অনুভবে_তুমি পর্ব-১২/১৩/১৪
#সাইমা_ইসলাম (প্রীতি)
.
.
আস্তে আস্তে মুখ গুজে দিলেন আমার
ঘাড়ে।নাক ঘঁষতে ঘঁষতে বললেন,,,,,,,
-এই যে কিউটি কি করছিলে এতক্ষন
আমাতে।হুম?
লজ্জায় আমি তাড়াতাড়ি মুখ লুকিয়ে
ফেলাম দু-হাত দিয়ে।
-হয়েছে হয়েছে ম্যাডাম এখন আর লজ্জা
পেতে হবেনা।
-আচ্ছা কবে যাচ্ছি?
-কেনো ভালোলাগছে না এখানে?
-না না।তাই বললাম নাকি?আমার তো
আর ফিরতেই মন চাইছে না ।এই
জায়গাটা আসলেই অসাধারণ।
রূপ আরো কাছে চলে এলেন।ওনার
প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাস বারি খাচ্ছে
আমার কাধে গলায়।কাঁপিয়ে তুলছে
আমাকে।নিজেকে আর স্থির রাখতে
পারছিনা আমি।
রূপ কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন,,,,,
-তাহলে থেকে যাই।সারাক্ষণ শুধু
ভালোবাসব?
রূপকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
-শয়তান লোক কোথাকার।এসব ভালবাসা
সব বিয়ের পর হবে বুঝলেন।আপনি ফ্রেশ
হয়ে আসুন গিয়ে।
-হুম।আর কাল নাইটে যাব আমরা।
-বাসে যাবো প্লিজ।
-ক্যানো?
-আমার ইচ্ছা করেছে তাই প্লিজ,,,,,,,
-ওকে ওকে।
রূপ আর আমি একসাথে ব্রেকফাস্ট করে
ঘুরতে বের হয়ে গেলাম।
রূপ আর আমি একসাথে
মহেশখালী,সেন্টমার্টিন ঘুরলাম।এই
সারাদিন ঘুরতে ঘুরতেই কেটে যায়।
রাতে ক্লান্ত থাকার কারণে খাটে গাঁ
এলিয়ে দিতেই হারিয়ে গেলাম ঘুমের
রাজ্যে।
.
ভোর চারটা আট মিনিট।ঘুম ভেঙ্গে
গেছে ফোনের রিংটোনে।
ওফ কে আবার ফোন দিচ্ছে এতো রাতে।
ফোনটা কে করেছে না দেখেই রিসিভ
করে নিলাম
-হ্যালোঅঅঅঅ,,,,,।কেএএএ,,,?
– কিউটি,,,,,
-কেএএএ,,,কে কিউটি?
-(মুচকি হেসে) কেন আমার বউ।
– তো বউয়ের কাছে জান।রাত বিরাতে
ফোন করে ডিস্টার্ব করেন যত্তসব
আজাইরা ফালতু লোক।
– (রূপ হাসতে হাসতে শেষ)
-ওই,,,ওই ব্যাটা।আমি কি মজা নিতাছি
তোর সাথে? হাসোস ক্যান হে।দাঁত সব
ভাইঙ্গা গেলে বুঝবি কেমন লাগে।
বজ্জাত কোথাতার।
– ও মাই গড।মিহিন!এতদিন তো আপনি
থেকে তুমিতেই আনতে পারছিলাম না।
আর এখন সোজা তুই??
-ধুরর।
ফোন কেটে দিলাম কিসব হাবি-জাবি
লোকেরা ফোন দেয় খালি।দাড়া এর
নাম্বারটা রূপকে দিয়ে দিব।
রূপ!!!
রূপের কথা মনে পড়তেই একলাফ দিয়ে
ওঠে পড়লাম ঘুম থেকে।ফোন হাতে নিয়ে
দেখি নম্বরটা রূপের।তারমানে রূপই ফোন
করেছিল মাত্র।
-হায় আল্লাহ্।এটা রূপ ছিলেন আর আমি
ওনাকে,,,,,,ছিঃ ছিঃ ছিঃ মিহিন কি
করলি তুই এটা?এত বোকা কেন তুই?
রূপের নম্বরটা ডায়াল করার আগেই ফোন
দিলেন ওনি।
-হ্য,,,,হ্যালো রূপ।আই এম ছড়ি।আসলে।
মানে তখন বুঝতে পারিনি,,,,,
-ওরে বাবাহ্।ম্যাডামের ঘুম ভাঙ্গছে
তাহলে?
-হিহি।
-এত্তোগুলা বকা যখন দিছো শাস্তি তো
পেতেই হবে।তোমার শাস্তি হলো এখন
আর ঘুমোতে পারবে না।রেডি হয়ে নিচে
আসবে।আর হ্যা শাওয়ার নিয়ে আসবে।
আর সোফায় দেখবে একটা শাড়ি আছে
ওইটা পড়বে কেমন।
-কিন্তু।
-কোনো কিন্তু না।I am
waitting,,,,,,,,,,,,,so quick
.
আর কিছু করার নেই যেতে যখন বলছেন
যেতে তো হবেই কি আর করবো।
সোফায় গিয়ে দেখি একটা শপিং ব্যাগ
রাখা।অনেক উৎসাহ নিয়ে খুলে দেখি
ভিতরে কালো জরজেটের একটা শাড়ি।
অসম্ভব রকম সুন্দর।
শাড়িটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
শাওয়ার নিয়ে এসে ড্রেসিং টেবিলের
সামনে বসে চুল মুছছি।
বাইরে এখনো আলোই ফুটেনি।চোখ দুটো
এখনো খুলতে পারছিনা।আল্লাহ্ জানে
এতো রাতে রূপ আমাকে হঠাৎ এভাবে
কেনো যেতে বললেন।
নিজেকে পরিপাটি করে চলে এলাম
নিচে।রূপ ওয়েট করছেন অনেকক্ষন যাবৎ।
বাইরে ওনার চকলেট কার্লারের
গাড়িটাতে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে ফোন
টিপছেন।
এশ কার্লালের শার্ট,ব্ল্যাক জিন্স,
হাতে ব্রেন্ডেট ঘড়ি,আর সানগ্লাসটা
বুকের মাঝে শার্টে ঝুলিয়ে রেখেছেন।
শার্টের হাতা ফোল্ড করা।ভয়ংকর রকম
হ্যান্ডসাম লাগছে ওনাকে।
মনে মনে ভাবছি –
ইশ কেনো যে আমি কাজল পরতে
পারিনা।পরলে ওনাকে এক্ষুণি লাগিয়ে
দিতাম।যাতে কেউ আর আমার ওনার উপর
নছর দিতে না পারে।
হঠাৎ রূপ আমার দিকে তাকাতেই
তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেললাম আমি।
রূপ আমার দিকে একদম হা করে তাকিয়ে
আছেন।চোখের পলকও ফালাচ্ছেন।ইশ!
মনে হচ্ছে এর আগে কখনো দেখেনি
আমাকে।
.
.
.
মি. আফজাল রহমানের ফোনটা বাজার
সাথে কানে তুলে নিলেন তিনি।
– হ্যালো মিহিন।মা।ঠিক মতো পৌঁছে
গেছো তো তোমরা?রাহি ঠিক আছে
তো।
-হুম।
-কষ্ট হচ্ছে খুব?
-বুকের বা পাশটা অবশ হয়ে আছে।
চিন্তাশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে।আমি বেঁচে
থেকেও মরে গেছি।(ডুকঁরে কেঁদে ওঠলো
মিহিন)
-মারে কাঁদিস না মা।
-আর পারছিনা।পারছিনা আমি।আমার
ভেকরটা পুরে যাচ্ছে।রূপকে চাই মামা।
আমার চাই ওকে।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
আমাকে আমার রূপ ফিরিয়ে দাও।
-শক্ত হো মা।তুই ভেঙ্গে পড়লে কেমনে
চলবে?
-হুম। রাহি ডাকছে রাখি মামা।
– ভালো থাকিসরে মা।খেয়াল রাখিস
নিজের।শুকিয়ে একদম কাঠ হয়ে গেছিস।
-হুম।
-আমি ঢাকার বাইরে যাবো কিছুদিনের
জন্য।যে কোনো সমস্যায় আমাকে সবার
আগে জানাবি কেমন।
-রাখছি তাহলে।
-হুম।
ফোন কেটে ওয়াশরুমের গিয়ে শাওয়ারের
নিচে দাড়িয়ে পাগলের মতো কাঁদছে
মিহিন।
বাস্তবতা এতোটা করুন কেনো হয়?সব
ভালোবাসার পরিনতি কি এই একটাই?
বিচ্ছেদ?
ভালবাসা কি এতটাই সস্তা?
আচ্ছা আল্লাহ্ যদি রূপের জন্যই তৈরী
না করেন আমাকে,রূপের বুকের বাম পাজর
থেকে সৃষ্টি নাই করে থাকেন আমাকে
তাহলে কেনো এই ভালোবাসার সৃষ্টি?
কেনো বেঁচে থাকা একে অপরের জন্য?
কেনো এক নিঃশ্বাসে বাধলেন দুজনায়?
কেনো?কেনো?কেনো?
মাথাটা ভার হয়ে আসে মিহিনের
লুটিয়ে পড়ে মাটিতে।আর মনে নেই কিছু
ওর।
.
এদিকে মিসেস সীমান্তি এহরাজ।
ছেলেকে ছাড়া যে তার এক মুহূর্ত চলে
না।সেই জায়গায় গোটা একটা রাত।
কিভাবে থাকবেন ওনি?
চলে যেতে চাইছিলেন অনেকবার।কিন্তু
যাওয়া হলো না।
প্রায় ছয় বছর পর বান্ধবি মিশকা খাতুনের
সাথে দেখা ওনার।একসময় জান ছিলেন
একে অপরের। এত বছর পর বান্ধবিকে পেয়ে
নিজ বাড়িতে নিয়ে জান মিশকা খাতুন।
ছাড়তে মন চাইছেনা একদম। তাই জোর
করে রেখে দিলেন একরাতের জন্য।
এদিকে সীমান্তি এহরাজের যেতে ইচ্ছা
করছেনা ঠিকি কিন্তু মনটা যে ছেলের
কাছেই পরে আছে।রাত তিনটা বাজবে
কিছু বাদে।না পারছেন ঘুমোতে আর না
পারছেন রূপকে একটা ফোন দিতে।
এখানে আসা অবদি পাঁচ ঘন্টায় আটাশ
বার কথা বলেছেন রূপের সাথে।
ও ঠিক আছে কিনা,কোনো সমস্যা হচ্ছে
কিনা,কিছু লাগবে কিনা?
.
আর এদিকে রূপ মজে আছে ডায়েরিতে।
শিশির ভেজা শীতের রাতের মতোই ওর
জীবনটাও আটকে গেছে এই ডায়েরিতে।
যতক্ষন সব ধোঁয়াশা না মেটে আলোর
আশা বৃথা।
.
.
To be continue
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
#অনুভবে_তুমি
পর্ব – ((১৩))
#সাইমা_ইসলাম (প্রীতি)
.
.
মিহিন যে তাকে প্রত্যেক পদে পদে
মারবে তা ভালো মতই বুঝে গেছে রূপ।
মায়াজালের মোহে মারবে ও।
.
আমার থেকে কোনোভাবেই চোখ
সরাচ্ছেন না রূপ।উপর থেকে নিচ পর্যন্ত
শুধু হা করে দেখেই যাচ্ছেন।
আমি ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম গাড়ির
দিকে।ওনি এখনো সেভাবেই দাড়িয়ে
আছেন।ওনার দিকে তাকাতেই আবার
চোখ সরিয়ে নিলাম দ্রুত।ওই ভালোবাসা
মোরানো চোখে তাকানো যাচ্ছে না
আর।
ওনি গাড়ির দরজা খুলে দিতেই বসে
পড়লাম আমি।একটা ইংলিশ সং প্লে
করে দিলেন।
.
ওনাকে আরচোখে বরাবরই দেখছি আর
ওনি লুকিং গ্লাসে।এশ কার্লারটা খুব
মানায় ওনাকে।লুকিং গ্লাসে রূপের
দিকে তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে গেল।
লজ্জায় আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি।রূপের
সাথে অনেক জায়গা ঘুরার পর ক্লান্ত
শরীরে বিকেলের আগেই রুমে চলে এলাম।
এসেই ঘুমিয়ে পড়লাম।সারা রাত জাগতে
হবে যে।
রাতের বাসে ওঠে বসলাম ঢাকা ফিরার
জন্য।রূপ অবশ্য অনেক জোর করছিলেন
বাসে না আসতে।কিন্তু এই জার্নিটার
মজাই আলাদা।
আমি জানালার সিটে বসলাম আর রূপ
আমার পাশে।রাতে ডিনার করেই
এসেছি তাই বাসে ওঠার আগেই ওনি
চিপস,চকলেট,পানি আরো কিছু শুকনো
খাবার কিনে আনতে গেছেন আমাকে
সিটে বসিয়ে দিয়ে ।রাহিকে এই
কয়েকদিন মিস করছিলাম খুব।বাসে ওঠে
ওকে ভিডিও কল করলাম।বেচারি এই
কয়েকদিন আমাকে না পেয়ে একদম
নাজেহাল অবস্থা।ওর সাথে কথা শেষ
করার সাথে সাথে রূপও চলে এলেন।ধাপ
করে আমার বসে আমাকে জিঙ্গেস
করলেন কফি খাবো নাকি।
এই জায়গার কফিতে নাকি একদম অন্য রকম
স্বাদ।আমিও না করিনি আর।
কিছুক্ষন বাদে রূপ কফি নিয়ে চলে এলেন।
কিন্তু এক কাপ।এনেই আমার হাতে
ধরিয়ে দিলেন।
– এমা আপনি খাবেন না?
-কে বলেছে আমি খাব না?
– তাহলে আনেন কি কেনো?এক কাপ
নিয়ে চলে এসছেন যে।
-হুম।কারন তোমারটা থেকেই খাব তাই।
এক কাপ থেকে খেলে ভালোবাসা
বাড়ে,জানো না তুমি।তাই এখন থেকে
যতবার তোমার সাথে কফি খাব এক মগ
থেকেই খাব।
-এএএহহ আসছে।আমি দিলে তো খাবেন।
-তোমার দেয়া লাগবে না।আগে এক-চুমুক
দিয়ে তো দেখো এর স্পেশালিটি।
আমি কফিতে চুমুক দিয়ে দেখলাম হুম
সত্যিই ভালো হয়েছে কফিটা।
রূপ একটানে আমার হাত থেকে নিয়ে
নিলেন কফিটা।আমি যে জায়গায় ঠোঁট
লাগিয়ে খাচ্ছিলাম ঠিক সেখানেই মুখ
লাগায়ে খাচ্ছেন ওনি।দুজনে মিলে কফি
শেষ করার আগেই বাস ছেড়ে দিয়েছে।খুব
এনজয় করছিলাম রূপের সাথে
ভালোবাসাময় এই প্রথম জার্নি।
কিছুক্ষন বাদে বাসের লাইট অফ করে
দেওয়ার সাথে সাথে ওনি একটানে
আমাকে ওনার বুকের ওপর ফেলে দিলেন।
-নিশ্চয়ই আমার ঘুমপরীটার খুওওওব ঘুম
পাচ্ছে এখন তাই না।
আমি অনেক ভাব নিয়ে বললাম,,,,,,,,
-না।একদম না।আমি কি এখনো বাচ্চা
নাকি?আমি বড় হয়ে গেছি এখন
বাচ্চাদের মত বাসে ঘুমাই না ।হুম।।
-ও আচ্ছা এটা কি আমাকে বিশ্বাস
করতে বললে?
ঠোঁট বাকিয়ে বাচ্চাদের মতো করে
বললাম,,,,,
-দেখবেন আমি আজ সারারাত না ঘুমিয়ে
থাকব।
-হা হা হা হা হা।এটা কি জোকস ওফ
দ্যা ইয়ার ছিল কিউটি?(হাসতে হাসতে
পাগল হয়ে যাচ্ছেন ওনি)
-আপনি খুব খারাপ।আর কথাই বলব না।
-আরে না না কিউটি এই যে কানে
ধরলাম আর হবে না।
আমি রূপের বুকে মাথা রেখে চলন্ত
বাসের অস্পষ্ট আকাশ দেখছি।অন্যরকম
একটা ভালোলাগা কাজ করছে ভিতরে।
যেন প্রত্যেকটা শিরা উপশিরায় বয়ে
যাচ্ছে প্রশান্তির ছোঁয়া।ওনার বুকে
মাথা রেখে এই আমার প্রথম আকাশ
দেখা।ইচ্ছে করছিল সময়টাকে,,,,,
সময়টাক থামিয়ে দেই এখানেই ওনার
হার্টবিট গুলো খুব জোড়ে জোড়ে শুনতে
পাচ্ছি আমি।আমি কান পেতে শুধু সেটাই
শুনছি।প্রত্যেকটা হৃৎস্পন্দনে মনে হচ্ছিল
শুধু আমারি নাম লেখা।অনুভূতি গুলো
কাজ করছিল না একদম।এ কেমন অত্যাচার
অনুভূতির সাথে?নিজের মনে সাথে?
সত্যিই কি তাহলে তাকে আমি
ভালোবেসেছি নিজের চেয়েও বেশি,,,,?
.
.
.
To be continue
#অনুভবে_তুমি
পর্ব-((১৪))
#সাইমা_ইসলাম (প্রীতি)
.
ওনার সাথে খুনসুটিতে সময়টা কেটে যাচ্ছিল খুব তাড়াতাড়ি।কিছুক্ষন পর আমি রূপের বুকে সুয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম।
রূপও খুব খেয়াল রাখছিলেন আমার।একদম বুকের মাঝে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন।
ঘুম ভাঙ্গার পর দেখি আমি তখনও রূপের বুকের মাঝেই।পুরো বাস ফাঁকা।খুব লজ্জা লাগছিল তখন।
ইশ রাতে কত্তবড় মুখ করে বলেছিলাম ঘুমাবো না আর এখন পুরোই হাবলাটার মতো ঘুমিয়েছি।
.
-গুড মর্নিং কিউটিটা।
-ওম,,,,,শুভ সকাল।আমাকে ডাকেননি কেনো আপনি?(ঘুম জরানো কন্ঠে বললাম)
-আমার কিউটিটা এই প্রথম নিজে থেকে আমার বুকের মাঝে এসেছে কিভাবে সরাতাম বলো।
.
রূপ আমাকে আসতে বলে কাউন্টারের দিকে চলে গেলেন।আমি গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ছিলাম।হঠাৎ গাড়ির পিচ্চি কন্টাক্টরটা আমাকে এসে বলতে লাগল,,,,,
-দিদি ঘুম ভালো হইছে??
-(মুচকি হেসে)হুম খুব ভালো হয়েছে।
-হইবই তো ভাইয়ায় যেমনে খেয়াল রাখছে………দিদি ভাইয়া আপনেরে খুওওব ভালোবাসে তাই না।
আমি মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,,,,,,,
-হুম।কেনো?
-আসলে আমাগো গাড়ি আইছে আরো দুই ঘন্টা আগেই।সবাই নাইম্মা গেছে আপনেরা নামেন নাই দেইখখা আমি গেছিলাম ডাকতে।ভাইয়ায় দেয় নাই।কয় আপনে উঠলে নামবো।
বাস দুই ঘন্টা বেশি দাড়ানের লাইগ্গা টাকাও বেশি দিছেন ভাইয়া।
.
ওর সাথে কথা বলতে বলতে রূপও এসে পড়লেন।
রূপকে যত দেখছি ততই অবাক হচ্ছি আমি।একটা মানুষ কি করে একজনকে এতটা ভালোবাসে।আমি সত্যিই খুব বড় ভালো কাজ করেছি বোধ হয় যায্র জন্য রূপকে পেয়েছি আমার জীবনে।
.
রূপ আমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে চলে গেলেন।বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বসতেই রূপ ভিডিও কল করলেন।
এমনিতে যে কারো সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে একদম ভালোলাগেনা আমার।কিন্তু এখন একদম খারাপ লাগছে না।কল রিসিভ করতেই ওনি হা করে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।
.
-কি দেখছেন এত হে?
-আমার মায়াপরীকে।
-এতদিন দেখেন নি বুঝি?
-তুমি আমার জীবনে এমন একজন যাকে অপলক দেখলেও চোখের নেশা কাটবে না।
বায় দ্যা ওয়ে আমি কয়েকদিন ঢাকা থাকব না।আব্বুর বিজনেসে হ্যাল্প করার জন্য যেতে হচ্ছে।একটু বিজি থাকব।এসে কথা হবে।আর এই কয়েকদিন ভার্সিটি যেতে হবে না ওকে?
-হুম।কিন্তু কাল একটু দরকার ছিল যে।আসলে,,,,,,,,,,,
-আমাকে এক্সপ্লেইন করতে হবে না কিউটি।তোমার দরকার থাকলে অবশ্যই যাবে।
-হুম।রাখছি।
-ভালো থাকবে।
.
মনটা খারাপ হয়ে গেল।আবার কতদিন দেখব না ওনাকে।ধ্যাত।।।
.
.
পরদিন আমি ভার্সিটি এসলাম দুটো বই নিতে।ক্লাস করার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না তাও ইশুর জোরাজুরিতে একটা ক্লাস করলাম।
ভার্সিটিতে যে কেউ আমার সাথে যথেষ্ট ভালোভাবে কথা বলে।পুরো ভার্সিটর সকলে জানে আমি রূপের গার্লফেন্ড।ভার্সিটির সবচেয়ে বড় গ্যাং লিডারের গার্লফেন্ড তাই বোধ হয়।
রূপ যাওয়ার পর কেটে যায় আরো ছয়টা দিন।ছয় দিনে মাত্র দুবার কথা হয়েছে আমাদের।
.
.
.
আজ সারা সকাল কেমন যেন বৃষ্টি ভেজা একটা অনুভব।ইদানিং কেমন যেন মনটা বেখেয়ালি থাকে সারাক্ষন।
তাই নিজেকে একটু টাইম দেওয়ার চেষ্টা করছি।
বসে বসে বৃষ্টির সকালের সাথে রবীন্দ্র-বিলাস করছি।
কানে ইয়ারফোন গুঁজে শুনছি ” ”
আর হাত গুলো খেলা করছে ছোটো ছোটো ফুল গাছ গুলোর মাঝে।
“”
“”
.
গান শেষ হওয়ার আগেই ইশুর ফোন।বলল কোনো প্রশ্ন না করে তাড়াতাড়ি ভার্সিটি চলে আসতে অনেক বড় কিছু ঘটে গেছে,,,
.
সাত-পাঁচ না ভেবে তাড়াতাড়ি বের হয়ে গেলাম।ভার্সিটি গিয়ে যা দেখলাম আমার হাত পা তাতে ঠান্ডা হয়ে অবশ হয়ে গেছে।বুক চিড়ে কান্না চলে আসছে,,,,
.
.
To be continue?