তোকে চাই❤(সিজন-২)part:39+40

1
4680

তোকে চাই❤(সিজন-২)part:39+40
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
.
?
.
হালকা রোদের ঝিলিকে ঘুম ভেঙে গেলো আমার।তবু চোখ বুজে পড়ে রইলাম বিছানায়….কেমন যেনো সুখী সুখী পরিবেশ চারদিকে।।রুমের প্রতিটি কোণায় এক অচেনা সুগন্ধ…..আমার পাশের বালিশটা থেকেও যেনো সুগ্ধটা বেরিয়ে আসছে নিঃসংকোচে।একটা লম্বা শ্বাস টেনে চোখ মেলে তাকালাম।জানালাটা খোলা।খোলা জানালার গোলাপী পর্দা ভেদ করে এক টুকরো রোদ এসে পড়ছে বিছানার ওই কোনোটাতে…এলোমেলো চুলগুলো কোনোরকম খোঁপায় গুঁজে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।।বাইরে কি ঝকঝকে রোদ….আকাশের মনটা বুঝি খুব ভালো আজ??নীল রঙে চোখ ঝলসে দিয়ে তার কি আনন্দ….হঠাৎ কি ভেবে কপাল কুঁচকে এলো আমার…শুভ্র!! শুভ্রর কথা মনে পড়তেই চোখ ঘুরিয়ে চারপাশে দেখতে লাগলাম…কোথাও নেই…ওয়াশ রুম,,,ড্রয়িংরুম কোথাও না….তাহলে গেলো টা কই??একজন জ্বলজ্যান্ত মানুষ তো এভাবে উদাও হয়ে যেতে পারে না….তারওপর উনি অসুস্থ!! এসব ভাবতে ভাবতে কপালটা হালকা কুঁচকে মার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।। মা ডাইনিং এ খাবার দিচ্ছিলেন…আমাকে এভাবে সামনে দাঁড়াতে দেখেই ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলেন –
.
কি রে? এভাবে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে পড়লি কেন??সর সামনে থেকে….
.
মার কথায় পাত্তা না দিয়ে টেবিলে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়েই বলে উঠলাম –
.
উনি কোথায় মা?
.
মা আবারও ভ্রু কুঁচকে তাকালেন।।মার চাহনী দেখে মনে হচ্ছে এমন অদ্ভুত কথা এ জীবনে দ্বিতীয়বার শুনেন নি তিনি।
.
উনিটা কে?
.
তোমার ভাতিজা….(বিরক্তি নিয়ে)
.
ওহ শুভ্র?ও তো চলে গেছে…
.
চলে গেছে মানে??(চেঁচিয়ে) ও চলে গেলো আর তুমি যেতে দিলে??কাল ডক্টর কি বলেছে শুনো নি??ইউ আর সো ইরেসপন্সিবল আম্মু।(বিরক্ত হয়ে)
.
তুই তো খুব রেসপন্সিবল তাই না??সাড়ে এগারোটা বাজতে চললো এখনও পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছিস….ডক্টর কি বলেছে খুব মনে আছে আমার…কিন্তু তোরা আমার কথা শুনলে তো??ভার্সিটিতে কাজ আছে…অফিসে মিটিং আছে কতো কাজ তার।।ছেলেটা কাজ করতে করতেই মরে যাবে দেখিস….রেস্ট নিতে তো ভুলেই গেছে…কোনো কথা শুনে না….শুধু কাজ কাজ আর কাজ।।আরে বেঁচে না থাকলে কাজ দিয়ে কি করবে শুনি??
.
মার কথাগুলো এই মুহূর্তে খুবই বিরক্ত লাগছে আমার।।তাই কোনোরকম কথা না বলে রুমের দিকে হাঁটা দিলাম,,, মার এই ভাঙা টেপরেকর্ডার আজ সারাটা দিনই যে চলবে তা বেশ বুঝতে পারছি আমি।।বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে আছি….. নিজের উপরই রাগ লাগছে এবার…কি দরকার ছিলো এতো ঘুমানোর??ঘুমিয়ে কি দুনিয়া অধিকার করে নিয়েছি??নেই নি…তাহলে কেনো এতো ঘুমালাম?হুয়াই?আর উনিও বা কেমন??আমাকে একটিবার ডাকবেন না??আমাকে ডাকা কি তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না??অবশ্যই পড়ে!!হঠাৎ বালিশের নিচে চোখ যেতেই দেখি,,, ভাজ করা একটা কাগজ।।অসীম আগ্রহ নিয়ে কাগজটা মেলে ধরতেই অবাক হলাম আমি…..পরিষ্কার সুন্দর গোটা গোটা অক্ষরে লেখা-
.

এইযে রোদেলা দুপুর,
আজকের সকালটা কিন্তু তোমারই রঙে রেঙেছে,,দেখেছো তো??তোমার মতোই প্রাণবন্ত চারপাশ…খুব ইচ্ছে ছিলো ডেকে তুলি তোমায়…কিন্তু শেষ পর্যন্ত তোমার এই ঘুমন্ত মুখটার মায়ায় পড়ে আর ডাকা হয়ে উঠলো না।।সকালে ঘুম থেকে উঠে তোমায় পাশে পেয়ে বেশ অবাক হয়েছিলাম আমি।।ভেবেছিলাম তুমি কিভাবে??তারপর বুঝলাম তুমি নয় আমিই ছুটে এসেছি তোমার কাছে…জ্বরের ঘোরে খুব বেশি পাগলামো করেছি বুঝি??কিচ্ছু মনে করতে পারছি না….এখানে যে কিভাবে এসেছি তাই ভুলে গিয়েছি আমি।।ফুপ্পির সামনে কতোটা লজ্জায় পড়তে হয়েছে জানো ??ছিহ কি ভাবছেন উনি….সবকিছু তোমার জন্য…কেনো এতো পাগল করেছো আমায়??আমার পাগলামোটা আর না বাড়িয়ে ভার্সিটি এসে মহারানীর এই মিষ্টি হাসিটা দেখার সুযোগ করে দাও না প্লিজ!!
শুভ্র❤
.
?
.
ভার্সিটি চত্তরের বটতলায় বসে আছি আমি আর চিত্রা।।ভ্যাপ্সা গরমে দু’জনেই অস্থির প্রায়…চিত্রার চোখে-মুখে চরম হতাশা….দেবদাস পারুকে না পেয়ে যতটুকু হতাশ হয়েছিলো তার থেকেও বেশি হতাশা চিত্রার বুকে।।ফুস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠলো সে-
.
দোস্ত?এই ভার্সিটিতে কি কোনো হ্যান্ডসাম ছেলে অবশিষ্ট নাই?বিশ্বাস কর দোস্ত এই এক ঘন্টা যাবৎ যে মনোযোগ দিয়ে আমি গেইটের দিকে তাকিয়ে ছিলাম লেকচারেও তেমন মনোযোগ দিই না কিন্তু ফলাফল শূন্য একটা কিউট ছেলেও নাই সব বাদাম্ম্যা….
.
তুই কি হ্যান্ডসাম ছেলেদের নিয়ে জরিপে নেমেছিস নাকি??হ্যান্ডসাম ছেলে দিয়ে কি করবি?(অবাক হয়ে)
.
কি করবো মানে?ছেলে দিয়ে মেয়েরা কি করে??বিয়ে করে….সো আমিও বিয়ে করবো।।শালার এপর্যন্ত যত পোলাদের চোখে পড়ছে সব বুকড।।এসেই ক্রাশ খাইলাম শুভ্র ভাইয়ের ওপর…ক্রাশ খাওয়ার লাস্ট স্টেজে এসে…ভাইয়য়য়য়া থেকে সুন্দর করে হয়ে গেলো দুলাভাই।।আহ্ কি কষ্ট!!(বুকে হাত দিয়ে)তারপর সাহেল ভাই…পুরাই চকলেট বয়…মাশাআল্লাহ একদম চকলেটের ডিব্বা।।বাট সেই চকলেটও কোন আইসক্রিমের টানে চলে গেলো ইউএস….রোহন ভাই তো নীলি নীলি করেই বাঁচে না।।সাব্বির ভাইও দেখি রাহি আপুর সাথে ফুসফুস করে….সব কটার জিএফ আছে….আমিই একমাত্র হতভাগী রে রোদু!!আমায় সান্ত্বনা দে…
.
চিত্রার আহাজারিতে পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে আমার।।কিন্তু হাসলে তো চলবে না….আমার মুখ থাকতে হবে দুঃখী দুঃখী….. ফ্রেন্ডের সিংগেল জীবনের কষ্টে দুঃখিত হওয়া আমার কর্তব্য।।আপাতত কর্তব্যটা সাইডে রেখে দুষ্টু হাসি দিয়ে গম্ভীর গলায় বলে উঠলাম আমি-
.
দোস্ত?সাকিব ভাই কিন্তু এক্টিব…আই মিন উনি এখনো সিংগেল….তুই যদি বলিস ত…

.
আমি এটুকু বলতেই চিত্রা যেনো লাফিয়ে উঠলো।। রাগী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়েই বলে উঠলো –
.
ওই বলদ??চড় না খেতে চাইলে ওই পোলার নাম মুখে নিবি না আমার সামনে….কি বিশ্রী করে ডাকে আমায়….চিতল সুন্দরী!!এটা কোনো নাম??আস্ত বিরক্তির ডিব্বা একখান…দেখলেই শুট করে দিতে মন চাই…উফফ!!
.
চিত্রার কথায় খিলখিল করে হেসে উঠলাম আমি…ঠিক তখনই পাশ থেকে কেউ একজন ভাবি বলে ডেকে উঠলো।।আমি পাশ ফিরতেই সাকিব ভাইকে চোখে পড়লো…উনি হাসি হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন …. হাতে দুটো কোল্ড ড্রিংকের ক্যান….আমাকে দেখে আবারও বলে উঠলেন উনি-
.
আসসালামু আলাইকুম ভাবি..
.
ওয়ালাইকুমুস সালাম ভাইয়া…কেমন আছেন?
.
আলহামদুলিল্লাহ ভাবি। আরে চিতল সুন্দরী না?কেমন আছো?
.
সাকিব ভাইয়ের কথায় মুহূর্তেই অগ্নিমূর্তি ধারন করলো চিত্রা।।রাগী চোখে উনার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙিয়েই অন্যদিকে তাকালো সে….চিত্রার রিয়েকশনে হেসে উঠলো সাকিব ভাইয়া।।আবারও আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন –
.
ভাবি?ঠান্ডা খান…আজকে তো প্রচুর গরম..
.
না ভাইয়া লাগবে না…ঠিক আছি..(মুচকি হেসে)
.
ভাই দিতে বলছে…ভাই এখন ওই চারতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে….আপনি না নিলে স্ট্রেট থাপ্পড় পড়বে আমার গালে…প্লিজ ভাবি!!
.
আমি একটা ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে ক্যানটা হাতে নিয়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম…কোথায় উনি??জ্বর কমেছে কি উনার??সাকিব ভাইয়ের কথায় ঘোর কাটলো আমার…. উনি চিত্রাকে উদ্দেশ্য করে বলছেন-
.
চিতল সুন্দরী?দিস ইজ ফর ইউ….
.
আমার লাগবে না…আপনি যান তো এখান থেকে…(বিরক্ত হয়ে) আর খবরদার চিতল সুন্দরী ডাকবেন তো এই ইট তুলে মাথা ফাটিয়ে দিবো বলে দিলাম।
.
আরে নাও না…ভাই ই কিনে দিছে…আমি কিনি নাই…
.
আপনি যাবেন???(রাগী গলায়)
.
ওহহ চিতল সুন্দরী চেতলে তোমায় সেই লাগে…
.
কথাটা বলে আমার দিকে তাকিয়েই থতমত খেয়ে গেলেন উনি।জোড় করে হাসার চেষ্টা করে আমার হাতে দ্বিতীয় ক্যানটি দিয়েই বলে উঠলেন…
.
ভাবি যাই!!
.
কথাটা বলেই দুই সেকেন্ড দেরি না করে দৌড় লাগালেন উনি…এদিকে চিত্রা দাঁতে দাঁত চেপে বিরবির করে চলেছে ক্রমাগত….ওকে নিয়ে ক্যাফিটেরিয়ার দিকে এগিয়ে যেতেই হুট করে সামনে এসে দাঁড়ালেন শিশির স্যার।।স্যারকে এভাবে সামনে আসতে দেখে দুজনেই চমকে উঠলাম।।এই ব্যাটার আবার কি চায়??চিত্রার চোখে মুখেও বিরক্তি স্পষ্ট…. স্যার আমাদের দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসলেন…আমিও জোড়পূর্বক হাসি দিয়ে বললাম-
.
আসসালামু আলাইকুম স্যার..
.
ওয়ালাইকুমুস সালাম।কেমন আছেন আপনারা?
.
জি স্যার ভালো!
.
কিছুক্ষণ নিরব থেকে আবারও বলে উঠলেন উনি-
.
আপনারা কি ফ্রি এখন?আই মিন ক্লাস নেই?
.
না স্যার…আজ আর ক্লাস নেই…
.
ওহ গ্রেট!!(খুশি হয়ে)
.
উনার মুখের এতো খুশি খুশি ভাব আমাদের ঠিক হজম হলো না।।দুজন দুজনার দিকে তাকিয়ে আবারও স্যারের দিকে তাকালাম-
.
জি??
.
না মানে…আ..আসলে আজ আমার বার্থডে…
.
তো?আপনার বার্থডে তো আমরা কি করবো??আমাদের রোদের মাঝে দাঁড় করিয়ে পুড়িয়ে মারছেন কেন?? হুয়াই?আপনি কি চাচ্ছেন এই রোদের মধ্যে গোটা ভার্সিটির সামনে আমরা দুটোই মিলে নাচানাচি করি??কথাগুলো বলার চরম ইচ্ছেটাকে প্রশয় না দিয়ে মুচকি হেসে বললাম-
.
ওয়াও…হ্যাপি বার্থডে স্যার।।
.
চিত্রাও মিনমিন করে বললো… “হ্যাপি বার্থডে”
.
স্যার লাজুক হেসে মাথা দুলিয়ে ধন্যবাদ জানালেন।।চরম অস্বস্তি নিয়ে বলে উঠলেন-
.
এখানে আমার কাছের কেউ থাকে না…সবাই রাজশাহীতে থাকে…ফ্রেন্ডস্ রাও…তাই বার্থডে সেলিব্রিট করতে পারছি না।জন্মদিনের দিনটাতে খুবই একা লাগছে নিজেকে…আপনারা কিছু মনে না করলে আমি কি আপনাদের ট্রিট দিতে পারি??পুরো ভার্সিটির পক্ষ থেকে আপনারা দুজন।প্লিজ…
.
স্যারের এমন কথায় আমরা দুজনেই হতবাক।।কেউ যেচে যেচে ট্রিট দেয় নাকি?অদ্ভুত!! হুট করে মানাও তো করা যায় না… বেচারা যেভাবে বললো…তারপর কি করে বলি না যাবো না….নিজের রাস্তা মাপুন….দুজনে চোখে চোখে মত বিনিময় করে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েই গেলাম।।স্যার খুশিতে গদগদ হয়ে বললেন “থ্যাংক্স”
.
?
.
ভার্সিটির পাশের একটা রেস্টুরেন্ট বসে আছি।।চিত্রা সেই কখন থেকে ছটফট করছে….বারবার আমার হাত খামচে ধরে বলছে… ” চল চলে যাই…প্লিজজ!!” চিত্রার ছটফটানো দেখে স্যার ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলেন –
.
আর ইউ অলরাইট মিস?
.
হ্যা হ্যা…ঠিক আছি।
.
আমার মনে হয় আপনি ঠিক নেই…ওয়াশ রুমটা ওদিকে…চাইলে চোখে-মুখে পানি দিয়ে আসতে পারেন।।ততক্ষণে আমি নাহয় মিস.রোদেলার সাথে কিছু কথা বলবো…ইটস পার্সোনাল।
.
পার্সোনাল!!কথাটা শুনেই আমি আর চিত্রা দুজন দুজনার দিকে তাকালাম।।এই ব্যাটা আমার সাথে কিসের পার্সোনাল কথা বলবে ঠিক বুঝতে পারছি না।।চিত্রাকে যে উনি একরকম জোড় করেই এখান থেকে সরিয়ে দিতে চাইছেন তাও বুঝতে পারছি আমি।।চিত্রার কোনো চলন না দেখতে পেয়ে আবারও বলে উঠলেন উনি-
.
মিস চিত্রা?আপনি কি যাচ্ছেন?এক্চুয়েলি মিস রোদেলার সাথে আমার কিছু পার্সোনাল কথা আছে….জাস্ট পাঁচ মিনিট লাগবে…আপনি কি ততক্ষণে ওয়াশরুম থেকে ঘুরে আসবেন প্লিজ?
.
চিত্রা অনিচ্ছা সত্বেও উঠে দাঁড়ালো। ওর চোখে-মুখে রাগ স্পষ্ট। স্যারের কথাগুলো যে ওর পছন্দ হয় নি তা বেশ বুঝতে পারছি।।আমি মনে মনে দোয়া দুরুদ পড়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি…কে জানে শুভ্র ভাইয়ের তিন নম্বর চোখটা আমায় কোন দিক থেকে ফলো করছে।।এই আহাম্মক মার্কা স্যারের পার্সোনাল কথার বেড়াজালে আমিই যে শহীদ হতে চলেছি তা কে বোঝাবে উনাকে??চিত্রা চলে যাওয়ার পর গলা খাঁকারি দিয়ে কিছু একটা বলতে যাবেন ঠিক তখনই কোথা থেকে রাতুল ভাই এসে হাজির।।আমাদের টেবিলের পাশে মাথা চুলকাতে চুলকাতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।।স্যার ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকিয়েই বলে উঠলেন –
.
রাতুল তুমি এখানে??(অবাক হয়ে) কিছু বলবে??
.
জি জি.. মানে হ্যা স্যার বলবো…(থতমত খেয়ে)
.
হ্যা বলো…
.
রাতুল ভাইয়া একটা ঢোক গিলে আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন –
.
দুলাভাই ভাবি আপনাকে ডাকে থুক্কু ভাবি দুলাভাই আপনাকে ডাকে….উনার ক্লাস শেষ হবে দুটোয় এখন ১ঃ৪৫ বাজে…
.
উনার কথায় শিশির স্যার চরম অবাক…কোনোরকম নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলেন-
.
তুমি ওকে ভাবি ডাকছো কেন?আর তোমার দুলাভাই ই বা ওকে ডাকতে যাবে কেন?অদ্ভুত!!
.
জি আসলে স্যার…উনি তো দুলাভাইয়ের বউ তাই ডাকছে…কিন্তু কেনো ডাকছে সেটা তো জানি না…(মাথা চুলকে)
.
কিহহ??দুলাভাইয়ের বউ??ও তোমার দুলাভাইয়ের বউ হলে তুমি ওকে ভাবি ডাকছো কেন??(কনফিউজড হয়ে)
.

#চলবে?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

#তোকে চাই❤
……. (সিজন-২)
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:extra part❤
.
?
.
গাড়িতে চুপচাপ বসে আছি আমি….আমার ঠিক সামনেই চোখ মুখ লাল করে বসে আছেন শুভ্র।। উনার চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে কতোটা রেগে আছেন উনি…আমি এদিক ওদিক তাকাচ্ছি আর ঢোক গিলছি….এই মুহূর্তে রাতুল ভাইয়াকে ধরে ড্রেনে চুবাতে ইচ্ছে করছে আমার…শিশির স্যারের সামনে উল্টা পাল্টা বলে আমার মানসম্মান শেষ করে আবার শুভ্র ভাইয়াকেও জানিয়েছেন সব…এখন যে উনি আমায় ধরে চটকাবেন তার কি হবে শুনি??এর দায় কে নিবে?রাতুল ভাইয়ের অদ্ভুত সব কথাবার্তায় শিশির স্যারের মাথা উল্টে গেছে নির্ঘাত…তাই কোনোরকম আমার হাতে একটা কাগজ গুঁজে দিয়েই উঠে চলে গেছেন উনি।।এদিকে চিত্রারও খবর নেই…কে জানে আমায় খুঁজছে কি না।।শুভ্র ভাইয়ার ধমকে ঘোর কাটলো আমার,,,ভয়ে ভয়ে উনার দিকে তাকাতেই গলা শুকিয়ে কাঠ-
.
কি সমস্যা তোমার?শিশির স্যারের সাথে তোমার কিসের এতো পার্সোনাল কথা??চুপ করে আছো কেন??আন্সার মি!!(চিৎকার করে)
.
আ আপনি ভুল করছেন।উনার সাথে আমার কোনো পার্সোনাল কথা নেই….আমার সাথে উনার পার্সোনাল কথা ছিলো।
.
তাই থাকবে কেন?আমার বউয়ের সাথে বাইরের লোকের পার্সোনাল কথা কেন থাকবে?কি চায় সে?নিশ্চয় তোমাকে চায়?
.
সেটা আমি কি করে বলব??উনার কি বলার ছিলো সেটা উনিই ভালো বলতে পারবেন। তাছাড়া সবসময় এতো নেগেটিভ কথা ভাবেন কেন শুনি?এই দুনিয়াতে আপনার বউ ছাড়াও অনেক মেয়ে আছে…অনেক টপিক আছে কথা বলার।।এমনও তো হতে পারে অন্যকিছু বলতে চাইছিলেন আমায়….কোনো হেল্প প্রয়োজন ছিলো হয়তো!!
.
হেল্প?? তোমার মাথা।।তুমি কি সমাজসেবিকা যে হেল্প করবা…বাচ্চা একটা মেয়ে।।তোমার কাছে কিসের হেল্প??(রাগী গলায়)
.
আশ্চর্য আবার আমাকে জিগ্যেস করছেন।।আমি কি করে বলবো কিসের হেল্প….তবে যাওয়ার সময় একটা কাগজ দিয়েছিলেন হাতে।।ওটা পড়া হয় নি এখনো…
.
কথাটা বলে আনমনে ব্যাগ থেকে কাগজটা বের করতেই ছিনিয়ে নিলেন উনি।।চরম রেগে কাগজটা খুলে কিছুক্ষণ সেদিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেই ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালেন।। আমিও উচ্ছুক চোখে তাকালাম….কি লেখা আছে ওতে??আমার উঁকিঝুঁকি দেখে চিঠিটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে সিটে গা এলিয়ে দিলেন উনি।আমি উনার বিহেভে অবাক হলেও ঝটপট চিঠিটা হাতে নিয়েই চোখের সামনে মেলে ধরলাম-
.
রোদেলা,
কথাটা কিভাবে শুরু করবো বুঝতে পারছি না।চরম অস্বস্তি লাগলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি।চিত্রাকে আমি পছন্দ করি।ওর সাথে প্রায় ৫/৬ মাস আগেই বিয়ে ঠিক হয়েছে আমার।।প্রথম যেদিন ওকে দেখতে গিয়েছিলাম তখন জানতাম না ও এই ভার্সিটিরই স্টুডেন্ট পরবর্তীতে জানতে পারি।আমি ওকে যখন দেখেছিলাম মনে হয়েছিলো ও খুবই লাজুক একটি মেয়ে…আমার দিকে তাকাতেই পারে নি লজ্জায় কিন্তু ভার্সিটিতে অন্য এক চিত্রাকে দেখি আমি।।হাসি মজায় উচ্ছ্বসিত এক তরুনী।। অদ্ভুত এক কারণে ও আমায় ভয় পায়….ভীষন ভয় পায়।আমি ওর সাথে সহজ হওয়ার অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।ও ভয় পায় বলে বিয়েটাও পিছিয়ে দিয়েছি তবু ওর ভয়।আমি ভেবেছিলাম তোমার সাথে যেহেতু ও ফ্রী তাই তোমার সাথে যদি ফ্রী হওয়ার চেষ্টা করি তাহলে হয়তো ওর কাছাকাছি যাওয়া সহজ হবে।।তুমি কি একটু হেল্প করবে আমায়? স্যার হিসেবে নয় বড় ভাই হিসেবে রিকুয়েষ্ট করছি….প্লিজ রোদেলা হেল্প মি….আই নিড চিত্রা….ওর হাসিমাখা মুখ সহই আমি ওকে চাই।।

শিশির
.
.
চিঠিটা পড়ে আমি স্তব্ধ….. এই হারামীটার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আর আমি জানি না??চিত্রা আমাকে বলার প্রয়োজনই বোধ করলো না?অসভ্য মাইয়া…এখন বুঝতে পারছি শিশির স্যারকে দেখে তার এতো কাঁপা-কাঁপি ধাপা-ধাপির কারণ কি।।হারামিটাকে একবার পাই কাছে…থাপড়াইয়া গাল ফাটিয়ে ফেলবো….আমার থেকে কথা লুকানো??এবার তো ওর বাসরে সিসি লাগানোর প্ল্যান কনফার্ম হুহ….আমি যখন এসব ভাবতে ব্যস্ত তখনই পাশ থেকে গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠলো শুভ্র-
.
তো শালি সাহেবার বিয়ে ঠিক!!আর তুমি আমার বন্ধু টাকে ছ্যাকা খাওয়ানোর প্ল্যান করছিলে….মাই গড রোদ…সাহেল যদি সত্যি রাজি হয়ে যেতো তখন কি হতো বলো তো??(দুষ্টু হেসে)
.
উনার কথায় মুখ গোমরা করে বসে রইলাম আমি।সত্যি তো কি হতো তখন??আমি উনার দিকে করুন চোখে তাকাতেই হেসে উঠলেন উনি…..আমার দিকে ঝুঁকে সিট ব্যাল্ট বাঁধতে বাঁধতে বলে উঠলেন-
.
হয়েছে আর মুখ ফুলাতে হবে না।এবার চলো..অলরেডি অনেক লেইট হয়ে গেছে…বাবা দুটোর মধ্যে বাড়িতে থাকতে বলেছেন আর এখন অলরেডি ২ টা ১০ বাজে।
.
বাড়িতে থাকতে বলেছেন মানে?কোথাও যাবেন বুঝি আপনারা?
.
জি ম্যাম যাবো।শুধু আমি না আপনিও যাবেন।(মুচকি হেসে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে)
.
আমি?আমি কেন?মাকে বলা হয় নি তো….মা বকবে….
.
বকবে না গো বউ।বাবা বলে রেখেছেন।বাবার আদেশেই নিয়ে যাচ্ছি তোমায়।
.
মামু?কিন্তু হঠাৎ কেনো??
.
আজকে নানাভাইয়ের মৃত্যু বার্ষিকী।বছরের এই দিনটাতে পরিবারের সবাই মিলে এতিমখানায় যাওয়া হয়…..এতিম ছেলেমেয়েদের খাবার ও পোষক দেওয়া হয়।আর এতিম খানার পাশের মসজিদে মিলাত হয়….. এবার যেহেতু বাড়ির দুই ছেলেই বিয়ে করেছে….তাই নানুর ইচ্ছে এতিমদের খাওয়ানোর কাজটা তার দুই নাতবউ করবে….এবার বুঝলেন ম্যাডাম??(নাক টেনে)
.
বুঝলাম কিন্তু আমি কেন?ফ্যামিলির কেউ তো আমাদের বিয়েটা মানেই না….যদি মানতো তাহলে তো আপুর মতো আমিও আপনার সাথেই থাকতাম…তাই না??
.
কাহিনী কি রোদু?আমার সাথে থাকার এতো ইচ্ছে তোমার?কই আগে তো বলো নি…(দুষ্টু হেসে)
.
আরে স..স..সেটা বলেছি নাকি?আমি বলছিলাম যে…আমাদের বিয়েটা তো ফ্যামিলিতে কেউ মানেই নি।মামু তো নিজের মুখেই বলেছে…..তাহলে আমি কেন?
.
আমার কথায় হাসলেন শুভ্র।গালের উপর এসে পড়া চুলগুলো কানে গুঁজে দিতে দিতে বলে উঠলেন –
.
পাগলী!!বিয়ে তো বিয়েই হয়,,সেটা আবার মানা না মানার কি আছে??আর তোমায় কে বললো যে আমাদের বিয়েটা কেউ মানে নি??বাবা তো ওটা এমনি বলেছে….
.
তাহলে আপুর মতো আমি আপনাদের বাসায় থাকি না কেন??
.
কারণ আপনার আপুর হাজবেন্ড সেল্ফ ডিপেন্ডেন্ট….সে চার বছর ধরে ব্যবসার সাথে যুক্ত আপনার বোনের সকল প্রয়োজন সে নিজের উপার্জনে মেটানোর এবিলিটি রাখে।কিন্তু আপনার হাজবেন্ডের আপাতত সে এবিলিটি নেই।।বাবার টাকা আমাদের দুই ভাইয়ের হলেও সেটা বাবারই টাকা আমাদের নয়।।তাই ভাই যেমন স্বাবলম্বী তেমন আমাকেও হতে হবে…..ভার্সিটি জয়েন করেছি একমাসও হয় নি….বিজনেসে যে প্রজেক্টটায় কাজ করছি সেটাও মাঝামাঝি এখনও কমপ্লিট হয় নি।।(একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে) যতদিন না তোমার সকল প্রয়োজন মেটানোর মতো সামর্থ্য আমার হচ্ছে ততদিন তোমার থেকে দূরেই থাকতে হবে আমায়…এটাই বাবার শর্ত….!!তাই তো দিনরাত কাজ করছি….এই প্রজেক্টটা শেষ হলে অনেকটায় সামলে নিতে পারবো আমি….
.
আমি উনার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছি আর উনি সামনের দিকে তাকিয়ে আলতো হাতে ড্রাইভ করছেন….. শার্টের হাতা ফোল্ড করে রাখায় হাতের লোমগুলো স্পষ্ট… আমি খুব মনোযোগ দিয়ে লোমগুলো দেখছি…হাতের লোমও এতো সুন্দর হয় বুঝি?বামহাতের কব্জির খানিকটা উপরে কি চমৎকার একটা তিল!!ওই তিলটাতে ঠোঁট ছোঁয়ালেই বুঝি কেঁপে উঠবে শরীর?উনার হাত থেকে দৃষ্টি সরিয়ে উনার মুখের দিকে তাকালাম….গাড়িতেও সানগ্লাস পড়েছেন উনি….ধপধপে ফর্সা মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি….ঠোঁট দুটো ডার্ক রেড….মাঝে মাঝেই উপরের ঠোঁট দিয়ে নিচের ঠোঁট চেপে ধরছেন…সাথে সাথেই বামপাশের গালটাতে চমৎকার একটা গর্ত তৈরি হচ্ছে….উনার যে হাসলে বামপাশে টোল পড়ে জানায় ছিলো না আমার!!আমি গাড়ির সিটে ঠেস দিয়ে বসে আবারও উনার দিকে তাকালাম….টাইয়ের নাটটা একটু ঢিলা করে…সাদা শার্টের ওপরের দুটো বোতম খোলা রেখেছেন উনি।।এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে….এই দুটো বোতাম খোলা রাখার কারনেই এতোটা ড্যাশিন লাগছে উনাকে।।বোতাম দুটো লাগিয়ে রাখলে একটুও মানাতো না উনাকে…একটুও না!!আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলতেই দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে উঠলেন উনি-
.
আমাকে স্ক্যান করা শেষ রোদপাখি?তো কি কি দেখলে?
.
#চলবে?

#তোকে চাই❤
……. (সিজন-২)
#writer: নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:40
.
?
.
আ..আমি আপনাকে সস্কেন করতে যাবো কেন?কি সব বলছেন আপনি?ঠিকভাবে ড্রাইভ করুন….এমনিতেই তো কতো দেরি হয়ে গেছে তারওপর উল্টাপাল্টা কথা বলছেন….
.
কথাটা বলেই জানালার বাইরে তাকিয়ে, খুব সাবধানে একটা নিশ্বাস ফেললাম। স্বস্তির নিশ্বাস!! ছিহ কি লজ্জা!!উনার বলা কথাটা ভেবে মুখ চেপে লাজুক হাসি দিতেই সামনের দিকে তাকিয়েই বলে উঠলেন উনি-
.
লুকিয়ে হাসতে হবে না রোদপাখি….লুকিয়ে হাসলে তোমায় আরো বেশি হহহ(ভ্রু কু্ঁচকে তাকাতেই) আই মিন কিউট লাগে…(দুষ্ট হেসে)
.
উনার কথায় আবারও মুখ চেপে হেসে উঠলাম আমি।উনিও হেসে চলেছেন নিঃশব্দে !! গাড়ি থেকে নেমে বাড়িতে ঢুকতেই দেখা হলো রাহেলার সাথে…এ বাড়ির কাজের মেয়ে সে..বয়স ২০/২১ হবে…গায়ের রং ময়লা হলেও চেহারাটা বেশ মিষ্টি…আমাদের দেখেই ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে এগিয়ে এলো।শুভ্রও স্মিত হেসে রাহেলা কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন-
.
বাড়ির সবাই কোথায় রাহেলা?কাউকে দেখছি না তো।
.
হগ্গলে তো এতেমখানায় চইলা গেছে ভাইজান।ছোডভাবি আইলে ওনারে লইয়া তিনডার আগে আপনারে যাইতে কইছে…
.
ওহ আচ্ছা।তুমি যাও নি কেনো রাহেলা?
.
আমার জ্বর আইছে ভাইজান।তাই খালা আমারে রাইখা গেছে।
.
ওহ…তাহলে কাজ না করে রেস্ট নাও গিয়ে(আমার দিকে তাকিয়ে)রোদ রুমে চলো….
.
কথাটা বলেই সিঁড়ির দিকে হাঁটা দিলেন উনি।।আমিও পিছু নিলাম…বাড়িটা কেমন নিস্তব্ধ পুরী হয়ে আছে আজ…অস্বস্তিকর এক নীরবতা চারদিকে।।দ্বিতীয়বারের মতো উনার রুমে ঢুকলাম আজ…আজও সবকিছু সাদায় মোড়া….বারবার চারদিকে তাকাচ্ছি….দেওয়ালে লাগানো আমার ছবিটা দেখে কেমন অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে মনে।উনার ডাকে ফিরে তাকালাম আমি-
.
রোদ?১০ মিনিটে গোসল সারতে পারবে?পারলে ঝটপট গোসল সেরে চেঞ্জ করে নাও তো…
.
চেঞ্জ করবো মানে?সাথে করে কোনো ড্রেস আনি নি তো…. পড়বো কি?
.
আমার কথায় ফিরে তাকালেন উনি।নিঃশব্দে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে শার্টের বোতম খুলতে খুলতে বলে উঠলেন –
.
ওখানে চাবি রাখা আছে…আলমারিটা খুলো।
.
আলমারি খুলবো মানে?আমি কি আপনার ড্রেস পড়বো নাকি?অদ্ভুত!
.
আরে বাবা…খুলো তো আগে..
.
কথাটা বলে না দাঁড়িয়ে নিজেই আলমারির দিকে এগিয়ে গেলেন।সেখান থেকে সাদা রঙের সুতি একটা সালোয়ার কামিজ বের করে আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন।আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি….
.
এটা কার জামা?
.
তোমার!
.
আমার মানে??(অবাক হয়ে)
.
এতো অবাক হওয়ার কি আছে রোদপাখি? এই রুমটাও তো তোমারই…এখানে তোমার শাড়ি,জামা থাকতেই পারে…এটা অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়।।ওই বামপাশের তাকটা পুরোটাই তোমার….ওখানে যা আছে সব তোমার।শাড়ি,জামা প্রায় সবকিছুই কিনে রেখেছি।এখানে আসার পর কোনো প্রবলেম হবে না তোমার….তবে কসমেটিকস কিনি নি কিছু…ওসব সম্পর্কে আমার ধারনা শূন্যের কোঠায়…ওসব কেনার দায়িত্ব তোমার।(মুচকি হেসে)
.
উনার কথায় অবাক হলাম আমি।আমার ড্রেস কিনে রেখেছেন??এখনই??
.
কিনে রেখেছেন মানে কি?শাড়ি নয় ঠিক আছে কিন্তু জামা কিভাবে? আমার মাপ…
.
ওটা বউমনি আর চিত্রার কাছ থেকে শুনে নিয়েছি।।এবার দয়া করে ফ্রেশ হয়ে আসো…. অনেক লেইট হয়ে গেছে….আমি গেস্ট রুমের ওয়াশরুমে যাচ্ছি….ফাস্ট রোদু…ইউ হেভ জাস্ট টেন মিনিটস্।
.
আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তোয়ালে হাতে বেরিয়ে গেলেন উনি।।একটা ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে আমিও ঢুকে গেলাম ওয়াশরুমে।।১৫ মিনিটের মাথায় বেরিয়ে এসে….. চুলগুলো মুছতে মুছতে সামনে তাকাতেই দেখি আয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছেন উনি।গায়ে সাদা পাঞ্জাবি…আমায় দেখে মুচকি হেসে হাতা ফোল্ড করতে করতে আমার সামনে দাঁড়িয়ে টাওয়ালটা টেনে নিয়ে চুল মুছতে লেগে গেলেন।উনার উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছে কাজ টা বেশ মজার…এতো মজার কাজ তিনি হয়তো জীবনে দ্বিতীয়বার করেন নি।চুল মুছতে মুছতেই অনুযোগের সুরে বললেন-
.
চুলের পানিতেই তো অর্ধেক জামা ভিজিয়ে ফেলেছো রোদপাখি।তুমি দেখি এখনো পিচ্চি…..মাঝে মাঝে ভয় হয় বাল্যবিবাহ করে ফেলিনি তো?এই তোমার বয়স সত্যি ১৯ তো?
.
উনার কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালাম।উনি হালকা হেসে ড্রয়ার থেকে হায়ার ড্রায়ার এনে আমার পেছনে দাঁড়িয়েই বলে উঠলেন –
.
এই যন্ত্রটা তোমার জন্য নিষিদ্ধ। কখনো ইউজ করবে না এটা…ভেজা চুলে অসম্ভব রকম সুন্দর লাগে তোমায়….বাট শুধু আজকের জন্য এটা এলাউড ….. ওখানে কতো কতো লোক থাকবে আমি চাই না ওরা তোমায় এভাবে দেখুক….
.
আচ্ছা?আমার কি শাড়ি পড়া উচিত ছিলো না?বাড়ির বউদের তো শাড়ি পড়া উচিত… এভাবে সালোয়ার কামিজে…
.
নাহ্… এই গরমে শাড়ি পড়ার কোনো দরকার নেই।।বাড়ির বউ হলেই সবসময় সং সেজে থাকতে হবে না।।গরমে ফাঁপড়ে মরবে তাছাড়া শাড়ি পড়লে তোমার শাড়ি সরে যায়….বাসায় ছাড়া আর কোথাও শাড়ি পড়ার দরকার নেই…সামলাতেই তো পারো না….পারলে তো তোমাকে প্যাকেট করে নিয়ে যেতাম আমি আবার শাড়ি!!…
.
চুল শুকানো শেষে চুলগুলো আঁচড়ে দিয়ে মাথায় গোমটা দিয়ে দিলেন উনি।।আয়নার ভেতর দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন-“পার্ফেক্ট!” টেবিল থেকে ওয়ালেটটা নিয়ে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলেন আমার হাতে।আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি….উনি আমায় টাকা দিচ্ছেন কেন?আমায় কি একা যেতে হবে নাকি?নাকি এটা কোনো নিয়ম?এমন তো কখনো শুনি নি।।হাজারও প্রশ্নের ইতি টেনে বিস্মিত গলায় প্রশ্ন করলাম-
.
টাকা কেন?তবু এতোগুলো?এতিমখানার বাচ্চাদের দিতে হবে বুঝি??
.
না।ওগুলো তোমার।তুমি রাখো!কাউকে দিতে হবে না।
.
আমার মানে?এতো টাকা দিয়ে কি করবো আমি?আর হঠাৎ টাকা দিচ্ছেন কেন আমায়?
.
আরে বাবা..
এতো প্রশ্ন কেন করো বলো তো!! বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামীর।।এই কয়েকমাস নিজে রোজগার করতাম না তাই দিই নি…বাট এখন করি…সো ওটা রাখো,, তোমার হাতখরচ…
.
পাগল হয়েছেন আপনি?আমি তো বাসা থেকেই বের হই না তেমন।ভার্সিটি টু বাসা এন্ড বাসা টু ভার্সিটি,,এটাই আমার গন্তব্য ।।নিয়ম করে মান্থলি শপিং এ ও যাওয়া হয় না।।ভার্সিটি যাওয়া আসার ভাড়া অলওয়েজ বাবায় দেয়….ওটা বাবাদ….টাকার প্রয়োজনই হয় না আমার।।আর আপনি আমার হাতে দশ হাজার টাকা ধরিয়ে দিচ্ছেন?কি করবো আমি টাকা দিয়ে?
.
যা ইচ্ছে করো। তোমার টাকা তুমি বুঝবে….আর দশ হাজার খুব বড় এমাউন্ট নয় রোদপাখি। আমার হিসেবে খুবই অল্প সো এতো রিয়েক্ট করার কিছু নেই।।
.
কিন্তু …
.
কোনো কিন্তু নয়…আমার দায়িত্ব আমি পালন করছি….না লাগলে জমিয়ে রাখো বা দান করে দাও….সেটা সম্পূর্ণ তোমার ব্যাপার। আজকালকার মেয়েদের কসমেটিকস কিনতেই তো এর থেকে বেশি টাকা লাগে রোদপাখি…. আর তুমি বলছো তোমার চায় না??আর একটা কথা রোদপাখি…ফুপার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই….বউমনির দায়িত্ব যেমন তোমার বাবার উপর না….তেমনি তোমার দায়িত্বও উনার ওপর না….
.
আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনই টোকা পড়লো দরজায়।উনি ভ্রু কুঁচকে সেদিকে তাকিয়েই বলে উঠলেন –
.
কে?
.
ভাইজান আমি রাহেলা!
.
ওহ কিছু বলবে রাহেলা?
.
জে..খালা যাওয়ার আগে একটা বোরকা দিয়া গেছেন। কইছেন আপনারা আইলে যেন দেই…ছোডভাবির জন্যে এটা…
.
ওয়াও গ্রেট…
.
কথাটা বলে দ্রুত দরজা খুলে বোরকাটা নিয়ে নিলেন উনি।।রাহেলা কে ছোট্ট করে “ধন্যবাদ ” জানিয়ে আবারও দরজা লাগালেন ।।আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি….উনাকে যত দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি।কাজের মেয়েটার সাথেও কত সুন্দর করে কথা বলেন উনি….আমার ভাবনার মাঝেই ফিরে তাকালেন শুভ্র…একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলেন -” ঝটপট প্যাকেট হয়ে যাও তো রোদপাখি।”
.
?
.
চিত্রাদের ছাদের রেলিং এ পা ঝুলিয়ে বসে আছি আমি।হাতে আচারের বয়াম…খুব মনোযোগ দিয়ে আচার খেয়ে চলেছি।।আন্টির হাতে বানানো আচার বরাবরই বেস্ট হয়…সিজনের শুরুতেই কাঁচা আম কোথায় পেলেন ব্যাপারটা অবশ্যই ভাবনার.. … কিন্তু এই মুহূর্তে কোনো ভাবাভাবির বিষয়ে যেতে চাচ্ছি না আমি।তাই চুপচাপ আচার খাচ্ছি….আমার পাশেই রেলিং এ ঠেস দিয়ে মুখ কাঁচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছে চিত্রা।।ওর চোখে-মুখে রাজ্যের কৌতূহল…সে মনোযোগ দিয়ে আমার ডান পায়ের পায়েলটার দিকে তাকিয়ে আছে…ওর কৌতূহলের কারণটা হলাম আমি….এতো বছরের ফ্রেন্ডশিপে আমি ওদের বাসায় গুনে গুনে এসেছি ৪/৫ বার।।তবুও বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনে….অল্প স্বল্প প্রয়োজনে চিত্রাকেই যেতে হয় আমাদের বাসায়।।আজ তেমন কোনো বাড়াবাড়ি ধরনের প্রয়োজনীয় দিন কি না বোঝার চেষ্টা করছে চিত্রা।।কিন্তু তেমন কিছু খুঁজে পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না…তাই হতাশ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো –
.
পায়েলটা সুন্দর!আগে কখনো দেখি নি তো…শুভ্র ভাই দিলো বুঝি?
.
ওর প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ছাদের পাশের ছোট্ট আম গাছটার আম গুণতে লাগলাম আমি।। ওকে স্পষ্ট ইগনোর করে চলেছি….কিন্তু ব্যাপারটা ও ধরতে পারছে কিনা বুঝতে পারছি না।।ছোট্ট একটা নিশ্বাস ফেলে আবারও বলে উঠলো ও –
.
রেস্টুরেন্ট থেকে হঠাৎ কোথায় উদাও হয়ে গেলি বল তো?বেরিয়ে দেখি তুই স্যার কেউই নেই।।কি অদ্ভুত বিষয়!! কি ভীষন রেগে গিয়েছিলাম জানিস তুই?কত্তোবার ফোন দিয়েছি ধরলিই না….এক্কেবারে দু’দিন পর আমার বাসায় এসে হাজির…কাহিনী কি বল তো??স্যার তোকে কি এমন বললো ,,যে দু’দিনের জন্য হওয়া!!
.
এবারও চুপ করে রইলাম আমি।চিত্রাদের বাসার নিচে একদল ছেলে দাঁড়িয়ে আছে…বাচ্চা ছেলেপুলে,, মাত্রই কলেজে পা রেখেছে হয়তো….ইভটিজিং বিষয়টা ঠিক করায়ত্ত করতে পারে নি হয়তো প্রেকটিস চলছে…কোনো মেয়ে সামনে দিয়ে যেতেই সবাই মিলে হেসে ওঠে,, এটা ওটা বলছে….আচ্ছা ছাদ থেকে যদি ওদের ওপর আমের আঁটি ফেলা হয় তাহলে কেমন হবে??আঁটি ফেলেই টুপ করে নিচে বসে যাবো….ছাদে কেউ নেই অথচ ঢিল ছুঁড়ছে,, বিষয়টায় ওরা কি ভয় পাবে??পেতেও পারে…আবার নাও পেতে পারে।।আমার থেকে সন্তোষজনক কোনো উত্তর না পেয়ে অনেকটা রেগে গিয়েই বলে উঠলো চিত্রা-
.
একঘন্টা যাবৎ শুধু আচারই খেয়ে চলেছিস।এতো আচার খাওয়ার মানে কি?কোনো সুখবর আছে নাকি??
.
হুম আছে তো।
.
আমার কথায় অবাক হলো চিত্রা।মুখটা অটোমেটিকলি “হা” হয়ে গেলো তার।নিজের বিস্ময় চাপা দেওয়ার কোনো চেষ্টা না করেই বলে উঠলো সে-
.
মানে কি সত্যি সত্যি??ওহ মাই গড!!সত্যি খুশির খবর আছে?সেটা বলার জন্যই আমাদের বাসায় এসেছিস বুঝি??
.
আমি স্বাভাবিক স্বরে বললাম-
.
হু। আছে….তুই মা হচ্ছিস এতোবড় খবরটা খুশির না হয়ে যায় কই??
.
আমার কথায় চিত্রার চোখ দুটি বেরিয়ে আসার উপক্রম।ওর মুখ দেখে মনে হচ্ছে এমন একটা অদ্ভুত কথা এ জীবনে দ্বিতীয় বার শুনে নি সে।।আমার দিকে চোখ বড় বড় করে বলে উঠলো সে-
.
কি বলছিস এসব?আমি মা হতে চলেছি মানে কি??
.
এতো মানে মানে করার তো কিছু নেই চিত্রা।।চুপিচুপি বিয়ে করে ফেলছিস তা যেহেতু জানতে পারি নি…চুপিচুপি কবে তেঁতুল খাওয়া শুরু করবি তাও নিশ্চয় জানতে পারবো না৷। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।।আমি বলি কি তুই যদি চুপিচুপি বাচ্চার জন্মদিনও পালন করে ফেলিস তবু আমি অবাক হবো না….
.
এসব কি বলছিস রোদু?চুপিচুপি বিয়ে মানে?
.
বুঝতে পারছিস না??(চিত্রা মাথা নাড়তেই) আমার সামনে এসে দাঁড়া বুঝিয়ে বলছি।
.
চিত্রা মনে একগাদা প্রশ্ন নিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো…সাথে সাথেই বাম হাতে ওর গালে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।।ও অবাক হয়ে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো…
.
মারলি কেন?
.
একটা মেরে শান্তি লাগছে না বুঝলি?আরেকটা মারতে ইচ্ছে করছে কিন্তু মারবো না।।বাম হাতে মারতে কষ্ট হয়…আচার খাওয়ার পর আবার মারবো…. ওয়েট কর!
.
মানে টা কি?মারছিস কেন সেটা তো বল??শুধু শুধু মারবি কেন আমায়??(অবাক হয়ে)
.
হারামি!আবার কারণ জিগ্যেস করিস??শিশির স্যারের সাথে যে তোর বিয়ে ঠিক সেটা আমায় বলিস নি কেন শুনি??উনাকে যে আগে থেকে চিনিস সেটাও তো বলিস নি আমায়…. কি ভেবেছিলি তোর বর নিয়ে ভেগে যাবো আমি?ডাফার…!
.
আ আ আসলে রোদু…
.
কিসের আসলে??হ্যা?কিসের আসলে??এক চড় মেরে সব আসলে নকলে বের করে ফেলবো বেয়াদব।।
.
আরে আমি তো আগে জানতামই না।তিন’মাস আগে,, তোদের বিয়ের পর পর যখন এনগেজমেন্ট হলো তখনই জানতে পেরেছি…
.
কিহহ?এনগেজমেন্টও হয়ে গেছে??আর আমি কিছুই জানি না??আমি এখনও বেঁচে আছি কেন??এই তোর বাপে তোদের বাড়িটা একতলা না করে সাত তলা করতে পারলো না?এখনই লাফ দিয়ে মরে যেতাম।। এ কথা শোনার পর বেঁচে থাকার কোনো মানেই হয় না।। এই তুই আবার সামনে এসে দাঁড়া তোকে আরেকটা চড় মারবো…এবং এই মুহূর্তেই মারবো…কাম..
.
সরি দোস্ত! সবকিছুই এতো হুট করে হয়ে গেছে…তোকে কিভাবে বলবো বুঝতেই পারি নি।
.
কিসের হুট কিসের ফুট??শিশির স্যারের সাথে রোজ তোমার দেখা হয়,,,উনাকে দেখে লাফালাফি ধাপাধাপি সব করো,, আমার হাত খামচে চামড়া তুলে দাও….আর আসল কথা বলতে গেলেই এনার্জি হাওয়া??পাগল মনে হয় আমায়??তোর সাথে ব্রেক আপ।।এই মুহূর্তে,,ব্রেকআপ।দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে….
.
আগে কাহিনীটা তো শোন প্লিজ!!তারপর নাহয় কান ধরে উঠবস করবো…প্লিজ সোনা..সরি তো..
.
আচ্ছা তোর সরি পেন্ডিং এ রইলো…এপ্রোব করবো কিনা সেটা পরে ভাববো…আগে এনগেজমেন্টের কাহিনীটা বল….A to Z সব বলবি….নয়তো খবর আছে….(চোখ রাঙিয়ে)
.
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারও রেলিং এ ঠেস দিয়ে দাঁড়ালো চিত্রা।।সামনের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো সে….ওর কথামতো কাহিনীটা এমন-
.
ফ্ল্যাসব্যাক*
.
সেদিন রোদদের গ্রাম থেকে ফেরার পর বাড়িতে ঢুকতেই….
.
#চলবে?

1 মন্তব্য

  1. সত্যিই আপনি অনেক সুন্দর গল্প লেখেন।খুববববব ভালো লেগেছে।থ্যাংকস।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে