অঙ্গীকার (৯ম পর্ব)
লেখা – শারমিন মিশু
দরজা খুলতেই রাদিয়া ভেতরে আসলো। শাফীকে দেখেই কিছুটা সংকোচ আর জড়তা নিয়ে সালাম দিলো।
শাফী দৃষ্টি নিচের দিকে রেখে সালামের জবাব দিয়ে বললো,,,, কেমন আছো রাদিয়া?
-জী ভাইয়া আলহামদুলিল্লাহ। আপনি কেমন আছেন?
-আলহামদুলিল্লাহ। দাঁড়িয়ে আছো কেন ভিতরে আসো।
রাদিয়া ভিতরে আসতেই শাফী আফিয়াকে ডেকে বললো,, আফিয়া এদিকে আসো রাদিয়া আসছে। এ কথা বলে শাফী ওর কাজে চলে গেলো।
রাদিয়ার কথা শুনে আফিয়া রান্না ফেলে দৌড়ে আসলো।
বোনকে দেখেই রাদিয়া সালাম দিলো। আফিয়া হলুদ মাখা হাতেই ওকে জড়িয়ে ধরে বললো,,, কেমন আছিস রে রাদি?
-হুম খুব ভালো। তুই কেমন আছিস আপু?
-আলহামদুলিল্লাহ। তা হঠাৎ খবর টবর না দিয়ে হুট করে চলে এলি যে?
-আর বলোনা আজ কয়দিন থেকে আমার মামনি টাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো। তাই আজ ভার্সিটি থেকে সোজা চলে এলাম।
-ভালো করেছিস। চল রুমে আয় আগে বোরখাটা খুলে একটু ঝিরিয়ে নে।
-বুশরা কোথায় রে আপু?
-ওকে নিয়ে ওর দাদু একটু ছাদে গেছে। বাসায় ভীষন বিরক্ত করছে।
-ও আচ্ছা। আপু আমি কিন্তু আজ বিকালেই চলে যাবো।
-কি বলছিস? বিকালেই চলে যাবো বললেই হলো!! আজ আর তোর যাওয়া হবেনা।
-আরে আম্মুকে বলে আসেনি। তাছাড়া আমার টিউশনি আছে তো।
-আম্মুকে আমি বলে দিবো। আর টিউশনিতে একদিন না গেলে কিছু হবেনা ফোন করে বলে দিস।
শাফী বাহির থেকে বললো,,, আফিয়া আমার শার্ট আর ওয়ালেটটা একটু দাও তো।
আফিয়া শার্ট নিয়ে বেরিয়ে আসতেই,, শাফী বললো আমি দোকানে যাচ্ছি একটু। বাজার সদাই কিছু আনা লাগবে?
-না কিছু লাগবেনা। বাসায় সবকিছু আছে।
শাফী বেরিয়ে যেতেই সালেহা বেগম বুশরাকে নিয়ে বাসায় আসলো। রাদিয়া কে দেখে বুশরা একপ্রকার ঝাপিয়ে পড়লো। রাদিয়া সালেহাকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করে বুশরার সাথে খেলা করতে ব্যস্ত পড়লো। সামিহা আর রাদিয়া দুই খালামণি কে পেলে এই মেয়ের আর কিচ্ছু লাগেনা।
আফিয়া সমস্ত কাজ শেষ করে এসে বললো,,, হ্যারে রাদি মা কেমন আছে?
-রাদিয়া বুশরার সাথে খেলতে খেলতে বললো,,,ভালো।
-বাবা কি ফোন করেছে রে রাদি?
-হুম। কেন তোর সাথে কথা হয়নি?
-না গত দুইদিন বাবার সাথে কথা হয়নি।
-ওহ। বাবাতো দেশে আসবে।
-তাই!!!” কবে আসবে?
-আগামী মাসের দশ তারিখে।
-সত্যি!!! কতগুলো বছর বাবাকে দেখিনি। আমার যে কি আনন্দ লাগছে।
তবে এবার বাবা আসলে তোর মতো ঝামেলাকে বিদায় করার ব্যাবস্থা করতে হবে।
-আপু তোরা এতোটা স্বার্থপর!!! আমি তোদের কতটা ভালোবাসি আর তোরা আমাকে বিদায় করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিস?
-হুম আর কত বাপের হোটেলে খাবি।
-আপুওওও বলে আফিয়ার দিকে তাকিয়ে রাদিয়া থেমে গেলো।
-কিরে ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
-রাদিয়া ভয়ার্ত কন্ঠে বললো আপু তোর নাক দিয়ে রক্ত কেন বেরোচ্ছে।
-আফিয়া কই বলে ঠোঁটের উপরে হাত দিয়ে দেখলো একেবারে তাজা রক্ত বেরুচ্ছে।
-আপু???
-আরে ও কিছুনা মাঝে মাঝে এভাবে নাক দিয়ে বা থুতুর সাথে রক্ত যায়।
-আপু আমারতো…
-আরে অতো ভয় পাওয়ার কিছু নাই। চল খেতে চল।
-আপু আমার মনে হয় তোমার ডাক্তার দেখানো দরকার।
-আরে না কিচ্ছু হবেনা। তুই চলতো!!
সপ্তাহখানিক পরে আবারো আফিয়া ওয়াশরুমে মুখ ধুতে গিয়ে দেখলো দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। আফিয়া তখনো ব্যাপারটাকে এতোটা গুরুত্ব দেয়নি। তবে ইদানিংকালে ওর প্রায় জ্বর জ্বর লাগে আর মাথাব্যথাটা তো সবসময়ের জন্য লেগেই আছে। সেদিন শাফী বলেছিলো ডাক্তারের কাছে যেতে। আফিয়া বললো যে সমস্যা নাই এমনিতে সেরে যাবে। মাথাব্যথার ঔষধ খেলে একটু কমে কিন্তু পরক্ষনে আবার শুরু হয়ে যায়।
প্রতিদিন কাশির সাথে বা কফের সাথে একটু না একটু রক্ত যাবেই।
বাড়িতে বিয়ের উৎসব চলছে। শাফীকে এ মুহুর্তে কিছু জানালেই ও পেরেশান হয়ে যাবে। ওকে এতো বেশি প্রেশার দিতে চায়না আফিয়া। তাই ইচ্ছে করে জানায়নি। ভেবেছে বিয়ের ঝামেলা শেষ হলে তখন ধীরেসুস্থে ডাক্তার দেখানো যাবে এই ভেবে ও চুপ হয়ে থাকলো।
বিয়ের দিন আফিয়া কনের বাড়ীতে ইচ্ছে করে যায়নি। আসলে অন্যদিনের তুলনায় আজ অনেক বেশি খারাপ লাগছে। তাই আফিয়া কাজের বাহানা দেখিয়ে যায়নি। এমনিতে ও বাড়ীতে ওকেই সবদিক দেখতে হয়। শাশুড়ি থাকলেও উনি মুরব্বী মানুষ। বয়স হয়েছে সবদিক সামলানো উনার পক্ষে এখন আর সম্ভব হয়না। তাই উনাকে জিজ্ঞেস করে করে আফিয়া নিজেই সব কাজ করে কাজের মহিলাটার সাহায্য নিয়ে। সামিহা গিয়েছিলো বিয়েতে ও বুশরাকে ওর সাথে নিয়ে গেছে। আফিয়াদের বাড়ী থেকে শুধু সামিহা এসেছিলো। কাল সকালে আফিয়ার বাবা এসে বাংলাদেশে নামবে। জাওয়াদ সাহেব আসলেই উনাকে সাথে নিয়ে আফিয়ার মা আর রাদিয়া কাল আসবে।
সবাই ওদিকে চলে যাওয়ার পর আফিয়া কিছুক্ষণ গিয়ে শুয়ে ছিলো। সালেহা বেগম আফিয়াকে কোথাও না দেখতে পেয়ে রুমের দিকে আসলো। ওকে শুয়ে থাকতে দেখে উনি পাশে এসে বললো,,,, কি ব্যাপার বউমা এই অসময়ে শুয়ে আছো যে?
-আফিয়া শোয়া থেকে উঠে বললো,,, আম্মা মাথাটা একটু ধরে আছে তাই। আপনার কিছু লাগবে?
-না আমার কিছু লাগবেনা। তোমাকে বাহিরে কোথাও দেখিনি তাই দেখতে এলাম।
-আম্মা আমি একটু পরেই আসছি। আপনি যান।
-আরে না বেশি খারাপ লাগলে উঠতে হবেনা। সব কাজ তো একেবারে গুছিয়ে গেছে। আর যা আছে শম্পার মা আছে ওই সামলে নিবে তুমি একটু বিশ্রাম নাও। এমনিতে তো আজ কয়দিন থেকে ব্যস্ততার উপরেই আছো। একটুখানি ঝিরিয়ে নেয়ার ফুরসৎ নেই। দিনের বেলা কাজ করে রাতে আবার বুশরার জন্য ঘুমাতে পারোনা। তুমি থাকো আমি ওদিকটা দেখছি এ বলে উনি বেরিয়ে গেলো।
আফিয়া কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর উঠে এলো। কিছুক্ষণ পর বউ নিয়ে সবাই চলে আসবে রান্নাবান্না কতদূর এগুলো এটাও দেখার দরকার আর ঘরটা আরেকবার ভালো করে গুছিয়ে নেয়ার দরকার।
ঘর ভালো করে গুছিয়ে নিয়ে আফিয়া আসলো। কিচেনে আসার কিছুক্ষণ পর ওর মনে হলো বমি আসতেছে। মাথাটা কেমন গুলিয়ে আসলো । ও দৌড়ে কিচেনের লাগোয়া বেসিনে গেলো। আচমকা অনেকগুলো রক্ত মুখের ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো।
শম্পার মা পাশেই ছিলো ও আঁতকে উঠে বললো,, ভাবি এইগুলান কি? আপনার মুখ দিয়ে দেহি এত্তগুলা রক্ত বাহির হলো? খালাম্মারা ডাকুম?
-আফিয়া ওকে থামিয়ে দিয়ে বললো,,, আরে না কাউকে ডাকা লাগবেনা। আপনি আমাকে একটু খাবার পানি দিন।
-শম্পার মা পানি এনে ওকে দিলো। আফিয়া বেসিং ছেড়ে আগে ভালো করে পানি নিয়ে মাথায় দিলো। তারপর গড়গড়া করে কুলি করে শম্পার মায়ের নিয়ে আসা পানিটা খেলো।
তারপরে মাথা ধরে একটা টুলে বসে পড়লো। শম্পার মা আফিয়াকে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো,,, ভাবি আপনার কি খুব খারাপ লাগতেছে? ঘরে নিয়ে কি দিয়ে আসবো?
-আফিয়া বললো,,, না কিছু হবেনা আমি এখানে একটু বসলেই ঠিক হয়ে যাব। আপনি আপনার কাজ করুন। আর আফা,,, আপনি এ ব্যাপারটা এখন কাউকে বলবেন না।
শম্পার মা মাথা নেড়ে আগে বেসিনের চারপাশে ছিটকে পড়া রক্তগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে পড়লো।
কিছুক্ষন পর আফিয়া হাতে হাত লাগিয়ে বাকী কাজগুলো করলো। বাড়িতে সন্ধ্যার পর পরই বউ নিয়ে আসা হলো। বউ আসার পরেই একটা হুলস্থূল পড়ে গেলো।
সামিহা বুশরাকে কোলে করে ডাইনিংয়ে আসলো। আফিয়া নতুন বউয়ের বাড়ির দিক থেকে আসা মেহমানদের জন্য টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে। সামিহা এসে বললো,,, আপু বুশরা খুব জ্বালাচ্ছে মনে হয় ওর ক্ষিধে পেয়েছে। বুশরা ও অনেকক্ষন পর মাকে দেখতে পেয়ে আরো জোরে কান্না শুরু করে দিলো। আফিয়া অসহায়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,,, আপু আরেকটু রাখ আমি একটু কাজগুলো গুছিয়ে নিই। তুই এক কাজ কর ওকে নিয়ে রুমে যা ওর খেলনাগুলো দিয়ে ওকে খেলতে দে। কিছুক্ষণ দোলনায় বসিয়ে দোল দে।
সব রকম ঝামেলা সেরে রাত বারোটার দিকে আফিয়া রুমে আসলো। বুশরাটা অনেকক্ষণ থেকে কান্নাকাটি করছে। সামিহা আফিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,,, আপু এই বুঝি তোর আসার সময় হলো।
-কি করবো বল? একা একা আর কত?
কাজের লোক পাওয়া ও খুব মুশকিল।
-বাড়ীতে এতো এতো মানুষ সবাই একটু হেল্প করলেই তো পারে।
-কথা তিতা হলে ও সত্যি যে,,, বিয়ে বাড়ীতে সবাই আসে খাওয়ার জন্য কেউ কারো একটু কাজে হেল্প করতে পারেনা।
আচ্ছ বাদ দে তুই গিয়ে ঘুমিয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে।
-আপু আমি কোথায় ঘুমাবো?
-ডান দিকের রুমটাতে যা ওখানে আরো দুটো মেয়ে আছে ওদের সাথে ঘুমা।
-আচ্ছা বলে সামিহা বেরিয়ে হেলো।
রুশাকে খাবার খাইয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছে আফিয়া।
শাফী আসার পর থেকে আফিয়ার সাথে একবারের জন্য দেখা করতে পারেনি। বাবা অসুস্থ থাকায় বেচারার একদন্ড বিশ্রাম নেয়ার সময় নেই।
আফিয়া বুশরাকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মেয়েটা খেয়েদেয়ে আবারো দুষ্টামি শুরু করে দিয়েছে। আফিয়া চোখ বুঝে শুয়ে আছে। আর রুশা আপন মনে খেলছে। ওর এখন আটমাস চলছে। নিজে নিজে অনেক দুষ্টামি করতে পারে।
বিকালের পর থেকে এই নিয়ে তিনবার রক্ত বেরিয়েছি মুখের ভিতর থেকে আফিয়ার। পুরো শরীর যেনো অসাড় হয়ে যাচ্ছে। এতো খারাপ কেনো লাগছে?? মনে হচ্ছে দেহ থেকে প্রাণটা এখনি বেরিয়ে যাবে। এত কষ্ট তো এর আগে কখনো হয়নি তাহলে আজ এমন লাগছে কেনো?
কিছুক্ষণ পর শাফী রুমে আসলো। বিছানায় খেলতে থাকা বুশরার দিকে চোখ পড়তে ওদিকে এগিয়ে গেলো। বুশরা ও বাবাকে দেখতে পেয়ে এক প্রকার ঝাপিয়ে পড়লো। শাফী আফিয়ার মাথার পাশে বসক বললো,,,, ঘুমিয়েছো???
-আফিয়া ক্লান্ত স্বরে একটু হেসে বললো,,,,না বুশরাকে ঘুম পাড়াতেই আসছি ও আমাকেই শুইয়ে নিজে দিব্যি খেলতেছে। অনেকক্ষণ থেকে কান্নাকাটি করতেছে আর এখন কেমন খিলখিল করে হাসছে। দুষ্টু মেয়ে।
-শাফী হেসে দিলো। তারপর আফিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,,, এমন দেখাচ্ছে কেনো? শরীর খারাপ?
-না তেমন কিছুনা মাথাটা একটু ধরেছে।
-ঔষধ খেয়েছো তো?
-হুম
-ওহ
-কিছু বলবেন???
-না তুমি ও তো সারাদিন ব্যস্ত ছিলে কি করে বলি।
-এমন করছেন কেন? আপনি কখনো কিছু বলেছেন আমি তা পালন করিনি এমন কি কখনো হয়েছে?
-না কখনো হয়নি।
-তাহলে আমতা আমতা না করে বলুন?
-আসলে আমার ও না মাথাটা ভীষন ধরে আছে। কড়া করে যদি এককাপ কফি করে দিতে….
-আপনি একটু বসুন আমি এখুনি নিয়ে আসছি এ বলে আফিয়া বেরিয়ে গেলো।
শাফীর কোলে বুশরা ঘুমিয়ে পড়লো। শাফী ওকে শুইয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে গেলো। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে চেয়ারে বসলো। আফিয়া কফি করে নিয়ে রুমে আসতে গিয়ে ওর মনে হলো ও এখনি পড়ে যাবে পুরো শরীর কাঁপছে সেই বিকাল বেলার মতো। ও দরজা ধরে দাঁড়িয়ে পড়লো। ওখান থেকে ডেকে বললো,,,শুনছেন কাপটা ধরুন?
শাফী উঠতে না উঠতেই আফিয়ার হাত থেকে কাপটা পড়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। শাফী ওইদিকে তাকিয়ে আফিয়ার দিকে তাকাতেই দেখলো ওর চেহারা কেমন বদলে গেছে৷ পড়ে যাবে এই মুহূর্তে শাফী গিয়ে ওকে দুহাতে জড়িয়ে ধরলো। আর তখনি আফিয়া হড়হড় করে রক্তবমি করে শাফীর শরীরসহ পুরো ফ্লোর ভাসিয়ে দিলো। শাফী ঘটনার আকষ্মিকতায় বিমূঢ় হয়ে গেলো। এটা কি হলো??
আফিয়ার দিকে তাকাতেই দেখলো মেয়েটা নিস্তেজ হয়ে ওর বাহুতেই নেতিয়ে পড়লো। এক প্রচন্ড ভয়ে শাফী ঘামতে শুরু করলো। ও পাথর হয়ে আছে। কি করবে না করবে ও বুঝতে পারছেনা। আফিয়াকে নিয়ে ওখানেই বসে পড়লো??
এতো গুলো রক্ত দেখে ওর নিজের যে বোধটুকু তাই চলে গেছে।
কিছুক্ষণ পর হুশ ফিরতেই মা বলে চিৎকার দিলো।
সালেহা বেগম ছেলের চিৎকারে দৌড়ে আসলো৷ উনি এসে দরজায় দাঁড়াতেই দেখলো ফ্লোরে রক্তের গড়াগড়ি রুমের মাঝখানে আফিয়াকে কোলের মধ্যে নিয়ে বসে আছে। ইতিমধ্যে সামিহাও চলে আসলো। সেও এখনো ঘুমায়নি বোন জামাইয়ের চিৎকার শুনে ও ছুটে আসলো। দৌড়ে গিয়ে বোনের পাশে বসে কাঁদতে শুরু করে দিলো। আপু কি হয়েছে তোর? ভাইয়া আপুর কি হয়েছে?? আপু কথা বলছেনা কেন??? আপু চোখ খোল… আপু চোখ খোল বলে সামিহা একনাগাড়ে কেঁদে যাচ্ছে।
শাফী এখনো কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে আফিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। না কোন কথা বলছে না চোখ দিয়ে কোন পানি ঝড়াচ্ছে।
সালেহা দৌড়ে গিয়ে ছেলের পাশে বসে বললো,, কি হয়েছে? আফিয়া এমনভাবে পড়ে আছে কেন?? আর এতো রক্ত???? এ বলে উনি বাড়ির বাকী সব সদস্যদের ডাক দিলো। ক্বাফী সহ বাড়ীর সবাই ছুটে আসলো।
সবাই একইভাবে রুমের দরজায় এসে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। সালেহা বেগম ক্বাফীকে তাড়া দিয়ে বললো,,, দাঁড়িয়ে আছিস কেন?? তাড়াতাড়ি এম্বুলেন্স খবর দে……..
চলবে……….