#অদ্ভুত-তিনি
পার্টঃ04
Megh La
আমি বেলকনির পর্দা সরাতে যাবো হাতটা বাড়াতে আমান আমাকে ডাক দিলেন,
-মেঘ। (বেশ চিল্লিয়ে)
আমি পেছনে ফিরে,
-জী। (কিছুটা ভয় পেয়ে)
-তোমার জন্য কিছু এনেছি। (আমার মনে হলো কথাটা পাল্টে দিলেন হটাৎই তার শুর নিচু হয়ে গেল)
আমি বেলকনি থেকে রুমে এসলাম,
-জী বলুন।
উনি একটা আংটি আমার হাতে পরিয়ে দিলেন। আংটিটা অসম্ভব সুন্দর। মেবি ডায়মন্ড । অনেক উজ্জ্বল।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।
-বাসর রাতে নাকি বৌকে কিছু দিতে হয় তখন দিতে পারিনি তাই এখন দিলাম।
-আপনার দেওয়া হয়ে গেলে আমিকি ওখানে যেতে পারি৷
-না। (ধমকি শুরে)
-কেন। (আমার এবার খুব খারাপ লাগলো)
– আরে সরি আসলে আমার মাথা ঠিক নাই৷ আমি বলতে চইছি তুমি একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দিবা। দাইমা চলে জাবার পর কেউ মাথায় হত দেয় নি আমার৷
ওনার কথায় বেশ মায়া হলো আমার কিন্তু আমার কেমন মনে হচ্ছে তিনি কিছু লুকাচ্ছেন। কিন্তু আমি সন্দেহটা মনে রেখে তাকে বললাম,
-আচ্ছা আপনি চলুন।
-একটা কথা আগে চোখ বন্ধ করো।
-কেন।
-করো না।
আমি চোখ বন্ধ করতে তিনি আমার কপালে ফু দিলেন৷
-এবার খুলো।
আমি চোখ খুললাম। চলো এবার হাত বুলিয়ে দিবে।
তিনি আমার কোলে সুয়ে পরলেন৷ আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি৷ তিনি চোখ বন্ধ করে আছে। কি মায়াবি মুখটা। তার শরীরে অসম্ভব সুন্দর একটা ঘ্রান আছে। কোন মানুষ এই রকম হয় যানা ছিলো না৷ কথায় কথায় আমি ভুলেই গেছিলাম এখন তার স্পর্শে আমি ব্যাথা অনুভব করছি না৷ কেন এমন কেন? এই বাড়িটা এমন অদ্ভুত কেন সকালের রোদ আসে না এখানে কেউ পর্দা সরায় না। ধুর সব কেমন তাল গোল পাকিয়ে যাচ্ছে৷ এতো ভাবনা এতো প্রশ্ন উত্তর নেই৷ আমার জীবনে এই ৩ টা দিন কেমন অদ্ভুত কাটছে৷ বলে বোঝাবার ভাষা জানা নেই আমার।
কিন্তু সব কিছুর মাঝে একটা জিনিস আমার স্বামী মাসআল্লাহ আল্লাহ আমাকে এতো কেয়ারিং কেউকে স্বামী হিসাবে দিবে ভাবি নি৷ ভেবেই ঠোটের কোনে হাসি চলে এলো।
ওনার দিকে তাকাতে দেখি চোখ বন্ধ করে আছেন মনে হয় ঘুমিয়ে গেছেন। আমি আলতো করে ওনার মাথাটা বালিসে দিয়ে দি৷
-উনি ঘুমিয়ে গেছে এখনি সময় দেখতে হবে এটা আসলে কোন জায়গা৷ আমার একটা প্রশ্নের উত্তর তো পাবো।
আমি টিপ টিপ করে পর্দার কাছে গিয়ে পর্দা সরাতে অনেক আলো চোখে এসে পরলো চোখের সমনে হাত দিতে কেউ এক ঝটকে পর্দা আটকে দিলো। আমি হাত সরাতে আমান আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলেন৷ আমার দুটো বাহু ধরেছেন তিনি আমি তিব্র ব্যাথা অনুভব করছি। দুটো বাহুর হাড় গুলো জেন ভেঙে যাচ্ছে আমার তাই মনে হচ্ছে। তার ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গেছে৷ দেখেই বুঝতে পারছি অনেক রেগে আছেন। ভয়ানক লাগছে আমার কাছে।
আমি শুধু শুনতে পেলাম,
-তোমাকে আমার কাছে থাকতে বলছিলাম এতে অবাধ্য কেন তুমি।
আমি আর শুনতে পারি নি আর কিছু শুনার আগেই ব্যাথাতে চোখ দুটো বুঁজে এলো।
চোখ খুলতে নিজেকে বিছনায় আবিষ্কার করি, বহু দুটো হালকা ব্যাথা। আমান আমার পাশে বসে আছে। তার চোখে ভয় স্পষ্ট। চোখ দুটো লাল হইছে মনে হচ্ছে কেদেছেন। আমাকে চোখ খুলতে দেখে তিনি উত্তেজিত কন্ঠে বললেন,
-তোমার আর ব্যাথা হচ্ছে নাতো জান পাখি তুমি ঠিক আছো তো কষ্ট হচ্ছে কি।
-জ…জী। (আমার তার ভয়ানক মুখটা মনে পরে যাচ্ছে কেমন ভয় হচ্ছে)
-সরি৷ আমি বুঝতে পারিনি তোমার এতে কষ্ট হবে। ক্ষমা করে দেও। তুমি ঠিক আছো কষ্ট হচ্ছে নাতো।
-আ..আপনি আগে বলুন আপনার স্পর্শ আমাকে কষ্ট দেয় কেন৷৷ এটা কোন জাগয়া আমি আম্মুর কাছে যাবো। (কাঁদো শুরে)
-জান পাখি আমি সরি বললাম তো। আমার চোখের দিকে তাকাও৷
কি হলে তাকাও৷।
আমি তার চোখের দিকে তাকালাম।
-দেখ আমি সরি তুমি আমাকে মাফ করে দেও৷ আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।
তার কথায় মিশ্রিত মায়া। আর তার চোখের মায়ায় আমি সবটা ভুলে গেলাম। আমার যে হালকা ব্যাথা ছিলো ওটাও চলে গেল।
-জান পাখি রাত হয়েছে দেখ ঈসার নামাজ পরে খেয়ে নিতে হবে। চলো।
-আমি ওজু করে আসি। । (আমার সব কষ্ট নিমিসে শেষ করে দিলেন)
-হুম।
আমি বাথরুম থেকে ওজু করে বার হলাম৷ নামাজ আদয় করে নিলাম। তার পর তিনি আমার খাবারটা রুমে এনে দিলেন আমি খেয়ে নিলাম বদ্ধ মেয়ের মতো৷
-জান পাখি । তুমি কি ঘুমোবা। ঘুম পাচ্ছে?
-হুম। (এটা মিথ্যা বলছি)
-আচ্ছা চলো(তিনি এমন করে হসলেন জেন আমি মিথ্যা বলছি সেটা বুঝতে পেরেছেন)
উনি শুয় পরলেন আমাকে নিয়ে। আমার অনেকটা কাছে তিনি।
-কাল তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
-কি সেটা৷
-ধুর পাগলি বলে দিলে কি সেটা সারপ্রাইজ থাকে বলো।
আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি।
-(উনি মুচকি হেসে বললেন) চলো ঘুমও এখন৷
আমি চোখ বন্ধ করে ঘুমতে চাইছি। কিন্তু ঘুম আমার আসছে না মাথার মধ্যে হাজার রকমের প্রশ্ন ঘুর পাক খাচ্ছে। আম্মুকে মিস করছি অনেক। এই প্রথম তাদের ছাড়া ২ টা রাত কাটিয়ে দিচ্ছি। সাথে বন্যা আপুর কথাও মনে পরতে চোখে পানি চলে এলো। আমার চোখের পানি বালিসে পরতে আমান আমাকে তাক দিলেন,
-জান পাখি৷ এদিকে ফিরো।
আমি ওনার দিকে ফিরলাম,
-তুমি কাঁদছ কেন৷
-আপনি বুঝলেন কি করে৷ (আমার কান্না টা এমন কেউ শব্দ পায় না কখনো)
-আমি সব বুঝতে পারি। এখন বলো চকলেট খাবা৷ তোমার মন খারাপ করলে তো তুমি চকলেট খাউ।
-হ্যা কিন্তু আপনি(মুখের কথা মুখেরই থেকে গেল আমার)
-আচ্ছা এই দেখ কতো চকলেট৷ তিনি পকেট থেকে ৩ টা বড়ো চকলেট বার করে দিলেন। এগুলা পেয়ে আমি অনেক খুশি হলাম।
-ধন্যবাদ , ?
-হ্যা এখন এগুলা খেয়ে ঘুমউ। সকালে আর একটা সারপ্রাইজ আছে
-আমি চকলেট পেয়ে আর কোন কথা না বলে খেয়ে ঘুমিয়ে পরি (চকলেট আমার সব রোগের ঔষধ ?)
সকালে, সেই মধুর আজানে ঘুম ভাঙতে আমি উঠে পরি সাথে আমানও উঠে আমার এক সাথে নামাজ আদায় করি৷
-আচ্ছা জান পাখি তুমি সারি পাল্টে নিচে এসো।
আমি তার কথা মতো সারি পাল্টে নিচে এসতে চোখে পানি চলে এলো,
চলবে,
?