সিনিয়র_বউ_নিউ_আপটেড পর্ব:-(০৩)

0
2413

সিনিয়র_বউ_নিউ_আপটেড পর্ব:-(০৩)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
জারাকে তাড়াবার জন্য আমাকে কষ্ট করতে হবেনা! জারা নিজেই চলে যাবে! মনটা খারাপ করে ছাদের উপর ব্যাঞ্চে বসে আছি! কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারলাম কেউ ছাদের উপর এসেছে! চেয়ে দেখি জারার বাবা!

আংকেল:- সৌরভ এখানে একা একা বসে আছো কেনো?

আমি:- ছাদ আমার কাছে ভালো লাগে! আর একা নয় জারাকে বলছি কফি নিয়ে আসতে দুজনে গল্প করবো!

আংকেল:- সৌরভ আমি বুঝতে পারছি আর তোমার চোখ মিথ্যা বলছে! দেখো বাবা জারা তোমার থেকে বড় এইটা যতদিন তোমার মনের মাঝে রাখবে ততদিন তুমি কখনো জারার সাথে সংসার করতে পারবেনা!

আমি:- আংকেল ঠিক তানা! তখনি দেখি জারা কফি নিয়ে এসেছে! যাক বাচা গেলো!

জারা:- বাবা আপনি এখানে?

আংকেল:- হ্যা এসেছি ছাদে দেখি সৌরভকে! তোরা থাক আমি গেলাম! ওনি চলে গেছে! আমি বড় করে একটা নিশ্বাস নিলাম!

জারা:- কি হলো এমন নিশ্বাস নিলে কেনো? (চেয়ে দেখি জারার বাবা দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে)

আমি:- দেখি কফিটা রাখো জারার কাছ থেকে কফি মগটা রেখে দিলাম! জারাকে জড়িয়ে ধরেছি পেছন থেকে! জারা তো পুরাই অবাক হয়ে গেছে! আমি ওর ঘারে কিস করলাম!

জারা:- কি হলো এমন করছো কেনো?

আমি:- তোমাকে আদর করছি! জারা ঘুরে আমার দিকে তাকিয়েছে! আমি জারাকে জড়িয়ে ধরে রাখছি! জারা আমার গলাই হাত দিয়ে রাখছে! দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছি! আমি লক্ষ করছি জারার বাবা এখনো দাঁড়িয়ে আছে! আমি জারার কপালে কিস করেছি! তখনি ওনি চলে গেছে! আর নগদে জারাকে ছেড়ে দিয়েছি।

জারা:- কি হলো ছাড়লে কেনো?

আমি:- এতক্ষন যা করেছি সবটাই অভিনয় করেছি! তোমার বাবা দাঁড়িয়ে ছিলো! তখনি জারা মনটা খারাপ করে নিয়েছে! কিছুক্ষণ পর জারা বলে!

জারা:- তার মানে আমার সন্দেহটা ঠিক হয়েছে! তাই তো আমি কফি নিয়ে ছাদে এসেছি! এসেই বাবাকে দেখলাম তোমার সাথে কথা বলছে! একটা কথা বলার ছিলো!

আমি:- হ্যা বলো কি কথা বলবে?

জারা:- আমার একটু অফিসে যাওয়া দরকার! বাবা কিছু ধরে অসুস্থ তাই আমাকে এখন অফিসে যেতে হয়! বিয়ে নিয়ে কিছুদিন অফিসে যেতে পারিনি!

আমি:- যাও আমি কি মানা করেছি! আর তাছাড়া আমার কাজ আছে আমি একটু বেরুবো।

জারা:- আমি তো এখন যাওয়ার কথা বলছিনা! আমি সকালে যাবো তবে একটু পর আমার বান্ধবী আর বন্ধুরা আসবে! দয়া করে ওদের সবার সামনে আমার সাথে একটু হাসি মুখে আর সুন্দর ব্যবহার করবে!

আমি:- কিন্তু আমি তো কাজে বেরুবো এখুনি! এখন তো আর আমি থাকছিনা আর তোমার কোনো সমস্যা হচ্ছেনা!

জারা:- এখন বের হবে মানে তা কি করে হয়? আমি সবাইকে ইনবাইট করেছি তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো বলে! তখনি কাজের মেয়েটা এসে বলে!

কাজের মেয়ে:- আপামনি আপনার সব বান্ধবীরা এসেছে! সবাই নিচে বসে আছে!

জারা:- আচ্ছা তুই যা আমরা আসছি! মেয়েটা চলে গেছে! জারা আমার হাত ধরে সোজা হাটা দিয়েছে! আমি কিছু বলছিনা জারার পিছু পিছু হেটে যাচ্ছি! সিঁড়ি দিয়ে নামছি ভালোই লাগছে! যখনি নিচে নামবো তখনি জারা হাতটা ছেড়ে দিয়েছে! এবার তুমি নিজেই নেমে এসো।

আমি:- হ্যা যাও! জারা নেমেছে আমি আস্তে আস্তে নামছি! আমাকে দেখে জারার সব বান্ধবীরা তাকিয়ে আছে!

জারা:- এই হচ্ছে আমার হাজবেন্ট সৌরভ!

আমি:- হাই! সবার সাথে কথা বলছি কিন্তু জারাকে দেখছে একটা ছেলের সাথে আলাদা করে কথা বলছে! আমি জারার দিকে তাকিয়ে আছি! তখনি ওর বান্ধবীদের মাঝে একজন বলে।

জারা রাজের সাথে কথা বলছে! রাজ জারাকে অনেক ভালোবাসে আর জারাও কিন্তু ওদের পরিবারের কেউ বিয়েটা মেনে নেইনি তাই ঠিক করা বিয়েটা ভেংগে গেছে! আর আপনার সাথে জারার বিয়েটা হয়! রাজ দেখতে শুনতে আপনার থেকে অনেক সুন্দর কিন্তু কি করার জারার বাবা মা আর রাজের বাবা মা ছোট্ট একটা ঝগড়া ওদের আলাদা করে দিয়েছে!

আমি:- কথা গুলি জারা আমাকে বলছে! আর হ্যা রাজ সত্যি অনেক সুন্দর! তখনি জারার বাবা এসেছে আর রাজকে দেখে অনেক রেগে গেছে!

আংকেল:- রাজ তুমি এখানে কেনো এসেছো? তখনি আমি বলি!

আমি:- আংকেল রাজকে আমি আসতে বলছি! আর রাজ তো আমার ফ্রেন্ড!

আংকেল:- তোমার ফ্রেন্ড কিন্তু তোমার সাথে ওর বয়সের পার্থক্য কত হবে যানো? কোথাও কিছু লোকানো হচ্ছে!

আমি:- আংকেল বয়স দিয়ে কি হয় বন্ধুত্ব গরে উঠেছে তাইনা রাজ! আংকেল চলে গেছে! জারা রাজকে আমার কাছে নিয়ে এসেছে!

রাজ:- ধন্যবাদ তোমাকে!

জারা:- সৌরভ ওর নাম রাজ! ওর নিজের ব্যবসা আছে! দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম তাইনা?

আমি:- হ্যা! আচ্ছা জারা আমি গেলাম! তুমি সবার সাথে গল্প করো কেমন?

জারা:- কিন্তু!

আমি:- কোনো কিন্তু নেই আমি রুমে যাচ্ছি আমার অনেক ক্লান্ত লাগছে প্লিজ। জারাকে বলে সবাইকে বাই বলে রুমে দিকে যাচ্ছি জারার দিকে তাকিয়ে দেখি রাজের হাত ধরে ধরে গল্প করছে আমি কিছুক্ষণ ভিডিও আর কয়টা ছবি তুলে নিয়েছি! রুমে এসে বসে বসে মোবাইলে গেইম খেলছি! চোখে ঘুম ঘুম ভাব তাই শুয়ে পড়েছি আর কখন ঘুমিয়ে গেছি ঠিক মনে নেই! ঘুম থেকে উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল ৭টা বাজে! আমি উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম! ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখি জারা কফি হাতে দাঁড়িয়ে আছে!

জারা:- রাতে ঘুমটা অনেক ভালো হয়ছে তাইনা?

আমি:- হ্যা! কফিটা খাচ্ছি জারা রেডি হচ্ছে আমি চেয়ে চেয়ে দেখছি! জারাকে সত্যি অনেক সুন্দর লাগে!

জারা:- সৌরভ একটা কথা বলার ছিলো?

আমি:- হ্যা বলো! আর শুনো এখন থেকে আমাকে যা বলার সোজা সুজি বলে দিবে কেমন?

জারা:- ঠিক আছে!

আমি:- এখন বলো কি বলবে?

জারা:- আমার হারটা হুকটা একটু লাগিয়ে দিবে?

আমি:- দিচ্ছি! জারার কাছে গিয়ে ওর হারটার হুক লাগিয়ে দিয়েছি! জারা তুমি এখন অফিসে যাবে?

জারা:- হ্যা!

আমি:- আগে বাড়িতে চলো! আমরা আজকেই বাড়িতে যাবো!

জারা:- কিন্তু আমি তো বলছি আমরা এখানে কিছুদিন থাকবো।

আমি:- ঠিক আছে তাহলে তুমি থাকো আমি গেলাম! আমি একটা চাকরিতে জয়েন করতে হবে! কাগজ গুলি বাড়িতে রেখে এসেছি!

জারা:- ঠিক আছে তাহলে আপনি কাগজ গুলি নিয়ে আসেন!

আমি:- সেইটা তোমাকে বলতে হবেনা আমি চলে যাচ্ছি তুমি গেলে এসো! আর আমি এখানে আসছিনা! তখনি জারা কিছুটা চুপ থেকে বলে।

জারা:- তাহলে এক সাথে চলো আমি তোমাকে ড্রপ করে দিবো বাড়ির সামনে।

আমি:- থাক দরকার নেই! আমি একা যেতেই পছন্দ করি! ব্যাগটা নিয়ে বেরুলাম জারা আমার পিছু পিছু বেড়িয়ে এসেছে! জারার বাবা মাকে বলেছি কাজ পড়ে গেছে তাই যেতে হচ্ছে। ওনারা আমাকে বলছে ওনাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতে আমি রাজি হয়নি।

আংকেল:- জারা তাহলে তুই সৌরভের সাথে চলে যা! আমি আজকে অফিসে যাচ্ছি!

জারা:- কিন্তু বাবা!

আংকেল:- কোনো কিন্তু টিন্তু নেই! সৌরভ তোমার সাথে জারাকে নিয়ে যাও! জারার মা তুমি জারার সব কিছু রেডি করে দাও!

আমি:- ঠিক আছে! জারা আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে! আমি কিছুই বলছিনা! কিছুক্ষণ পর জারার মা ওর ব্যাগ গুচিয়ে দিয়েছে!

জারার মা:- জারা শুন সব কিছু ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করবি! সৌরভ জারার প্রতি খেয়াল রেখো কেমন!

আমি:- ঠিক আছে রাখবো! জারা আমার আগেই গাড়িতে গিয়ে বসেছে! গাড়িতে উঠে ওর পাশে বসেছি! জারা কোনো কথা বলছেনা তবে জারা রেগে আছে আমার উপর! নিজে থেকে ওর হাতটা ধরেছি কিন্তু জারা কেমন একটা ফিল করছে! মনে হচ্ছে জারা অসহ্য বোদ করছে। তোমার কি হয়ছে এমন দেখাচ্ছে কেনো?

জারা:- হাতটা ছাড়ু বাসর ঘরের কথা গুলি ভুলে গেছো? তোমার মনে নেই তুমি কি কি বলেছো?

আমি:- মনে আছে!

জারা:- তাহলে আমার হাত ধরেছো কেনো? ছাড়ু আমার হাত বলে টান মেরে ছাড়িয়ে নিয়েছে! এরপর থেকে যখন হাত ধরবে তখন চিন্তা ভাবনা করে ধরবে!

আমি:- আমার বয়ে গেছে তোমার হাত ধরার! আমি কানে ইয়ার ফেন লাগিয়ে নিলাম! জারা রাজের সাথে ইমুতে মেসেজিং করছে আমি দেখেও না দেখার মত করে আছি! বাড়িতে চলে এসেছি গাড়ি থেকে নেমে আমরা দুজনে ভিতরে গেলাম! মা জারার বাবা মায়ের কথা জিগেস করছে! আমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে চাকরিতে জয়েন করতে চলে গেছি! ঘন্টা খানেকের মধ্যে অফিসে পৌছে গেলাম!

ম্যাডাম:- আপনি এসেছেন! দেন জয়েন লেটারটা!

আমি:- হ্যা নেন! কিছুক্ষণ বসে রইলাম! তখন ওনি আমাকে আমার কাজ গুলি বুঝিয়ে দিলেন!

ম্যাডাম:- মিষ্টার সৌরভ আমাদের কম্পানির চ্যায়ারম্যান আর এম ডি দুজনে ব্যস্ত আছে! এখন আপাদত আপনি আমার কথা মত কাজ করবেন!

আমি:- ঠিক আছে মেম! কোনো কিছু জিগেস না করে ওনি কাজ দেখাচ্ছে আমি কাজ দেখছি! প্রথম দিন মুটামুটি সবার সাথে কম বেশ আলাপ করিয়ে দিয়েছেন ম্যাডামে! প্রথম দিনের অফিসটা ভালোই কাটছে! অফিস ছুটির পর বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেলাম।

রানা:- কিরে আজকাল তো তোকে দেখা যাচ্ছেনা! কোথায় থাকিস সারাদিন?

আমি:- আরে দোস্ত নতুন চাকরি পেয়েছি তাই একটু ব্যস্ত আছি!

রাফি:- তাহলে পার্টি কবে দিচ্ছিস?

আমি:- আগে বেতনটা পায় তারপর! ওদের সাথে বসে আড্ডা দিয়ে রাত ১১টার দিকে বাড়িতে এসেছি!

বাবা:- সৌরভ এত রাতে কোথা থেকে এসেছিস?

আমি:- অফিস থেকে নুতন জয়েনিং তো তাই একটু বেশি ট্রেনিং করাচ্ছে!

মা:- যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় খাবার খাবি সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে!

আমি:- হ্যা আসছি! রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরুবো তখনি জারা বলে!

জারা:- অফিস তো সন্ধা ৬ঠা ছুটি হয়ে গেছে এতক্ষন কি করেছো?

আমি:- সেইটা তুমি না জানলে হবে! দেখি সরো আর তুমি তো বলছো কারো পার্সনাল ব্যপারে নাক না গলাতে! আচ্ছা তুমি কি করে জানলে সন্ধা ৬টা অফিস ছুটি হয়েছে?

জারা:- জানবোনা কেনো আজকাল সবাই বুঝতে পারে নতুন জয়েনিং সন্ধার পরে রাখেনা সব ছাটায় করে দেয়।

আমি:- ভালোই বুঝতে পারো দেখি সরো! জারাকে সরিয়ে আমি নিচে এসেছি! জারা এসেছে পিছু পিছু সবাই মিলে রাতের খাবার খেলাম!

বাবা:- সৌরভ আগামী কাল সন্ধায় তোরা হানিমুনে যাবি কক্সবাজারে এখানে দুইটা টিকেট রাখা আছে। এখন শিৎ তাই এখন হানিমুনের জন্য কক্সবাজার একদম পার্ফেক্ট!

আমি:- কিন্তু আমার চাকরি!

বাবা:- তুই গিয়ে ওদের কাছে ছুটি নিবি! আর তুই চাইলে ফোনে দশ দিনের ছুটি নিতে পারিস!

আমি:- তা কি করে হয়? নতুন চাকরি মনে হয়না ওনারা মানবে?

বাবা:- ফোন করে দেখিস! আর যদি না মানে তাহলে চাকরি বাতিল করে দিবি! তাও হানিমুনে যাওয়া বন্ধ করা যাবেনা! বাবা মা সবাই চলে গেছে।

ভাবি:- সৌরভ তোমাকে একটা কথা বলি তুমি হানিমুনে যাও আমার ছোট বোন লতা কক্সবাজারে মেজু খালার বাড়িতে গেছে! জারাকে দেখিয়ে লতার সাথে ঘুরাঘুরি করবে বাছ জারা তোমাকে ঐখান থেকে ডির্ভোস দিয়ে দিবে!

আমি:- তোমার প্লান মত কাজ করলে বাপের মাইর একটাও মাটিতে পড়বেনা!

চাচিমা:- তবে আমার মনে হয় নোভনা তোমার কাজে আসবে! তুমি চাইলে আমি নোভনাকে কক্সবাজারে তোমাদের হোটেলে পাঠাতে পারি!

আমি:- চাচিমা আর ভাবি দুজনে একটু পেছনে ঘুরে দেখো! তোমরা আগে এনাকে ম্যানেজ করো আমি গেলাম! চাচিমা আর ভাবি পেছনে তাকিয়ে দুজনে থমকে গেছে! আমি সিঁড়ি দিয়ে উপরের দিকে যাচ্ছি আর তখনি!
!!
চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে