ধর্ষিতা_বউ পার্ট:৪১

0
3431

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:৪১

#Rabeya Sultana Nipa

 

_আয়ান অফিস থেকে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ড্রইংরুমে বসে টিভি দেখছে।রেশী এসে আয়ানের পাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
রেশী চুপ করে আছে দেখে আয়ান আড় চোখে রেশীর দিকে তাকিয়ে, কিরে,,,,,কিছু বলবি?
রেশী -ভাইয়া! তুমি তো কাল রাত থেকে কিছু খাওনি।এখন চলো আমি রান্না করেছি তুমি খেয়ে নাও।

আয়ান -তুই খেয়েছিস?
রেশী মাথা নাড়িয়ে না বুজিয়ে, আর বললো দুপুরে খাইনি।ভেবেছিলাম তুমি অফিস থেকে আসলে তারপর খাবো।আমার একা একা খেতে ইচ্ছে করছে না।

আয়ান -মা! কোথায় সকালেও দেখলাম না এখনো দেখছিনা।

রেশী -আন্টি সকালে বাড়িতে গেছে তখন তুমি ঘুমে ছিলে তাই বলে যায়নি।বলেছে সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসবে।
রেশী কথাটা শেষ করতেই কলিংবেলের শব্দ শুনে, ওই তো আন্টি বোধ হয় এসে গেছে আমি গিয়ে দরজাটা খুলে দি।
রেশী গিয়ে দরজা খুলতেই নিলিমা বেগম বাসায় ঢুকতে ঢুকতে, কি অকাল দিন পড়েছে রে বাবা দিনে দুপুরে মানুষ বেপাত্তা হয়ে যায়।আসিফ টাকে কতো করে বলি সাবধানে চলাফেরা করিস কে শুনে কার কথা।এতো বড় একটা ছেলে আজ দুইদিন থেকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।ছেলেটার মা না জানি কত কষ্ট পাচ্ছে ছেলেটার জন্য।
নিলিমা বেগমের বকবকানি গুলো আয়ান গালে হাত দিয়ে চুপ করে শুনে যাচ্ছে।
নিলিমা বেগম আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই, আয়ান অফিস থেকে কখন এলে?
আয়ান গাল থেকে হাতটা সরিয়ে, মা আপনি এতক্ষণ কার কথা বলছেন কে বেপাত্তা হয়ে গেছে?
নিলিমা বেগম বসতে বসতে আর বলোনা, নীরার কাজিন! নাম জয় হবে হয়তো।নীরা সকালে ফোন করেছিলো ও নাকি ওদের বাড়িতে যাবে কিন্তু আসিফকে কিছুতেই রাজি করাতে পারছিলো না। তাই আমাকে ফোন দিয়ে বাসায় যেতে বললো সকাল বেলা তুমিও ঘুমে ছিলে তাই বলে যেতে পারিনি।ওইখানে গিয়ে তো এই কথা গুলো শুনে আমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিলো।

আয়ান নিলিমা বেগম কে আর কিছু না বলে , রেশী টেবিলে খাবার দে। আর তুইও খেতে আয়।
আয়ানের কথা শুনে,
নিলিমা বেগম -একি বাবা তুমি এখনো খাওনি? যাও যাও তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও।

প্রাপ্তি মন খারাপ করে বসে আয়ানের কথা ভাবছে,ও এখন কি করছে? আমি ওইখান থেকে আসার পর থেকে আমাকে একটা ফোনও দিলোনা।কিভাবে পারলো এইভাবে ফোন না দিয়ে থাকতে। সবাকে মিলাতে গিয়ে কি আমি আমার আয়ান কে হারিয়ে ফেলছি না তো? কিন্তু আমি তো ওর জীবন থেকে হারাতে চাই না? আমিও এটাও চাই ও সবার সাথে থেকে ভালো থাকুক।সবাইকে ছেড়ে ওর থাকতে অনেক কষ্ট হয় আমি সেটা বুজি। আর বুজে তো আমি চুপ করে থাকতে পারিনা।কাহিনী টা যখন আমি শুরু করেছি তাহলে আমিই শেষ করবো।
না আমি বাবাকে গিয়ে সব বলবো হয়তো বাবাকে বুজিয়ে বললে ওনি সবকিছু মেনে নিবেন।কথা গুলো ভেবেই প্রাপ্তি উঠে আবিদ চৌধুরীর রুমে গেলো । পুরো রুমটা অন্ধকার হয়ে আছে কিন্তু ইজিচেয়ারটা তো দুলছে,বাবা হয়তো ওখানেই বসে আছে,লাইট কি অন করবো? না থাক হয়তো বাবার দিকে তাকিয়ে আমি ভালোভাবে কথা গুলো বলতে পারবোনা, এরছেয়ে ভালো অন্ধকারেই বলে ফেলি।প্রাপ্তি কথাটা ভেবে বলতে শুরু করলো,
বাবা!আমি জানি আপনি এইখানেই আছেন আর আমি আপনার কাছে আগেই ক্ষমা ছেয়ে নিচ্ছি।বাবা আসলে আমার আর আয়ানের মধ্যে আজ যা হয়ে ছিল সব অভিনয়। বাবা আমি এই বাড়িতে আসার পর থেকে শুধু একটাই মিথ্যা কথা বলেছি আর যেটা বলেছি সেটা যে এতো ভয়ংকর রূপ নিবে আমি তা কল্পনাতেও ভাবিনি। বাবা আমি জানি এইটার জন্য আমি ক্ষমা পাবার জগ্য না। বিশ্বাস করুন বাবা আমি নিজের সার্থের জন্য কিছু করিনি।আপনার ছেলে আপনাদের ছাড়া থাকতে খুব কষ্ট পাচ্ছে। আমি জানি আপনাদের ও খুব কষ্ট হয়।আপনাদের সবাইকে এক করার জন্যই আমি এইসব করেছি।আপনাকে যদি এই মিথ্যাটা না বলতাম আপনি আমাকে এইবাড়িতে থাকতে দিতেন না।বাবা! আপনিই তো আজ বললেন আমি আপনার মেয়ে।আর মেয়ে কে কি ক্ষমা করে দেওয়া যায়না?
বাবা! আপনি কিছু বলছেন না কেনো? আপনার অনেক অভিমান আমি জানি। আমার কথা না হোক আপনার ছেলের কথা ভেবেই সব কিছু আগের মতো করে নিন।আপনি চাইলে আমি আপনার ছেলের জীবন থেকে চলে যাবো বাবা! প্লিজ একবার বলুন আপনি সব মেনে নিবেন।
আবিদ চৌধুরীর কোনো সাড়া না পেয়ে প্রাপ্তি ভয়ে ভয়ে গিয়ে লাইট টা অন করলো।লাইট অন করেই আবিদ চৌধুরী দিকে তাকিয়ে দেখে হাত পা গুলো কেমন জানি ছেড়ে দিয়েছে। প্রাপ্তি দৌড়ে এসে বাবা আপনার কি হয়েছে?(আবিদ চৌধুরী পাশে বসে একটু ঝাঁকিয়ে,) বাবা! বাবা! আপনি কথা বলছেননা কেনো?আবিদ চৌধুরীকে ছেড়ে দিয়ে দৌড়ে দরজায় দাঁড়িয়ে,মা! মা! ভাইয়া! তোমরা তাড়াতাড়ি এসো।প্রাপ্তির চিৎকার চেঁচামিচি শুনে সবাই দৌড়ে এসে, কি হয়েছে প্রাপ্তি?
দেখোনা! বাবার কি হয়েছে আমি কিছু বুজতেছিনা।

আয়েশা বেগম -আকাশ! তুই তাড়াতাড়ি ডাক্তারকে ফোন কর! সুমি এসে, প্রাপ্তি বাবাকে আগে শোয়াতে হবে।আকাশ ডাক্তার সাথে কথা বলে এসে সবাই মিলে ধরে আবিদ চৌধুরীকে খাটে শুয়ে দিলেন।
আয়েশা বেগম তো কান্নাকাটি করছে,আকাশ হটাৎ করে তোর আব্বুর কি হয়েছে।একদম অজ্ঞান হয়ে আছে? আমি তো কিছুই বুজতেছিনা।

আকাশ -আম্মু তুমি চিন্তা করোনা ডাক্তার এসে দেখে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।(ডাক্তার আসতেই) ওইতো ডাক্তার এসে গেছে, তুমি কান্না করোনা।
ডাক্তার ভালো করে দেখে আপনারা ওনাকে হসপিটাল নিয়ে চলুন আমার যতোটুকু মনে হয় ওনার হার্টের প্রবলেমটা আবার দেখা দিয়েছে।
আকাশ -আমি তাহলে হসপিটাল ফোন করে বলে দিচ্ছি এম্বুলেন্স পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য।

ডাক্তার -হ্যাঁ সেটাই করুণ।

আয়ান রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হবে তখনি নিলিমা বেগম আয়ানকে দেখে বললো, আয়ান কোথাও যাচ্ছো নাকি?
আয়ান নিলিমা বেগমের কথা শুনে দাঁড়িয়ে,
মা আমি অভ্রর বাসায় যাচ্চি। হয়তো আজ না ও আসতে পারি।আপনারা আমার জন্য চিন্তা করবেননা।কথাটা বলেই আয়ান বেরিয়ে গেলো।আয়ান আর অভ্র দেখা করে জয়কে যেখানে আটকিয়ে রাখা হয়েছে সেখানে আসলো।আয়ান আর অভ্রকে আসতে দেখে জয় আকুতি করে বলতে লাগলো প্লিজ আপনারা আমাকে ছেড়ে দিন।আমার ফ্যামিলি আমার জন্য চিন্তা করছে।আমার মা হয়তো পাগল হয়ে যাবে।প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।কথাটা শুনেই আয়ান জয় কে থাপ্পড় দিয়ে, তোর ফ্যামিলি চিন্তা করছে।মা পাগল হয়ে যাবে।সেই দিন তোদের এই কথা গুলো মাথায় আসেনি একটা মেয়েকে যখন সবাই মিলে অত্যাচার করেছিস?
তোদের কে বাঁচিয়ে রাখটাই অন্যায়।এখন সত্যি করে বল সেইদিন তোদের সাথে কে কে ছিল?

জয় -আমি সব সত্যি কথা বলছি।ভাইয়া বিশ্বাস করেন সেইদিন আমরা সায়মনের কথা মতো কাজ করেছি।
জয় আস্তে আস্তে সব বলতে লাগলো।
কথা গুলো শুনে আয়ান আর সহ্য করতে না পেরে স্টপ প্লিজ স্টপ আমি আর কিছু শুনতে চাইনা।অভ্র প্লিজ তুই পুলিশকে ফোন কর আর প্রাপ্তির পুরোনো কেশ টা আবার ওপেন করতে বল।

চলবে,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে