গল্প:-  বিয়ের বন্ধন পর্ব:-(০৪)

0
3020

গল্প:-  বিয়ের বন্ধন পর্ব:-(০৪)

লেখা_মোহাম্মদ_সৌরভ
!!!
বাসর ঘরে তসিবা যখন বলে ছিলো আমার বয়ফ্রেন্ডকে সান্তনা দেওয়ার জন্য কল করেছি। তখন ইচ্ছে করছিলো ঘার ধাক্কা দিয়ে বাসর ঘর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু নিজের বিবেক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাক আজকে তার উচিত জবাব দিতে পারছি। (পঞ্চাশ) ৫০ টাকা হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা তসিবার চেহারাটা যা লাগছেনা। মনে হচ্ছে ঈদের দিন শোক পালন করছে। একদম ঠিক কাজ করেছি। ম্যাডামকে নিয়ে অফিসে চলে এসেছি।

ম্যাডাম:- সৌরভ তোমাকে ধন্যবাদ আজকে যদি লেট হতো তাহলে অনেক বড় একটা ডিল মিসিং হয়ে যেতো।

আমি:- ম্যাডাম এইটা তো আমার কর্তব্য ছিলো। আমি আর ম্যাডাম দুজনের কক্ষে গিয়ে বসেছি। যাক এখন থেকে যদি ম্যাডামের একটু বকা কম খায়। তবে বেচারি তসিবার জন্য অনেকটা খারাপ লাগছে (পঞ্চাশ) ৫০ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আজ অনেক দিন পর অফিসে এসেছি একটু কাজে মনোযোগী হয়। হাতের কাজ শেষ করেছি এমনি ম্যাডাম এসে বলে,,,

ম্যাডাম:- সৌরভ তোমার একটু বের হতে হবে।

আমি:- ম্যাডাম কোথায়?

ম্যাডাম:- বি এম সি কলেজে যেতে হবে।

আমি:- সেখানে কেনো?

ম্যাডাম:- আমার মেয়ে রেনুকে একটু কলেজ থেকে বাড়ীতে নিয়ে যেতে হবে।

আমি:- কিন্তু মেম আপনার ড্রাইভারকে পাঠিয়ে দেন।

ম্যাডাম:- সৌরভ তোমার মনে নেই আমার গাড়ীটা তো নষ্ট হয়ে গেছে। আর গাড়ী এখন মীস্ত্রীর কাছে প্লিজ তুমি যাও।

আমি:- ঠিক আছে যাচ্ছি তবে আমি আজকে আর অফিসে আসতে পারবো না কিন্তু।

ম্যাডাম:- ঠিক আছে।

আমি:- আপনার মেয়ের একটা ছবি বা মোবাইল নাম্বার যদি দিতেন তাহলে চিন্তে শুবিদা হতো।

ম্যাডাম:- তোমার ছবি তুলে অলরেডি রেনুকে মেসেজ করে দিয়েছি। তুমি গেলে সে তোমাকে চিনে নিবে এখন যাও।

আমি:- ঠিক আছে। অফিস থেকে বেড়িয়ে সোজা বি এম সি কলেজের সামনে এসেছি। কলেজের গেইটে বাইক থামিয়ে দেখি তসিবা একটা ছেলের সাথে কথা বলতেছে। আরে তসিবা এই কলেজে পড়ে কাম সারছে। আমি হেমলেট না খুলে তসিবার কাহিনী গুলা দেখছি। মনে হচ্ছে এই ছেলেটা ইমরান হবে দেখতে তো মাশাল্লাহ যে কোনো মেয়ে প্রেমে পড়বে।

ইমরানের তুলনা আমি এতটা স্মার্ট না তবে ওকে দেখে মনে হচ্ছে না ও গরিব পরিবারের সন্তান। হেমলেট খুলে এদিক সেদিক তাকাচ্ছি কাওকে তো দেখছি না দূর ম্যাডামকে একটা কল করি। যখনি কল করতে যাবো তখনি একটা জিন্স আর গেঞ্জি পড়া মেয়ে আমার দিকে এগিয়ে এসে বলে,,,

আম্মুকে ফোন করতে হবে না। আমি রেনু আর আপনি সৌরভ তাইনা?

আমি:- হ্যা আমি সৌরভ চলেন আপনাকে নিয়ে যায়। রেনু বাইকে বসেছে তখনি আমার চোখে তসিবার চোখ পড়ে গেছে। আমি বাইক নিয়ে চলে এসেছি তসিবা আমাকে ডাক দিতে চাইছে কিন্তু আমি রেনুকে নিয়ে চলে এসেছি।

রেনু:- ভাইয়া আপনার বউ কেমন আছে?

আমি:- তুমি জানলে কি করে আমার বউ আছে?

রেনু:- আম্মু বলছে আপনি বিবাহিত। (দূর ভাবছি একটু ভাব লাগামু ম্যাডামের মেয়ের সাথে আর ম্যাডাম সব গন্ডগুল করে দিয়েছে) আচ্ছা আপনার বউয়ের কোনো ছবি আছে?

আমি:- কেনো?

রেনু:- একটু দেখবো।

আমি:- দেখা লাগবে না। (এমনিতেই গমর ভাতে পানি ডেলে দিছে আবার আসছে বউয়ের ছবি দেখতে) তোমার বাসায় এসে গেছি নামো। রেনু অনেক রিকুয়েস্ট করছে কিন্তু আমি দেখায়নি। রেনুকে রেখে আমি সোজা বাড়ীর দিকে চলে আসছি। বাড়ীর থেকে একটু দূরে দেখি তসিবা একটা ছেলের বাইক থেকে নামছে। তসিবা নামার পর ছেলেটা টাটা দিয়ে চলে গেছে আমি এগিয়ে বাড়ীর গেইটে গেছি। আমাকে দেখে তসিবা বলে,,,,

তসিবা:- আমার বয়ফ্রেন্ডকে দেখছেন? আপনার থেকে অনেক সুন্দর আর ওর বাইকটা দেখছেন?

আমি:- হ্যা দেখছি কলেজের নাম করে বয়ফ্রেন্ডের সাথে আড্ডা মারতে যাও। যদি আব্বু বা আম্মু দেখে না তাহলে কলজে যায়তে হবে না সোজা তোমার বাড়ী পাঠিয়ে দিবে।

তসিবা:- বলছে আপনাকে আমি কখন বয়ফ্রেন্ডের সাথে আড্ডা মারছি। আপনি আমাকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে ম্যাডামকে যে সাথে নিয়ে গেছেন সেইটা শ্বশুড় মসায় দেখছে।

আমি:- মানে কি করে দেখছে?

তসিবা:- আমি বলে দিয়েছি আর ঐ সময় শ্বশুড় মসায় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। আমাকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করছে তখন আমি বলে দিয়েছি।

আমি:- কাম সারছে আজকে তো আমার বারোটা বাজবে। তোমার কি কোনো জ্ঞান বুদ্ধি নাই নাকী?

তসিবা:- আপনার কোনো বুদ্ধি আছে?

আমি:- তোমার থেকে বেশি আছে। দেখি সরো আজকে রাতে বাসায় থাকা যাবে না।

তসিবা:- যদি বুদ্ধি থাকতো তাহলে একা একটা মেয়েকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে চলে যেতেন না। ভাগ্যটা ভালো তাই আব্বা এসে আমাকে কলেজে দিয়ে গেছিলো। আর আপনাকে একটা কথা বলতে বলছে,,,,

(দুজনে ঝগড়া করতে করতে বাড়ীর ভীতরে ঢুকে আমাদের রুমে চলে আসছি। আম্মু কিছু একটা বলছে কোনো উত্তর দেয়নি।)

আমি:- কি কথা?

তসিবা:- আজ রাতে আব্বার বসের ৫০ বছর বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে ওনার বাড়ীতে পার্টি দিয়েছে। বলছে আমাকে আর শ্বাশুমাকে সাথে নিয়ে পার্টিতে যেতেন।

আমি:- তোমাকে নিয়ে পার্টিতে হি হি হা হা মজা পাইলাম। আমার কাজ আছে আমি যেতে পারবো না।

তসিবা:- বলছে পার্টিতে সুন্দর করে সেজে গুজে পরি পাটি হয়ে যেতেন। যদি না যান তাহলে পিটের উপর লাঠি পড়বে।

আমি:- তবেরে দেখাচ্ছি তোমাকে বলে তসিবাকে ধরতে যাবো তখন তসিবা দৌরে চলে গেছে। তসিবা অনেক চঞ্চল টাইপের মেয়ে হাসি মসকারা একটু বেশি করে। আমি ফ্রেস হতে চলে গেছি কিছুক্ষণ পর ফ্রেস হয়ে রুমে এসেছি। তসিবাকে কোথায় দেখছি না রুম থেকে বেড়িয়ে কিচেন রুমে গিয়ে দেখি আম্মুর সাথে রান্নার কাজে সাহায্য করছে। আমাকে দেখে আম্মা বলে,,,,

আম্মা:- সৌরভ তুই কিন্তু কোথায় বের হবি না। আজকে তোর আব্বার বসের বাড়ীতে পার্টি আছে।

আমি:- আচ্ছা তাহলে তোমরা রেডি হয়ে নাও আমি রানার সাথে দেখা করে আসি। বাসা থেকে বেড়িয়ে রানাকে কল করেছি রানা ব্রিজে এসেছে। দুজনে কিছুক্ষণ গল্প করে দুজনে যার যার বাড়ীতে চলে আসলাম। আমি মন খারাপ করে বাড়ীতে এসেছি এমনি তসিবা বলে,,,,,,

তসিবা:- মনে হচ্ছে বউ মরে গেছে এমন ভাব করে রাখছেন চেহারাটার।

আমি:- মরে গেলে এমন করে রাখতাম না সবার সাথে পার্টি দিতাম।

তসিবা:- আমি মরে যায় আর বেচে থাকি ৯ মাস ২৬ দিন পর তো চলে যাবো।

আমি:- যাও তাতে আমার কি? দেখি সরো আমার মাথা ব্যথা করছে। তসিবাকে যারি মেরে রুমে এসে শুয়ে পড়েছি। ঘন্টা খানেক রেস্ট নিলাম ঘুমের বান করে শুয়ে আছি। এমনি তসিবা এসে ওর হাতের চুড়ি গুলার আওয়াজ করতেছে কানে কাছে। আমি শুয়ে আছি তসিবা হাত সরাতে যাবে তখনি আমি ঘুরে শুয়েছি। আর তসিবা আমার বুকের উপর আর আমার ঠোট তসিবার গালে। দুজনে কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেলাম। তসিবা নিজেকে ছাড়িয়ে সোজা রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। আমি উঠে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে বাহিরে গিয়ে দেখি আম্মা আর তসিবা একদম রেডি।

আম্মা:- সৌরভ তোর আব্বা অনেক বার কল করেছে আমরা বের হয়ছি কিনা। চল এমনিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে আমাদের।

আমি:- হ্যা চলেন, তসিবা নীল কালার চুড়িদার সাথে মেচিং চুড়ি, লম্বা চুল, একদম কল্পনা নীল পরীকে হার মানিয়েছে। বার বার তসিবার দিকে চোখ যাচ্ছে আমার আর তসিবা মুচকি মুচকি হাসতেছে। তসিবা আমার সাথে সামনে বসেছে আর আম্মা পেছনে আমি ড্রাইবিং করতেছি। জ্যামের কারনে ১ ঘন্টা পর সাহেদ আঙ্কেলের বাড়ীতে এসেছি। বাড়ীর সামনে দেখি আব্বা দাঁড়িয়ে আছে আমাদের দেখে এগিয়ে এসেছে।

আব্বা:- সৌরভ আমি তোর আম্মাকে নিয়ে যাই। তুই তসিবাকে সাথে নিয়ে আয় কেমন।

আমি:- ঠিক আছে! গাড়ীটা পার্কিং করে আমি নেমে বাড়ীর ভীতরে হাটা দিয়েছি তখনি তসিবা এসে আমার ডান হাতটা জড়িয়ে ধরেছে তসিবার এমন কান্ড দেখে কিছুটা না আমি অনেকটা অবাক হয়ে গেছি। আমি তসিবার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে যাবো তখনি তসিবা বলে,,,

তসিবা:- প্লিজ হাতটা ছাড়িয়ে নিবেন না।

আমি:- কেনো?

তসিবা:- দেখেন না সব কাপল এমন ভাবে ভীতরে যাচ্ছে। তাই আমরাও এমন ভাবে যাবো প্লিজ না করবেন না।

আমি:- ঠিক আছে চলো বলে দুজনে ভীতরে ঢুকছি তখনি একজন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,,

আরে সৌরভ তুমি এখানে আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। কত দিন পর তোমাকে এখানে দেখলাম। তখনি তসিবা বলে,,,,

তসিবা:- আরে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরছেন এবার ছাড়েন। (যখন আমাকে ছাড়ছে আমি দেখে তো বিশ্বাস করতে পারছি না।)

আমি:- শ্যালো তুমি এখানে তাও আবার আমাকে জড়িয়ে ধরেছো?

শ্যালো:- হ্যা ধরেছি সেই যে গেলে আজ ২ বছর পর দেখা হলো তা কেমন আছো?
(আমি ভালো বলতে যাবো তখনি তসিবা বলে,,,)

তসিবা:- হ্যা অনেক ভালো আছে এখন ছাড়েন। এই আপনি চলেন তো শ্বাশুমা ডাকছে ঐ দিকে যেতে।

শ্যালো:- সৌরভ তুমি বিয়ে করে ফেলছো?

আমি:- হ্যা। তসিবা তুমি যাও আমি আসতেছি। তসিবা আমাকে ছাড়তে চাইনি কিন্তু কি বুঝে ছেড়ে কিছুটা পথ গেছে আমি তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাত করে দেখি তসিবা মাথা ঘুরে নিছে পড়ে যেতেছে। আমি দৌরে গিয়ে তসিবাকে ধরতে যাবো ঠিক ঐ সময় আমার আগে ইমরান এসে তসিবাকে ধরে নিয়েছে। আমি দৌর থামিয়ে অন্য দিকে চলে যেতেছি তখনি,,,,,
To be Continue,,,,,

প্রিয় পাঠক আপনারা যদি আমাদের (গল্প পোকা ডট কম ) ওয়েব সাইটের অ্যাপ্লিকেশনটি এখনো ডাউনলোড না করে থাকেন তাহলে নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে এখনি গল্প পোকা মোবাইল অ্যাপসটি ডাউনলোড করুন => ??????

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.golpopoka.android

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে