সে পর্ব-৫

0
910

#গল্পপোকা_ধারাবাহিক_গল্প_প্রতিযোগিতা_২০২০
সানজিদা তাসনীম রিতু
সে পর্ব-৫
-“জী, আমি সেটাই বলতে চাচ্ছি।”
–“হাও ইজ ইট পসিবল ম্যাম?”
-“দেখুন এখন সম্ভব অসম্ভব ভাবার মতো মানসিকতা নেই আমার।”
-“জী, আমি বুঝতে পারছি, কিন্তু ম্যাম…” কি ভেবে পাশে বসে থাকা রিশাদের দিকে তাকিয়ে চুপ করে গেলেন উনি।
আমি আতঙ্ক, কষ্ট আর একাকিত্বে এতটাই হতবিহ্ববল হয়ে পড়েছি যে কাঁদতেও পারছিনা। কি থেকে কি হয়ে যাচ্ছে, কেনো হচ্ছে এসবের উত্তর আমিও চাই কিন্তু…
-“ম্যাম, আমি আসছি আজ, কাল আবার আসবো। আপনি একটু স্থির হন। আমি যেমনটা ভাবছি তেমন কিছু হলে আপনার উপরে এখনো অনেক বিপদ আসন্ন।”
আমি মাথা তুলে কৌতূহল দৃষ্টিতে তাকালাম উনার দিকে। “কি ভাবছেন? কিসের বিপদ?”
-“ম্যাম, আজ এই কেসটা মিটিয়ে নেই, কাল দেখা হবে। আপনি আজ একটু সাবধানে থাকবেন, চেষ্টা করবেন একা না থাকার।” একথা বলে আবারও রিশাদের দিকে তাকিয়ে উনি চলে গেলেন। রিশাদ কোনো কথা বলছে না। আমার বাম পাশে হাত ধরে মাথা নিচু করে বসে আছে আসার পর থেকেই। ঘটনা জানার পরই ও এসেছে।
বাবা মারা গেছেন অনেক আগেই। আমার ভাই নেই তাই ভাড়াটিয়া আর আমার কিছু বন্ধু মিলে মায়ের দাফন কাজ সারে। রিশাদকে অনেক ডাকার পরও ও যায়নি, শুধু বলেছে “ওর সাথে থাকি আমি।”
-“আমি একদম একা হয়ে গেলাম রিশাদ।”
বিকেলের দিকে সবাই চলে যাওয়ার পর ওর দিকে তাকিয়ে কথাটা বললাম। হাসপাতাল থেকে আমাকে বাসায় দিয়ে যাওয়ার পর আজ প্রথম দেখা ওর সাথে। কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলো নাকি। তাছাড়া আমিও এই অবস্থায় বাইরে যেতে চাইনি।
–“একা কেনো হবে রিশা, আমি তো আছি।” কেমন নিষ্প্রাণ শোনালো ওর কণ্ঠ। ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম এখনও নিচের দিকেই তাকিয়ে আছে। হঠাৎ মনে হলো ওর হাতটা ঠান্ডা, বেশ ঠান্ডা। আমি আরও ভালো করে ধরে বললাম-” এতো ঠান্ডা কেনো তোমার হাত!”
-“আমার হাত তো ঠান্ডাই থাকে রিশা, ভুলে গেছো কতোবারই তো বলেছি তোমাকে।”
“আসলেই কি ভুলে গেছি!” আনমনে বলে উঠলাম।
সেই রাতে রিশাদের দেওয়া সেই মেসেজটা আমার ফোনে আর পাইনি। কিভাবে ডিলিট হলো জানিনা, আমার মোবাইল তো কারোর আনলক করতে পারার কথা না।
-“কি ভাবছো এতো?”
-“না কিছুনা। রিশাদ আমার ভালো লাগছেনা, সন্ধ্যা হতে যাচ্ছে, তুমি আজ চলে যাও।”
-“একা থাকবে? নিতাকে ডেকে নাও নাহয়?”
-“হ্যা, আমি কল করে ওকে ডেকে নিচ্ছি তুমি যাও।”
বেশ কয়েকবার কল করার পরেও কল ধরলো না নিতা। অবাক হচ্ছি, “ওতো কখনো এমন করেনা। সব সময় একবার কল দিতেই ধরে।” বলে রিশাদের দিকে তাকিয়ে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। খেয়াল করলাম ও অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে, সেই শীতল আর ঝাপসা চাহনীটাই আছে চোখে, আর চারপাশে সেই গন্ধটাও পাচ্ছি যেনো তবে হালকা। আমি মনের ভুল ভেবে পাত্তা দিলাম না। প্রচন্ড ডিপ্রেশন আর এতো এতো ঝামেলা আমার মাথা খারাপ করে দিচ্ছে।
-“তুমি যাও রিশাদ, তোমার আর থাকা ঠিক হবেনা।”
–“তুমি পারবে একা থাকতে?” একটু থেমে- “রিশা আমি দ্রুত বাসায় বিয়ের কথা বলে তোমাকে নিয়ে যাবো।”
নিষ্প্রাণ হেসে বললাম- “আমাকে মেনে নেওয়ার মতো আর কিছুই অবশিষ্ট নেই রিশাদ।”
কিছুক্ষন অপলক তাকিয়ে থেকে আমার হাত ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো ও। “সেটা দেখা যাবে।”
-“তুমি কি খেয়াল করেছো, তুমি আর আমাকে বুড়ি ডাকছো না।” ওর দিকে তাকিয়ে বললাম। আমার কথা শুনেছে বলে মনে হলো না, কিছু না বলেই ও দ্রুত চলে গেলো আর একবারও না তাকিয়ে…
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share