রোমান্টিক_অত্যাচার (২) পর্ব-২৪

0
4285

রোমান্টিক_অত্যাচার (২)
পর্ব-২৪
লেখিকাঃ #Israt_Jahan
ধারনাঃ #Kashnir_Mahi

আশফি অফিসে পৌঁছালো।চেম্বারে বসে সেক্রেটারিকে ফোন করলো।
-“আমার চেম্বারে এসো।
-“ওকে স্যার।
২ মিনিট পরই সেক্রেটারি চেম্বারে আসলো। আশফি সেক্রেটারি কে বলল,
-“সবাইকে ঠিক ১০ টার ভেতরে কনফারেন্সরুমে আসতে বলো।আজকে কিছু জরুরি কথা বলবো।আর চেয়ারম্যান কে ও জানিয়ে দাও ব্যাপারটা।
-“ঠিক আছি।এখনই সবাইকে জানাচ্ছি।
কিছুসময় পরই সবাই কনফারেন্স রুমে উপস্থিত হলো।মাহি ও চলে এসেছে,আশফি সবার পরে এলো।তারপর সবার উদ্দেশ্যে বলল,
-“আমি একটা অনেক বড় ডিসিশনস নিয়েছি।প্রায় ১৫ দিনের ভ্যাকেশনে আমি দেশের বাইরে যাচ্ছি।আপনাদের চেয়ারম্যান ও আমার সাথে যাবে।তো সে হিসেবে আমরা কেউ ই থাকছিনা।আপাতত সব ম্যানেজার এর উপরে দায়ভার দিয়ে যাচ্ছি।তবুও আপনাদের সকলের একতা ও সমঝোতা আশা করছি।এর আগেও লং টাইম ভ্যাকেশনে দেশের বাইরে ছিলাম।তো তখন আপনারা সবাই মিলে মিশে আমাদের কোম্পানিটাকে আগলে রেখেছিলেন। আশা রাখছি আগামী ১৫ টা দিনও সেভাবেই সবকিছু দেখে শুনে রাখবেন।
আশফির সিদ্ধান্ত শুনে মাহি ভাবলো,
-“এতো দ্রুত ইংল্যান্ড যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল আশফি?আমাকে তো একবার বললো ও না।
আশফি আবার বলা শুরু করলো,
-“চেয়ারম্যান! আপনি কিছু বলতে চান?
-“আমি আর কি বলবো।যা বলার তো আপনি বলে দিয়েছেন।তারপরেও সবার উদ্দেশ্যে এটুকুই বলবো,কোম্পানিটা শুধু আমাদের একার নয় এটা আপনাদের ও।তাই কোম্পানিটাকে এবং কোম্পানির সব কাজকর্মগুলো নিজেদের ব্যক্তিগত কাজের মতই গুরুত্ব দিবেন।আর আজকে কোম্পানির কিছু ইম্পর্টেন্ট কাজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো যাতে আমাদের অনুপস্থিতিতেও সমস্যা না হয়।
মাহি সেক্রেটারিকে বলল কাজগুলো সবার সামনে আলোচনা করতে।সেক্রেটারি সকলের সামনে দাড়িয়ে কাজের বিষয়গুলো আলোচনা করছিল।মাহির মনযোগ সেক্রেটারির দিকে ছিল।কিন্তু মাহির মনে হলো আশফি ওর দিকে তাকিয়ে আছে।ও পাশ ফিরে তাকালো। সত্যিই আশফি ওর দিকে কেমন শীতল চোখে তাকিয়ে আছে।মাহি কিছু বুঝেও না বুঝার অভিনয় করে চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করলো আশফিকে যে আশফি কিছু বলতে চাই কিনা ওকে।আশফি কিছু না বলে চোখ ফিরিয়ে নিল মাহির থেকে।কনফারেন্স শেষ হলে যে যার চেম্বারে চলে গেলো।আশফির চেম্বারে আসলো মাহি।এসে আশফিকে বলল,
-“একটু টাইম হবে?
আশফি কাজ করছিল বসে।মাহির কথার আওয়াজ শুনে ওর মুখের দিকে তাকালো। তারপর ওর প্রশ্নের উত্তর দিল,
-“হুম।
উত্তরটা দিয়ে আশফি মাহির দিকে তাকিয়ে রইলো।আশফির তাকানোর ভাবটা এমন ছিল যে যেকোনো মুহূর্তে আশফি মাহির উপর সিংহের মত এট্যাক করে বসবে।মাহিও কিছুটা বুঝতে পেরে আশফিকে বলল,
-“এমন হিংস্র প্রাণীর মত চোখ করে তাকিয়ে আছো কেনো?
মাহির কথার কোনো উত্তর দিলোনা আশফি। মাহিকে বলল,
-“কি বলার জন্য এসেছো?
-“তুমি ইংল্যান্ড যাওয়ার ব্যবস্থা কখন করেছো?
-“করিনি।
-“তাহলে….?
-“ইংল্যান্ড যাচ্ছিনা।বাংলাদেশ যাবো আমরা।
মাহি কিছুটা অবাক আর অনেকটা খুশি হয়ে আশফিকে প্রশ্ন করলো,
-“বাংলাদেশ?সত্যি যাচ্ছি?
মাহির উত্তেজিত কন্ঠ শুনে আশফি একটু মাহির মুখের দিকে তাকালো তারপর আবার চোখ ফিরিয়ে নিল।মাহির প্রশ্নের উত্তর দিল আশফি,
-“মিথ্যার কি হলো?অফিসে আসার আগে চাচ্চুর সাথে কথা হয়েছে।আলিশাকে নিয়ে পরশু দেশে ফিরছে।
-“কিন্তু দুপুর তো আর দেশে ফিরছেনা।
তাহলে ওর সাথে কিভাবে কথা হবে? তুমি চাচ্চুকে বলোনি?
-“বলেছি।
-“চাচ্চু কি বললো? আচ্ছা তুমি পুরো ব্যাপারটা ক্লিয়ার করে বলছোনা কেনো আমাকে?মুখের মধ্যে কথা রেখে দিচ্ছো কেনো?
আশফি মাহির কথার কোনো গুরুত্ব দিলোনা। নিজের মত কাজ করে যাচ্ছে।এটা মাহির একদম ভালো লাগলোনা।এভাবে মাহিকে ইগনোর করার জন্য মাহি অপমানবোধ করছে।ওর রাগ উঠে গেলো মাহির আশফির এমন ব্যবহারের কারণে।মাহি আবার জিজ্ঞেস করলো আশফিকে,
-“তোমাকে আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি।তুমি তার উত্তর দিচ্ছোনা কেনো?
এবার ও আশফি কোনো কথা বললোনা।মাহি আশফির পাশে গিয়ে দাড়ালো,আশফিকে বলল,
-“সমস্যা কি তোমার?এতো মুড নেওয়ার মানে কি?
কথাটা শেষ হতেই আশফি মাহিকে টেনে এনে নিজের কোলের উপরে বসালো।আর খুব শক্ত করে ধরে রাখলো ওকে।তারপর আশফি মাহিকে বলল,
-“সমস্যা কি তুমি বুঝোনা?তোমাকে তো এখন আমার আস্ত গিলে খেতে ইচ্ছে করছে। বদমাইশ মেয়ে!
-“কি বলো এসব?এই তুমি আমাকে ছাড়ো তো।আমাকে যেতে দাও।তোমার কাছে আসাটাই আমার ভুল হয়ে গেছে।
-“একদম মেড়ে ফেলে দিব।যখনই কাছে আসি তখনই পালিয়ে যাওয়ার জন্য লাফালাফি করো।আর তোমার পা টাও বেশ বেড়েছে। নিজের খেয়াল খুশিমত চলাফেরা করছো। আমি তোমাকে ওয়েট করতে বলেছিলাম তারপরে ও তুমি আমাকে রেখে নিজে নিজে অফিসে চলে এসেছো।তুমি জানো আমি এখন তোমার কি অবস্থা করবো?
-“হুম জানি।টর্চার করতে পারা ছাড়া আর কি করতে পারো তুমি?
-“এতো বড় কথা?এই,আমি তোমাকে কিভাবে টর্চার করি?
-“শারীরিক,মানসিক সবভাবেই টর্চার করো। এইযে এখন কি করছো তুমি?
-“এখন কি করছি?
-“কি করছো তুমি দেখতে পাচ্ছোনা?
-“কিছুই তো করা শুুরু করলাম না। আর আমি তোমাকে শারীরিক ঠিক কিভাবে টর্চার করলাম?
-“এই আমি জানিনা।তুমি আমাকে ছাড়ো তো।যে কেউ রুমে চলে আসতে পারে।
-“আসলে আসবে।তাতে আমার কি?
-“লজ্জা জিনিসটা তোমার মাঝ থেকে দিন দিন চলে যাচ্ছে নাকি?
-“থাকলে যাওয়ার কথা আসে।না থাকলে যাবে কিভাবে?
-“সেটাই।নির্লজ্জ পুরুষমানুষ।
-“এর জন্যই তো অফিসে বসেই তোমার সাথে রোমান্স করা শুরু করবো।
-“ছি…….কি নোংরা মানুষ তুমি?
-“তাহলে তো তুমিও নোংরা।একসময় অফিসে তুমি নিজেই আমার কোলের উপর বসে আমাকে আদর করা শুরু করে দিতে। তাহলে তুমিও লুচ্চানী।
-“অসভ্য।কি ধরনের কথা এসব?
-“ও……আমি বললেই অসভ্য?এখানেই বসে থাকবে তুমি,আমার কোলের উপর চড়ে।
মাহি আশফির কোলের উপর থেকে উঠে যাওয়ার অনেক চেষ্টা করছে।আর আশফি খুব শক্ত করে ওকে চেপে ধরে রেখেছে।মাহি উঠে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে আশফি মাহিকে বলল,
-“খামোখা তুমি তোমার এন্যার্জি লস করছো।তুমি পারবে আমার থেকে নিজেকে ছাড়াতে?এই জানো,তোমাকে এভাবে আমার কোলের উপর বসে থাকতে দেখে অনেক আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেলো।আমি তুমি এখনো আছি।তাহলে সেইদিনের সেই ঘটনাটাও আমাদের মাঝে আবার ঘটতে পারে।
-“কোন দিনের, কোন ঘটনা?
-“এখনি দেখতে পাবে।
মাহি অফিসের জন্য ফরমাল ড্রেসে এসেছে। শার্ট পড়া অবস্থায় ছিল ও।আশফি হঠাৎ করেই মাহির শার্টের বোতামের দিকে হাত বাড়ালো।এটা দেখে মাহির বুঝতে দেরী হলোনা আশফি কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে চাইছে।মাহি আশফির হাত ধরে আশফিকে বাঁধা দিল।তারপর আশফিকে বলল,
-“তুমি কিন্তু এটা একদম করবেনা।সেদিন কিছু বলিনি বলে আজও তোমাকে বাঁধা দিবনা সেটা কিন্তু না।
-“ঐ তুমি আমার বউ।বাইরের মেয়ে না।আমি তোমার সাথে যেমন খুশি তেমনভাবেই রোমান্স করতে পারি।তাতে তুমি বাঁধা দেওয়ার কে?আমি কিন্তু ইচ্ছা করলে এখন জোড় করেও এটা করতে পারি।আর জোড় করে করলে সেটা তোমার জন্য খুব খারাপ হবে।
-“তুমি কেমন,হ্যা?অফিসে বসে অফিসের কাজ ফেলে বউ এর সাথে যতসব ফাজলামি শুরু করেছো।
-“আমি মোটেও ফাজলামির মুডে নেই। আমাকে ঠিকমত আদর করতে দাও আর নাহলে নিজে করো তাহলে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিব।
-“আমি আশফির চোখের দিকে রেগে তাকিয়ে রইলাম।তারপর কিছু না বলেই আশফির গালে চুমুর বদলে কামড় বসিয়ে দিলাম। গালের পাশটা পুরো দাঁতের দাগ বসে লাল হয়ে গেছে।আশফি ব্যাথা পেয়ে আমাকে বলল,
-“মাহিইইইই……তুমি পাগলের মত এটা কি করলে?ধুরর…..নামো তো কোল থেকে।
আশফি মাহিকে কোল থেকে নামিয়ে গ্লাসে দেখলো ওর গালটা।গালে দাগ হয়ে গেছে দেখে মাহিকে বলল,
-“আমার এখন তোমাকে যে করতে ইচ্ছা করছে।অফিসের ভেতর এভাবে আমি কতক্ষণ গালে হাত দিয়ে বসে থাকবো?অফিসের সবাই দেখলে কি ভাববে?
-“তুমি যে আদর করতে বললে।এটা আমার আদর করার একটা ধরন।আর কিই বা ভাববে।তোমার তো কারোর ভাবাতে যায় আসেনা।অনেক ইজি ভাবেই তুমি সবার সামনে যাবে।
মাহি কথাগুলো বলছিলো আর মিটমিট করে হাসছিলো।
-“হুম।তাই তো।আমার তো কারো ভাবাতে যায় আসেনা।
আশফি মাহির কাছে গিয়েই মাহিকে ধরে ওর গালে ও আশফি অনেক জোড়ে কামড় বসিয়ে দিল।মাহি কিছু বলতে যাবে আবার আশফি ওর ঠোঁটে চুমু খেয়ে বসলো।মাহি ধাক্কা দিয়ে আশফিকে সরিয়ে দিল।মাহির গালেও আশফির মত সেম দাগ হয়ে গেছে।মাহি কিছু বলতে গিয়ে বলতে পারলোনা।সারাটা দিন দুজনে গালে হাত দিয়ে ঢেকে অফিসে কাজ করলো।অফিস শেষে দুজনে একসাথে বের হওয়ার সময় অফিসের প্রতিটা স্টাফ ওদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।কারণ দুজনেই তাদের নিজেদের একপাশের গালে হাত দিয়ে ঢেকে অফিস থেকে বের হচ্ছিল।
অবশেষে দুজনে বাসায় ফিরলো।দুজনে ফ্রেশ হয়ে রুমেই যে যার মত কাজ করছিল। আশফি কথা বলল প্রথমে,
-“পরশুদিন আমাদের ফ্লাইট।যা গোছগাছ করার আছে করে ফেলো জলদি।
-“আমি বুঝলাম না।এতো জলদি সব ব্যবস্থা করলে সেটা ঠিক আছে।কিন্তু বাংলাদেশ কেনো?
-“চাচ্চু আলিশাকে দেশে নিয়ে আসছে। আর দুপুরের সাথে চাচ্চু খোলামেলা কিছু কথা বলেছে।সেগুলো শুনে দুপুর ও দেশে আসতে রাজি হয়েছে।অনেকটা অনুরোধ করেই রাজি করানো হয়েছে ওকে।কিন্তু সব কথার মাঝেই ওর একটা কথা।আলিশাকে সুস্থ করার জন্য ও দেশে যেতেই পারে কারণ ও একজন ডাক্তার।
কিন্তু তার বিনিময়ে আলিশাকে ও ভালোবাসতে পারবেনা।
-“ইচ্ছে করছে দুপুরের কান টেনে ছিড়ে ফেলি।
-“এমন ইচ্ছে হচ্ছে কেনো তোমার?
-“ও যে এমন একটা ব্যাপারকে ঘিরে নিজের জীবনটাকে থামিয়ে রাখছে সেটা কি ও বুঝতে পারছেনা?
-“ও….এর জন্য তোমার রাগ হচ্ছে?আমি তো ভাবলাম আলিশাকে রিফিউজড করছে বলে। আমি তোমার দুপুরের লাইফ নিয়ে একটুও ভাবছিনা।আমি ভাবছি শুধুমাত্র আলিশাকে নিয়ে।যার জন্য এতোকিছু করা।না হলে দুপুর সারা জীবন একা থাকলো না দোকা থাকলো সেটা নিয়ে কে ভাববে?
-“এই তুমি কি বললে?আমার দুপুর মানে?
-“ঐ হলো আর কি।
-“ঐ হলো আর কি মানে কি?কথাবার্তা কিন্তু ঠিক করে বলো।
-“তো তুমি দুপুরের না,আশফির ও নও।তাহলে তুমি কার?
মাহি আশফির বলা কথাটা শুনে আশফির কাছে এগিয়ে গেলো।তারপর ওকে বলল,
-“তুমি কি বললে?আমি আশফির নই মানে?
-“তুমি কি আমার?
-“অবশ্যই।কোনো ডাউট আছে?
-“হুমম।
-“কিহ্?
-“আমার বউ হলে আমি অফিস থেকে আসার পর সে নিজে আমার জামা কাপড় খুলে আমার সারা শরীর মুছে দিয়ে আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিত।আর রাত হলে আমার সারা শরীরে তার ঠোঁটের ছোঁয়াই আমাকে ভরিয়ে ফেলতো।আর সকালে ঘুম ভেঙ্গে বিছানা থেকে উঠার আগে তাকে আদর না করে সে আমাকে উঠতেই দিতোনা।এগুলো তার রুলসের ভেতর পড়তো।কিন্তু তুমি কি সেগুলো করো?
-“করবো ও না কোনোদিন।
-“মনে থাকবে তো?
-“কাজেই বুঝতে পারবে।
-“ঠিক আছে।নিজের স্বামীর দায়িত্ব যে স্ত্রী নিজেই ছেড়ে দেয় তাহলে সেই স্বামীর আর কিই বা করার থাকতে পারে শুধু আর একটা বিয়ে করা ছাড়া।দেখি,দেশে গিয়ে এবার ভালো আদর করতে পারে,যত্ন করতে পারে এমন একটা মেয়েকে দেখে বিয়ে করে আনবো।
আশফির কথা শুনে মাহি চোখগুলো বড় বড় করে আশফির দিকে তাকালো।সেটা দেখে আশফি বলল,
-“আরে তাই বলে তোমাকে ছেড়ে দিবনা তো। তুমি তোমার জায়গাতেই থাকবে।আমি তো শুধু আমার যত্নআত্তি আর মাঝেমাঝে একটু প্রেম সোহাগ নেওয়ার জন্য ওর কাছে যাবো। তাছাড়া রাতে তোমার সামনে তো আর এসব করতে পারবোনা। তাই তুমি তোমার রুমেই থাকবো।টিভি সিনেমার মত তোমাকে ঘর থেকে বের করে দিবনা।আমরাই অন্য ঘরে চলে যাব।আর ওকে বলবো ও যেনো তোমার সব কথা মেনে চলে।
আশফি মাহির দিকে তাকিয়েছিল।আশফির এসব কথা শুনে মাহি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।আর আশফি হা হা করে হাসতে থাকলো।রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে মাহি বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।আশফি রুমে এসে মাহিকে বিছানায় শুতে দেখে একটু চমকে গেলো।আর মনে মনে বলল,
-“হঠাৎ করেই পরিবর্তন?তারমানে তখনকার কথাগুলো মনে হচ্ছে কাজে দিয়েছে।হা হা হা এই না হলে মেয়ে মানুষ।এরা আর যা কিছু ছাড় দিক কিন্তু স্বামীকে অন্য মেয়ে মানুষের কাছে একটুও ছাড় দিবেনা।
আশফি আশনূহাকে ঘুম পাড়িয়ে ওকে শুইয়ে দিল।তারপর রুমের লাইট অফ করে মাহির পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লো।মাহি ভাবছে,
-“এখন নিশ্চই গায়ে গা লাগিয়ে এসে শুইবে। তারপর শুরু করবে ওর দুষ্টুমি।ভাবলাম আরো কিছুদিন রাগ করে দূরে সরে থাকবো।তা আর হলোনা।এমন সব কথা বললো যা শুনে আর মাথা ঠিক থাকলোনা।ছেলেমানুষের বলে কোনো বিশ্বাস নেই।যতই বউকে ভালোবাসুক কিন্তু বউ এর আদর যত্ন না পেলে তখন এমনিতেই অন্য মেয়েদের দিকে চোখ যায়।
অনেকক্ষণ হয়ে গেলো আশফি মাহির কাছে এসে শুচ্ছেনা।অন্যদিকে মুখ ঘুরে শুয়ে আছে। ব্যাপারটা মাহির ভালো লাগছেনা।আবার নিজেও ওকে ডাকতে পারছেনা।মাহি শুধু এপাশ ওপাশ করছে।কিছুতেই ঘুমাতে পারছেনা।তখন আশফির বলা কথা গুলো ভেবে চলেছে।
-“আচ্ছা ও কি ঐ কথাগুলো সিরিয়াসলি বললো নাকি?
মাহি আর কিছুক্ষণ বিছানায় থেকে পরে বিছানা থেকে উঠে গেলো।আশফি বুঝতে পারছে মাহি কেনো এতো ছটফট করছে।কিন্তু তাও কোনো কথা বলছেনা আশফি।
-“অনেকক্ষণ হয়ে গেলো মাহি রুমের বাইরে। কি করছে ও?আমার কথাগুলো সিরিয়াসলি ভেবে বসলোনা তো আবার?তাহলে তো আবার বাড়ি ছেড়ে দৌড়াবে।আমি উঠে গিয়ে ব্যাল্কুনিতে গেলাম।ওখানেই বেতের চেয়ারে বসে ঘুমিয়ে পড়েছে মেয়েটা।বেচারি টেনশনে থাকলে কিছুতেই তার বিছানায় ঘুম আসেনা।আমি ওর কাছে গিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে খুব আস্তে করে ডাকলাম।দুই ডাকেই চোখ মেলে তাকালো।কোনো কথা বলছেনা।আমি ওকে বললাম,
-“বিছানা ছেড়ে এখানে ঘুমাচ্ছো যে?
-“বিছানায় ঘুম আসছিল না, তাই।
-“আমি ঘুম পাড়িয়ে দিব,চলো।
-“দরকার নেই।
মাহি উঠে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আশফিও ওর পিছু পিছু গিয়ে ওর পাশে শুয়ে পড়লো।মাহি এক কাত হয়ে শুয়েছিল।
আশফি মাহিকে পিছু থেকে জড়িয়ে ধরলো। মাহি তখন কোনো বাঁধা দিলনা।

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে