অদ্ভুত প্রেম♥
Writer-Afnan Lara
[৮]+[৯]+[১০](শেষ)
নাস্তা আসার পর থেকে তাহা ইচ্ছামত খাচ্ছে।খুব ক্ষিধা লেগেছিল ওর।সৌরভ বসে বসে ওর খাওয়া দেখছে।
তাহা বললো আরও আনতে।ওর পেট ভরে নাই।
-‘হাহাহাহাহাহাহিহিহি’
-‘এতো হাসির কি আছে?ওকে খাবো না’
-‘ওকে সরি।নার্স যাও আরও আনো’
-‘না খাবো না’
-‘খাবা’
-‘না’
-‘নার্স যা বলেছি করুন।আমি হল রুম থেকে আসতেছি
আমার ক্লায়েন্টরা আসছে।তাহা রুম থেকে নড়বা না
আপনারা সবাই ওর দিকে খেয়াল রাখবেন। টাটা’
তাহা ঠিক করলো গেমস খেলবে।গেমস খেলতে খেলতেই ঘুমিয়ে পড়লো সে।সন্ধ্যা ৬টা বাজে ঘুম ভেঙে গেলো ওর।চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো সৌরভ ওকে জড়িয়ে ধরে আছে।ওর গায়ের এক অন্যরকম একটা গন্ধ।
-‘উনিতো ঘুমিয়ে আছে।জোরে জোরে সুবাস টা নিলাম উনার গায়ের।অন্যরকম ফিলিংস।নেশার মতো লাগছে
বাথরুমে গিয়ে গোসল করার জন্য গায়ে পানি দিতেই একিইইইই!!!আমি এখন কি করবো?মাথায় তো ব্যান্ডেজ।পুরা ভিজে গেলো’
-‘তাহা কই তুমি?’
-‘ইয়ে মানে, না মানে’
-‘দরজা খুলো’
-‘নানানানা’
-‘দরজা ভেঙে ফেলবো’
তাহা ভয়ে ভয়ে দরজা খুললো।
-‘দরজা খুলতে দেরি কেন?একি!তোমার সারা গায়ে পানি!মাথায় ঢালো নাইতো?”
-‘হ্যাঁ’
-‘ইচ্ছা করছে তোমাকে মেরে আবার তোমার মাথা ফাটিয়ে দেই’
-‘এ্যা।আম্মু’
-‘চুপ!!যাও জামা চেঞ্জ করে নাও।আগে ব্যান্ডেজ চেঞ্জ করতে হবে।সেলাইয়ের জায়গায় পানি না গেলেই ভালো।’
সৌরভের কথায় ডক্টর আসলো।ব্যান্ডেজ ও বদলে
দিলো।
সৌরভ বললো আজকে ওরা বিজয়নগর চলে যাবে।
ওখানে বৌভাতের অনুষ্ঠান হবে।ওর কথামতন রাতে সবাই বিজয়নগর এসে পৌঁছালো।তাহার আম্মু আব্বু বাসায় চলে গেছে।
আগামীকাল বৌভাত হবে।সব প্রস্তুতি হয়ে গেছে।
রুমে এসে সৌরভ মুচকি হেসে তাহাকে দেখছিল।তাহা কপাল কুঁচকে বললো,’ আপনি আমার দিকে তাকিয়ে ওমন করে হাসছেন কেন?আর আমার দিকে এগোচ্ছেন কেন??’
-‘কতদিন হলো’
-‘কিই?’
-‘দেখাচ্ছি।
তাহা ভয় পেয়ে আগোভাগে খাঁমছি দিয়ে দিলো।
-‘কি হলো?এত বড় নখ কাটো না কেন?’
-‘সরেন।আমি ঘুমাবো’
এটা বলেই হাঁটা ধরলো তাহা।সৌরভ এক টান দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো হঠাৎ।তারপর ফিস ফিস করে বললো,’তুমি এত আনরোমান্টিক কেন?
-‘আমি ঘুমাবো ব্যস’
রাত ২:০০টার দিকে সৌরভ খেয়াল করলো তাহা ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।ওতো সহজে ধরার মতন মেয়ে তো তাহা না।শীত লাগছে নাকি ওর?গায়ে হাত দিয়ে দেখলো প্রচণ্ড জ্বর।তাহা উঠো,তাহা?’
-‘হুম কি?’
-‘নাও এই ঔষধটা খাও,”
-‘কেন?’
-তোমার জ্বর,তাই’
——
সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠলো তাহা।সৌরভ ঘুমাচ্ছে।তাহা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো।কত বড় বাড়ি।অথচ এই বাড়ির সামনে দিয়ে কতবার ঢাকা গেছিলো সে।জানতোই না এটা যে তার শশুর বাড়ি হবে’
ভাবতে ভাবতে নিচে বাগানে গেলো সে।শিউল ফুল গাছ দেখে নিচে ঘাসের উপর বসে সে ফুল কুড়াচ্ছিল।
হঠাৎ খেয়াল করলো,গায়ে পিছন থেকে চাদর দিয়ে দিলো সৌরভ।
-‘কখন উঠলেন?’
-“তোমার আগেই।দেখলাম কি কি করো’
-‘মালা আরেকটা বানালাম,নেন এটা আপনার’
-“পরিয়ে দাও’
-‘বাবারে কতো লম্বা।নাগাল পামু কেমনে?অনেক কষ্টে পরিয়ে দিলাম।
-‘রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।মেহমান আসা শুরু করবে’
-‘কি পরুম?তাই ভেবে উনার রুমে এসে আলমারি খুললাম।ওওওওওমা এতো শাড়ী? লেহেঙ্গা ও তো আছে।কি পরবো তাও বুঝছি না’
-‘লেহেঙ্গা পরো।black যেটা আছে ওটা।অমান্য করলে আজ তোমার কপালে দুঃখ আছে’
—–
দশটার পরে পার্লার থেকে কয়েকজন এসে তাহাকে সাজিয়ে দিলো।আম্মু আব্বু ও আসলো,এক এক করে সব আত্নীয় স্বজন ও আসা শুরু হয়ে গেছে।তাহা খুব খুশি তাদের দেখে।সৌরভ সম্পূর্ন বাসায় ৩০-২০টা বডিগার্ড রেখেছে।তাহার পিছনে পিছনে ২টা ঘুরতেছে।
–
-‘আহা সবাই বিরিয়ানি খাচ্ছে আর আমি বসে বসে সুপ খাচ্ছি।কি কপাল!’
সন্ধ্যায় তাহা আর সৌরভ আম্মু আব্বুর সাথে ওদের বাসায় আসলো।তাহার রুম সাজানো হয়েছে।সৌরভ মিটমিট করে হাসতে হাসতে রুমে এসে দেখলো তাহা ঘুমে কাতর।এত জেদ উঠলো ওর।তাও কিছু বললো না।
পরেরদিন সকালে
তাহা ওকে ঘুম থেকে তুলে বললো,’নেন আপনার গ্রিন টি”
সৌরভ হাত থেকে নিয়ে ফেলো দিলো।
-‘এমন করলেন কেন?’
-‘আমার ইচ্ছা যাও এখান থেকে’
——
প্রায় ২দিন হয়ে গেলো।এই ২দিন সৌরভ তাহার সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেছে।দুদিন হতেই তাহা শশুর বাড়ি আসলো সৌরভের সাথে।
সারাদিনে সৌরভ তাহার সামনেও আসেনি।
বিকালে সৌরভ রুমে আসলো।তাহা ঘুমাচ্ছে,ওর কাছে গেলো সে।এই কদিনে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে সে এই ভেবে তাহার কপালে চুমু এঁকে দিলো।
তাহা জেগে গিয়ে বিছানা থেকে নেমে রুম থেকে চলে গেলো জিসার রুমে। সেখানপ গিয়ে জিসার সাথে শুয়ে পড়লো সে।রাত ৯টায় ঘুম ভাঙ্গতেই টের পেলো প্রচণ্ড মাথা ধরছে।চা খাওয়া দরকার।
আমি তো জিসার রুমে ছিলাম।এখন দেখি শয়তানটার রুমে।কিভাবে এলাম?’
-‘এই নেন চা’
-“না’
-‘খাও’
আচ্ছা মাথা ধরছে দেরি না করে খেয়ে নিলাম
নাহলে খেতাম না।
-‘কাল আমার কিছু বন্ধুরা আসবে ঢাকা থেকে।একটা পার্টি দিব’
——
পরেরদিন সৌরভের ফ্রেন্ডরা আসার পর থেকে পার্টি চলছে।জোরে মিউজিক চলছে।
-‘উফ মাথা ধরছে।ঠান্ডা কিছু খেলে ভালো লাগতো।উনার কিছু মেয়ে বন্ধুও আছে।ওরা দেখি খাচ্ছে।আপু এগুলা কি?
-‘কোকাকোলা’
-‘ওও।তাহলে আমাকে একটা দিন&
-‘ কিন্তুু ম্যাম’
-দিন বলছি’
সৌরভ বন্ধুদের সাথে কথা বলায় বিজি।
তাহা পুরাটা খেয়ে ফেললো।কেমন জানি লাগলো ওর কাছে।ওরে ভাবলো ভালইতো।আরেক গ্লাস খাওয়া উচিত।
এমন করে ৩গ্লাস খেয়ে নিলো।
-‘ওকে গাইস।ওয়েট কর তোরা। আমি আসছি,তাহা কই?
হলে গেলাম,তাহা!!!’
তাহা চরকার মতো পুরা হলে ঘুরছে আর গান গাইছে।
ওকে গিয়ে ধরলো সৌরভ। ওকে মদ খাওয়ালো টা কে?
অদ্ভুত প্রেম♥
Writer-Afnan Lara
[৯]
তাহা সৌরভের হাত ছাড়ছেই নাই
-‘তাহা,ঘুমাবা না?ঘুমাবে চলো’
-‘না।আমার না খুব ভালো লাগছে’
-‘ওহ তাই,তা কেন?’
-‘জানি না।এইইইই’
-‘কি?’
-‘আমাকে ভালোবাসো’
-‘তোমার মাথা ঠিক আছে?’
-‘আমাকে ভালোবাসবা না?ওকে আমি বাসছি’
তাহা এটা বলেই টান দিয়ে ওকে বিছানায় ফেলে দিলো।খপ করে ধরলো এবার।সৌরভ তো পুরাই অবাক।মদের নেশা ভালো করে লাগছে তাহার উপর যা বোঝা গেলো।
একি শার্ট খুলছো কেন’
তাহার অবস্থার অবনতি দেখে সৌরভ ওরে ধরে শুইয়ে দিলো।কাঁথা গায়ে দিয়ে দিলো তারপর।
-‘ওর এই অবস্থায় আমার কিছু করা ঠিক হবে না।পরে চিল্লাইয়া মাথা খাবে।এখনও সুস্থ হয়নি’
-‘ঢং দেখাও?তুমি রোমান্স জানো না বুঝি?এখন আমি করতে চাইতেছি ভাব দেখায়’
-‘ তুমি ভালো হও তখন কেমন?বেশিক্ষন সামলানো যাবে না।হ্যালো সুজন আমার রুমে লেবুর শরবত দুই গ্লাস পাঠাও’
—-
-‘এই নাও খাও’
-‘কি এটা?’
-‘এটা কোকাকোলা’
-‘ওওওও দাও তাহলে।ইশ এতো তিতা কেন?’
—-
তাহাকে সামলিয়ে বন্ধুদের বাই বলে বিদায় দিলো সৌরভ।
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠার ওর তাহা সব ভুলে গেছে।সৌরভ ও কিছু মনে করায়নি।তাহা আজ মাথার ব্যান্ডেজ খুলে ফেলায় গোসল করলো শান্তিতে।এখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছছে।
ওকে যে লাল শাড়ীতে এত মানাবে কখনও ভাবেও নাই সৌরভ দূর থেকে চেয়ে আছে সে।আর থাকতে না পেরে পা টিপে টিপে কাছে এসে খপ করে ধরলো তাহাকে।
-“উফ!অসভ্য’
-‘তো সভ্য করে দাও’
তাহা ওর হাত ধরে কামড় বসিয়ে দিলো।
-‘উফ!!কি বিচ্ছু মাইয়া!’
তাহা এক দৌড়ে রুম থেকে চলে গেলো।
-‘আমার রুমে যেন আর আসবে না,দেখি কতক্ষন না এসে থাকতে পারেন’
-‘আজকে আর রুমে যামু না।শয়তানটা ঘাপটি মেরে বসে আছে।জিসার রুমে যাই বরং।একি সৌরভ দেখি সেখানে,আমি কেটে পড়ি তাহলে।
-‘ঐ তাহা,কই যাও?’
-‘না মানে বাথরুমে। এটা বলেই দৌড় দিলাম’
তাহা রুমে এসে চুল আঁচড়িয়ে আবার বাগানে গিয়ে বসললো।পাশের বাসার আন্টি এসে হাজির।তার নাম মিলি
-‘তো কিছু ভাবছো?’
-‘কি?’
-বেবি কইটা নিবা,?’
-“৩২টা নিবো।ওদের পড়ানোর জন্য একটা স্কুল নির্মাণ করবো’
-‘সৌরভ তোমার বউ দেখি মারাত্মক দুষ্টু’
-‘কেন কি হয়ছে?’
-‘ উনি নাকি ৩২টা বেবি নিবে’
-‘কিহ!!’
—–
-‘সুজন যা যা বলছি মনে আছে?’
-‘ইয়েস স্যার’
তাহা আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখছে সে কি সত্যি বেশি চিকন!’
হঠাৎ কিসের যেন আওয়াজ হলো।সে নিচে তাকায় দেখলো একটা সাপ।
-“(আমি ছোট থেকে সাপকে বাঘের চেয়েও বেশি ভয় পাই)
আম্মুউউউউউউউউউ।থুক্কু সৌরররভভভভভ’
কেউ আসছে না দেখে তাহা লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে গেলো
-‘কি হয়েছে বিছানায় উঠে দাঁড়িয়ে আছো কেন?’
-‘সসসসসাাাাপপপপপ’
-‘আমি তো দেখি না’
-‘আমি এই রুমে থাকমু না’
-‘তাহলে যাও আরেক রুমে”
-‘বিছানা থেকে নামতে ভয় লাগে,আমাকে কোলে তুলুন।
-‘সিউর?’
-‘হ্যাঁ’
সৌরভ ওকে কোলে তুলে নিলো।-‘এক কাজ হয়েছে।
সাপটা প্লাস্টিকের ছিলো।নেক্সট টার্গেট কাছে আসা।’
—
[১০]
তাহা কেমন করে যেন সৌরভের কাজটা বুঝে গেলো।শয়তানি বুদ্ধি এঁটে মায়ের ঘরে গেলো সে।
-‘আসবো?’
-‘আরে তাহা য। আসো ভিতরে আসো’
-‘আম্মু আপনার ছেলে শুধু আমাকে দিয়ে কাজ করায়।আমাকে রুম থেকে বের করে দেয়।আমাকে খেতে দেয় না।আমাকে ঝাল খাওয়ায় পানি খেতে দেয়।(আজ শয়তানটা মজা বুঝবে)’
-‘সৌরভ! এদিকে আয় তো’
-‘হ্যাঁ বলো মা।কি হয়েছে?”
-‘তুই তাহাকে এত জ্বালাস কেন?তুই ওরে রুম থেকে বের হতে বলিস ?ওরে দিয়ে কাজ করাস?’
সৌরভ তাহার দিকে একবার তাকিয়ে বললো,’ আর করবো না। এখন যাই।কাজ আছে কিছু’
-“হুহ!!এর পর থেকে আর কিছু করার সাহস পাবে না।’
আম্মুর রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে সৌরভ ওর মুখ চেপে ধরে রুমে নিয়ে নিয়ে দরজা লক করে দিলো ভেতর থেকে
-‘আমি বিচার দিই নাই সিরিয়াসলি।আম্মু তো দেখে তাই না?’
-‘আমি তোমাকে দিয়ে কাজ করাই?ওকে আসো আমার পা টিপো’
-‘না,শখ কতো’
-‘বেশি কথা কইলে ৩২টা বেবির মা হবার কাজ সহজ করে দিবো’
-‘এইতো পা টিপতেছি’
——
২বছর পর
সৌরভ হসপিটালের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি।তাহা ভেতরে।
-‘আমার তাহা মা হতে চলেছে আর আমি বাবা।
সবাই টেনশনে আছে।আমরা আপাতত আমেরিকাতে।
২বছরে তাহাকে নিয়ে আমার কতো কাঠখড় যে পুড়াইতে হয়েছিলো।একটা মেয়েই বটে।শেষে জোর করতে হয়েছিলো।সে কি কান্না ১মাস ধরে খালি কান্না করে আমার মাথা খায়ছে।এবার বাবু আইসা বাকিটা খাইবো।
এই দুবছরে আল্লাহর রহমতে আমাদের বড় কোনো বিপদ হয় নি।কি ভাবে কেটে গেলো বুঝতেই পারিনি।
আমেরিকাতে ওকে আনতে সে কি কষ্ট।গড়িয়ে গড়িয়ে কান্না করছে ওর মা বাবা ছাড়া আসবে না।পরে উনাদের ও নিয়ে আসি।তার পর ম্যাডাম ঠান্ডা হন।হসপিটালে যাওয়ার আগে আমার হাত ধরে বলেছে সে আমায় ভালোবাসে। বিয়ের পরে এই প্রথম ওর মুখ থেকে কথাটা শুনলাম।আর বলল আমি বাঁচতে চাই।এত তাড়াতাড়ি সবাইকে ছেড়ে যেতে চাই না।কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আসলো
-‘কি হলো? ‘
-‘অভিনন্দন! আপনাদের ১টা নয়, ২টা নয়, ৩টা বেবি হয়েছে।যা কোটিতে একবার হয়,’
-‘আর আমার তাহা?’
-‘উনিও ভালো আছেন’
সবাইতো খুশিতে আটখানা।সৌরভ তার ৩টা বাবুকে কোলে নিলো।সব গুলা ওর মতন হয়েছে।২টা ছেলে,আর একটা মেয়ে।তাহা দেখলে খুশিতে লাফাবে,এসব ভেবে ওর কাছে গেলাম।এতো খুশি লাগছে বুঝাতে পারবো না।
৮মাস পর💜
পাশের বাসার একটা কাপলের ও একই দিনে ছেলে হয়েছিলো
-‘তো উনাদের বেবি, আমার ৩টা বেবির সাথে বসিয়ে আমরা কথা বলছিলাম।’
তাহা চেঁচিয়ে বললো,’এই পোলা তুই আমার মেয়েকে খালি ঠেলা মারস কা?একটা থাবড় দিয়ে দাঁত ফালায় দিবো’
-‘What Are you saying? ‘
-“তোর মন্ডু’
-‘প্রেস্টিজ পানিতে ঢুবাইবা?’
-‘ওহহহ।ঠিক আছে।কিছু না ম্যাম।এই তুমি দেখো না আমার মেয়েকে টাচ করছিল?’
-‘তো কিছে?কিস তো করে নাই’
-‘কিইইই!কিস করলে একদম ঠোঁট কেটে দিব”
-‘আল্লাহ বাঁচাইছে উনারা আমাদের ভাষা বুঝেন না।নইলে গিয়ে কেস করে আসতো’
—-
দুপুরে💜
-‘সৌরভ তুমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকো।আমি একটা একটা করে গোসল করাবো আর তোমার হাতে দিবো’
সারিফ বাবু,আমার ধলা বাবু।নাও আব্বুর কোলে যাও।
সামি বাবু,আমার কলিজা,যাও আব্বুর কোলে যাও,
আমার সিন্তিয়া মামুনি,যাও আব্বুর কোলে যাও
-‘তাহা! কি খাওয়াও ওদের,ভারী’
-‘বেশি কি খাওয়াই?সকালে সেরেলাক,খিচুড়ি,জুস,দুপুরে ভাত ডাল জুস সেরেলাক,রাতে জুস ডাল চেরেলাক।একদম আমর বেবিদের খাওয়ার খোঁটা দিবা না,তোমার দোষে এতগুলা হয়ছে,আমি কি কিছু করসি?’
-‘২১ঘন্টা আমি কোলে রাখি’
-‘ওদের খাবার তুমি রেডি করো?’
-‘না মানে”
-‘তাইলে চুপ”
——-
-‘৩টাকে মানুষ করতে আমার যে কি হাল হয়েছিলো।তার উপর তাহা হলো আরো বাচ্চা।
আর বেবি নি নাই,এদের পিছনেই দিন গেছে,
একটা রাত ও ঘুমাতে পারতাম না ওদের চিৎকারে,তাহা মরার মতো ঘুমিয়ে থাকতো,মাঝে মাঝে উঠে নেপি পাল্টাতো ওদের।
সুখ,দুঃখ, ঝগড়া সব মিলিয়ে আমাদের দিন চলতে লাগলো।তাহা এখন ওর জীবনের চাইতেও আমাকে বেশি ভালোবাসে,হয়তো এর চেয়ে বড় পাওনা আর কিছুই নেই
💘💘💘💘💘💘💘সমাপ্ত💘💘💘💘💘💘💘