নীরবে_ভালোবাসি পার্ট: ৩

0
3345

নীরবে_ভালোবাসি

পার্ট: ৩

লেখিকা: সুলতানা তমা

চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি সামনে রুহান চোখে এক রাশ প্রশ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সবাই বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে।
রুহান: কণা আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।
দাদি: কি তখন থেকে উত্তর উত্তর করে যাচ্ছিস সর তো। কণা এদিকে আয়। (দাদি আমার হাত ধরে টেনে এনে একজন মধ্যবয়স্ক মহিলার সামনে দাঁড় করালেন)
দাদি: ও আমার ছোট বৌমা, রুহানের মা। আর রুহান কে তো বুঝতেই পারছিস তোর চাচাতো দেবর। আর পপি তুই দূরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন তোর সাথেও পরিচয় করিয়ে দিতে হবে নাকি?
পপি: ভাবি আমার আর পরিচয় তুমি করিয়ে দিবে হুহ। ভাবি আমি তোমার একমাত্র ননদ। (পপি এসে আমার গলা জরিয়ে ধরলো, ওর কন্ঠটা বেশ চেনাচেনা লাগছে তাহলে কি ও সেই মেয়ে যে রুহানকে পাগলের মতো ভালোবাসে। রুহান তো বলেছিল ওর চাচাতো বোন ওকে ভালোবাসে আর পপি তো আমার একমাত্র ননদ তারমানে…)
রুহান: অনেক পরিচয় হয়েছে এবার বলো এসব কি?
আমি: আজব তো আপনি এমনভাবে কথাগুলো বলছেনন যেন আমি আপনার সাথে প্রেমের অভিনয় করে অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলেছি।
রুহান: কণা তুমি কিন্তু ভালো করেই জানো আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি।
আমি: আপনিও তো ভালো করেই জানেন আমি যে আপনাকে এতটুকুও ভালোবাসি না।
রুহান: ভালোবাসি না বাসি না বাসি না এই কথাটা তিন বছর ধরে শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। প্লিজ কণা বুঝার চেষ্টা করো।
আমি: ক্লাস টেনের একটি মেয়েকে আপনি স্কুলের সামনে দেখে ভালোবেসে ফেলেছিলেন তারপর অনেক বার ভালোবাসার কথা বলেছেন কিন্তু মেয়েটি রাজি হয়নি আর কেন রাজি হয়নি সেটা আপনার অজানা নয়…
রুহান: হ্যাঁ তুমি বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করতে চেয়েছিলে, বিয়ের আগে প্রেমে জড়াতে চাওনি।
আমি: হ্যাঁ এখন আমি আমার বাবা মায়ের পছন্দেই বিয়ে করেছি।
রুহান: মিথ্যে কথা বিয়েটা একটা এক্সিডেন্ট ছিল।
আমি: হ্যাঁ ছিল কিন্তু বিয়েটা হয়েছে এইটা তো সত্যি।
রুহান: ভেঙে দাও বিয়েটা, ডিভোর্স দিয়ে দাও ভাইয়াকে।
আমি: রুহান ভদ্র ভাবে কথা বলুন আমি কিন্তু এখন আপনার বড় ভাইয়ের স্ত্রী।
রুহান: কণা বুঝার চেষ্টা করো প্লিজ।
আমি: আর কতোবার বলবো আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আজব মানুষ তো আপনি, যে আপনাকে ভালোবাসে না তার পিছনে পরে আছেন আর যে আপনাকে পাগলের মতো ভালোবাসে তাকে দিনের পর দিন অবহেলা করছেন। (আমার কথা শুনে পপি চোখের পানি মুছতে মুছতে রুমে চলে গেলো)
মা: বৌমা এসব কি হচ্ছে?
রুহান: চাঁচি আমি বলছি তোমাদের সবকিছু।
দাদি: আর বুঝাতে হবে না আমরা যা বুঝার বুঝে গেছি। এখন আমি তোকে বলছি কণার জীবন থেকে সরে দাঁড়া। মেয়েটার নতুন বিয়ে হয়েছে ওকে সুখে শান্তিতে সংসার করতে দে।
রুহান: কিন্তু আমি কিভাবে বাঁচবো দাদি?
আমি: দাদি বিশ্বাস করুন আমি রুহানকে ভালোবাসি না, কখনো বাসিওনি। সবসময় ও পাগলামি করেছে আর…
রুহান: ব্যাস কণা আর বলতে হবে না থাকো তুমি তোমার নতুন সংসার নিয়ে। (রুহান হনহন করে বেরিয়ে গেল)
চাঁচি: আমার রুহানের যদি কিছু হয়েছে তোমার জন্য তাহলে কিন্তু আমি তোমাকে ছেড়ে দিবো না। (রুহানের আম্মু এসে আমার চোখের সামনে আঙ্গুল তুলে শাসিয়ে গেলেন)
মা: বৌমা ভেবো না সব ঠিক হয়ে যাবে। যাও রুমে গিয়ে বিশ্রাম নাও।

রুমে এসে দেখি তোহা বিছানায় বসে আঁকিবুঁকি করছে, পাশে মেঘ বসা।
আমি: তোহা মামুনি কি আঁকছ তুমি?
মেঘ: খবরদার আমার মেয়েকে আপনি স্পর্শ করবেন না। (মেঘের এমন আচরণে ভয় পেয়ে একটু দূরে এসে দাঁড়ালাম)
আমি: কেন?
মেঘ: আপনার মতো মেয়ে আমার তোহার কাছে থাকলে আমার তোহা খারাপ হয়ে যাবে। আপনারা সব মেয়ে এক সব…
আমি: ভুলে গেছেন বিয়েটা কেন হয়েছে?
মেঘ: ভুলিনি কিন্তু তাই বলে আমি আমার মেয়েকে অন্য একটা খারাপ মেয়ের কাছে ছেড়ে দিতে পারবো না।
আমি: আমি খারাপ?
মেঘ: তা নয়তো কি? একজনকে ভালোবেসে অন্য একজন কে বিয়ে করেছেন।
আমি: রুহানকে আমি ভালোবাসি না।
মেঘ: তাতো ড্রয়িংরুমে শুনেই এসেছি।
আমি: কচু শুনেছেন, চলে এসেছিলেন তো শুরুতেই পুরোটা তো শুনেননি।
মেঘ: পুরোটা শুনলে রাগ আর নিজের কন্ট্রোলে রাখতে পারতাম না।
আমি: হুহ কি আমার রাগ রে।
মেঘ: বেরিয়ে যান এই রুম থেকে।
আমি: আপনি আমাকে ভালো বাসুন বা না বাসুন আমার তাতে কিচ্ছু যায় আসেনা, আমি এখানেই থাকবো বুঝেছেন।
মেঘ: ঝগড়াটে মেয়ে দেখেছি কিন্তু আপনার মতো এতো ঝগড়াটে মেয়ে দেখিনি। (মেঘ নিজেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল। তোহার আঁকিবুঁকি গুলো দেখছি, পপি এসে রুমে ঢুকলো)
পপি: ভাবি।
আমি: তুমি? বসো।
পপি: ভাইয়া রুম থেকে বেরিয়ে গেল দেখে এসেছি, ভাবি প্লিজ আমার একটা অনুরোধ রাখবে?
আমি: কি বলো।
পপি: আমি জানি তুমি বুঝতে পেরেছ আমিই সেই মেয়ে যে রুহানকে পাগলের মতো ভালোবাসি আর আমি তো তোমার সাথে কয়েক দিন আগে ফোনে কথা বলেছিলাম।
আমি: হ্যাঁ কিন্তু…
পপি: ভাইয়াকে বলো না প্লিজ আমি যে রুহানকে ভালোবাসি।
আমি: কিন্তু কেন? না বললে তোমাদের বিয়েটা হবে কিভাবে?
পপি: ভাইয়া প্রেম ভালোবাসা ঘৃণা করে এসব জানতে পারলে বাসায় সমস্যা হবে আর বিয়ে তো কখনো সম্ভব না কারণ রুহান আজো তোমাকেই ভালোবাসে আমি ওর মনে জায়গা করে নিতে পারিনি।
আমি: রুহান পাগলামি করছে দেখবে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে, ও ঠিক তোমার ভালোবাসা বুঝতে পারবে।
পপি: সেই দিনটার অপেক্ষায় তো বেঁচে আছি।
আমি: পাগলী কেঁদো না সব ঠিক হয়ে যাবে।
পপি: কই কাঁদছি নাতো। সরি ভাবি তোমাদের বিয়েতে থাকতে পারলাম না হুট করে যে এসব হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি। আগে জানলে কি আর গ্রামে ঘুরতে যেতাম? রুহানের সঙ্গে ঘুরতে যাবো এই লোভ সামলাতে পারিনি তাই চলে গিয়েছিলাম।
আমি: ব্যাপার না এখন থেকে তো সবাই একসাথেই থাকবো।
পপি: তুমি সত্যি খুব ভালো।
তোহা: হ্যাঁ ফুফি আমার নতুন আম্মুটা খুব ভালো।
পপি: খুব পেকে গেছিস বুড়ি তাই না। (পপি তোহার নাক টেনে দিয়ে চলে গেল)

তখন আমি ক্লাস টেনে ছিলাম রুহান বোধহয় অনার্সে ছিল, হুট করে একদিন রুহান আমাকে ভালোবাসার কথা বলে। এসব কখনোই ভালো লাগত না আমার তাছাড়া আমি আব্বু আম্মুর পছন্দে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম তাই রুহানকে না বলে দেই। রুহান পাগলামি করতো বুঝতাম ও একটা মোহে আটকে আছে। এভাবে তিনবছর কেটে যায়, কয়েকমাস আগে রুহান একটু বেশিই পাগলামি করে। ভেবেছিলাম আব্বুকে রুহানের কথা বলবো কিন্তু হঠাৎ একদিন একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসে আমার কাছে, আমি ফোন রিসিভ করি।
–হ্যালো।
–আপনি কণা?
–হ্যাঁ আপনি…
–রুহান তাহলে আপনাকেই ভালোবাসে।
–এসব ভালোবাসা নাকি মোহ আমি সঠিক জানিনা কিন্তু আপনি কে?
–আপনিও কি রুহানকে ভালোবাসেন?
–নাতো।
–আপনি ভালোবাসেন না অথচ রুহান আপনার জন্য পাগল আর আমি ওকে এতো ভালোবাসি কিন্তু ও…
–আপনি কাঁদবেন না প্লিজ আমাকে সব খুলে বলুন।
–আমি রুহানের চাচাতো বোন, ওকে আমি সেই ছোটবেলা থেকে ভালোবাসি কিন্তু…
–বুঝতে পেরেছি তা এখন আমাকে কি করতে হবে, আপনি আমাকে কেন ফোন করেছেন?
–আপনি তো রুহানকে ভালোবাসেন না তাহলে রুহানকে আমার করে দিন না প্লিজ, বিশ্বাস করুন আমি রুহানের ভালো চাই আপনি যদি ওকে ভালোবাসতেন তাহলে আমি সরে যেতাম আপনাদের মাঝখান থেকে কিন্তু আপনার মনে তো রুহানের জন্য কোনো অনুভূতি নেই তাহলে…
–আপনি এভাবে কাঁদবেন না প্লিজ আমি রুহানকে বুঝাব।

তারপর মেয়েটি ফোন রেখে দেয়। তখনো জানতাম না মেয়েটি যে পপি। খুব কেঁদেছিল পপি সেদিন, আমি যদি রুহানকে ভালোও বাসতাম তাহলে পপির কাছে ওকে তুলে দিতাম কারণ পপির ভালোবাসায় কোনো কমতি ছিল না। তারপর রুহানকে আমি বুঝিয়েছিলাম রুহান বুঝেছিল কিনা জানিনা তবে ও গত একমাস আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করেনি। ভেবেছিলাম রুহান পপির ভালোবাসা বুঝেছে কিন্তু…
রুহান: কণা.. (ছাদে দাঁড়িয়ে পুরনো কথাগুলো ভাবছিলাম হঠাৎ রুহান এসে পাশে দাঁড়াল)
আমি: কিছু বলবেন?
রুহান: আমি পারছি না কণা এসব মেনে নিতে।
আমি: সত্যিটা মেনে নিতেই হবে তাছাড়া আমি তো আপনাকে কখনো ভালোবাসিনি আপনার জন্য কোনো অনুভূতি ছিল না আমার মনে।
রুহান: তুমি তো ভাইয়াকেও ভালোবাস না আর ভাইয়াও তোমাকে ভালোবাসে না, আমি যতটুক ভাইয়াকে জানি সে কখনো তোমাকে ভালোবাসবে না। ফিরে এসো প্লিজ আমার কাছে।
আমি: মেঘ আমাকে ভালোবাসবে কিনা আমি জানিনা কিন্তু গতকাল কবুল বলার সাথে সাথে মেঘের জন্য আমার মনে ভালো লাগা ভালোবাসার অনুভূতি সৃষ্টি হয়ে গেছে, হয়তো এইটা কবুল শব্দটারই শক্তি। আমি মেঘ’কে কখনো জোর করবো না কিন্তু আমার বিশ্বাস আমার ভালোবাসা মেঘ একদিন ঠিক বুঝতে পারবে। আর আপনাকে বলছি আবেগে আটকে না থেকে সত্যিকারের ভালোবাসা বুঝার চেষ্টা করুন, পপি আপনাকে সত্যি ভালোবাসে।
রুহান: পপি আমাকে সত্যি ভালোবাসে এইটা আমি জানি বুঝি কিন্তু আমার মন যে তোমাকে ভালোবাসে।
আমি: একবার পপিকে মন দিয়ে দেখুন না সবকিছু কেমন ঠিক হয়ে যায়।
রুহান: পারবো না আমি, তোমাকে ভালোবাসি তোমাকেই সবসময় ভালোবাসব।
মেঘ: সরি সরি ভুল সময় এসে পড়েছি। (মেঘের কন্ঠ শুনে পিছনে তাকালাম, মেঘ ছাদের দরজায় দাঁড়িয়ে আছে)
আমি: কিছু লাগবে?
মেঘ: না তোহা ঘুম থেকে উঠে পড়েছে আপনাকে খুঁজছে তাই আপনাকে ডাকতে এসেছিলাম কিন্তু আপনি তো বিজি আছেন।
আমি: বিজি আছি কে বললো চলুন।
রুহান: কণা আমার কথা কিন্তু শেষ হয়নি।
মেঘ: ভাই এসব মেয়েদের সাথে কথা বলে লাভ নেই। (মেঘ হাসতে হাসতে খুব সহজেই কথাটা বলে ফেললো)
রুহান: ভাইয়া কণাকে নিজের বউ শায়লার সাথে একদম গুলাতে যেও না।
মেঘ: ও তো শায়লার চেয়ে কোনো দিকে কম না, ভালোবাসে একজনকে বিয়ে করেছে অন্য একজনকে। এসব শুধু খারাপ মেয়েদের পক্ষেই সম্ভব।
আমি: অনেক বলেছেন চুপ করুন। আমি এতোটা খারাপ না, আমি তোহার জন্য বিয়েটা করেছি। আমি রুহানকে কখনোই ভালোবাসিনি আমি তো আপনাকে…
মেঘ: আমাকে কি?
আমি: কিছুনা।
রুহান: কণা…
আমি: হয়েছে আর কিছু শুনতে চাই না দুভাই মিলে অনেক কথা বলেছেন আমাকে। এবার আমি বলবো আপনারা শুনবেন। রুহান আপনি যে আবেগ আর মোহে অন্ধ হয়ে আছেন সেটা আমি আপনাকে বুঝাব আপনার সত্যিকারের ভালোবাসার কাছেই আপনাকে যেতে হবে। আর মেঘ আপনি শুনে রাখুন আমি আপনার কাছে কখনো কোনো অধিকার চাইবো না যতদিন না আপনি নিজ থেকে চাইবেন। আর আপনি চাইবেন সেটাও আমি জানি খুব শীঘ্রই চাইবেন। (কাঁদতে কাঁদতে ছাদ থেকে চলে আসলাম। মেঘ আমাকে মেনে নিবে না জানতাম কিন্তু এতোটা খারাপ ভাববে এইটা বুঝিনি। আর এখন তো রুহান মাঝখানে এসে আরো অশান্তি বাড়িয়ে দিল)

বিছানার এক পাশে চুপচাপ বসে আছি পাশে তোহা পুতুল নিয়ে খেলা করছে। সারাদিন কারো সাথে কোনো কথা বলিনি মেঘের সাথেও না। অবশ্য মেঘ সেই দুপুরবেলা বেরিয়েছিল রাত নেমে আসলো কিন্তু ওর আসার নাম নেই।
তোহা: নতুন আম্মু নতুন আম্মু এইটা দেখো তো। (তোহা বিছানায় রাখা পুতুল গুলো দেখাচ্ছে তখনি মেঘ এসে রুম ঢুকলো)
তোহা: এইটা আব্বু, এইটা আমি আর এইটা আমার নতুন আম্মু। (পাশাপাশি রাখা দুটি পুতুলকে ওর আব্বু আম্মু বলছে আর সামনে রাখা ছোট পুতুল নাকি ও নিজে, পিচ্ছি মেয়ের আধোআধো কন্ঠে এমন কথা শুনে মেঘ আমি দুজনই হেসে দিলাম)
মেঘ: আপনার হাসিটা খুব সুন্দর। (মেঘ আস্তে করে কথাটা বললো, ওর দিকে তাকাতেই চোখ ফিরিয়ে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল)

বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাতের আকাশ দেখছি, চাঁদের আলো সাথে মৃদু বাতাস খুব সুন্দর পরিবেশ। মেঘ পাশে এসে দাঁড়িয়েছে দেখে অবাক হলাম, তোহাকে ঘুম পাড়ানোর সময় তো দেখলাম ও ঘুমুচ্ছে।
মেঘ: রেগে আছেন আমার উপর?
আমি: (নিশ্চুপ)
মেঘ: আম্মু বললো সারাদিন কিছু খাননি চলুন খাবেন। (এবার আরো বেশি অবাক হলাম তাকিয়ে আছি মেঘের দিকে এক দৃষ্টিতে)
মেঘ: আমি আপনাকে খারাপ ভেবেছিলাম সেজন্য সরি। (মেঘ আমার এতো কাছে দাঁড়িয়ে আছে যে আমার চুলগুলো বার বার উড়ে গিয়ে ওর চোখেমুখে পড়ছে, আশ্চর্যের কথা হলো মেঘ এতোটুকুও বিরক্ত হচ্ছে না। চুলগুলো হাত দিয়ে কানের পাশে গুঁজে নিলাম)
মেঘ: থাকুক না চুলগুলোকে উড়তে দিন ভালোই তো লাগছে। (ও তো আজ আমায় শুধু অবাক করে দিচ্ছে)
মেঘ: এভাবে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছেন কেন আমি দেখতে এতোটা সুন্দর না কিন্তু। (মেঘের কথায় লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললাম)

দুজন পাশাপাশি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি কেউ কোনো কথা বলছি না। মেঘ কি ভাবছে জানিনা তবে আমার মন অনেক কিছু ভাবছে, মাথায় হাজারটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। মেঘ কি তবে আমাকে….
মেঘ: ভালোবাসেন আমাকে?
রেলিং এ রাখা আমার হাতের উপর মেঘের হাতের ছোঁয়া পেয়ে মেঘের চোখের দিকে তাকালাম, ওর চোখ দুটু প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইছে। কিন্তু আমি কি উত্তর দিবো? বলে দিবো আমার মনে যে ওর জন্য ভালোবাসার অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে…

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে