মায়াবতী_বউ ১ম পর্ব

0
1139
মায়াবতী_বউ ১ম পর্ব পিচ্চি পোলা মাথাটা ব্যথা করছে খুবই। বিছানায় শুয়ে সিগারেট টানছি। খুব টেনশন হচ্ছে। মা আজ বিকেলেই আসবে সুমিকে দেখতে। (আমার প্রেমিকা সুমি) মা জানে সুমি আজ এখানে এসেছে। মা ওকে দেখেনি কোনদিন। দেখবেই বা কি করে? মা তো আর এখানে থাকে না। গ্রাম থেকে শহরে আসতে তার মনই চায়না। কতোবার সুমি এখানে এসেছে কিন্তু মা তো এখানে থাকেনা তাই দেখেনি। আজ সুমির এখানে আসার কথা ছিলো। মা ওকে দেখার জন্যই আসতেছে। কিন্তু মা তো জানেনা গতরাতেই সুমির বিয়ে হয়ে গেছে। হ্যা মার জন্যই ওকে আজ এখানে আসার জন্য রাজি করিয়েছিলাম। আজ আসার কথাও দিয়েছিলো।
কিন্তু ২ দিন আগে হঠাৎ করে ওর বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। ও ওর বাবাকে বলেছিলো আমার কথা বাট ওর বাবা রাজি হয়নি। সে নাকি তার বন্ধুর ছেলেকেই পছন্দ করেছিলো মেয়ের জন্য। তার সাথেই গতকাল সুমির বিয়ে হয়ে গেছে। গতকালকের দিনটা আমি মদ খেয়ে পড়েছিলাম বিছানায়। কাজের বুয়াকে তার আগের দিনই বিদায় করে দিছি। আমার এই কষ্টকে ভুলতে আমি নেশার মধ্যে আছি। আর এজন্য চাইনি কেউ এই কষ্ট আর নেশা করার মুহুর্ত দেখুক। গতকাল সারারাত বিছানায় পড়ে ছিলাম। আজ দুপুরের আগে উঠে ফ্রেস হয়ে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে খেয়েছি। সন্ধা হয়ে গেছে মা এখনও আসছে না। ছোটবোনকে ফোন দিলাম কই রে তোরা? আমরা জ্যামে পড়েছিলাম ভাইয়া। আরো ৪ ঘন্টা লাগবে গাড়ি পৌছাতে। আমি বিছানা থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে বের হলাম। নেশার ঘোর কাটেনি। শরীরটা কাপছে এখনো। কিন্তু ক্ষুধায় পেট চো চো করছে তাই বাজারে যাচ্ছি কিছু খেয়ে ও নিয়ে আসার জন্য। বুয়াকে আজকে আসতে বললেও তিনি ফোন করে জানিয়েছেন আজ নয় কাল আসবেন। মা-বোন জার্নি করে আসবে। তাদের দিয়ে তখন রান্না করানোটা ঠিক হবেনা। তাই কিছু খাবার কিনে আনি রাতটা চালানোর জন্য। বাইরে অন্ধকার। আকাশে চাঁদ তারা নেই। পায়ে হেটেই যাচ্ছি অল্প রাস্তা দেখে। ১০ মিনিটের রাস্তা হেটে কিছু খাবার কিনে ফিরতেছি। হঠাৎ পেছনে কারো হাটার শব্দ পেলাম। দেখি একটা মেয়ে ওড়নায় মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে। আমি আবার হাটতে লাগলাম। কিন্তু লক্ষ করলাম মেয়েটি আবার আমার পিছে হাটছে। আমি আবার থেমে গিয়ে ফিরে তাকালাম। মেয়েটি ওড়নায় মুখ ঢেকে নিচের দিকে মাথা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সন্দেহ হলো আমার। এই গলিতে সাধারনত খারাপ মেয়েরাই পিছু নেয়। যারা দেহব্যবসা করে বেড়ায়। এসব মেয়ে কাছে ভিড়লে আমার বড্ড বেশি মেজাজ খারাপ হয়। তবে মেয়েটি মুখ ঢেকে আছে বলে একটু রহস্যজনক লাগছে। এখানকার খারাপ পতিতাগুলোকে কখনো মাথায় কাপড় দিতে বা মুখ ঢেকে রাখতে দেখিনি। আর ওরা আমার পিছুও নেয়না কোনদিন কারন এসবের মধ্যে আমি থাকি না। যাই হোক এগিয়ে গেলাম মেয়েটির দিকে। কি হয়েছে আপনার? আমার পিছু নিয়েছেন কেন? মেয়টি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। কি হলো কথা বলছেন না যে? ঠিক আছে না বললেন তবে আমার পিছে না এসে অন্য জায়গায় যান। এসব খারাপ কাজ আমি করিনা। এই বলে হাটতেছি। কিন্তু মনে হলো মেয়েটি তবু আমার পিছে হাটছে। কি ব্যাপার? কানে শোনেন না, কথা বলতে পারেন না? আমাকে একটা রাতের জন্য ঠাই দিবেন আপনার বাসায়? খুব ভোরেই চলে যাবো। মুখ ঢেকেই মেয়েটি বললো না সরি। আমি একা থাকি বাসায়। কোন মেয়েকে ঠাই দেয়া ঠিক হবে না। অন্য কোথাও যান। এই বলে দ্রুত হেটে গেট খু্লে বাড়িতে এলাম। খাবারগুলো ফ্রিজে রেখে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে আবার ছোটবোনকে কল দিলাম…কোথায় আছিস এখন? যমুনা সেতুর কাছাকাছি আছি। আর ঘন্টাখানেক লাগবে। ফোনটা রেখে আরেকটা সিগারেট ধরিয়েছি। হঠাৎ বিকট একটা শব্দ হলো। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে খুব।বাতাস বইছে প্রচন্ড বেগে। ঝড় শুরু হবে কিছুক্ষনের মধ্যেই। জানালাগুলো আটকে দিলাম। বারান্দায় কিছু জামাকাপড় শুকাতে দিছি সেগুলো আনতে বাইরে এলাম। বাইরে এসে চোখ গেলো গেটে।হালকা আলো যায় বারান্দা থেকে গেটে। সেই আলোতে দেখি কেউ দাড়িয়ে আছে গেটে হেলান দিয়ে। একটু এগিয়ে গেলাম গেটের দিকে। একি সেই মেয়েটা বাড়িতে ঢুকে গেটের ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক তখনি প্রচন্ডবেগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলো। মেয়েটি তখনো গেটেই দাঁড়িয়ে বারান্দার দিকে চেয়ে আছে। মায়া হলো আমার। বারান্দার গেটটা খুলে ডাকলাম মেয়েটিকে।এখানে এসে দাঁড়ান নইলে ভিজে যাবেন। বলার সাথে সাথে দৌড়ে আসলো মেয়েটি। আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। মেয়েটি সরাসরি আমার রুমে ঢুকে গেলো। চলবে……………………..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে