অতঃপর_তুমি পর্ব-৩৭

0
5156

#অতঃপর_তুমি
#পর্ব-৩৭
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি

৪৪.
কটেজে ফিরে এসেও আমার পাহাড়ে মেঘ ছোঁয়ার অনুভূতির রেশ থেকে গেলো।আমরা যেই কটেজে উঠেছি সেটা দেখতে খুব সুন্দর।পুরো কটেজটাই কাঠের।রুমের মধ্যে নিচু বেড,কাঠের আলমারি,টেবিল আর দুটো বেতের চেয়ার।বারান্দাটা সবথেকে বেশি সুন্দর।মাটি থেকে একটু উঁচুতে কটেজটি হওয়ায় বারান্দায় বসলে হালকা হালকা বাতাস এসে মুখে লাগে।পাহাড় থেকে ফিরে এসে আমি আর অভ্র বারান্দায় বসে সকালের চা পান করছি।বারান্দার মধ্যেও দুটো বেতের চেয়ার রাখা।মাঝখানে একটা ছোট্ট টেবিল।টেবিলটিকে দেখে মনে হচ্ছে একটি গাছের গুঁড়িকে ছোট্ট করে ফালি করে শুধু এখানে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।সেই কথিত গাছের গুঁড়ির উপরে দুটো স্বচ্ছ কাঁচের চায়ের কাপ রাখা।তার মধ্যে দুটো টি প্যাক ডুবিয়ে রাখা হয়েছে।স্বচ্ছ পানিতে তা মৃদু ঘোলাটে হয়ে লাল রং ছড়াতে শুরু করেছে।অভ্র শুধু কটেজের কর্তৃপক্ষ থেকে গরম পানি আর চিনির ব্যাবস্থা করেছে।
তিনি বাইরের বানানো চা সচরাচব খান না।তাই যেখানেই ঘুরতে যান সাথে টি প্যাক ক্যারি করেন।

অভ্র একটি চামচ চায়ের কাপে নাড়িয়ে বলল,
‘এ কারণেই তোমাকে সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে বলেছিলাম।খুব সকাল সকাল না গেলে নীলাচলে মেঘ এভাবে হাতের কাছে পাওয়া যায় না।’
‘আচ্ছা এখানে মেঘ কি সবসময়ই এভাবে হাতের কাছে থাকে?’
‘না।শুধু বর্ষা,শরৎ আর হেমন্তেই নীলাচলে হাতের কাছে মেঘ খেলা করে।তবে তাও আবার খুব ভোরে।বেশিরভাগ মানুষই নীলাচলে বেড়াতে আসে খুব বেলা করে।এই যেমন একদিনেই স্বর্ণমন্দির,মেঘলা ঘুরে আসার পথেই কিছুক্ষণের জন্য নীলাচল ঘুরে যায়।তারা আর এমন মেঘ ছুঁতে পারে না।আর যারা রিসোর্টে থেকে যায় তারাও এতো সকাল সকাল আরামপ্রিয় ঘুম ত্যাগ করে পাহাড় চড়তে যায় না।কটেজের বারান্দা থেকেই দূরে মেঘ ভাসতে দেখে দু তিনটে ছবি তুলে নিয়ে যায় আর এতেই তাদের তৃপ্তি।আরে!একটু কষ্ট না করলে,রিস্ক না নিলে কি আর প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য্য দেখার সৌভাগ্য লাভ করা যায়!আসল ভ্রমণপিপাসুরাই এমন পাহাড়ে চড়ে মেঘ দেখে।আর বাকিদের মতে মেঘ তো এখান থেকেও দেখছি শুধু শুধু কষ্ট করে পাহাড় চড়তে যাবো কেনো!তারা তো আর বুঝে না পাহাড় থেকে মেঘ দেখা আর এখান থেকে মেঘ দেখার মধ্যে কতো পার্থক্য।’

আমি হেঁসে বললাম,
‘সত্যিই।আপনি প্রথমে আমাকে বললেন না কেনো পাহাড়ে মেঘ দেখাতে নিয়ে যাচ্ছেন?আমিও তো এতো সকাল সকাল যাওয়ায় কম বিরক্ত হই নি।’
‘প্রথমে যদি বলে দিতাম তাহলে ঐ যে হুট করে সামনে তাকিয়ে হঠাৎ বিস্মিত হয়ে গেলে,তা আর হতো কই!’
‘আসলেই ঠিক বলেছেন।হঠাৎ করে দেখে আমি তো বুঝতেই পারছিলাম না কি করবো।পুরো বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।’
‘তোমার ভালো লাগার জন্যই তো এতো কিছু করা।’
কথাটা বলে অভ্র চায়ের কাপে চুমুক দিলো।

হঠাৎ আমার চোখ পড়লো অভ্র’র ঠিক পেছনে আমাদের পাশের কটেজটির বারান্দায় আমাদের মতোই বসে থাকা একটি হানিমুন কাপলের দিকে।যারা আশপাশ দুনিয়া জ্ঞান ভুলে গিয়ে রোমান্সে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।হুট করে চোখ পড়ায় আমি অবাক হয়ে হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম।অভ্র বলে উঠলো,
‘কি দেখছো ওখানে?’
কথাটা বলে উনি ঘুরতে নিলেন।আমি ঘাবড়ে গেলাম।উনিও যদি দেখে ফেলেন তাহলে আবার একটি অস্বস্তিকর মুহুর্তে পরে যাবো।আমি তাড়াতাড়ি চেঁচিয়ে বলে উঠলাম,
‘ওদিকে দেখবেন না।ওখানে কিছু নেই।’
‘তাহলে কোথায় দেখবো?’
আমি কি বলবো না বলবো ভেবে ফট করে বলে দিলাম,
‘আমাকে দেখেন।’
উনি ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালেন।ঠোঁটে চেঁপে রেখেছেন দুষ্টু হাসি।তার তাকানো দেখে আমি নিচের দিকে তাকাতেই আমার হুঁশ হলো আমার গায়ে কোনো ওড়না নেই।আমার চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেলো। তার মানে এতোক্ষণ আমি এভাবেই তার সামনে ছিলাম।ভাবতেই লজ্জায় আমি স্থির হয়ে গেলাম।ঝট করে দু হাত দিয়ে সব চুলগুলো সামনে নিয়ে এলাম।তার দিকে তাকিয়ে মুখে একটা জোরপূর্বক হাসি আনার চেষ্টা করে এক দৌঁড়ে ভেতরে চলে গেলাম।আজ আর তার সামনে আমি যাচ্ছি না।

৪৫.
আমাদের যাওয়ার দিন ঘনিয়ে এসেছে।তাই আমরা দুজন আজ আবার বান্দরবান শহরের মার্কেটে এসেছি।সবার জন্য কিছু না কিছু গিফট তো নিয়ে যেতেই হবে।মার্কেটে ঢুকে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখতে লাগলাম।অভ্র গেছে বন ফায়ার এর জন্য কিছু জিনিসপত্র কিনতে।উনি বলেছেন আজ আমরা কটেজের বাইরে একটি নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে বন ফায়ার করবো।আকাশের তারা দেখবো,গান শুনবো,গল্প করবো।সারারাত বাইরেই থাকবো ঘুমাবো না।আমিও রাজী হয়ে গেলাম।তার সব পরিকল্পনাই খুব চমৎকার হয়।আমি জানি আজকের রাতটাও ভীষণ সুন্দর কাটবে।
ঘুরে ঘুরে অনেক কিছুই দেখলাম।হঠাৎ একটি কালো শাড়ি দেখে আমার চোখ আটকে গেলো।শাড়িটা খুব সুন্দর।অভ্র’র প্রশংসা শুনে শুনে আমারও এখন শাড়ির প্রতি প্রচুর ঝোঁক চেঁপে গেছে।আমি হাত দিয়ে নেড়ে নেড়ে শাড়িটা দেখতে লাগলাম।তারপর অভ্র আসছে দেখে শাড়ি ছেড়ে দিয়ে তার দিকে এগিয়ে গেলাম।সবার জন্যই অনেক অনেক কিছু কেনা হলো।অভ্র গেলো কাউন্টারে টাকা জমা দিতে।আমি তখন মনোযোগ দিয়ে একটি বাঁশের ফুলদানি দেখছি।দু হাত ভর্তি ব্যাগপত্র নিয়ে এগিয়ে এসে উনি বললেন কাউন্টার থেকে ঐ ধূসর রঙের ব্যাগটা নিতে।আমি এগিয়ে গিয়ে ব্যাগটি হাতে নিলাম।আমার ওড়না হঠাৎ উঁচু হয়ে থাকা একটি লোহার পেরেকের সাথে আটকে গেলো।তাই পুনরায় ব্যাগটি কাউন্টারের উপরে রেখে আমি ওড়না ছাড়িয়ে নিলাম।তারপর ব্যাগ নেওয়ার সময় দেখি ধূসর রঙের দুটো ব্যাগ।আমি কিছু না ভেবে প্রথমটাই উঠিয়ে নিয়ে এলাম।
শপিং করা হয়ে গেলে আমরা রিসোর্টে উঠে গেলাম।নীলাচলের কটেজ ছেড়ে দিয়ে আমরা এখন আছি বান্দরবানের আরো একটি ভালো রিসোর্টে।অভ্র পারেও!জলের মতো টাকা খরচ করছে।বান্দরবানে বেড়াতে এসে কেউ থাকার জায়গা এতো বার পাল্টায়।রাতে অভ্র আমার হাত ধরে রিসোর্টের বাইরে একটি ছোটো ঢিবির মতো পেড়িয়ে খানিক দূরে একটি খোলা জায়গায় নিয়ে গেলেন।এখানে কেউ নেই।একদম শুনশান নিরবতা।দূর থেকে পাশের গ্রামের ঘরগুলোতে জ্বলতে থাকা ছোটো ছোটো কুপির আলো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।মোবাইলের টর্চেই যা সহায়।আমার একটু ভয় করতে লাগলো।অভ্র কিছু শুকনো গাছের লাকড়ি জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে দিলো।লাকড়িতে কেরোসিন ঢেলে দেওয়ায় আগুন ধপধপ করে জ্বলছে।মুহুর্তেই আশপাশ আগুনের লাল আভায় আলোকিত হয়ে গেলো।এখন আর ভয় লাগছে না।বরং ভালো লাগছে।জায়গাটা খুব সুন্দর।এখানে আর পাহাড়ের আঁকাবাকা খাঁজ নেই, সমতল।পাশে একটা প্রকান্ড বড় গাছ তার বড় বড় ডালপালা ছড়িয়ে রেখেছে।সেই ডাল জুড়ে আছে আবার নাম না জানা একধরণের সাদা গুচ্ছ ফুল।আগুনের আলোয় দেখতে পেলাম সামনে একটি তাবু।তাবু বলতে সেই তিন কোণা বিশিষ্ট ছোটো তাবু না।চার কোণার বড় তাবু।অনেকটা একটি ছোট্ট ঘরের মতন।আমি গিয়ে দু হাত দিয়ে ফাঁক করে দেখলাম তাবুর মধ্যে একটি মাঝারি সাইজের গদির বিছানাও পাতা আছে।আমি অবাক হয়ে বললাম,
‘এখানে আবার তাঁবু কোথা থেকে এলো?’
‘আকাশ থেকে!অভিয়াসলি আমি করিয়েছি।’
‘আপনি এই পাহাড়ি এলাকায় এতোসবের ব্যাবস্থা করলেন কিভাবে?’
‘তো!আমার ক্ষমতায় তোমার কোনো সন্দেহ আছে?’
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।সত্যিই তিনি পারেন!
‘আপনি না বলেছিলেন আমরা সারা রাত বাইরে থাকবো ঘুমাবো না।তাহলে এই তাঁবু কেনো?
‘আরে! ওটা তো কথার কথা বলেছি।সারা রাত বাইরে বসে থাকা কি সম্ভব।মাঝরাতের পর থেকে শীতেই তো শেষ হয়ে যাবে।তাই থাকা,ঘুমের সব ব্যাবস্থা করেই এসেছি।’
আমি গিয়ে গাছের গুঁড়িটিতে অভ্র’র পাশে গিয়ে বসে পড়লাম।পাশে রাখা ছোট্ট সাউন্ড বক্সটিতে একের পর এক সফট বাংলা,হিন্দি গানগুলো বেজে চলছে। অভ্র বললো,
‘কেমন লাগছে এখনে?’
‘খুব খুব ভালো লাগছে।আপনি না থাকলে আমি আমার জীবনে কখনোই এতো এতো সুন্দর অভিজ্ঞতাগুলো পেতাম না।’
‘আকাশ দেখেছো?’
‘না।আমিতো তাকাতেই ভুলে গেছি।’
আমি তাকাতে গেলাম।অভ্র এক সেকেন্ড বলে আমার চোখ তার হাত দিয়ে ঢেকে মাথাটাকে পেছনে কাত করে বলল,
‘এখন খুলো।’
আমি চোখ খুলতেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম।আকাশে এতো এতো তারা।একটি কালো চাদরে যেনো ভরে ভরে হীরা গেঁথে দেওয়া হয়েছে।চাঁদ এতোক্ষণ একটুকরো ভেসে আসা মেঘে ঢেকে ছিলো।কিছুক্ষণের মধ্যেই সরে গিয়ে আকাশে গোল থালার মতো চাঁদটা চোখে পড়লো।আমার গায়ে একটি পাতলা অ্যাশ রঙের চাদর।হালকা হিমেল হাওয়ায় একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগায় চাদরে নিজেকে ভালোভাবে মুড়ে রেখে হাঁটু ভাঁজ করে তার উপর মাথা রেখে আমি আকাশ দেখতে লাগলাম।হাতের কাছেই আগুনের হালকা উষ্ণতায় শীত শীত ভাবটা ভালো লাগছে।কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি চোখ নামিয়ে পাশে অভ্র’র দিকে তাকালাম।সে এখন আগুনে ছোটো ছোটো কাঠগুলোর যোগান দিতে ব্যস্ত।তার গায়ে একটি কালো জ্যাকেট।আগুনের লাল রশ্মিতে তাকে দেখতে কি ভীষণ সুন্দর লাগছে!
‘অরু,তাবুর ভেতর একটা ধূসর ব্যাগে তোমার জন্য একটা ড্রেস রাখা আছে।সেটা গিয়ে পরে আসবে প্লিজ।’
তার কথা আমি খেয়াল করলাম না।আমি তো তখন তাকে দেখায় ব্যস্ত।উনি আমার চোখের সামনে আঙ্গুলের একটা তুড়ি বাজালেন।আমি চমকে উঠলাম।উনি আবারো বললেন,
‘কি বলেছি শুনেছো?তাঁবুর ভেতরে একটা ব্যাগে তোমার জন্য ড্রেস রাখা আছে সেটা পড়ে এসো।আমি বাইরে অপেক্ষা করছি।’

আমি হুম বলে তাঁবুর মধ্যে ঢুকে গেলাম।বিছানার পাশেই একটা ধূসর রঙের ব্যাগ রাখা।সেই ব্যাগটা, যেটা আমি আজ সকালে শপিংমলে হাতে নিয়েছিলাম।এর ভেতর আমার জন্য ড্রেস আছে?অভ্র কি তবে কিনেছিলো?কখন কিনলো?সাত পাঁচ ভাবা বন্ধ করে আমি এক্সাইটেড হয়ে ব্যাগের মধ্যে থেকে ড্রেসটা বের করতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো।একটা ছোটো কালো ড্রেস।যেমনটা নায়িকারা ফিল্মে পড়েন।এই ড্রেস আমি পড়বো?ছি!
কিন্তু অভ্র এতোকরে পড়তে বললো,না পড়লে যদি রাগ করেন!আমার জন্য তিনি এতোকিছু করলেন।আর আমি তাকে রাগিয়ে দেবো!
অসংখ্য ভাবনা চিন্তার পর আমি ড্রেসটি পড়ে নিলাম।পড়ে ব্যাপক লজ্জায় পড়ে গেলাম।আমার নিজেরই লজ্জা লাগছে আর এভাবে তার সামনে গিয়ে দাঁড়াবো কিভাবে তাই ভাবতে লাগলাম।এতো ছোটো জামা যে হাঁটুও ঠিক মতো ঢাকছে না।তার উপর এসব ড্রেসের সাথে ওড়না থাকে না।আমি চুলগুলো সামনে নিয়ে এলাম।অভ্র বাইরে থেকে চেঁচিয়ে উঠলো,
‘কি হলো তোমার?আর কতক্ষণ লাগবে?’

তাঁবুর ভারী পর্দা ঠেলে আমি কাঁচুমাচু হয়ে বের হয়ে আসলাম।অভ্র দাঁড়িয়ে হাতে একটি কাঠের টুকরো নিয়ে নাড়াচাড়া করছিলো।আমাকে দেখতেই একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে উনার হাত থেকে কাঠের টুকরোটা পড়ে গেলো।লজ্জায় আমি উনার দিকে তাকাতে পারছি না।শুধু হাত দিয়ে ড্রেসটি বারবার টেনেটুনে হাঁটু ঢাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।অভ্র নরম গলায় বললো,
‘এটা তুমি কোন ড্রেস পড়েছো?’
‘আপনিই তো বললেন ধূসর ব্যাগটি থেকে এই ড্রেসটি বের করে পড়তে।’
‘আমি তো শাড়ি কিনেছিলাম।ঐ কালো শাড়িটা যেটা তুমি মার্কেটে নাড়াচাড়া করছিলে।এই ড্রেস ব্যাগে কি করে এলো!’
‘ও…আমারই বোধ হয় ভুল হয়েছে।একসাথে একরকম দুই ব্যাগ ছিলো তাই ভুলে হয়তো অন্য ব্যাগ তুলে এনেছি।’
আমি চোখ বন্ধ করে নিজের হতবুদ্ধি জ্ঞানে গালি দিলাম।কি একটা কাজ করে ফেলেছি।উনি এখনো একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।লজ্জায় আমি ততক্ষণে শেষ।একপ্রকার চোখ মুখ বন্ধ করে একনিঃশ্বাসে বললাম,
‘আমি তাহলে ড্রেসটা পাল্টে আসি।’
বলে দ্রুত পিছনে ফিরে চলে যেতে উদ্যত হলাম।কিন্তু অভ্র আমার হাত খপ করে ধরে ফেললো।আমার বুক প্রচন্ড ধুকপুক করতে লাগলে।পাশে থাকা সাউন্ড বক্সটিতে তখন বাজতে লাগলো,

যাব তাক তুঝে পেয়ারসে
বে ইনতেহা মে ভার না লু
যাব তাক মে দুয়া ও সা
সো দাফা তুঝে পার না লু
হা মেরে পাস তুম রাহো
জানে কি বাত না কাহো।
মেরে সাথ তুম রাহো
জানে কি বাত না কারো….

উনি এক হিঁচকে টানে আমাকে তার বুকে এনে ফেললেন।তার জ্যাকেট খামছে ধরে আমি একবার আড়চোখে তার দিকে তাকানোর চেষ্টা করে লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেললাম।উনি তার এক হাত আমার ঘাড়ে থাকা চুলের মধ্যে গলিয়ে দিয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে রাখলেন।তার ভালোবাসার আলতো স্পর্শে আমাকে ভরে তুললেন।

তুম আগেয়ে বাজু য়োমে মেরে
সো সাভেরে লিয়ে,সো সাভেরে লিয়ে
হাওয়া বাদলোছে উতারা গেয়া তুমকো
মেরে লিয়ে সের্ফ মেরে লিয়ে।
যাব তাক মেরে উঙলিয়া তেরে বালো ছে
কুছ কেহ না দে,যাব তাক মেরে
লেহরোমে খায়িঁশে তেরি রেহনালে
হা মেরে পাস তুম রাহো,
জানে কি বাত না করো,
মেরে সাথ তুম রাহো
জানে কি বাত না কারো।

উনি আমায় কোলে তুলে নিয়ে তাঁবুর দিকে যেতে লাগলেন।আর আমাকে উপহার দিলেন একটি ভালোবাসার রাত।

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে