ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_৬
Written by Avantika Anh
কিছু সময় পর মামনি এসে আমাকে হলুদ মাখাতে লাগলো ।
.
আমি- আমাকে দিচ্ছো কেনো ? তোমসর ছেলেকেই দেও
মামনি- আরে তোকে না মাখালে হয় ?
আমি- কেনো আমার মাখলে কি ? বিয়ে কি আমার হচ্ছে নাকি তোমার খাটাস ছেলের হচ্ছে ওকেই মাখাও ।
মামনি- হাহা আগে তোকে তো মাখাই
.
.
মামনি আমাকে হলুদ মাখিয়ে দিলো ।
.
আমি- এতো হলুদ কেনো ? আমাকে কি হলদি হলদি বানাবা ?
মামনি- হুম
.
.
মামনি চলে গেলো ।
.
আমি কিছু সময় পর হলুদ ধুয়ে ফেললাম ।
.
তারপর ছাদে গিয়ে বসলাম । চুপচাপ বসে ছিলাম মন খারাপ লাগছিলো তাই ।
.
হঠাৎ কে যেনো আমার চোখ বেঁধে কি জানি নাকের কাছে ধরলো । তারপর আর কিছু মনে নাই । যখন চোখ খুললো প্রায় রাত । আমার হাতে পায়ে আর মুখে হলুদ লাগানো কিন্তু কীভাবে কিছুই বুঝলাম না । কিন্তু আমি এইখানে কেমনে ? আমি শকড্ হয়ে আছি । এ্যা বাড়িতে ভুত আইলো কই থেইকা ?
.
ভয়ে দৌড় দিলাম বাইরে শুভ ভাইয়া ছিলো ।
আমি- ভাই বাড়িতে ভুত আছে
শুভ- জানি তো ভুত আছে ।
আমি- তোরেও কিছু করছে ?
শুভ- তোর থেকে বড় ভুত আর কে ? বান্দরের মতো তো দেখতে আরো হলুদ মাখে পেত্নি সাজছিস ?
আমি- না আমি না
শুভ- চুপ যা এখান থেকে আমি ফোনে কথা বলবো ।
আমি- আচ্ছা
.
.
চলে আসলাম । কিছুদিন ধরে শুভ ভাইয়ার ব্যবহার আমাকে এতো পরিমাণ কষ্ট দিচ্ছে যা আমি কান্না ছাড়া আর কোনোভাবে প্রকাশ করতে পারছি না ।
.
ফেসবুকে……
মেঘ বালক- কি ম্যাডাম কি খবর ?
আমি- ভালো আপনার?
মেঘ বালক- হুম ভালো মন খারাপ নাকি?
আমি- হুম
মেঘ বালক- কেনো?
আমি- আছে কোনো কারণ
মেঘ বালক- ম্যাডাম যা দেখা যায় তা সবসময় সত্যি না মনে রাখবেন।
আমি- আচ্ছা গুড নাইট
মেঘ বালক- ওকে
কালকের দিন হয়তো আপনার লাইফে ধামাকা আনবে দোয়া করি ।
আমি- ওকে বাই
মেঘ বালক- বাই
.
পরেরদিন সকাল থেকে হইচই বিয়ে বাড়ি বলে কথা ।
.
মামনি- আনহা রেডি হ
আমি- আমি এখনি কেনো?
মামনি- হইতে বলছি হ আর শুন পার্লারে যা
আমি- এ্যা ওখানে আমার কি কাজ ?
মামনি- যা বলছি কর আর শুন সেখান থেকে সোজা এই ঠিকানায় আসবি সবাই ওখানে যাবো সোজা আর এই লেহেঙ্গা টা পড়িস ( নীল রঙ্গের একটা লেহেঙ্গা )
আমি- এতো কাজ কেনো এইটায় ?
মামনি- পড়তে বলছি পড় এতো কথা কেনো ? শুন পার্লারওয়ালি কে বলা আছে বুঝলি ?
আমি- আচ্ছা আচ্ছা বুঝছি ।
.
.
পার্লারে….
সাজানো শেষে….
নিজেকে দেখে বলি এ কেমন সাজ ? আমি তো বউ না এতো কিনু ?
আমি- আপু আপনি একটু বেশিই সাজিয়ে ফেলছেন আমি তো বউ না
পার্লারওয়ালি- আজকাল এটাই ভালো । আমাকে এইভাবেই সাজাতে বলা হয়েছে ।
আমি- আচ্ছা
.
.
রেডি হয়ে ওই জায়গায় গেলাম । গিয়ে দেখি সবাই কেনো যেনো নিরব ।
আমি মামনির কাছে গেলাম ।
.
আমি- মামনি কি হইছে এখানে সব ?
মামনি- বউ পালাইছে
আমি- এ্যা কেনো ? কখন?
মামনি- জানি না এখন যে কি হবে আমাদের সম্মান । কে বিয়া করবে ?
.
খালু- আনহা তোর কাছে একটা জিনিস চাবো ?
আমি- বলো খালু
খালু- তুই শুভ কে বিয়ে করে ফেল ।
আমি- কিইইইই ?
খালু- আজ অব্দি কিছু চাই নাই । এটা কর মা ।
.
না ভেবেই রাজি হয়ে গেলাম । কারণ তারা আমার জন্য অনেক করেছে । শুভ ভাইয়াও কিছু বললো না । বিয়েটা হয়ে গেলো । সবাই খুশি । কিন্তু আমি চুপচাপ ।
.
.
বাসরে….
শুভ এলো….
আমিও নিশ্চুপ শুভও ।
শুভ- তোর এক্সাম কবে রে ?
আমি- ২ মাস পরে ।
শুভ- আজ তো ধকল গেলো কাল থেইকা পড়া শুরু বুঝলি ।
আমি- হুম
শুভ- বউ পা টিপো তো
আমি- কি ?
শুভ- হ পা টিপ
আমি- দুর হ
শুভ- হেহে কই যামু বিয়া তো হইয়া গেলো
আমি- তো কি
শুভ- হুর যা ঘুমা
আমি- হ গুড নাইট
শুভ- হ ভাগ
.
সকালে….
শুভ- ওই উঠো
আমি- কে রে ?
শুভ- ওই হারামি উঠে পড় নতুন বউ তুই মনে নাই ।
আমি- কে বউ কার বউ? ( ঘুমেই )
শুভ- আমার বউ
আমি- ও
.
মাথায় ঢুকলো কথাটা আর ঢুকতেই….
আমি- কয়টা বাজে ?
শুভ- বেশি না ভোর ৫ টা
আমি- ও নামায পড়ুম ওয়েট
শুভ- আমিও পড়বো ।
.
.
নামায শেষে….
আমি কাপড় নিয়া বাথরুমে যাচ্ছি ।
শুভ- কি হলো কই যাও ?
আমি- গোসলে
শুভ- ও
আমি- বিয়ে কইরা বাঁশ সকাল সকাল গোসল ।
শুভ- হেহে বুঝো ঠেলা
আমি- হাসবি না হাসলে পিডাম
শুভ- পিডাইলে পাপ হইবো পাপ মুই না তোর বর
আমি- হুরররর
শুভ- যা যা গোসল কর
.
গোসল শেষে গেলাম রান্না করতে…..
.
মামনি এসে….
মামনি- এ আমি কি দেখি ?
আমি- কি ?
মামনি- তুই রান্না করতেছিস ?
আমি- হুম বউ হইছি রান্না লাগবে না বুঝি
মামনি- তুই এমন সংসারি হয়ে যাবি জানলে আগেই বিয়া দিতাম ।
আমি- কি যে কও
.
দুপুরে…
আমি রুমে বসে গেম খেলছিলাম । কে জানি আইসা ফোন কেড়ে নিলো ।
আমি- কে ?
শুভ- সামনে পরীক্ষা আর গেম খেলা ।
আমি- ফোন দে
শুভ- যা পড়তে বসো
আমি- বসবো না কি করবি?
শুভ- মামনি কে বলে দিবো
আমি- আমিও কমু যে তুই আমারে মারছোস
শুভ- মিছাবাদী আচ্ছা আরেকটা উপায় আছে
আমি- কিতা ?
শুভ- এক থেকে দশ গুণবো এর মাঝে যদি পড়তে না যাও আমি তোমাকে কিস করবো ।
আমি- ( কি কইলো এইটা ) যাচ্ছি
.
.
জ্বলদি পড়তে বসলাম ।
শুভ হাসতে লাগলো ।
.
শুভ- ভালো করে পড়ো
আমি- আচ্ছা
.
চলবে…..