সকালে গার্লফ্রেন্ডের ফোনে ঘুম ভাঙল। আজকের দিনটা যে কতটা ভালো যাবে তা ইতোমধ্যেই আমার বুঝা শেষ!
গার্লফ্রন্ডের কড়া হুকুম আমি যেন সকাল এগারোটার মধ্যে তার সাথে দেখা করি। হাতে আর বেশী সময় নেই। তাড়াতাড়ি রেডি হওয়া দরকার।
আজ দেখা করতে যাব গার্লফ্রেন্ডের বাসার পাশে একটা রেষ্টুরেন্টে। কত করে বললাম এইটা তো একদম তোমার বাসার সাথে, এখানে দেখা করলে তো তোমার পরিচিত যে কারো চোখে পড়ে যেতে পারো। কিন্তু না, তার এক কথা সে এখানেই দেখা করবে। এই শীতের মধ্যে সে রিকশার বাতাস সহ্য করতে পারবে না। সো, দূরে কোথাও যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব না।
আমি কাচের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলাম। আমার গার্লফ্রেন্ড দেখি একেবারে প্যাকেট হয়ে চলে এসেছে। পায়ে জুতা মোজা, পরনে জিন্স, গায়ে দুই তিনটা সোয়েটার, গলায় ওড়নার মতো কী একটা প্যাঁচানো, মাথায় কানটুপি, হাতে গ্লাবস। প্রথমে দেখে আমি চিনতেই পারি নাই। পাশেই একটা ফাঁকা টেবিলে বসতে যাচ্ছিলাম তখুনি সে পেছন ধরে টেনে এনে আমায় বসাল।
-অনিক, তুমি এখুনি আমাকে চিনো না, আর বিয়ের পর কী হবে?
-না, মানে! আসলে…
-অবশ্য বিয়ের কথা এখন বলে আর কী লাভ!
-লাভ নেই মানে?
-লাভ নেই মানে আমাদের বিয়েটা আর হচ্ছে না।
-বিয়ে হচ্ছে না?
-না, হচ্ছে না।
-জান, তোমার কী কারো সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে? প্লিজ বলো..আমি আজকেই মা’কে দিয়ে তোমাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাব।
-না, তেমন কিছু না।
-তাহলে, তুমি কী অন্য কোনো ছেলের প্রেমে পড়েছ?
-ধুরররর, কী সব বলছ!
-তাহলে! প্লিজ জান, আমি আর তোমার সাথে রাগারাগি করব না। গতকাল রাতের জন্য স্যরি। এই-যে আমি কান ধরছি, আর কক্ষনো এমন হবে না।
-হয়েছে বাবা হয়েছে। কিন্তু যত যাই বলো আমাদের বিয়ে আর হচ্ছে না।
-প্লিজ, বারবার এমনটা ক্যান বলছ? বিশ্বাস করো আমি এখন আর অন্য কোনো মেয়ের সাথে চ্যাট করি না। এই নাও আমার ফোন চ্যাক করো।
-ফোন চ্যাক করতে হবে না। আমি জানি।
-তাহলে? তাহলে..কী হয়েছে বাবা, বলবা তো আমাকে এটলিস্ট?
-কিছুই না…
-আমি বেকার বলে? আচ্ছা যাও আমি যেকোনো একটা প্রাইভেট জবে জয়েন করে নিব। গভমেন্ট জব হলে হবে নাহলে নাই।
-হুম..
-ধুররররর…প্লিজ বলবা আমায় হয়েছেটা কী?
-তুমি শান্ত হও, প্লিজ। এক্সাইটেড হইয়ো না।
-আমি শন্তই আছি। এই শীতে এক্সাইটেড হওয়া যাচ্ছে না।
-এক্সাক্টলি শীত!
-মানে?
-মানে, তুমি লাস্ট গোসল করছ কবে?
-কেনো, আজকে আসার আগে।
-এই সাতসকালে!
-সকাল কই? অলমোস্ট বারোটা বাজতো চলল এখন।
-হুম। আমি লাস্ট কবে গোসল করেছি জানো?
-কবে?
-তিনদিন আগে..
-তো?
-তো, বুঝতেই তো পারছ, তোমার আমার ঠিক যায় না। আসলে আমিই তোমার যোগ্য না। তুমি আমার থেকে বেটার কাউকে ডিজার্ভ করো। আমি গতকাল লাস্ট গোসল করলেও একটা কথা ছিল, আমাদের মধ্যে একটা মোটামুটি সামঞ্জস্য থাকত। এখন তো আমাদের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। আসলে এভাবে রিলেশনশীপ কন্টিনিউ করা যায় না, অনিক। তুমি তোমার মতো একজনকে খোঁজে নাও। যে সত্যি সত্যি তোমার যোগ্য। ইউ রিয়্যালি ডিজার্ভ বেটার দ্যান মী অনিক, রিয়্যালি ডিজার্ভ বেটার দ্যান মী।
ডিজার্ভিং বেটার || Rajib Debnath