অতঃপর_তুমি পর্ব-৩৩

0
5278

#অতঃপর_তুমি
#পর্ব-৩৩
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি

৩৮.
গলায় থাকা সোনার কারুকার্যের উপর হীরা খচিত ছোট্ট লকেটটিতে আমি বারবার হাত বুলিয়ে আয়নায় দেখতে লাগলাম।এটি সেই খানদানী লকেট যেটা অভ্র আমাদের বাসর রাতে আমার গলা থেকে ছিঁড়ে নিয়ে গিয়েছিল।যে লকেটটি এ বাড়ির সকল মিসেস আহমেদদের গলায় ঝুলে।আজ আমিও পড়তে পারলাম।কেমন যেনো অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে।লকেটটি আমায় অভ্রই পড়িয়ে দিয়েছিলো।কিন্তু যখন দিয়েছিলো তখন হয়তো তার মনে আমি অস্পষ্ট ছিলাম।ঘটনাটি ঘটে অনেক আগে।আমার অ্যাক্সিডেন্ট এরও আগে।অফিস থেকে বাবা কিছু স্পেশাল ক্লায়েন্টদের দুপুরে খাবার জন্য বাড়িতে ইনভাইট করেছিলো।ক্লায়েন্টস এর জন্য লাঞ্চ উপলক্ষে পুরো বাড়ি ঝকঝকে করে পরিষ্কার করা হলো।খাবারের তালিকা ছিলো দেশি,কন্টিনেন্টাল ফুড আইটেমে ভরপুর।মায়ের কথা অনুযায়ী আমি মিষ্টি রঙের একটি শাড়ি পড়লাম।অভ্র একটি নীল রঙের পাঞ্জাবি পড়ে নিচে আসলো।সবকিছুই তৈরি হয়ে আছে।এখন শুধু মেহমানদের আসার অপেক্ষা।হঠাৎ মা আমার গলার দিকে তাকিয়ে বলে
উঠলেন,
‘একি অরু,তোমার গলা খালি কেনো?আমাদের খানদানী লকেট কোথায়?যেটা তোমাকে বিয়ের সময় দেয়া হয়েছিলো?এতোদিন তো আমি খেয়ালই করি নি।’

মায়ের কথা শুনে অভ্রও আমার গলার দিকে তাকালো।আমি গলায় হাত দিয়ে আমতা আমতা করতে লাগলাম।কি বলবো এখন!লকেট তো সেই প্রথম রাতেই অভ্র নিয়ে গিয়েছিলো।কিন্তু এই কথা তো আর মাকে বলতে পারি না।আমি ইনিয়ে বিনয়ে কিছু বলতে চাইলাম কিন্তু স্পষ্ট ভাবে কিছুই মুখ দিয়ে বের হলো না।চিন্তিত মুখে আমি উনার দিকে তাকালাম।উনি বললেন,

‘মা,ঐ লকেটের চেইনের হুক ভেঙে গিয়েছিলো তাই আমি আমার কাছে রেখে দিয়েছি।পরে ঠিক করে এনে দিবো।’

‘হুক ভেঙে গেছে সেটা আমাকে বলবে না।কতগুলো সোনার চেইন আছে আমার কাছে।চেইনের জন্য আহমেদ বাড়ির বউ খানদানি লকেট ছাড়া থাকবে এটা কোনো কথা!’

এই বলে মা তার রুমে গিয়ে একটি সোনার চেইন নিয়ে এসে বললেন,
‘যা ঐ লকেট নিয়ে আয়।এই চেইনের ভেতর ঢুকিয়ে দিচ্ছি।’

উনি বললেন,
‘এখনই কি দরকার মা।গেস্ট এসে পড়বে এক্ষুনি।পরে এসব করলে হয় না।’

‘না হয় না।গেস্ট আসবে এই কারণেই তো বেশি দরকার।বাইরে থেকে মানুষ এসে নাকি দেখবে এই বাড়ির একমাত্র পুত্রবধূর গলাই খালি!যা তাড়াতাড়ি নিয়ে আয়।’

উনি আর কিছু বলতে পারলেন না।উপরে গিয়ে হাতের মুঠোয় লকেট টা নিয়ে ফিরে এলেন।তার হাতের থেকে লকেট নিয়ে মা তার হাতের সোনার চেইনে ঢুকিয়ে নিলেন।তারপর পুনরায় অভ্র’র হাতে দিয়ে বললেন,
‘অরুকে পরিয়ে দে।’

‘মা আমি কেনো!ও তো নিজেই পরতে পারবে।’

‘তুই আজকাল বড্ড বেশি কথা বাড়াস অভ্র!পরাতে বলছি পরিয়ে দে।হুকটা শক্ত,ও একা একা পড়তে পারবে না।মেহমানরা এই চলে এলো বলে।নে তাড়াতাড়ি কর!’

অভ্র কিছুটা কাঁচুমাচু করে আমার পেছনে লকেট হাতে দাঁড়ালো।আমিও একটু জবুথবু হয়ে গেলাম।একটু থেমে থেমে উনি এক হাত দিয়ে আমার ঘাড়ের চুল সরিয়ে দিয়ে তাদের খানদানি লকেট আমার গলায় পড়িয়ে দিলেন।আমার ঘাড়ের চুল সড়াবার সময় তার আঙ্গুলের আলতো স্পর্শ আমার ঘাড়ে অস্পষ্ট ভাবে লাগতেই আমি একটু কেঁপে উঠলাম।উনিও হয়তো বুঝতে পারলেন।লকেট পড়ানো শেষ হলে উনি পেছন থেকে সরে গেলেন।আমি হাত দিয়ে গলার মাঝ বরাবর পড়ে থাকা লকেট টা একবার হাত দিয়ে স্পর্শ করলাম।
যেমনটা এখন করছি।সেদিনের মতো আজও নিজেকে কেমন অদ্ভুত ভাবে পরিপূর্ণ মনে হচ্ছে।সেদিন এই লকেট গলায় পড়তে পারলেও আমি খুলে ফেলেছিলাম।কারণ আমার মনে হয়েছিল অভ্র হয়তো এখনও চায় না।যেদিন আমাকে সত্যিই নিজের স্ত্রী ভাববে সেদিনই পড়বো।আজ হয়তো সেদিনটা এসেছে।তাই তো আজ এতোদিন পর একটি গুপ্ত কৌটায় লুকিয়ে রাখা আহমেদ পরিবারের এই খানদানি ছোট্ট লকেট টি আমি বের করে গলায় পড়ে নিলাম।আর কক্ষণো খুলবো না।আয়নার মধ্যে নিজের গলায় লকেট দেখায় আমি যখন ব্যস্ত ঠিক তখনই নিচের থেকে ভেসে এলো সেই চিরচেনা প্রিয় কন্ঠের ডাক,’অরু।’

আমি সেই শব্দের অনুসরণ করে দ্রুত নিচে দৌঁড়ে গেলাম।আমার পরণে একটি কাঁচা হলুদ রঙের শাড়ি।শাড়ির কারণেই ছোটার গতি আমার মন্থন হয়ে এলো।নিচে গিয়ে দেখলাম অভ্র’র হাতবোঝাই হয়ে আছে বড় বড় বাক্স। বেচারার মুখটা অব্দিও ঢেকে আছে বাক্সে।শুধু চোখ উঁচু করে সামনের সবকিছু দেখার চেষ্টায় আছে।
আজ আমাদের বাড়িতে বিয়ে।চম্পা আর মফিজ ভাইয়ের বিয়ে।বিয়ের ঘটক আমি এবং প্রধান সঞ্চালক ও।তাই আমার কদর আজ একটু বেশিই।অভ্রকে পাঠিয়েছি গ্যারেজের পাশের মফিজ ভাইয়ের ঘরে।সেই রুমটিতে এতোদিন মফিজ ভাই একাই থাকতো।রুমটি অপেক্ষাকৃত বড় হলেও একপাশ জুড়ে আছে রাজ্যের পুরনো বাক্সপত্রে।এখন মফিজ ভাইয়ের সাথে চম্পাও সেখানে থাকবে তাই অবশ্যই তাদের রুমে একটু বেশি জায়গারই প্রয়োজন হবে।টোনা টুনির নতুন সংসার হবে।একটু গুছিয়ে তো নিতেই হবে।আমার কথামতোই অভ্র গেছে সেই রুম পুরো খালি করতে।নতুন বর বউকে দিয়ে আজ কোনো কাজ করানো হবে না।তাই আমি ঠিক করেছি আজ সব কাজ আমরা আমরা করবো।
অভ্রকে দেখতে ক্লান্ত লাগছে।কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে।তবুও তাকে দেখতে সুন্দর লাগছে।সে আজ পড়েছে সাদা প্যান্টের উপর একটি লাল-খয়েরী পাঞ্জাবি।আমি নিজেই তাকে পরতে বলেছি।এবং নিজের হাতেই তার পাঞ্জাবির হাতা কনুই পর্যন্ত ভাঁজ করে দিয়েছি।তাতে অভ্র বলেছে আজ নাকি আমি বড় হয়ে গেছি।আমাকে দেখতে বড় বড় লাগছে।এতোদিন পিচ্চি বলতো বলে রাগ করতাম।অথচ আজ বড় বলায় লজ্জা পেয়েছি।আমি নিজের প্রতি নিজেই অবাক।
উনি আমার মুচকি হাসি দেখে বিভ্রান্ত হয়ে গেলেন।চোখের সামনে একজন মানুষ বাদামী রঙের বাক্সের স্তুপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তাকে সাহায্য না করে তার বলা কথার কোনো উত্তর না দিয়ে একটি মেয়েকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখলে যে কারোরই বিভ্রান্ত হবার কথা।তিনি আবারো বললেন,
‘এই বাক্সগুলো কোথায় রাখবো?’

এবারও আমি তার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে তার হাত থেকে বাক্স গুলো সেখানেই নামিয়ে রেখে আমার শাড়ির আঁচল দিয়ে তার কপালের ঘাম মুছতে লাগলাম।অভ্র ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।আমি তার হাত ধরে সোফায় বসিয়ে বললাম,
‘বাক্সের চিন্তা ছাড়ুন তো।আপনি এখানে বসুন।শরবত খাবেন?’
‘তোমার আজকে হয়েছে কি?’
‘কিছুই হয় নি।আমাকে আজকে দেখতে সুন্দর লাগছে।তাই আমার মন ফুরফুরা লাগছে।মেয়েদেরকে দেখতে সুন্দর লাগলে মেয়েদের মন ভালো হয়ে যায়।’

উনি আমার কথায় হেঁসে দিলেন।আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,
‘আপনি হাসলেন কেনো?যেনো আমি একটি হাসির কথা বললাম!আমাকে দেখতে আপনার সুন্দর লাগছে না?’
অভ্র হাসতে লাগলো।পাশ দিয়ে নাহিদ ভাই যাচ্ছিলেন।আমি ডেকে বললাম,
‘বলুন তো নাহিদ ভাই আমাকে দেখতে সুন্দর লাগছে না?’

নাহিদ ভাই কিছুক্ষণ আমার দিকে থমকে তাকিয়ে থেকে বললেন,
‘হ্যাঁ,সুন্দর লাগছে।ভীষণ সুন্দর লাগছে।’

আমি হেঁসে চোখ ইশারা করে অভ্রকে দেখালাম।তারপর বললাম,
‘বুঝেছেন নাহিদ ভাই সুন্দর জামাই বিয়ে করার এই একটা জ্বালা।বউকে সুন্দর লাগলেও তাদের চোখে পড়ে না।’

কথাটা বলে আমিও হাসতে লাগলাম।কিন্তু দেখলাম নাহিদ ভাইয়ার চেহারায় কোনো ভাবান্তর নেই।তিনি আমার দিকে এখনও তাকিয়ে আছেন।তার চেহারায় এক ধরণের বিষন্নতার ছাপ।আমি হাসিমুখেই একটু অবাক হলাম।নাহিদ ভাই হঠাৎ সেখান থেকে কিছু না বলেই চলে গেলেন।

৩৮.
দুলাভাই এক থালা মিষ্টি নিয়ে বসেছেন।একের পর এক গপাগপ মুখে ঢুকিয়ে যাচ্ছেন।একটুপর খাওয়ার মাঝখানে চম্পার দিকে তাকিয়ে বললেন,
‘চম্পা,তোর বিয়েতে আজ আমরাই কিন্তু একমাত্র মেহমান।আজ ইচ্ছেমতো আমি পেট ভরে মিষ্টি খাবো।আর অন্য কোনো খাবার না।তারপর এটাকে বলা হবে মিষ্টি খাওয়া দাওয়াতের বিয়ে।হা হা হা।’

আরিশা আপু দুলাভাইয়ের কান্ডে রীতিমতো বিরক্ত।তিনি অনেকক্ষণ ধরে চুপ থেকে এবার চোখ গরম করে বললেন,
‘মিষ্টি যে রাক্ষসের মতো গিলছো ভুড়ি টা পর্বতের মতো দিন দিন বাড়ছে সেদিকে কোনো খেয়াল আছে!’

‘কি বলো!একেবারে পর্বতের সাথে তুলনা করে দিলে!’

তুতুল এসে দুলাভাইয়ের হাত ধরে নাড়িয়ে নাড়িয়ে বললো,
‘বাবা আমাদের ক্লাসের রাজু কয়েকদিন আগে নাকি পর্বতে উঠেছিলো।আমিও পর্বতে উঠবো।ও বাবা,বাবা আমাকে একটু তোমার পর্বতে উঠাও না বাবা।ও বাবা।’

দুলাভাই তুতুলের হাত নাড়ানোর জন্য বারবার মিষ্টি টা মুখে নিবো নিবো করেও পারছেন না।একসময় অতিষ্ট হয়ে বললেন,
‘ধূর!যা আগে টিকিট কেটে আয়।তারপর উঠবি।সরকারি পেয়েছিস নাকি!চম্পা তোর বিয়েতে কি এখন শান্তিমতো মিষ্টিও খেতে পারবো না।!’

চম্পা সামনেই দাঁড়িয়ে আছে।তার পরণে আমার দেওয়া একটা লাল টুকটুকে শাড়ি।সে একটু পরপরই লজ্জায় মুচকি হেঁসে মুখ ঢাকছে।ওকে দেখে মনে হচ্ছে বিয়েতে লজ্জা পেতে হয় বলেই তার এতো লজ্জা পাওয়া।মা চম্পাকে ডেকে বললেন,
‘এই চম্পা ঐ মফিজ হতচ্ছাড়া এই কি চুল কেটেছে!পুরা নাউরা হয়েই এসেছে।দেখতে তো পুরা বাঁদরের মতো লাগছে।’

চম্পা আঁচলে মুখ ঢেকে হেঁসে বলল,
‘খালাম্মা আমি এহন দেখতারুম না।আমার শরম লাগে।’

‘ইহ! এখন শরম লাগে।শরমের ঠেলায় মুখ দেখতে পারে না।প্রেম করার সময় শরম লাগে নাই।’

মায়ের কথায় আমার ভীষণ হাসি পেলো।হাসি চেঁপে আমি তাকালাম অভ্র’র দিকে।উনার হঠাৎ হেঁচকি উঠা শুরু হয়েছে।কিছুতেই থামছে না।বেচারা বারবার কথার মাঝখানে হেঁচকি তুলছে।

যথাসময়ে চম্পা আর মফিজ ভাইয়ের বিয়ে হলো।ছবি তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন নাহিদ ভাই।সবার একক যুগল অনেক অনেক ছবিই তোলা হলো।এবার সবাই একত্রে একটি ছবি তোলার পালা।সবাইকে ক্যামেরায় এনে যখনই নাহিদ ভাই বাটনে চাপতে যাবেন তখনই হঠাৎ মা চেঁচিয়ে উঠে ছবি তুলতে মানা করলেন।আমরা সবাই অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকালাম।মা মফিজ ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,
‘এই তুই চোখ বন্ধ কর!’
আমরা সবাই এবার আরো অবাক হলাম।মা বললেন,
‘তুই চোখ বন্ধ করেই ছবি তুলবি।আমার সব কয়টা ছবি এই বাঁদরে চোখ বন্ধ অবস্থায় তোলে।আজকে তোর বিয়ের ছবিও চোখ বন্ধ করেই তোলা হবে।চোখ বন্ধ কর!’

মায়ের ধমকে মফিজ ভাই ভয় পেয়ে সত্যি সত্যিই চোখ বন্ধ করলেন।মা আর আমরা সবাই একে অন্যের দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে হেঁসে উঠলাম।আর সেই মুহুর্তটাই ক্যামেরায় নাহিদ ভাইয়া বন্দি করে নিলেন।

বাসর ঘরে যাবার আগে চম্পা আমার কাছে দোয়া চাইতে এলো।আমি অবাক হয়ে গেলাম।বাসর ঘরে যাওয়ার আগেও দোয়া চাইতে হয়!আমি ঝটপট দোয়া করে দিলাম।হয়তো গম্ভীর বেশে এখন একটু উপদেশও দেওয়া দরকার।বাসর ঘরে যাবার আগে নতুন বউকে বিবাহিত মেয়েরা নানা রকমের উপদেশ দেয়।আমিও গম্ভীর মুখে কিছু উপদেশ দিতে চাইলাম।কিন্তু পারলাম না।হারিকেন দিয়ে খুঁজেও কোনো উপদেশ খুঁজে পেলাম না।আমি নিজেই তো এখনো জানতে পারলাম না,বাসর ঘরে আসলে হয় টা কি? ধূর একটু না জানার কারণে আমি কিনা আজ একটু নতুন বউকে বিজ্ঞের মতো উপদেশ দিতে পারলাম না।জীবনেও কাউকে উপদেশ দিতে পারিনি।আর আজ এতো বড় উপদেশ দেওয়ার সুযোগ হাতে পেয়েও পারলাম না।এটা কি মানা যায়!

চম্পা বাসর ঘরে চলে গেলে বাকি সবাইও যার যার রুমে চলে গেলো।শুধু অভ্র দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এখনও হেঁচকি দিয়েই যাচ্ছে।বেঁচারা হেঁচকি দিতে দিতে ক্লান্ত।ইতিমধ্যে এক জগ পানি খেয়ে ফেলেছেন।তবুও থামছে না।আমি গিয়ে নিচু হয়ে তার মুখের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম।উনি হেঁচকির মাঝে মাঝে ভেঙে ভেঙে বললেন,
‘এভাবে কি দেখছো?’
‘দেখছি না ভাবছি আপনার হেঁচকি থামানো যায় কিভাবে।’
‘তুমি থামাবে হেঁচকি!কিভাবে?’
‘চমকে দিয়ে।প্রচন্ড চমকে দিলে জানেন তো হেঁচকি থেমে যায়।’
‘তুমি চমকাবে আমাকে!কিভাবে ভোঁ করে?’
উনি হাসতে লাগলেন।আমি একটু ইনসাল্ট ফিল করলাম।আমার চমকানোর ক্ষমতা নিয়ে ঠাট্টা!
‘হাসবেন না তো।অসহ্য লাগছে।যদি চমকে দিতে পারি?’
‘নো চান্স।’
‘যদি পারি তবে কি করবেন?’
‘যা বলবে তাই।যদিও তা কখনো হচ্ছে না।’
আমি মুখ ফুলিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলাম।অভ্র হেঁচকি তুলতে তুলতে মৃদু হাঁসলো।আমি তৎক্ষনাৎ একটি কাজ করে ফেললোম।টুপ করে তার গালে একটি চুমু দিয়ে দিলাম।উনি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকালেন।আমি পেছনে ঘুরে চুলগুলো হাত দিয়ে পেছনে তার মুখে ছিটকে বললাম,
‘হেঁচকি থেমে গেলো তো।চাওয়াটা কিন্তু তোলা রইলো।যখন চাইবো সুদ সমেত পূরণ করে দিবেন।’

আমি চলে এলাম।উনি এখনও চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছেন।তার শুধু হেঁচকি তোলাই বন্ধ হয়নি।চোখের পলক ফেলাও বন্ধ হয়ে গেছে।

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে