণ আবার বলল,
-‘ তোকে কেমন যেন এলোমেলো লাগছে। তুই কী আজকাল স্মোক করছিস নাকি? ‘
-‘ স্মোক?কই না তো। ‘

ঈষাণ ওর কাঁধ হাত রেখে ঠোঁটের বাঁকা হাসিটা দিল।পুলক আজ কাল শুধু স্মোক না মাঝে মধ্যে কলিগদের সঙ্গে ড্রিংকস ও করে সেটা ঈষাণ ভালো করেই জানে। রুমে ঢুকে পুলক শ্রুতি কে দেখতে পেলোনা।নিশ্চই বেলকোনিতে বেতের চেয়ারটাতে বসে ওর জন্য অপেক্ষা করছে আর না হয় ঝিমুচ্ছে।পুলকের শরীরটা বড্ড ক্লান্ত।রুমে ঢুকে নীল আভা দেখে মনে হচ্ছে এখনি বিছানার ওপর ঠাস করে শুয়ে পড়তে।বাসরঘরের সাজসোজ্জার দিকে ওর একদমই কোনো মনযোগ নেই। কিন্তু শ্রুতি যে খুব আশা করে বসে আছে ওর ফেরার অপেক্ষাতে।একটু সময় না দিলে মেয়েটা খুব কষ্ট পাবে।ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে শ্রুতি’র দেওয়া সাদা পাঞ্জাবী টা পরে বেলকোনিতে চলে গেল। চাঁদের আলোতে শ্রুতি কে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে পুলক।বেতের চেয়ারটাতে হেলান দিয়ে ঘাড়টা কাঁত করে ঘুমিয়ে আছে। বিয়ের শাড়িটা পড়েছে আজ।এই শাড়িটাতে শ্রুতি কে একদম হূরপরী লাগে পুলকের কাছে। সাদা জমিনে লাল পার আর লাল পারের ভিতর গোল্ডেন সুতার কাজ।পুরো শাড়িটার ভিতর গোল্ডেন সুতার হালকা কাজ।আর সেই সাথে শ্রুতি’র ব্রিডাল সাজটাও চোখ ধাঁধানোর মত।গলায় সাদা পাথরের একটি নেকলেস আর কানেও সাদা পাথরের বড়দুল। ডায়মোন্ডের মাঝারি নোসপিনটাও চিক চিক করছে হালকা আলোতে।চুলটা সুন্দর করে খোপা করা।ঠোঁটে লাল খয়েড়ি মিক্সড লিপস্টিকটাও খুব আকর্ষণীয়।পুরো সাজটাই অস্থির করা একদম।শ্রুতি’র লাল ঠোঁটদুটো যেন পুলকের শরীরের ক্লান্তি একদম দূর করে দিয়েছে। সেই সাথে চোখের ঘুমও কেড়ে নিয়েছে।পাশ থেকে বেতের অন্য একটি চেয়ার টেনে নিয়ে শ্রুতি’র কাছে গিয়ে বসল। খুঁটে খুঁটে বউটার সাজ দেখছে।সত্যিই খুব সারপ্রাইজড হয়েছে পুলক।বিয়ের পর থেকে শ্রুতি’র সৌন্দর্য যেন দিন দিন উপচে পড়ছে।ইশ!কত অপেক্ষাটা না করালো মেয়েটাকে আজ।আরো আগে আসা উচিত ছিল তার।মনে মনে নিজেকেই গালাগাল দিচ্ছে সে।ঠোঁটদুটোর দিকে নজর পরতেই ঠোঁটে ঠোঁটে কথা বলতে ইচ্ছা করল ওর।শ্রুতি’র ঠোঁটজোড়ার খুব কাছাকাছি পুলকের ঠোঁটজড়া।শ্রুতির থুতনিতে আর ঠোঁটের ওপর পুলকের ঘন ঘন নিঃশ্বাস পরছে।দুজনের ঠোঁট মিলিত হওয়ার আগেই শ্রুতি নড়েচড়ে বসল।লাল চোখে তাকিয়ে আছে পুলকের দিকে শ্রুতি।
একগাল হেসে পুলক বলল,
-‘ শুভ বিবাহবার্ষিকী আমার হূরপরী। ‘

ছোট্ট করে পুলকের নাক বরাবর ঘুষি লাগাল শ্রুতি।

পুলকঃ আআহ্….।এটাই কী ছিল আমার সারপ্রাইজ গিফ্ট?

শ্রুতি আরো একদফা রেগে গিয়ে বলল,
-‘ এতক্ষণেও তোর চোখে পড়েনি আমার সারপ্রাইজটা? ‘
-‘ এই এটা কী হচ্ছে?আবার তুই তুকারি করছো কেন? ‘
-‘ হ্যাঁ তুই তুই তুই।তোর বাপ দাদা চৌদ্দ গুষ্টিকে আমি তুই তুকারি করব। ‘
-‘ ছিঃ ছিঃ। আমাকে তুই তুকারি করো আমি মেনে নিব তাই বলে আমার বাপ দাদা কে না প্লিজ। ‘
-‘ হাজার বার করব।কোথায় ছিলি তুই এত রাত?তোর ওই নাবিলা ম্যামের কাছে?ওই মহিলা কী তোকে…..। ‘
-‘ এই একদম বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু। তুমি সবসময় ঝগড়ার মাঝে আমার বাপ দাদা আমার অফিস কলিগ এদের কে টেনে আনতে পারোনা। ‘
-‘ কোনো কিছুই টেনে আনবোনা আর। যা দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে। ‘
-‘ এমনভাবে বলতে পারলে?সত্যি চলে যাবো কিন্তু।”
-‘ আসার কী প্রয়োজন ছিল? ‘
-‘ আচ্ছা আজকে না হয় একটু লেট হয়েছে।অন্যান্য দিন তো আমি ১০ টা থেকে ১১ টার মাঝে চলে আসি,না? ‘
-‘ হ্যাঁ।বেছে বেছে আজকে রাতেই তোকে দেরী করে ফিরতে হল।বেশ করেছিস খুবই মহৎ কাজ করেছিস।এখন আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা।একদম সহ্য হচ্ছেনা তোকে আমার। ‘

পুলক গম্ভীরস্বরে বলল, ‘ একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না? ‘

শ্রুতি আর কোনো জবাব না দিয়ে উঠে রুমে চলে গেল।তারপর খুব শব্দ করে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে দিল।মেজাজ খুব বিগড়ে গেছে আজ।কী এমন কাজ পরে গিয়েছিল যে নিজের বিবাহবার্ষিকীর কথা পর্যন্ত মনে ছিলনা ওর।রাগে সারা শরীর কাঁপছে শ্রুতি’র।পুলক বুঝতে পেরেছে শ্রুতি এখন ওয়াশরুমে বসে কান্না করছে।ডেকেও কোনো লাভ নেই।মেয়েটার মাঝে ভালোবাসার কমতি না থাকলেও রাগের পরিমাণটাও অসীম।পুলক রুম থেকে বেরিয়ে গেল।পনের মিনিট পর চোখ মুখ লাল করে শ্রুতি ওয়াশরুম থেকে বের হল।রুমে ঢুকে যখন দেখল পুলক নেই মেজাজ তখন আরো গরম হয়ে গেল। কোনো কিছু চেইঞ্জ না করেই বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল।এপাশ ওপাশ করেই চলেছে।মাথা গরম থাকলে তো ঘুমও চোখে নামতে ভয় পায়।শ্রুতি ভাবছে এই বুঝি পুলক রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ওকে জড়িয়ে ধরে আদর করে মান ভাঙাবে।কিন্তু না ওর তো আসার কোনো খবরই নেই।বিছানা থেকে উঠে কড়া ডোজের একটু ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে দিল।কারণ যতক্ষণ অবদি ঘুম না আসবে ততক্ষন অবদি ভেতরে ভেতরে জ্বলতে থাকবে।কিছুক্ষণের ভেতর ঘুমের ভাবটা প্রায় চলে এসেছে।ঘুমে চোখের ঝাঁপি দুটো নেমে গেছে।ঠিক তখনই কেউ একজন শ্রুতি’র রুমে এসে দাঁড়াল।
শ্রুতি’র চোখের সামনে হাত নেড়ে দেখল ঘুমিয়ে পরেছে কিনা।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে