অনুরাগ
পর্ব ১০
লেখিকাঃ #Israt_Jahan
-‘ কোথায় ঘাপটি মেরে ছিলি বল তো এই তিনটা বছর?’ (নিশাদ)
-‘ আমি কী আসামি নাকি যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকবো?’
গ্লাসে ড্রিংক ঢেলে নিতে নিতে কথা বলছে পুলক।ওর দিকে কয়েক জোড়া চোখ বিস্ময় আর প্রশ্ন ভরা চোখে তাকিয়ে আছে। রিয়ার পাশে এসে বসলো পুলক।সবার দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শ্রুতির দৃষ্টিকে লক্ষ্য করে বললো, ‘ কী সমস্যা?এভাবে তাকিয়ে দেখছো কেনো আমাকে? এ্যাম আই লুকিং আগলি?’
শেষ প্রশ্নটা রিয়াকে উদ্দেশ্য করে বললো পুলক।রিয়া ভ্রু জোড়া উঁচু করে একটা হাসি দিয়ে বললো, ‘ নো।মোর দ্যান ড্যাস্যিং।’
শ্রুতি একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলো।ঈশাণকে বললো, ‘ আমায় বাসায় ফিরতে হবে।আমি উঠছি।’
-‘ চল আমি তোকে নামিয়ে দিয়ে আসি।’
-‘ আরে আরে আজকে কে কখন ফিরবো তার ঠিক নেই। অনেক দিন বাদে সবাই একসাথে।কোনো উঠাউঠি নেই।আজ অনেক মজা হবে।’
ধ্রুবর কথার সঙ্গে পুলক একটা রহস্যভরা হাসি মেশালো। হাসিটা ঈশাণের চোখ এড়ালো না।এর মধ্যে অনেকেই পুলে নেমে পড়েছে।কেউ এখানে ডেট শুরু করে দিয়েছে, কেউ বা মিউজিকের তালে হেলছে-দুলছে।মোটামোটি যে যার মতো এনজয় করতে ব্যস্ত।শুধু একটা জায়গায় বসে আছে, পুলক,রিয়া, শ্রুতি,ঈশাণ,ধ্রুব,মেঘলা,তানিয়া,নিশাদ আর রবিন।রিয়া আর নিশাদ উঠে হাঁটতে হাঁটতে খানিকটা দূরে চলে গেলো।পুলক ড্রিংকের গ্লাস টা নিচে নামিয়ে রাখলো। হঠাৎ করেই চোখ পড়লো ঈশাণের হাতের দিকে।শ্রুতির হাঁটুর কিছুটা উপরে ওর হাতটা।শ্রুতি ও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ওর হাতটা গ্রহণ করে বসে আছে।একটা গম্ভীর নিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো পুলকের মাঝ থেকে।কিন্তু ওদের দুজনকেই খুব অপ্রস্তুত লাগছে।
-‘ তো?’
পুলকের আওয়াজ পেয়ে চমকে তাকালো শ্রুতি।চোখে মুখে উচ্ছন্ন ভরা হাসি মেখে আছে পুলকের।মনে হচ্ছে খুব চিন্তামুক্ত আর হাস্যজ্জল মানুষ একটা।তিন বছর আগে তার জীবনে যে কোনো একটা অপ্রিয় ঘটনা ঘটে গেছে সেটা তাকে দেখে মনেই হচ্ছেনা।চোখের পলক পড়ছে না শ্রুতির।এদিকে পুলকও চেয়ে আছে তার প্রাণখোলা হাসি মুখে মেখে নিয়ে।ঈশাণ শুধু তাকিয়ে দেখছে ওদের দৃষ্টি বিনিময়।এক মিনিট, দু মিনিট পার হয়ে যাচ্ছে শ্রুতি হাজারো প্রশ্নভরা চোখে তাকিয়ে দেখছে ওকে।ঈশাণ হঠাৎ করে একটু কেশে উঠল।ভাবনাগ্রস্ত শ্রুতি হুঁশে এলো তখন।পুলক খানিকটা হেসে ফেলল।
-‘ হাসছিস যে?’
-‘ হুম? আমাকে বলছিস?’
পুলকের এমন উদাসীন ভাবটা নেওয়া ঈশাণের অসহ্যবোধ লাগলো খুব।চোখ মুখ শক্ত করে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো ওর থেকে।পুলক বললো, ‘ বিয়েতে কী ইনভাইটেশন পাচ্ছি?’
-‘ লজ্জা করছে না তোর?কোন মুখে এই প্রশ্নগুলো করছিস?’
-‘ অ…! লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু বলেছি বোধহয়? এই ধ্রুব আমার প্রশ্নটা কী লজ্জা পাওয়ার মতো ছিল?’
-‘ আমি কী বলবো ভাই!’
-‘ তোরা বিয়ে করছিস এটা একটা ভালো কথা।আমি সেখানে দাওয়াত পাচ্ছি কিনা সেটা জানতে চাওয়া কী আমার অপরাধ?’
-‘ এতদিন কই ছিলি?’
-‘ স্কটল্যান্ড।’
-‘ মেয়েটাকে নিয়ে ওখানে পাড়ি জমিয়েছিস?’
রবিনের প্রশ্নে পুলকের পায়ের রক্ত মাথায় উঠে আসার মতো অবস্থা।কিন্তু না, ও এখন এই মুহূর্তে কোনো সিনক্রিয়েট করবে না।রবিনের প্রশ্ন শুনে শ্রুতি চেয়ে আছে পুলকের দিকে।অবশ্যই পুলক কী উত্তর দেয় তা শোনার আশায়।ওর বুকের ভেতরটা যে তোলপার হয়ে যাচ্ছে।পারছেনা এভাবে চুপচাপ ওর সামনে বসে থাকতে। ইচ্ছে করছে ওর কলারটা চেঁপে ধরে ওর দু’গালে বিরতিহীন চড় বসাতে।জানতে ইচ্ছা করছে এমনটা কেনো করলো ওর সাথে।শ্রুতির চোখে চোখ পরতেই পুলক দেখতে পেলো শ্রুতির চোখের আগুন।শুধু একটু হাসলো।তারপর উঠে চলে গেলো পুল সাইডে অন্যসব ফ্রেন্ডদের মাঝে।প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলো পুলক।কিন্তু শ্রুতি যে খুব আগ্রহ নিয়ে বসে ছিল উত্তরটা শোনার আশায়।মনে মনে ভেবেই নিলো আজ ও সবকিছু পুলকের থেকে জেনে তারপর এখান থেকে যাবে।
-‘ শ্রুতি! চল আমরা ফিরি।’
-‘ না।’
অনেকটা গম্ভীর হয়ে বললো শ্রুতি।
-‘ একটু আগেই না বললি বাসায় ফিরবি?’
-‘ এখন যেতে ইচ্ছে করছে না।’
উঠে চলে এলো ঈশাণের পাশ থেকে।দূরে দাঁড়িয়ে শুধু পুলককে লক্ষ্য করছে শ্রুতি।কী সুন্দর না দেখাচ্ছে আজ পুলককে। শ্যামলা বর্ণ ছিলো গায়ের রং টা।তিন বছর পর দেখে মনে হচ্ছে গায়ের রং টা আরো পরিষ্কার হয়েছে।চশমার ফ্রেমটাও চেইঞ্জ করেছে,চুলগুলো স্টাইলিশ ব্রাশ করা।দু একটা চুল লম্বা হয়ে পরে আছে কপালে ওপর।রেড টি শার্টের ওপর ব্ল্যাক স্যুট। হাতা কনুই অবদি গুছিয়ে রাখা।এত পরিবর্তন! কে বলবে দেখে এই মানুষটার জীবনে কিছু ঘটে গেছে যা একটা মানুষের জীবন শেষ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।এত ভালো থাকতে দেখে পুলকের প্রতি শ্রুতির ঘৃণাবোধ টা আরো বেড়ে গেলো।ও দেখতে চেয়েছিল পুলক যেদিন ওর সামনে আসবে সেদিন ওর চেহারা হবে অপরাধবোধ আর অনুশুচোনার আগুনে দগ্ধ হয়ে যাওয়া একটা মানুষের চেহারা।আজ ওর সামনে এসেছে ঠিকই তবে যা ভেবে রেখেছিল একদম তার বিপরীত কিছু হয়ে ওর সামনে এসেছে।পুলক কানে ফোন নিয়ে পুল সাইড থেকে একটু দূরে সরে এলো একটু ফাঁকা জায়গাতে।শ্রুতি সেখানে দ্রুত হেঁটে গেলো।ও অপেক্ষাতে ছিল কখন ফাঁকা স্পেসে পাবে পুলককে।
-‘ হ্যাঁ প্রজেক্টটা আমিই কমপ্লিট করবো সমস্যা নেই।এ মাসের সাতাশ তারিখেই আমি ব্যাক করছি।টেনশান নিতে হবে না আপনাকে।’
কথার মধ্যেই দেখল শ্রুতি ওর দিকে এগিয়ে আসছে।অনেকটা কাছে চলে এসেছে ওর।ফোনের ওপাশের ব্যক্তিকে বিদায় জানিয়ে ফোনটা পকেটে ভরে নিলো।ওর দিকে তাকিয়ে সুন্দর একটা প্রাণখোলা মুচকি হাসি দিলো।
-‘ হ্যালো।’
শ্রুতি নিশ্চুপ হয়ে গম্ভীর চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।চোখ দুটো উপচে পানি নেমে আসবে আসবে ভাব।পুলক বললো,
-‘ কী দেখছো এভাবে?’
-‘ একজন প্রতারক কে।’
-‘ কে প্রতারক এখানে?’
-‘ নামটা কী শুনতে ইচ্ছা করছে আমার মুখ থেকে?’
-‘ হ্যাঁ।’
-‘ কতোটা পাথর হৃদয়ের মানুষ হলে কেউ এত বড় অপরাধ করার পর ও….’
-‘ চুপ।’
ঠোঁটের ওপর অনামিকা আঙুল রেখে চোখে মুখে কঠোরতা এনে বললো পুলক।
-‘ এখনো যে আমার সামনে তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছো সেটাই তোমার কপাল।ধৈর্য ধরে বসে আছি শুধু।’
-‘ কী বোঝাতে চাইছো তুমি?’
-‘ কিছুনা।এখন বলো তো এঙ্গেজমেন্টের দিন ইনভাইটেশান পাচ্ছি কিনা?’
-‘ খুব শখ আসার?’
-‘ খুব।’
-‘ ঠিক আছে।চলে এসো।’
-‘ কী চায় তোমার আমার থেকে?’
-‘ অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে আমি।’
-‘ ওমা অবাক হওয়ার কী হলো?কিছু চায়না তোমার?ডিভোর্স? এটাও চায়না?’
আর পারলোনা আটকে রাখতে।অশ্রুর বাঁধ ভেঙ্গে পড়লো দু চোখ থেকে।আরো বেশি কান্না পাচ্ছে পুলকের এক্সপ্রেশন গুলো দেখে।শ্রুতি কান্না করলে পুলক সেই কান্না ভেজা চোখে আর মুখে হাজারো চুমুর প্লাবন বইয়ে দিতো।আজ সেই পুলক ওর কান্না দেখে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কেমন একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে। এ কেমন পুলক?এই পুলককেই কী শ্রুতি সবটা উজার করে ভালোবেসেছিলো?এত বড় স্বার্থবাদী একটা প্রতারককে বিশ্বাস করে নিজের বাড়ি ছেড়েছিল?পুলক আজ শ্রুতির চোখের পানি নিয়ে যে খেলাটা খেলল তা শ্রুতি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলবেনা। ওর কাছে এগিয়ে এসে গাল থেকে এক ফোটা পানি অনামিকা আঙুলের ডগার ওপর তুলে নিলো পুলক।তারপর বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে সেটা ঝেড়ে ফেলল।টিস্যু পেপাড় দিয়ে সেই আঙুল দুটোও মুছে নিলো।সবশেষে শ্রুতির পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।মরে যেতে ইচ্ছে করছে শ্রুতির।এর থেকে তো সারাজীবনে দেখা না হলেও ভালো হতো।তক্ষণি শ্রুতি ছুটে চলে আসে হোটেলের বাহিরে।আর সে দেখতে চাই না এই বিশ্বাসঘাতক,প্রতারক মানুষটাকে।
_____________________
তিন বছর আগের সবকিছুকে দুঃস্বপ্ন ভেবে সামনের জীবনে এগিয়ে যাবে শ্রুতি।এমন কিছু ভেবেই সে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে।ভাববে না সে আর ওই প্রতারকের কথা।
-‘ কিরে আজকের দিনে অনন্ত এভাবে মুখটা কালো করে রাখিস না।এমনিতেই তোদের নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই।তারউপর মুখটা এভাবে কালো করে রাখলে আরো বেশি বলার সুযোগ পাবে সবাই।’
মেঘলার কথাগুলো কানে আসতেই শ্রুতি ভাবলো, -‘ সত্যিই তো! কেনো আমি মনমরা হয়ে থাকবো? আমার তো আজ থেকে জীবনের নতুন একটা অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।আমি আজ থাকবো সবার থেকে খুশি হয়ে।’
কথাগুলো ভেবে নিজেকে একদম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো শ্রুতি।আজকে ঈশাণের সঙ্গে শ্রুতির এঙ্গেজমেন্ট।শ্রুতির বাড়িতেই পার্টিটা এ্যারেঞ্জ করা হয়েছে।শ্রুতি আর ঈশাণের আশপাশ দিয়ে ওদের সকল বন্ধু-বান্ধব গিজগিজ করছে। কেউ ই আসতে বাকি নেই।শুধু একজন বাদে।সে তো নিজে যেচে এসে দাওয়াতটা নিয়েছিল।আসবে কী সে? সবার সাথে হেসে হেসে গল্প করছে ঠিকই।কিন্তু মনের মধ্যে সেই মানুষটার ভাবনাও ভাবছে শ্রুতি।সবশেষে এঙ্গেজমেন্টটা হয়েই গেলো। প্রত্যেকেই খুব খুশি।কিন্তু খুশি হতে পারছে না শ্রুতি।এত ঘেন্নার পরও ইচ্ছা ছিল ওই মানুষটা আসবে এখানে, একটাবার দেখবে তাকে।কিন্তু কই?সে তো এলোনা।আর আসবেই বা কোন মুখ নিয়ে।আত্মসম্মানবোধ না থাকলে ঠিকই আসতো। নিচে গার্ডেন সাইডে বসে শ্রুতি আর ঈশাণ সব ফ্রেন্ডদের সঙ্গো আড্ডাই ব্যস্ত ছিলো।এরই মাঝে পুলক এসে উপস্থিত হলো।
-‘ আড্ডা তো বেশ জমেছে।আমি কী জয়েন করতে পারি?’
সবাই ফিরে তাকালো ওর দিকে।বাহ্ বেশ তো লাগছে আজ দেখতে পুলককে।পুলকের পরনে আজ শ্রুতির দেওয়া শেষ উপহারের হোয়াইট স্যুট এন্ড প্যান্ট।তার সঙ্গে স্যুটের নিচে হালকা পিংক কালার একটা শার্ট।পকেটে দু’হাত পুরে ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি বজায় রেখে দাঁড়িয়ে আছে সে।নজরটা রয়েছে শ্রুতির দিকে।শ্রুতিও আজ হোয়াইট আর পিংক কালার মিক্সড একটা ল্যাহেঙ্গা পরেছে।যার জন্যই সবাই একবার শ্রুতিকে দেখছে আবার পুলককে দেখছে।পুলকের আগমন সবাইকে অবাক করে দিয়েছে শুধু ধ্রুব ছাড়া।সে এসে ওকে বললো,
-‘ আমি তো ভাবলাম তুই বোধহয় রুমে বসে কাঁদছিস আর টিসু পেপাড়ে চোখ মুছছিস।’
-‘ কী যে ভাবিস না আমাকে তোরা!’
-‘ তুই এখানে?’
ঈশাণ রাগে গম গমে ভাব নিয়ে প্রশ্নটা করলো পুলককে।ভদ্রতা বজায় রেখে পুলক উত্তর দিলো,-‘ তোর হবু বউয়ের কাছ থেকে সেদিন ইনভাইটেশান পেলাম।অবশ্য আমিই যেচে পড়ে নিয়েছিলাম।খুশি হোস নি বুঝি?’
শ্রুতির নজর মাটির দিকে।সে না পারছে পুলকের দিকে তাকাকে আর না পারছে ওর সঙ্গে কথা বলতে।চোখ ফেটে ভেতরে সব কান্না বেরিয়ে আসতে চাইছে।এতটা কষ্ট তো ওর হওয়া উচিত না।পুলক তো বেশ আছে।তাহলে ও কেনো এত কষ্ট পাবে?
-‘ আমি এসেছি তার কারণটা তুই না বুঝলেও তোর বউ বুঝে গেছে।’
পুলকের কথায় শ্রুতি এতক্ষণে টের পেলো।পুলক এসেছে ওকে ডিভোর্স পেপাড় টা দিতে।কাগজে কলমে সারাজীবনের জন্য আজই ওদের বিচ্ছেদ ঘটবে।পারবে কী শ্রুতি ওই কাগজে একটা সই করে সারাজীবনের জন্য ওকে ত্যাগ করতে?হুহ্ মনের বিচ্ছেদটা তো কবেই ঘটে গেছে।তাহলে কাগজে কলমে বিচ্ছেদটা মেনে নিতে আর সমস্যা কোথায়?নিজেকে সামলে একদম স্বাভাবিক করে উঠে এলো পুলকের সামনে।
-‘ কই? কাগজটা দাও।’
পুলক কাগজটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।শ্রুতির চোখের দিকে তাকিয়ে কাগজ ওর দিকে এগিয়ে ধরলো।
_________________
বাগানের ভেতরটায় যেখানে নিরিবিলি বসার জন্য একটা ছোট টেবিল আর দুটো চেয়ার সেখানে গেল ওরা দুজন।সাথো এলো ঈশাণও।কাগজটা হাতে নিয়ে টেবিলের ওপর রেখে শ্রুতি যখন সই করতে গেলো তখন পুলক বললো,-‘ অন্ততপক্ষে একবার চোখটা বুলিয়ে নাও।পড়ে দেখো কাগজে কী লেখা আছে।এত তাড়া কিসের?বিয়েটা তো আর আটকে দিচ্ছি না।’
ঈশাণ এগিয়ে এসে বললো,-‘ শ্রুতি কাগজটা দে তো দেখি।’
-‘ ডিভোর্সটা আমার আর তোর শ্রুতির হচ্ছে।তোর ভূমিকা এখানে না থাকলেও চলবে।স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাক।’
ঈশাণ ক্রুদ্ধ চোখে চেয়ে আছে পুলকের দিকে।পুলকের চাহনি ও ঠিক একই রকম।শ্রুতি কাগজটা হাতে নিয়ে যখন পড়তে শুরু করলো তখন পুলক আবার বললো,-‘ চেয়ারটাতে বসো তারপর পড়ো।’
শ্রুতি একটু সময় ওর দিকে চেয়ে থেকে চেয়ারে বসল।তারপর পড়তে আরম্ভ করলো।শুরুর দিকে আইনীভাবে কাগজে যা লেখা থাকে সেগুলোই লেখা।তারপর নিচে নামতে নামতে যে লিখাগুলো ছিল তা পড়তে পড়তে শ্রুতির গলা শুকিয়ে আসছিলো।মনে হচ্ছিল ওর পায়ের নিচের জমিন কেঁপে উঠছে বার বার।এর জন্যই বোধহয় পুলক ওকে বসে পড়তে বলেছে।
_