অদ্ভুত কান্না ২য়_পর্ব

0
1730

অদ্ভুত কান্না ২য়_পর্ব
.
নাদিয়াকে বিছানায় না পেয়ে হাবিব চমকে উঠলো, চারদিকে মুয়াজ্জিনের কন্ঠে ভেসে আসছে, ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’।
হাবিব কিছুক্ষণ পর আন্দাজ করলো বাথরুমে পানির শব্দ, সেখানে গিয়ে দেখলো পানির ট্যাপ ছাড়া, কিন্তু নাদিয়া নেই।
হঠাৎ রান্নাঘর থেকে একটা আওয়াজ আসলো, ‘আমি এখানে’।
হাবিব চমকে উঠলো, রান্নাঘরে গিয়ে দেখলো নাদিয়া সেখানে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়ছে। নাদিয়াকে পেয়ে হাবিব একটু স্বস্তিবোধ করলো, রান্নাঘরে একটা চেয়ারে বসে হাবিব সিগারেট বের করে আগুন ধরালো, এতক্ষণ পর মনে পড়লো তার ঘুম ভেঙেছে নাদিয়ার বিড়বিড় করে উল্টা-পাল্টা শব্দ শুনে, ‘ছেড়ে দিলাম, আমি হাবিবকে ছেড়ে দিলাম’। সে ভেবে পাচ্ছে না সেটা ভুল শুনছে নাকি সত্য শুনছে, সত্য হবার কথা, আজ সারারাত নাদিয়া যেসব অস্বাভাবিক আচরণ করছে, তাতে সত্যিই শুনছে, কিন্তু নাদিয়া রুমে নামাজ না পড়ে রান্নাঘরে কেন ? এতক্ষণে নাদিয়ার নামাজ শেষ হয়ে গেছে।
নাদিয়া স্বাভাবিকভাবে হাবিবের দিকে তাকালো, তারপর জায়নামাজ তুলতে তুলতে বলল, ‘হাবিব তোমাকে চা করে দেই ?’
নাদিয়ার স্বাভাবিকভাবে কথা বলা দেখে হাবিবের এখন রাগ হচ্ছে , সারারাত কি সব আজগুবি কান্না শুনে ভয় পেলো, আমাকে কাছে যেতে দিলো না, কাছে গেলে নাকি রান্নাঘরের ওদিকে কে আরও বেশি কাদে, এখন সব ভুলে গেছে, সারারাত ঘুমাতে পারিনি ওর যন্ত্রনায়।
হাবিব কিছুটা বিরক্তির গলায় বলল, ‘তুমি রান্নাঘরে নামাজ পড়তে আসছো কেন ?’
নাদিয়া সেই চেনাজানা ভঙ্গিতে বলল, ‘তুমি ঘুমোচ্ছিলে তাই ভাবলাম রুমের বাতি জ্বালিয়ে নামাজ পড়লে ডিস্টার্ব হবে।’
-কিন্তু সারাটা রাত তুমি বলছিলে রান্নাঘরের দিকে কে জানি কাদে, আমি তোমার কাছে গেলে আমাকে মেরে ফেলবে বলে আমাকে দূরে থাকতে বলছিলে, এসব কি তোমার এখন মনে আছে ?
-নাদিয়া খুব আগ্রহী হয়ে বলল, ‘তাই নাকি ? আমি এসব বলছি নাকি ? আমার তো কিছু মনে পড়ছে না, তোমার মাথা ঠিক আছে তো হাবিব ?’
নাদিয়া এমনভাবে কথা বলছে এখন হাবিবের নিজের কাছে মনে হচ্ছে সে নিজেই হয়তো এতকিছু স্বপ্নে দেখছে, তার নিজেরই হয়তো মাথা ঠিক নেই।
নাদিয়া কাছে এসে বলল, ‘কি হইছে তোমার ? কি চিন্তা করছো ?’
-‘না, কিছু না, তুমি চা দাও তো।’
একটু পর ফোন বেজে উঠলো, হাবিব ফোন হাতে নিয়ে দেখলো নাদিয়ার বাড়ি থেকে কল আসছে, তার এতক্ষণে মনে পড়লো রাতে নাদিয়ার অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সে নাদিয়ার বাসায় কল দিয়েছিল। হাবিব ভাবছে নাদিয়ার যেহেতু কিছু মনে নেই, তাহলে ওর সামনে কল ধরা উচিৎ হবেনা। তাই বাহিরে গিয়ে কল ধরলো।
-‘হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম’।
-‘ওয়ালাইকুম আসসালাম, কি বাবা এত রাতে কল করছিলে যে ! কোনো সমস্যা বাবা ?’
-‘হ্যা আম্মু, সমস্যাটা হচ্ছে নাদিয়া মাঝরাতে হঠাৎ কান্নার শব্দ শুনে ঘুম থেকে উঠলো, তারপর একবার বলে রান্নাঘরের ওদিকে কে কাদে, আরেকবার বলে হাসে, আরেকবার বলে ছাদে কে জানি পা টেনে টেনে হাটছে, তাছাড়া রান্নাঘরে একবার অজ্ঞান হয়েও পড়েছিল , তাই ভয় পেয়ে কল দিয়েছিলাম।’
-‘কি বলো বাবা ! এতকিছু হয়ে গেলো ? কখন থেকে এমন করছিলো ?’
-‘হঠাৎ করে মাঝরাতে এমন করছিল, কিন্তু একবার সন্ধ্যায় ওর একটা কল আসে, এরপর দেখলাম ওর মন খারাপ, জিজ্ঞেস করলাম কার কল ছিলো, ও বলল বাড়ি থেকে।’
-‘না বাড়ি থেকে তো কেউ কল দেয়নি।’
– হ্যাঁ , আমি ওর কললিস্ট চ্যাক করে দেখছি বাড়ি থেকে কোনো কল আসেনি, দুটা হিন্দু ছেলে-মেয়ের নামে কল আসছে, একজনের নাম চৈতালী আরেকজনের নাম অনুপম রায়, ওরা কারা আম্মু ?’
– ‘ওরা নাদিয়ার ক্লাসমেট, আচ্ছা বাবা এখন ফোন রাখছি।’
হাবিব ফোন রেখে ভাবছে, চৈতালী আর অনুপমের কথা বলতেই উনি তড়িঘড়ি করে ফোন কেটে দিলেন নাকি ? উনি কি এব্যাপারে আর কথা বাড়াতে চান নি ? চৈতালীর সাথে ফোনে কথা বলার বিষয়টা নাদিয়াও গোপন রাখছিল, ওরা আমার কাছ থেকে কিছু একটা গোপন রাখছে, কিন্তু চৈতালী নাদিয়াকে লাস্ট ম্যাসেজ দিয়েছিল, ‘জবিদাস আর নেই নাদিয়া।’ চৈতালী যদি নাদিয়ার ক্লাসমেট হয়, জবিদাস কে ? জবিদাস আর নেই মানে, জবিদাস হয়তো মারা গেছে, কিন্তু এটা আমার কাছে নাদিয়া গোপন রাখলো কেন ! চৈতালীর নাম্বার যেহেতু সেভ করে রেখেছিলাম তাকে ফোন করে দেখা যেতে পারে। হাবিবের হঠাৎ খেয়াল পড়লো নাদিয়া রান্নাঘরে নেই। খুজতে খুজতে গিয়ে দেখলো রুমের ফেইচওয়াশ, ক্রিম, যা কিছু আছে সব বারান্দায় নিয়ে নাদিয়া একটা গাছের দিকে ছুড়ে মারছে, আর বিড়বিড় করে বলছে; ‘যা, যা এখান থেকে।’
হাবিব নাদিয়াকে গিয়ে ধরতেই আচমকা সে ভয় পেয়ে গেলো, ‘আর বলতে লাগলো, ছাড়, ছাড় আমাকে, হাবিব কই তুমি, আমাকে নিয়ে যাচ্ছে, কই তুমি হাবিব।’
– হাবিব বুঝতে পারছে, নাদিয়া তাকে এখন চিনতে পারছেনা, তাই হাত ছেড়ে দিয়ে বলল ‘আরে আমিই তো হাবিব ।’
– নাদিয়া হাবিবের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পড়লো, হাবিব ধীরে ধীরে নাদিয়াকে কোলে করে বিছানায় এনে রাখলো।
নাদিয়া ঘুমিয়ে গেছে, হাবিব ভুতপ্রেতে বিশ্বাস না করলে ও এখন ভাবছে নাদিয়াকে ভুতপ্রেতে ধরলো নাকি ?
কিন্তু এখন তার মাথায় ঘুরছে চৈতালী আর জবিদাসের ব্যাপারটা, এদের বিষয়টা কেন তারা মা-মেয়ে দু’জন আমার কাছ থেকে আড়াল রাখতে চাচ্ছে !
চৈতালীকে কল দিতে হবে, নাদিয়াকে ঘুমে দেখে হাবিব বারান্দায় গেলো, চৈতালীর নাম্বার বের করে কল দিলো, কিন্তু কল বাজতে বাজতে কেটে আসছে, টানা চারটা কল দেবার পর একটা ম্যাসেজ আসলো, ‘কে আপনি ? আমি অপরিচিত কারো নাম্বার রিসিভ করিনা।’
-‘আমি হাবিব, নাদিয়ার বর।’
-‘ও আচ্ছ, এখন দেন কল।’
হাবিব আবার কল দিলো।
কল রিসিভ করে ওপাশ থেকে এক যুবতী মেয়ে বলল, ‘আদাব দাদা, কেমন আছেন ?’
-‘ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন, আমি যদি ভুল না হই, তাহলে আপনি নিশ্চয় চৈতালী।’
-‘ হ্যাঁ দাদা আমি চৈতালী, কিন্তু আপনি আমার নাম্বার সংগ্রহ করে কল দেবার কারণ কি ? আমাকে চেনারও তো কথা না।’
-‘একটা বিষয় জানার জন্য কল দিলাম, আমাকে একটু বলবেন জবিদাস কে ?
– ‘নাদিয়া কি আপনাকে জবিদাসের কথা কিছু বলছে ?’
হাবিব বুঝতে পারলো মেয়েটা খুব চালাক, নাদিয়া যা বলছে সেটাই আমাকে বলতে চাচ্ছে।
হাবিব কিছুক্ষণ ভেবেচিন্তে বলল, নাদিয়াকে ওসব জিজ্ঞেস করিনি, আমি ওর ম্যাসেঞ্জারে দেখলাম আপনি একটা ম্যাসেজ করছেন ‘জবিদাস আর নেই।’
– ‘জবিদাস আমাদের ক্লাসমেট সে গতকাল মারা গেছে।’
– ‘তোমাদের ক্লাসমেট মানে ছেলেটার বয়স তেমন বেশি ছিলোনা, কিভাবে মারা গেলো ?’
– চৈতালী প্রশ্নকে এড়িয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল ‘নাদিয়া কেমন আছে দাদা ?’
হাবিব বুঝতে পারলো চৈতালী এব্যাপারটা এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে।
-‘জবিদাস কিভাবে মারা গেলো, সেটা বললেন না যে চৈতালী ?’
-‘ আব্বু ডাকছেন আমার ফোন রাখতে হবে দাদা, বলেই ফোন কেটে দিলো চৈতালী।’
হাবিব ভেবে পাচ্ছেনা, নাদিয়া এবং ওর আম্মু চৈতালীর ব্যাপারটা আড়াল করলেন, এখন জবিদাসের ব্যাপারটা চৈতালী আড়াল রাখলো। এখানে রহস্য কি ? নাদিয়াদের গ্রাম “হরিপুর” এ আমার যেতে হবে, জানতে হবে জবিদাস কিভাবে মারা গেছে, এর মারা যাওয়াটা আমার কাছে গোপন রাখার কারণ কি! নাদিয়ার সাথে জবিদাসের কিরকম সম্পর্ক ছিলো !
কিন্তু নাদিয়াকে এই অবস্থায় এখানে রেখে কিভাবে যাবো।
আজ শুক্রবার অফিস নেই, নাদিয়াকে কি বলে বাহিরে যাবো, সেটাও ভাবার বিষয়।
হাবিব নাদিয়াদের বাসায় কল দিলো, ফোন ধরলেন নাদিয়ার আম্মু।
-‘হ্যালো আসসালামু আলাইকুম আম্মু।’
-‘ওয়ালাইকুম আসসালাম, বাবা এখন নাদিয়ার অবস্থা কিরকম ?’
-‘আম্মু নাদিয়ার অবস্থা তো ধীরে ধীরে আরো খারাপ হচ্ছে, প্লিজ আপনারা কেউ আসেন, আমার খুব ভয় করছে।
-‘বাবা তোমার বাড়িতে জানাও নি ?’
-‘না আম্মু, সবাইকে জানাতে চাচ্ছি না।’
দুপুরে নাদিয়ার আম্মু আসলেন, হাবিব তাদেরকে বলল, আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি, সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফিরবো।
হাবিব বাইক নিয়ে হেলমেট পড়ে হরিপুর রওয়ানা দিলো, যাতে কেউ সহজে চিনতে না পারে।
হরিপুর হিন্দু পাড়ার দিকে ঢুকলো হাবিব, সেখানে রাস্তার মোড়ে একজন বৃদ্ধলোক পেয়ে হাবিব জিজ্ঞেস করলো জবিদাসকে চিনেন আংকেল ?’
– ‘ হ চিনি, গতকাল ছেলেটা মারা গেছে।’
-‘ কিভাবে মারা গেলো আংকেল ?’
– বৃদ্ধলোক ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলল, ‘আপনি আইনের নাকি নিউজের লোক বলেন তো, কথাটা বলেই লোকটা হাটা শুরু করলো।’
এভাবে কয়েকজন মানুষকে জিজ্ঞেস করার পর কেউ পরিষ্কার কিছু বলেনি, আইনের লোক মনে করে সবাই এড়িয়ে যাচ্ছে।
শেষমেশ একটা স্কুল ড্রেস পড়া বাচ্চা ছেলেকে পেয়ে হাবিব জিজ্ঞেস করলো, ‘জবিদাস কে চেনো বাবু ?’
-‘হ চিনি, কাইলকা সবাই আগুন দিছে ভাইয়াকে।’
-‘তুমি কি জানো জবিদাস কিভাবে মারা গেছিল।’
-‘গলায় দড়ি দিয়ে জবিদাস ভাইয়া জিব্বা বের করে মারা গেছে।’
সাথে সাথে ছেলেটাকে একজন মুরুব্বী ডেকে নিয়ে গেলো, মনে হচ্ছে মুরুব্বী এতক্ষণ নজর রাখছিলো হাবিবের দিকে।
সন্ধ্যা হবার আর বেশি বাকি নেই, বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে, হাবিব ভাবছে জবিদাস গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যা করলো কেন ? আর এটা চৈতালী এবং তারা মা-মেয়ে আমার কাছে গোপন রাখলো কেন ?
এরিমধ্যে ফোন বেজে উঠলো, ফোন বের করে দেখলো বাসা থেকে কল আসছে।
-‘হ্যালো, নাদিয়া।’
-‘বাবা আমি নাদিয়ার আম্মু বলছি, তুমি কই তাড়াতাড়ি বাসায় আসো, নাদিয়া খুব পাগলামী করছে, কিছুক্ষণ পর পর অজ্ঞান হয়ে যায় আবার বমি ও করে।’
হাবিব তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলো, এতক্ষণে নাদিয়া ঘুমিয়ে গেছে, হাবিব জবিদাসের কথা তার শাশুড়িকে বলবে কিনা ভাবছে। না থাক, তারা যেহেতু বিষয়টা আড়াল রাখতে চাচ্ছে, আড়াল থাক।
নাদিয়ার আম্মু আমতা আমতা করে বললেন, ‘বাবা, নাদিয়ার অবস্থা তো দেখলাম খুব খারাপ, ওরে মনেহয় ভুতপ্রেত কিছু একটা ধরছে, আমি বলি কি আমাদের হরিপুরে একজন হিন্দু কবিরাজ আছে। ভুতপ্রেত এবং আত্মা তাড়ানোর জন্য উনার অনেক নামডাক, নাদিয়াকে একদিন সেখানে নিয়ে যাই।’
-‘ কথাটা শুনে হাবিবের মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগলো, আশেপাশে এতো মুসলমান কবিরাজ থাকতে উনি হিন্দু কবিরাজে যেতে চাচ্ছেন কেন ?
নাদিয়াকে তো জিনে ও ধরতে পারে, উনার মাথায় আত্মা বা ভুতপ্রেত আসলো কেন ?
তাছাড়া নাদিয়াকে যদি ভুতপ্রেত বা আত্মা ধরে থাকে, তাহলে সে নামাজ পড়বে কেন ? জিনে ধরলে নামাজ পড়তে পারে।
হাবিব তার শাশুড়ি আম্মুকে স্বাভাবিকভাবে বলল, ‘আচ্ছা আম্মু, কাল সকালে আমরা হরিপুর যাচ্ছি।’
হাবিব তার রুমে চলে গেলো, নাদিয়া ঘুমোচ্ছে, নতুন বউ, দু’দিন হলো কাছেই যেতে পারছেনা, হাবিব নাদিয়ার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লো। অসম্ভব সুন্দর লাগছে নাদিয়াকে, নাদিয়ার কপালে আলতো করে একটা চুমো দিলো।
নাদিয়ার আচমকা ঘুম ভেঙে গেলো।
-হাবিবের দিকে তাকিয়ে খুব খুশী হয়ে বলল,’তুমি চলে আসছো, কথাটা বলে হাবিবের এক হাত ধরে আবার বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়ে পাড়লো।’
নাদিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে হাবিব, হঠাৎ নাদিয়া ঘুমের মধ্য ওপাশ ওপাশ করতে শুরু করলো, দেখে মনে হচ্ছে সে খুব কষ্ট পাচ্ছে, আম্মু আম্মু বলে হাবিব ডাকতে শুরু করলো, নাদিয়ার আম্মু তড়িঘড়ি করে রুমে আসলেন, এসে দেখলেন নাদিয়ার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে ।
হাবিব ভাবছে, নাদিয়া হয়তো স্বপ্নে কোনোকিছু দেখে ভয় পাচ্ছে, ওর ঘুম ভাঙানো উচিৎ।
নাদিয়াকে ডাকতে শুরু করলো হাবিব, কিছুক্ষণ পর নাদিয়া চোখ খুলেই হাবিবের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো। হাবিব বুঝতে পারছে তাকে যেকোনো কারণে চিনতে পারছেনা নাদিয়া, তার চেহারায় অন্যকেউকে দেখতে পাচ্ছে হয়তো।
-নাদিয়ার আম্মু বললেন, ‘বাবা, আমি আজ নাদিয়ার কাছে থাকি, তুমি বরং আমার রুমে চলে যাও।’
-‘আজকেও নাদিয়ার থেকে দূরে থাকতে হবে, এটা ভেবে হাবিবের মনটা খারাপ হয়ে গেলো।’
হাবিব রুমে এসে শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছে, নাদিয়াকে ভুতপ্রেত বা আত্মা ধরতে পারে আবার নাদিয়া নামাজ পড়ে, জবিদাস ফাস লেগে মারা গেলো ! এটা সবাই আবার কাছ থেকে গোপন রাখছে, রহস্যটা কি ?
– অদ্ভুত কান্না
– চলবে…
– লেখকঃ Jobrul Islam Habib

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে