রফিক ফ্রেশ হয়ে টিভি-তে ইন্ডিয়ান আইডল দেখছে। ইন্ডিয়ান আইডলের বিচারক আনু মালিক-কে রফিকের বেশ লাগে। লোকটার লাজ লজ্জা কম। যা করে মন খুলে করে।
নীলা চিল্লিয়ে কি জানি বলছে।
রফিক জিজ্ঞেস করে কি বলছ?
নীলা এইবার তেড়েমেড়ে রফিকের সামনে আসে; এই তোমার শার্টে লাল দাগ কিসের?
রফিক একটু থতমত খেয়ে যায়।
কই?
এই যে ঘাড়ে।
ও তোমাকে বলা হয়নি। আজকে রাস্তায় আমার সামনে একটা হোন্ডা এক্সিডেন্ট হয়। এক গাড়ি এসে ধাম করে হোন্ডার সাথে সংঘর্ষ। হোন্ডা চালকতো আহত। সবাই ধরাধরি করে হাসপাতালে পাঠালাম। যেই গাড়ির সাথে লেগেছিল সেই গাড়ির মালিকই নিয়ে গেলো।
ও সেইখান থেকে রক্ত লেগেছে?
কাজের বুয়া বলে উঠলো ভাবী এটাতো রক্তের দাগ না।
রফিক জ্বলন্ত চোখে বুয়ার দিকে তাকায়।
নীলা বলে উঠলো হুম এটাতো রক্ত না।
আমি কি বলেছি রক্ত লেগেছিল; আরে ঘটনাতো শেষ হয়নি। বুয়া এত বেশী বুঝো না। এরপর কি হলো শুনো হোন্ডার পেছনে একটা মেয়ে ছিল। সেই মেয়েও রাস্তায় পড়েছিল।
লোকটার বউ?
আরে না। মেয়েটা আসলে পাঠাওতে উঠেছিল ভাড়ায়।
মেয়েটার রক্ত লেগেছে শার্টে?
না না তার কিছু হয়নি।
তাহলে?
কিন্তু মেয়েটা প্রচন্ড শক পায়।
তারপর?
তারপর আমাকে বলল ভাইয়া আমার মাথা ঘুরাচ্ছে। মনে হচ্ছে পড়ে যাবো।
আমি মেয়েটাকে পাশের একটা ফাস্ট ফুডের দোকানে নিয়ে গেলাম। সেখানে একটা বার্গার কিনে দিলাম। মেয়েটা এতটাই শকের মধ্যে ছিল। টেনশনে সস নিতে পারছিল না। আমি সস বের করে দিলাম।
ও সসের দাগ?
ভাবী সসের দাগ কি এইরকম হয়? ভাইজান কি কয়?
রফিক জ্বলন্ত চোখে বুয়ার দিকে তাকায়। কাঁচা চিবিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে।
হুম তাওতো না।
আরে এতক্ষনতো আজকের ঘটনা বললাম। আরে এই দাগতো পুরাতন দাগ। মনে আছে গত সপ্তাহে গাড়ি থেকে নামার সময় তুমি আমি বাড়ি খেলাম। তোমার ঠোট আমার শার্টে লাগলো। তখন এই দাগ লেগেছে।
কেন বুয়া না গত সপ্তাহে শার্ট ধুলো।
হুম ধুলো। কিন্তু ওর কি আর কাজে মন আছে। ওতো স্টার জলসা দেখে সারাক্ষন প্যাচ মারা চিন্তা করে। ঠিকমতো ধোয় নাই।
নীলা তখন বুয়ার সাথে চিৎকার করছে। হুম আমিও কিছুদিন ধরে দেখছি তোমার কাজে কোন মন নাই। কি ধোও। আজ থেকে তোমার টিভি দেখা বন্ধ।
বুয়া গজগজ করছে গত সপ্তাহে শার্টে কোন দাগ ছিল না। ও মোর জ্বালা। আমার টিভি দেখা বন্ধ। আমি সময় কাটাইতাম কেমনে ??
রফিকের ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে।
#আমিনুলের_গল্প_সমগ্র