প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ২৩

1
1523

প্রেয়সীর ছোঁয়া পর্ব ২৩
#লেখা: জামিয়া পারভীন তানি

৩০.
“ ও আমার স্ত্রী, আর ওর অধিকার তোমরা দিতে না পারলেও আমি দিতে বাধ্য।”
আদনান আফরার হাত ধরে ওর বাবা মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বললো।

আদনানের বাবা সোহরাব চৌধুরী বললেন,
“ একটা চরিত্রহীনা মেয়েকে বাড়ির বউ মানতে পারি না আমি। আমাদের একটা মান সম্মান আছে, সেটা ভুলে যেওনা। ”

“ তাহলে তো তোমাদের ছেলেও চরিত্রহীন। ভালো ই তো, চরিত্রহীন ছেলের চরিত্রহীনা বউ। যদিও আফরার চরিত্র খারাপ না!”

আদনানের মা আফরোজা চৌধুরী বললেন,
“ দেখ বাবা, অনেক সত্য সামনে আসার পর ওকে আমরা কিভাবে মেনে নিই বল!”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



“ আম্মি তুমিও! বাহ ভালো তো। ”

এরপর আফরার হাত ধরে বাইরের দিকে চলে আসে আদনান। আসার সময় বলে আসে,
“ আজ থেকে জেনে নিও আদনান মরে গেছে। ”
আফরা অনেক বার হাত ছুটানোর চেষ্টা করছে বলে আফরা কে শক্ত ভাবে ধরে রেখেছে। আফরার বাবা ওদের ফোন দিয়ে ডাকে, আফরার সাথে আদনান ও যায়। আফরার বাবার এখন শেষ ভরসা এই মেয়ে আর জামাই, তাই তাদের দূরে ঠেলে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না।

ঘরে গিয়ে আফরাকে জড়িয়ে ধরে আদনান, এরপর বলে,
“ তোমার জন্য সব ছেড়ে চলে আসলাম, রাগ করে তুমিই আমাকে ছেড়ে চলে যেও না। তাহলে আমি একা হয়ে যাবো আর আবার ডিপ্রেশনে পড়লে সত্যিই আর বাঁচতে পারবোনা। ”

“ নাহ, যাবো না আমি। জীবনে অনেক পাপ করেছি। এখন একটু হলেও ভালো কাজ করতে চাই। তোমার সাথেই বাকিটা জীবন কাটাতে চাই আদনান। ”

সারাটা রাত আফরা আদনানের বুকেই ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়, যেখানে কোনো চাহিদা নেই, ছিলো শুধু ভালোবাসা।

৩১.
২ দিন পর খবর আসে, কানাডার পুলিশ এরিক কে টর্চার করে আসল সত্য বের করেছে। সত্যি টা ছিলো, এরিক তখন জেলে ছিলো কিন্তু ওর বাবা আফরা বা মাহিরা দুই বোন কে খুঁজছিলো। যখন মাহিরার খোঁজ পেয়ে যায়, তখন মাহিরার ক্ষতি করার জন্য ওদেরকে ভাড়া করে। নাদিরা ছিলো লোভী তাই কাজ টা খুব সহজ হয়ে যায়। মিমি মেয়েটা এটা জানতোনা যে তার পালিত ছেলে এই কাজ করবে আর নাদিরা যে শরীফের ভাগ্নী এটার খোঁজ ও রাখেনি সে। আফরার বাবা পুরনো নথিপত্র থেকে তথ্য বের করে। নাদিরা মেয়েটাকে কাজে লাগিয়ে যেমন ওরা মাহিরা কে খুন করেছে তেমন আফরার বাবাও মিমির মাধ্যমে খুনী দের ধরতে সাহায্য করেছেন।
আর এরিক সুস্থ হবার সাথে সাথে ওকে টর্চার সেল এ নিয়ে সব কথা স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরিক আফরা কে দেখার পর জ্বলতে থাকে, কেননা প্রাক্তন প্রেমিকা বর নিয়ে সুখে আছে জানলে কোনো প্রেমিক সহ্য করতে পারেনা। আফরার সুখ সহ্য করতে না পেরে আফরাকে মারার প্লান করে এরিক। কিন্তু আফরা যে পালটা আঘাত করে বসবে এটা বুঝতেও পারেনি সে।

৬ টা মাস কেটে গেছে, এরিক তার পাপের উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। হত্যা চেষ্টায় এরিকের ফাঁসি হয়ে যায়, ওর বাবার ২০ বছরের জেল হয় মাহিরা কে হত্যা করার জন্য লোক ভাড়া করার জন্য।

নাদিরা আর শিহাব মানে মিমির পালিত সন্তান দুজনে সরাসরি হত্যায় জড়িত থাকায় দুজনের ফাঁসির আদেশ হয়। আর মিমির শাস্তি হয় ৬ বছরের জেল। শরীফের সব সম্পত্তি কে এতিমখানা তে দেওয়া হয়।

৩২.
আদনানের খুশির শেষ নেই, ওর প্রেয়সী কে হসপিটাল এ নিয়ে গিয়েছিলো, কেননা আফরা কয়েকদিন থেকে অসুস্থ অনুভব করছিলো । ডাক্তার দেখালে ডাক্তার টেস্ট করতে দেয়, টেস্ট রিপোর্ট এ আসে আফরা প্রেগন্যান্ট। আদনান এর খুশী দেখে কে, পারলে আফরা কে কোলে তুলে নাচে, এমন খুশি সে।

খবর টা আফরার বাবা তার ভাই কে জানায়। যতই রাগ করে থাকুক আদনানের বাবা, বংশের প্রদীপ আসছে শুনলে কার আর রাগ থাকে । পুরো ১০ কেজি মিষ্টি নিয়ে ছেলে আর ছেলের বউকে দেখতে আসেন আদনানের বাবা মা।

আফরা প্রথমে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়, এরপর আফরোজা চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে আম্মি বলে। আফরোজা চৌধুরী ও খুশিতে আত্মহারা। এতো দিন পর চৌধুরী মেনশনে খুশির বন্যা বয়ে গেছে।
আদনান আর আফরা কে সসম্মানে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন সোহরাব চৌধুরী। ছেলে শ্বশুর বাড়িতে কেনো থাকবে নিজের বাড়ি ছেড়ে। আফরা ও আসে, কেননা বিয়ের পর তো শ্বশুর বাড়ি ই মেয়েদের আসল ঠিকানা।

এই প্রথম আফরা আদনানের ঘরে বউ হয়ে বসে আছে।
আদনান এসে আফরার কানে কানে বলে,
“ আমার শুভ্র সাদা পরী, মায়াবিনী,
মায়ার জালে জড়িয়ে রেখেছো আমায়।
বাঁকা ঠোঁটের মিষ্টি হাসি, অদ্ভুত চোখের চাওয়া,
করে নিয়েছো হরণ তুমি, আমার হৃদয়। ”

আফরা হাসি মুখে বলে,
“ তুমিও কম না আদনান, সেইজন্যই তো এতো ভালোবাসি তোমায় ।”

আদনান আফরার কপালে চুমু দেয়, এরপর আফরার পেটের কাপড় সরায়। আলতো করে চুমু দেয়, বলে,
“ এখানে আসছে জুনিয়র আদনান বা আফরা। ”

আফরা লজ্জায় লাল হয়ে যায়, একটু পর আফরা আদনান কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে। এটা সুখের কান্না। আর মাহিরা থেকে যাবে ওদের স্মৃতির পাতায়। যদি মন চাই, তাহলে পুরনো এলবাম দেখবে, নইলে অতীত এর স্মৃতিচারণ করে একটু কাঁদবে।

সমাপ্ত

[ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রব্লেম এ থাকি, শত চেষ্টা করি, সব পর্ব সঠিক সময়ে দেওয়ার কিন্তু মানসিক অশান্তি, কাজের চাপে দেওয়া হয় না। চিটাগং এ যাবার পর থেকে একের পর এক ঝামেলা তে পড়েছি, একা একা সব ঝামেলা শেষ করার চেষ্টা করেছি। কতটা মানসিক চিন্তায় ছিলাম বোঝাতে পারবোনা। গল্প তখন লিখার চেষ্টা করতাম কিন্তু ভাষা আসতো না। অবশেষে শেষ করে দিলাম এই গল্প, জানি অনেকের ভালো লাগেনি। তবে আমার কিছুই করার ছিলো না। সব চেয়ে বড় কথা #হৃদস্পর্শ ২৬ পর্ব থেকে আবার দিবো। কখনোই ভাববেন না যে সিজন ২ হবে! ২৫ পর্বের পর থেকে দিবো। অনেক দিন অপেক্ষা করিয়েছি, আবার শুরু করবো, কিন্তু দুই তিন দিন পর থেকে। সবাই ভালো থাকবেন আর দোয়া করবেন, যেনো সব ঝামেলা কাটিয়ে উঠতে পারি। ]

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে