বেইমানীvsলাভ পার্ট_৩

0
3101

বেইমানীvsলাভ পার্ট_৩
#জামিয়া_পারভীন

রুমেসাও চিৎকার দিয়ে বললো

…. কে ভুত, আপনি নিজে ভুত ??
…. সত্যিই তুমি মরো নাই, তুমি তো কিছুদিন আগে মরে গেছো শুনেছি ??
…. আমি মরবো কিসের জন্য, মরলে বেচেই আছি কিভাবে।
…. ভাবলাম ভুত হয়ে নেমে এসেছো ভাবি। ?
…. ভাবি মানে কোন দিক দিয়ে আমি আপনার ভাবি, আমি তো আপনাকে চিনিই না। আপনি এই বাসাতে কেন এসেছেন?

…. চিনো না মানে, আচ্ছা তুমি এতো বাচ্চা হয়ে গেলে কিভাবে ।
…. আমি বাচ্চা হবো মানে আমি তো ছোটই, এক্ষুনি বের হয়ে যান বাসা থেকে না হলে আম্মা কে ডাকবো।?

…. আমার বাসা থেকে আমিই বের হয়ে যাব নাকি। ?

…. আপনার বাসা মানে, কে আপনি? ?

এতো ক্ষণ নিরা দুইজনের ঝগড়া উপভোগ করছিলো। এখন বলে উঠে দুইজন কেই

…. আরে থামো থামো আমি দুই জনের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।
ও হচ্ছে সৌরভ, আমার ছোট দেওর, আজই লন্ডন থেকে ফিরেছে। (রুমেসাকে বলে নিরা) ??

আর সৌরভ কে বলে রুমেসা তোমার মেজ ভাবি, আবিরের নতুন মা।?
সৌরভ চমকে গিয়ে বলে নতুন মা মানে, আর একই রকম কিভাবে হয় দুই টা মানুষ দেখতে অথচ বয়সের কমপক্ষে পাচ বছরের ছোট।

…. তুমি খেয়াল করে দেখো পুরোপুরি এক না দেখতে, অনেক টা একই রকম। ??
…. অনেক দিন পর দেখে আজ আমার এই অবস্থা। আচ্ছা খুব টায়ার্ড আমি ঘরে গেলাম।?

বাসা টা ঠিক এমন নিচে বড় ডাইনিং মিডিলে সিঁড়ি।
সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে ই তিন ভাইয়ের তিন ঘর পাশাপাশি।

তিন টা ঘরই অবশ্য খুব বড়, প্রতিটা ঘরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র আছে।

নিচে রান্নাঘর, যে কোন কাজে নিচে আসা লাগে। রান্নাঘর এর অপজিট এ থাকে আসিফের আম্মা। আর রান্না ঘরের পাশে কাজের মেয়ের ঘর।

সব কাজ শেষ হলে যে যার মতো ঘরে যায়। কিন্তু আসিফের সাথে রুমেসার তেমন কথা হয় না বললেই চলে। এটা প্রথম দিনই খেয়াল করে সৌরভ।

আসিফ এখন ঠিক মতো বাসায় থাকে না ব্যবসার কাজে বাইরে যায় প্রায়ই, ফিরলেও রাত করে ফিরে, পাশাপাশি ঘর হওয়া তে আর আবির কে আদর করার উদ্দেশ্য তে এই সব কর্মকাণ্ড খেয়াল করেছে সৌরভ।

এ বাসায় যে যার মতো ব্যস্ত, আম্মা নিজে ব্যস্ত কোরআন পড়া আর নামাজ নিয়ে।
শাকিল, আসিফ বিজনেস নিয়ে ব্যস্ত।
নিরা ব্যস্ত নাইমার প্রাইভেট, কোচিং এসব নিয়ে।
আর রুমেসা ব্যস্ত আবিরের দেখাশুনা করা নিয়ে, কেননা সে ব্যস্ত।
ফ্রি বলতে সৌরভ ই আছে যে কেবল দেশে এসে রেস্ট নিচ্ছে।
যা কাজ করার বাসায় থেকেই করে ল্যাপটপ এ।
আর ভাতিজা কেও সৌরভ খুব পছন্দ করে। বংশের প্রথম ছেলে বলে কথা।

একদিন দুপুরে রুমেসা কিছুতেই আবিরের কান্না থামাতে পারেনা ঠিক তখন ই সৌরভ রুমে ঢুকে। রুমেসার শাড়ি ঠিক ছিলো না।
তাই বলে
…. এ কেমন অভদ্রতা, নক না করেই ঘরে ঢুকেছো কেনো।??

…. সৌরভ নিজেও লজ্জা পায়, বলে সরি আসলে আবির খুব কান্না করছিলো তাই নিতে এসেছিলাম। ??
এ কথা বলেই লজ্জায় আবির কে কোলে নিয়েই রুম থেকে বের হয়ে যায়।

এদিকে রুমেসাও রাগ করে ঘরে বসে থাকে। কিন্তু রুমেসা নিজেও সৌরভের উপর ক্রাশ খাইছে।
সৌরভ এতো সুন্দর যে যে কেউ তাকে পছন্দ করবে। কিন্তু রুমেসা জানে এটা অন্যায় তাই সে নিজের ভালো লাগা নিজের ভিতর রাখে।
কিন্তু আজকের ব্যবহার রুমেসা কে ভাবাচ্ছে, দুই ভাই ই কি তাহলে একই চরিত্রের নাকি।

এক ভাই তার সাথে বেইমানী করেছে, তাকে ফাঁসিয়েছে।
ভাই ভাই একই রকম এটা ভেবেই রাগ রুমেসার।

কিন্তু সবার সামনে কখনো রাগ প্রকাশ করেনা রুমেসা। প্রায়ই আবির যখন ঘুমাই তখন কাদে।

আর এসব দেখেই সৌরভের কৌতূহল বাড়তে থাকে রুমেসার উপর। ☺☺

পরদিন দুপুরবেলা রুমেসা দুধ গরম করতে দিয়ে ভুলে গেছে। হঠাত মনে পড়তেই দৌড়িয়ে নিচে নামার সময় লাগে সৌরভের সাথে ধাক্কা।

…. কি ব্যাপার, এতো তাড়া কিসের দেখে চলতে পারো না। ?

…. সরি, চুলায় বাবুর খাবার আছে, তাই।

বলেই দৌড়ে রান্নাঘর এ যায় রুমেসা, গিয়ে দেখে চুলা বন্ধ। পরে শুনে

…. কি ভেবেছিলে, তুমি ভুলে গেলে আমিও ভুলে যাব।?

…. অনেক ধন্যবাদ , উপকার করার জন্য।?

…. ইটস ওকে, বেবি।??

…. কি যা তা বলছেন, পাগল নাকি।??

…. নাহ, মজা করছিলাম??।

…. খবরদার আর মজা করবেন না আমার সাথে, ভুলে যাবেন না আমি আপনার ভাইয়ের বউ।

…. ওহহ তাই তো, সবি বেবি, থুক্কু ভাবি ভুল হয়ে গেছে। ????

…. আপনি আস্ত একটা বদমাশ।??

…. এতো দিনে বুঝলে, তাহলে দুষ্টামি তো করাই যাবে তাইনা।??

…. এরপর এমন করলে আম্মাকে বলে দিবো বলেই রুমেসা চলে যায়।

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে