#অতঃপর_তুমি
#পর্ব-৩১
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি
বিকেলে ও বাড়ি গিয়ে দেখলাম বাবা সেই যে রুমে দুপুরে ভাত ঘুম দিয়েছিলেন এখনো উঠেন নি।মা রান্নাঘরে চালের গুঁড়ি দিয়ে তেলে ভাজা পিঠা বানাচ্ছেন।আমাকে দেখে একগাল হেঁসে বললেন,
‘অরু এসেছিস।যা রুমে গিয়ে বোস আমি গরম গরম পিঠা ভেজে এনে দিচ্ছি।’
আমি রুমে গেলাম।ইরা আপু আমাকে দেখেই খুশি হয়ে সামনে এগিয়ে এলো।আমার হাত ধরে রুমের ভেতরে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।আপুর দরজা বন্ধ করতে দেখে আমি একটু অবাক হলাম।
‘আপু তুমি কিছু কথা বলবে বলছিলে!’
আপু এগিয়ে এসে আমার দু হাত ধরে বলল,
‘অরু,আমি জানি আমার জন্য তুই অনেক কষ্ট পেয়েছিস।তোর এতো তাড়াতাড়ি হুট করে বিয়ে হয়ে গেলো,ও বাড়ি গিয়ে কতো কথা শুনতে হলো।তোর আর অভ্র’র মধ্যেও যে আসলে কোনো স্বাভাবিক সম্পর্ক নেই আমি তাও জানি।শুধু শুধু তোকে এই নাম মাত্র সম্পর্কের বোঝা টানতে হচ্ছে।আর এসব আমার জন্যই হয়েছে।তোকে আর আমি কষ্ট পেতে দিবো না।অরু,আমি অভ্রকে খুব ভালোবাসি।মানুষ কি জীবনে ভুল করে না বল!আমিও একটা ভুল করে ফেলেছি।আর আমি এখন আমার ভুলটা বুঝতেও পেরেছি।আর তুই তো জানিস,অভ্র আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো।ও কখনোই আমার ওপর রাগ হয়ে থাকতে পারে না।প্রচন্ড ভালোবাসে যে আমাকে।আমরা চাইলেই আবার সব আগের মতো হতে পারে।শুধু তুই যদি….!
আপুর কথা শুনে আমি পুরো স্তম্ভ হয়ে গেলাম।শুধু বললাম,
‘অভ্রও কি এটাই চায়!’
‘অবশ্যই চায়।তুই দেখিস না অভ্র কেমন লাজুক আর চাঁপা স্বভাবের।তোর ব্যাপরে ও’র মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করছে।তাই মুখ ফুটে তোকে চলে যেতে বলতে পারছে না।আচ্ছা তুই বল!আমি যখন পালিয়ে গেলাম তখন অভ্র কি পরিমাণ রেগে ছিলো।একেবারে প্রতিশোধের জন্য আমার ছোটো বোনকে কিনা বিয়ে করে নিলো।কিন্তু দেখ আমি যখন ফিরে আসলাম তখন তো অভ্র আমাকে দেখে কিছু বললো না।তার মানে কি এই না যে অভ্র আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে।আর পেছনের কথাও ভুলে গেছে।চার বছরের সম্পর্ক আমাদের।এতো সহজে কি টান চলে যাবে।অরু,আমরা তিনজন এখন বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পড়ে আছি।এতে কেউ ভালো থাকবে না।কেউ না।অভ্র চক্ষুলজ্জার জন্য তোকে মুখ ফুটে বলতে পারছে না।কিন্তু তুই তো বুঝিস।প্লিজ অরু,আমাদের মাঝখান থেকে সরে আয়।অভ্র সুখে নেই।ও সুখটা ডিজার্ভ করে।’
আপুর কথাগুলো আমি মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে শুনলাম।চোখের পলক ফেলতেও যেনো ভুলে গেলাম।আপু আরো অনেক কিছু বললো।আমি ভাসা ভাসা শুনতে লাগলাম।কারণ ধীরে ধীরে আমার পৃথিবীটা শব্দ শূন্য হতে লাগলো।বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় রান্নাঘরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মা অনবরত অরু অরু বলে ডাকতে লাগলো।আমি ডাকের অনুসরণে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম।মা বলতে লাগলো,
‘না খেয়েই চলে যাচ্ছিস,দু’টো পিঠা মুখে দিয়ে
যা।’
মা তেলে ডোবা কড়াই থেকে পিঠা নামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।আমি স্তম্ভের ন্যায় মাত্র চুলা থেকে নামানো গরম পিঠা হাত দিয়ে ধরলাম।গরম পিঠার উত্তাপে আমার হাতে ফোসকা পড়ে গেলো।আমি আহ! করে উঠলাম।মা অস্থির হয়ে আমার হাত ধরে ঠান্ডা পানিতে ভেজাতে লাগলো।
‘কি করেছিস হাতটার।একটু দেখে করবি না।’
আমি হঠাৎ কাঁদতে লাগলাম।মা আমার কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।কিন্তু আমার কান্না থামছেই না।চোখের পানি বারবার মুছে দিয়ে মা বললেন,
‘একি কাঁদছিস কেনো!খুব বেশি জ্বলছে অরু?’
আমি কাঁদতে কাঁদতে মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
‘হুম মা খুব জ্বলছে।খুব!’
৩৪.
অভ্র আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গলার টাই বাঁধছে।
তাকে এখন সন্ধ্যা বেলা দুই দিনের জন্য গাজীপুরের মৌচাকে যেতে হবে একটি ডিল ফাইনালাইজ করতে।
আমি সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,
‘আমি বেঁধে দেবো?’
অভ্র প্রথমে বললো,’হয়ে গেছে।’ আমি চুপচাপ চলে আসছিলাম।অভ্র হঠাৎ থেমে টাই টা খুলে বললো,
‘ভালো হয় নি বাঁধা।তুমি বেঁধে দাও।’
আমি একটু খুশি হয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।তারপর হঠাৎ থেমে বললাম,
‘থাক।আপনি বেঁধে নিন।’
অভ্র আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।আমি তার তোয়াক্কা না করে রুম থেকে বেড়িয়ে এলাম।এদিকে তাকে আরো একটু দেখতে ইচ্ছে করছে।আবার এদিকে তার দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতেও পারছি না।চোখে পানি এসে পড়ছে।তাছাড়াও বুকের চিনচিনে ব্যাথায় ইতিমধ্যে আমি পুরোপুরিই ঘায়েল।আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি আমি আর এ বাড়িতে থাকবো না।অভ্র’র জীবনে আর বাঁধা হয়ে থাকবো না।আমার জন্য অভ্র তার ভালোবাসা পাবে না তা কি করে হয়!উনি যেহেতু মুখ ফুটে বলতে পারছেন না।সঙ্কোচ বোধ করছেন তো না দেই তাকে আর সঙ্কোচ।আমি নিজে থেকেই চলে যাবো।তাকে কিছু বলতে হবে না।সত্যিই তো উনি কি দায়িত্ব ছাড়া আমাকে আর অন্য কিছু মনে করেন?এভাবে আর কতদিন।এবার অভ্র অন্তত সুখী হোক।ভালোবাসার মানুষের সুখের চাইতে আর বড় কিছু কি হতে পারে।
আজকে যত পারি অভ্রকে দেখে রাখতে হবে।হয়তো এ বাড়িতে আজই তার সাথে আমার শেষ দেখা।বেশি বেশি করে এখন তাকে দেখে রেখে স্মৃতির কৌটায় জমিয়ে রাখি।তারপর পরে যখন যখন তাকে দেখতে ইচ্ছে করবে টুপ করে কৌটা খুলে বের করে মন ভরে দেখবো আবার ঢুকিয়ে রাখবো।
সেদিন রাতে অভ্র চলে যাওয়ার পর আমি আর সারারাত ঘুমালাম না।ভোর হওয়ার একটু আগে ব্যাগপত্র নিয়ে বেড়িয়ে এলাম।রুম থেকে বের হতেই ভেতর থেকে প্রচন্ড এক অদৃশ্য টান আমায় আকর্ষণ করতে লাগলো।চোখ বন্ধ করে অশ্রু ঝরিয়ে আমি নিজেকে শক্ত করলাম।আমাকে যেতে হবে।এই ঠিকানা আমার নয়।কেউ যাতে টের না পায় তাই অন্ধকারের মধ্যেই সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগলাম।কয়েক ধাপ পেড়িয়ে সিঁড়ির গোড়ার কাছে আসতেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে আমি চমকে তাকিয়ে আবছা আলোয় দেখলাম অভ্র।অভ্র আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলল,
‘অরু!’
আমি কিছু বললাম না।একটু ঘাবড়ে গেলাম।উনি বললেন,
‘এসব কি!তুমি ব্যাগপত্র নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?কথা বলছো না কেনো?’
‘আমি চলে যাচ্ছি।’
‘কেনো?’
‘অভ্র আপনি চিন্তা করবেন না আমি আমার দায়িত্ব নিতে পারবো।এর জন্য আপনাকে আপনার ভালোবাসা স্যাক্রিফাইস করতে হবে না।’
‘ভালোবাসা!স্যাক্রিফাইস!কি বলছো এসব!মানে কি?’
আমি কেঁদে বললাম,
‘আমি বুঝতে পারছি আপনি আমার অনেক চিন্তা করেন,ভালো জানেন তাই মুখ ফুটে বলতে আপনার সঙ্কোচ হচ্ছে।আপনি ইরা আপুকে ফিরে পেতে চান কিন্তু আমার জন্য বলতে পারছেন না।সত্যিই তো ভালোবাসা কি এতো সহজে ভুলে যাওয়া যায়।সমস্যা নেই আমি চলে যাচ্ছি।আপনাদের দুজনের ভালোবাসায় আমি বাঁধা হবার কে!আপনারা দুজন সুখে থাকুন।আমাকে নিয়ে চিন্তা করবেন না।’
‘হোয়াট রাবিশ!তোমার মাথা ঠিক আছে,কি বলছো এসব!তোমাকে কে বলেছে আমি ইরাকে আবার নিজের জীবনে নিয়ে আসতে চাই।যে কিনা আমাকে এতো বড় ধোঁকা দিলো তাকে আমি এখনো ভালোবাসি।যা ইচ্ছা হরবর করে বলে যাচ্ছো।কে বলেছে এসব কথা?ইরা?’
‘আপনাকে শুধু শুধু সঙ্কোচ বোধ করতে হবে না।আমি তো আপনাকে কিছু বলছি না।আমাকে যেতে দিন।তারপর দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবো।’
‘চুপ!কোথথাও যাবে না তুমি।থ্যাংক গড!আজ মিটিং ক্যান্সেল হয়ে যাওয়ায় তোমার উদ্ভট আচরণ দেখে আমি ফরান ঢাকা ব্যাক করেছি।নয়তো আরেকটু দেরি হলেই তোমার কোন স্টুপিডি দেখতে হতো আল্লাহ জানে!’
‘অভ্র আপনি খুব ভালো।কিন্তু কারো জন্য এতোটাও ভালো হতে যাবেন না।আপনি যদি চান আমি এখান থেকে চলে যাবো।আপনি শুধু একবার বলুন।’
‘এ নিয়ে আর একটা কথা বললে এখন সোজা চর খাবা।আই স্যয়ার!’
আমি চুপ হয়ে গেলাম।আর কিছু বললাম না।কারণ তার হাতের চর খাবার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।অভ্র আমার হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে গেলো।
৩৫.
ছাদের কার্নিশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে একা একা মন মরা হয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।রেলিংয়ের উপর রাখা হাতটা উঠিয়ে দিয়ে আরো একবার কপালের অবাধ্য চুলগুলোকে কানে গুঁজে দিতেই পেছন থেকে নাহিদ ভাই আমার নাম ধরে ডেকে উঠলো।আমি পেছনে ঘুরে মুখে জোর করে একটা হাসি আনার চেষ্টা করলাম।নাহিদ ভাই বললেন,
‘অরু,তোমাকে কিছু কথা বলার ছিলো।’
‘জ্বি ভাইয়া বলুন।’
নাহিদ ভাইয়া একটু ইতস্তত করে মাথা চুলকিয়ে বললেন,
‘অরু,কিছু মনে করো না।তোমাদের পার্সোনাল ম্যাটার নিয়ে কথা বলছি বলে।আজ ভোরের আগে সিঁড়ির মাথায় কি হয়েছে আমি দেখেছি।’
আমি মাথা নিচু করলাম।নাহিদ ভাই বলতে লাগলেন।
‘আমার মনে হয় অরু,তোমার কোনো মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে।এন্ড আই থিংক কোন ব্যাপারটা নিয়ে আমি সেটা ধরতে পারছি।তুমি সেদিন কফিশপে হওয়া ব্যাপারটা নিয়ে খুব আপসেট হয়ে পড়েছিলে।তুমি সেখানে ছিলে না।তুমি হয়তো ভাবছো অভ্র মাসুদের কথায় এতোটা এগ্রেসিভ রিয়্যাকশন কেনো করলো?আমি যদি ভুল না হই তুমি ভাবছো অভ্র ইরার জন্য এমন রিয়্যাক্ট করেছে।কিন্তু এটা ভুল।সত্যিটা কি আমি তোমাকে শোনাচ্ছি।তোমার মনে আছে অরু,আমি সেদিন রেকর্ড প্লেয়ার অন করে আমার সুরটা রেকর্ড করছিলাম।সেই মজার ছলে করা রেকর্ডটাই যে আজ সৌভাগ্যবশত কাজে লেগে যাবে বুঝতে পারি নি।’
এই বলে নাহিদ ভাই আমার হাতে তার ফোনের একটা রেকর্ডিং অন করে দিলেন।আমি শুনতে পেলাম ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য আমি দু মিনিট চাওয়ার কিছুক্ষণ পরই মাসুদ ভাইয়ের গলা।তিনি আবারো এসে বললেন,
‘অভ্র!একটা কল এসে গিয়েছিলো রে।তাই চলে যেতে হলো।কিন্তু দেখ তোর টানে আমিও আবারো চলে আসলাম।’
অভ্র বলল,
‘তোকে দেখে শুধু অবাকই হচ্ছি।মুখের উপর চলে যেতে বলা সত্ত্বেও কেমন বেহায়ার মতো পিছে লেগে আছিস।অবশ্য তোর মতো মানুষরা সব সময় পিছেই থাকতে পারে।’
‘হ্যাঁ,পিছেই তো লেগেছিলাম তোর গার্লফ্রেন্ডের।খুব জ্বলেছিলো বন্ধু যখন বিয়ের দিন পালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম?তবে তোর গার্লফ্রেন্ডটা কিন্তু দেখতে হেব্বি ছিলো।তাই তো বিয়েটা করে নিলাম।’
‘তাহলে বিয়েটা যখন করেছিলি তবে আবার ছাড়লি কেনো?আমাকে জ্বালাতে না হয় বিয়ে করেছিলি বুঝলাম অন্তত সম্পর্কটা তো মেইনটেইন করতি।একটা মেয়ের সাথে এক বছরও কাটাতে পারলি না।আজ একটা কাল আরেকটা, ছি!’
‘এতে ছি! এর কি হলো।আমি এমন কি ভুল করেছি?একটা মেয়েকে কি বেশিদিন ভালো লাগে নাকি।আর দেখ আমি তোর গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ভেগে গিয়ে কিন্তু তোর জন্য ভালোই করেছি।তুইও একটা মেয়ে নিয়ে বোরিং হলি না।প্রথমে বড় বোন তারপর ছোটো বোনকেও পেলি।’
‘এখানেই স্টপ হয়ে যা।অরুকে নিয়ে আর একটা কথাও বলবি না।’
‘আহা!ক্ষেপছিস কেনো।আমরা তো বন্ধুই।বলছি শোন না।ছোটোটাও কিন্তু দেখতে হেব্বি।আমার তো মনে হয় ইরার থেকেও বেশি ভালো লাগে।অবশ্য দুইবোনই সেই সুন্দরি!শোন না।বড়টাকে তো দুই বন্ধুর একবার হাতবদল হয়েই গেলো।ছোটোটাকেও করবি নাকি!’
এই পর্যন্ত রেকর্ডিং টা চলতেই ধপাধপ শব্দ হতে লাগলো।আর অভ্র’র বলা সেই কথা,বলেছিলাম না ও’র সম্পর্কে আর একটা কথাও না বলতে,বলেছিলাম না।’
আমি ফোনটা নাহিদ ভাইয়ার হাতে দিয়ে চুপ করে রইলাম।নাহিদ ভাই বললেন,
‘এবার বুঝেছো তো অরু,অভ্র সেদিন কার জন্য এতো রিয়্যাক্ট করেছিলো।অরু,অভ্র ইরাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো ঠিকই কিন্তু ইরা অভ্রকে ধোঁকা দিয়েছে।তাও খুব বিচ্ছিরি ভাবে।
ভালোবাসায় ভুলকে ক্ষমা করা যায়,ধোঁকা কে নয়।ধোঁকা এমনি একটি বিষাক্ত কীট যা ভালোবাসা নামক কোমল চারাটিকে একদম ধ্বংস করে দেয়।ভালোবাসা নামের কোনো চিহ্ন সেখানে আর অবশিষ্ট থাকে না।আমার অন্তত এটা কখনোই মনে হয় না যে অভ্র ইরাকে এখনো ভালোবাসে আর নিজের জীবনে ফেরত পেতে চায়।তুমি নিজেকে এতোটাও তুচ্ছ মনে করো না।ইউ আর দা রিজন হোয়াই অভ্র স্টার্টেড স্মাইলিং এগেইন।ইউ আর দা রিজন হোয়াই অভ্র হেজ স্টার্টেড লিভিং লাইফ এগেইন।এন্ড ট্রাস্ট মি,এটা অভ্র আমাকে নিজে বলেছে।অরু,অভ্র এখন মাত্রই একটি গভীর ক্ষত থেকে বাইরে এসেছে।চার বছরের রিলিশনশিপের পর বিয়ের দিন ভালোবাসার মানুষটির পালিয়ে যাওয়া কোনো ছোটো ব্যাপার না।তার উপর চার বছর সম্পর্ক থাকা মেয়েটির ছোটো বোনের সাথেই বিয়ের পর স্বাভাবিক সম্পর্ক….একটু সময় তো লাগবেই।শেষে শুধু একটা কথাই বলবো,কোনো ভুল স্টেপ না নিয়ে অভ্রকে একটু সময় দাও।আই ট্রাস্ট হিম,হি উইল মেক দা হোল থিংস ক্লিয়ার ফর ইউ।’
নাহিদ ভাইয়ার কথা শুনে আবারো মনের তীরে একগুচ্ছ প্রশ্নের ভেলা পাড়ি জমাতে চাইলো।কিন্তু আমি ভিড়তে দিলাম না।আন্দাজে আর কোনো কিছুই ভাববো না আমি।এবার যা বলার অভ্র বলবে।এবার অভ্র’র নিজেই বলতে হবে তার মনে কি চলছে!’
চলবে,