তুমি যে আমার পর্ব-০৩

0
1467

#গল্পের_নাম_তুমি_যে_আমার
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:৩

দরজার ওপাশে আর কেউ নয় স্বয়ং ইলহাম দাড়িয়ে আছে তাও আবার বিয়ের বরের সাজে।রুমকি বেগম শুকনো ঢোক গিলে বললেন,

~তুমি এখানে কী করছো?বাসায় এখন মেহমান আছে পরে এসো।

বলেই সে দরজা বন্ধ করে দিতে নিবে তখনই ইলহাম দরজায় হাত দিয়ে বললো,

~মেহমানদের সাথে এ বাসার একমাত্র জামাইয়ের সাক্ষাৎ করিয়ে দিবেন না?

রুমকি বেগম বললেন,

~এসব কেমন কথা ল/জ্জা আছে তোমার যাও?

ইলহাম বললো,

~না নেই এখন দেখি সরেন তো ভিতরে ঢুকতে দিন।

বলেই সে রুমকি বেগমকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো ইলহামকে দেখে আবির,হাসান সাহেব রে/গে গেলেন।চোখ গরম করে তার দিকে তাকিয়ে রইলো দুজনই হেমন্তি অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে এই লোকটি এখানে কেন এসেছে?এসবই ভাবতে লাগলো ছেলের মা ইলহামকে দেখে বললেন,

~এই ছেলেটা কে?

আবির হাসার চেষ্টা করে বললো,

~কেউ না আন্টি হয়তো ভুলে চলে এসেছে।

ইলহাম সে কথা শুনে অট্টহাসিতে মেতে উঠে তার হাসি দেখে আবিরের রা/গ আরো বেড়ে যায় সে তে/ড়ে আসতে নিবে ইলহামের দিকে তখনই হাসান সাহেব আবিরের হাত ধরে বললেন,

~এখন এসব করে পরিস্থিতি খা/রা/প করো না।

আবির থেমে যায় বাবার দিকে অ/স/হা/য় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নিজেকে সামলে হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে দাড়িয়ে থাকে।ইলহাম পাত্রপক্ষের দিকে তাকিয়ে বললো,

~আপনারা যে মেয়েকে নিজ পুত্রবধু করতে চান সে যে বিবাহিতা তা কী জানেন?

ইলহামের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে তার পাণে তাকিয়ে রইলো হাসান সাহেব এবার আর নিজেকে দ/মি/য়ে রাখতে পারলেন না সে হু/কা/র করে বলে উঠলেন,

~এই ছেলে তুমি কী বলছো তা কী তুমি জানো?আমার মেয়ে বিবাহিতা কীভাবে?এসব মিথ্যা অভিযোগ যদি করেছো আমার থেকে বেশি খা/রা/প আর কেউ হবে না।

হেমন্তি স্তব্ধ হয়ে বসে আছে তার যে কী বলা উচিত তা সে ভুলে গেছে।ইলহাম ফোন বের করে সাইফুলকে ফোন করলো কিছুক্ষণ পরই সাইফুল এসে হাজির হাতে ফাইল নিয়ে।ইলহাম ফাইলটা হাতে নিয়ে হাসান সাহেবের সামনে ধরে বললো,

~প্লিজ একবার এই ফাইলটা দেখুন।

হাসান সাহেব ফাইলটা হাতে নিয়ে খুলে পড়তে শুরু করলেন পুরো ফাইল চেক করার পর তার হাত থেকে ফাইলটা পরে গেলো।আবির বাবার হাত ধরে বললো,

~কী হয়েছে বাবা?এই ফাইলে কী আছে?

ইলহাম বাঁকা হেসে আবিরকে বললো,

~শশুড়মশাই কিছু তো বলুন।

ছেলের বাবা ফাইলটা হাতে নিয়ে সব চেক করতেই রা/গী কন্ঠে বলে উঠলো,

~হাসান সাহেব আপনি বলেছিলেন আপনার মেয়ের আংটি বদলের দিন ছেলেপক্ষ বিয়ে ভে/ঙ্গে দিয়েছিলো কিন্তু এখানে তো দেখছি মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে আপনার মেয়ে নিজে সাইন করেছে।

আবির হেমন্তি আর রুমকি বেগম অবাক নয়নে ছেলের বাবার দিকে তাকালো হেমন্তি চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে বললো,

~মিস্টার ইলহাম এতো বড় মিথ্যা কথা বলতে আপনার রূহ
কাপঁলোনা।

ইলহাম বললো,

~এসব এমন কথা তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে আর এটাই সত্য।

হেমন্তি কিছু বলবে তার আগেই ছেলের মা বললেন,

~এসব নাটক আমাদের যাওয়ার পরে আপনারা করবেন প্লিজ।

বলেই তারা তিনজন বাসা থেকে চলে গেলো আবির তাদের বুঝানোর অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু সফল হলো না।ইলহাম হাসান সাহেবের কাছে গিয়ে বললো,

~আমার বউকে আমি নিয়ে যাচ্ছি বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে অনেক কিছু ঘটে যাবে।

হাসান সাহেব বললেন,

~সবকিছু নকল আমি জানি একদিন সব প্রমাণ করবো আমি।

ইলহাম তার কথার উত্তর না দিয়ে হেমন্তির হাত ধরে বললো,

~চলো।

হেমন্তি হাত ছাড়িয়ে বললো,

~আপনার সাথে কোথাও যাবো না আমি বাবা তুমি কিছু তো বলো।

হাসান সাহেব মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,

~আমি এখন কিছুই করতে পারবো না মা যদি এখন এই বে/য়া/দব/কে বাধা দেই তাহলে তোর ভাই আর আমাকে আবার জে/লে যেতে হবে।

হেমন্তি নিরব হয়ে গেলো বাবার কথা শুনে রুমকি বেগল হেমন্তিকে ঝাাপটে ধরে বললেন,

~আমার মেয়ে কোথাও যাবে না।

ইলহাম হেমন্তিকে তার কাছে টেনে নিয়ে বললো,

~আপনারা অবশ্যই নিজ মেয়েকে দেখতে যাবেন তার শশুড়বাড়িতে।

বলেই সে হেমন্তিকে নিয়ে বের হয়ে গেলো আবির ইলহামের দিকে তাকিয়ে বললো,

~তোকে আমি ছা/ড়/বো/না।

ইলহাম কিছু না বলে হেমন্তিকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গাড়ির সামনে এসে পরলো।গাড়ির দরজা খুলে হেমন্তিকে বসতে বললো ইলহাম।হেমন্তি ঠায় দাড়িয়ে রইলো ইলহাম তা দেখে বললো,

~হেমন্তি,আমি নিজেকে কঠোর প্রমাণ করতে চাই না তুমি যদি আমার সাথে না যাও তাহলে তোমার বাবা আর ভাইয়ের অবস্থা খা/রা/প হবে।

হেমন্তি কঠোর নয়নে ইলহামের দিকে তাকিয়ে বললো,

~আপনার এসব মিথ্যের ভুবন খুব তাড়াতাড়ি ভে/ঙ্গে চু/ড়/মা/র হয়ে যাবে।

বলেই সে গাড়িতে উঠে বসলো ইলহাম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ড্রাইভিং সীটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।ইশরাক সাহেবের কানে ছেলের সকল কার্যক্রম চলে এসেছে সে ছেলের ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। ইশরাক সাহেবের পিএ বললেন,

~স্যার এখন কী করতে হবে?

ইশরাক সাহেব বললেন,

~একমাত্র ছেলে আমার তাকে কিছু বলাও যায় না করাও যায় না ছেলেটা যে কেন বুঝলোনা এসব তো তার জন্যই করেছি আমি।

ইলহাম হেমন্তিকে নিজের কেনা ফ্যাল্টে চলে এসেছে লিফট দিয়ে উপরে উঠে ফ্যাল্টের কলিংবেল টি/প/তে/ই বয়স্ক একজন মহিলা দরজা খুলে দিলো।সেই মহিলাকে দেখে ইলহাম আলতো হেসে বললো,

~খালা,রান্না হয়েছে প্রচুর খিদে লেগেছে।

খালা হেসে দরজার সামনে থেকে সরে দাড়ালো হেমন্তি আর ইলহাম বাসায় প্রবেশ করলো।হেমন্তি চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো। ইলহাম হেমন্তিকে বললো,

~ফ্রেশ হয়ে আসো খাবার খাবে।

হেমন্তি বললো,

~আমার খিদে নেই ফুপি খাইয়ে দিয়েছিলো।

ইলহাম আর কিছু বললোনা নিজে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলো এরপর হেমন্তির কাছে এসে বললো,

~এখানেই থাকবে তুমি খালা তোমার সাথে থাকবে আমি তোমার প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসবো।

বলেই সে চলে যেতে নিবে তখনই হেমন্তি বললো,

~নিজ বউকে এভাবে অন্য জায়গায় রাখছেন কী উদ্দেশ্য আপনার?

ইলহাম আলতো হেসে বললো,

~বিয়ে হয়নি এটা তুমিও জানো আমিও জানি ওই পেপারস গুলো মিথ্যে ছিল।

বলেই ইলহাম রুম থেকে বের হয়ে গেলো হেমন্তি তার যাওয়ার পাণে তাকিয়ে রইলো।

চলবে

(বিদ্র:কেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে