গল্পঃঅটুট_বন্ধন(বালিকা বধূ)পর্বঃ৯

0
2568

গল্পঃঅটুট_বন্ধন(বালিকা বধূ)পর্বঃ৯
#লেখকঃShamil_Yasar_Ongkur

আবির অবাক চোখে নীলার দিকে তাকিয়ে বলল সরি বলতে হবে না যাও ক্লাসে যাও বলে আবির চলে গেল।

নীলা: শালা চান্দু নিজে থেকে সরি বললাম এখন ভাব দেখাচ্ছে। তোর ভাব আমি বের করবো …..

নীলা ক্লাসে আসতেই মুসকান ওর কাছে গিয়ে বলল । আমার ভাইয়ের কাছে থেকে সব সময় ১০০ হাত দুরে থাকবি। আর যেনো আমি তোকে ভাইয়ার পেছন পেছন ঘোরাঘুরি করতে না দেখি।

নীলা মুখ ভেঙ্গিয়ে বলল ঙঙঙ তোর ঐ চিকন আলি লম্বু বুদ্ধিজীবী ভাইয়ের পেছন পেছন ঘুরতে আমার বয়েই গেছে।যা ভাগ এখান থেকে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



মুসকান: কেনো ভার্সিটি কি বাবার।

নীলা: না তোর বাবার হয়েছে এখন যা ।

মুসকান: সময় থাকতে ভালো হ তা নাহলে পরে গিয়ে পস্তাতে হবে‌।

নীলা: ভাই এক বুদ্ধিজীবী আর বোন হয়েছে তার চামচে। খবরদার আমাকে জ্ঞান দিতে আসবি না । তোর জ্ঞান তোর কাছে রাখ ‌নীলা তার সিটে গিয়ে বসে।

আবিরের মনটা খুব খারাপ তাই সে মহাখালী ফ্লাইওভারের উপর দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে তারা ভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আবিরের মন খারাপ হলেই সে এখানে চলে আসে।

রাত বেশী হওয়ায় তেমন একটা গাড়ি নেই মাঝে মাঝে দুই একটা CNG শুধু আসা যাওয়া করছে।

হঠাৎ একটা সিএনজি খুব দ্রুত গতিতে আবিরের পাশ দিয়ে চলে গেল। কিন্তু কিছু দূর গিয়ে সিএনজি টা থেমে গেল।

আবির সেদিকে একবার তাকালো। কিছু ছেলে পেলে সিএনজি কে আটকিয়েছে । আবির সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে ছোট্ট নীলার কথা ভাবতে লাগলো।

নীলারা যেদিন আবির দের বাসা থেকে যায়। সেদিন নীলা কি কান্না সে আবির কে ছাড়া কোথাও যাবেনা।

সেদিন সাইফ আঙ্কেল জোর করে ঢাকায় নিয়ে আসেন।তারো কিছু করার ছিল না। তার ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছিল।তাই বাধ্য হয়েই তাদের বগুড়া ছেড়ে ঢাকায় আসতে হয়েছিল।

হঠাৎ একটা মেয়ের কন্ঠ ভেসে আসলো আবিরের কানে। মেয়েটি চিৎকার করে করে বলছে খবরদার আমাকে টার্স করবি না আমার বাবা কিন্তু এসপি । তোদের কিন্তু জেলের ভাত খাওয়াবো। কেনো জানি মেয়েটার কন্ঠ খুব চেনা চেনা লাগছে।

আবির হেলমেট পরে বাইক নিয়ে এগিয়ে গেল। আবির একটু কাছে যেতেই দেখল তিনটা ছেলে নীলাকে ঘিরে রেখেছে। একটা ছেলের হাতে একটা ছুরি ছিল।

আবির তাদের সামনে গিয়ে বাইক থামায়। একজন আবিরের দিকে এগিয়ে এসে বলল কি চাই।

আবির হেলমেট খুলে বলল ভাইয়া এখানে আশেপাশে কোথাও কি হাসপাতাল আছে..?

হুম সামনে যান

আবির: ধন্যবাদ ভাইয়া বলে বাইক চালু করে।

এদিকে নীলা আবির কে দেখে যেন প্রাণ ফিরে পেল। এখন নিশ্চয়ই আবির তাকে এই জানোয়ারদের হাত থেকে বাঁচাবে ‌। কিন্তু আবির তাকে ভুল প্রমাণিত করে বাইক নিয়ে চলে গেল।

নীলা কিছু খন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে স্যার স‍্যার বলে চিৎকার করতে লাগলো।

আবির একটু সামনে এগিয়ে আবার ঘুরে এলো।

কি হয়েছে আবার আসলেন যে

আবির: না মানে হাসপাতালে ঠিকানা তো বললেন না.?

একজন ছেলে নীলার হাত ধরে ছিল ঐ বলল দেখছিস না কাজ করতেছি ডিস্টার্ব করছিস কেন।

আবির বাইক স্টেন্ড করে হেলমেট খুলে হেলমেট দিয়ে এক বারি মেরে বলল ছাড় ওর হাত ছাড়।

এরপর মারামারি শুরু হয়ে গেল। আবির হেলমেট দিয়ে ওদের আচ্ছা মতো ধোলাই করতেছে।আর নীলা পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা নিচ্ছে।

একটু পর তারা দৌড়ে পালালো।

আবির নীলার কাছে গিয়ে তার গালে ঠাস করে একটা থাপ্পর দিল।

নীলা গালে হাত দিয়ে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আবির: তোমার বাসা না মিরপুরে এতো রাতে তুমি এখানে কি করো‌।আজ যদি আমি না থাকতাম তাহলে কি হতো হুম। বেয়াদব মেয়ে রাত বিরাতে ঘুরতে বেরিয়েছে। আচ্ছা নিজেকে কি ভাবো তুমি… ননসেন্স কোথাকার।

নীলা বাচ্চাদের মতো করে বলল আমি তো ফুপ্পির বাসায় যাচ্ছিলাম।

আবির: এতো রাতে তোমার একা একা ফুপ্পির বাসায় যেতে হবে ‌।তাও আবার সিএনজি তে করে। তোমার বাবাকে বলতে পারনি।আজ যদি ঐ জানোয়ার গুলো তোমার কোন ক্ষতি করতো তাহলে কি হতো হুম… বল চুপ করে আছ কেন….?

(রাতে একা একা চলাচলের সময় মেয়েরা একটু চোখ কান খোলা রাখুন বিপদ যেকোনো সময় আপনার সামনে আসতে পারে ‌)

নীলা: আমি কি জানতাম নাকি এমন হবে।

আবির:তা কেনো জানবে তুমি তো শুধু জানো স‍্যার দের কিভাবে অপমান করতে হয়। এখন মূর্তির মত দাঁড়িয়ে না থেকে বাইকে উঠে পড়ো।

নীলা বাইকে উঠতেই আবির বাইক স্টাট দেয়।বাইক চলতে থাকে তার আপন গতিতে।

নীলা আবিরের কাঁধে হাত রাখবে কি রাখবে না সেটা ভেবে পাচ্ছেনা। আবির যদি অন্য কিছু মনে করে। নীলা আস্তে করে আবিরের কাঁধে হাত রাখল।

আবির কিছু বলল না শুধু লুকিং গ্লাসে একবার নীলার দিকে তাকালো। আবছা আলোয় নীলাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। বাতাসে তার খোলা চুল গুলো উড়ে বারবার তার মুখের পরছিল আর নীলা হাত দিয়ে আবার সেটা সরাচ্ছিল।

নীলার খুব শীত করছে (ঠান্ডা লাগছে) নীলা কি করবে ভেবে না পেয়ে আবির কে পেছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

আবির সাথে সাথে ব্রেক করে।কি হলো তোমার সমস্যা কি । এমন জড়িয়ে ধরলে কেনো। তুমি দেখি বসতে দিলে শুতে চাও। কাঁধে হাত রাখতে দিছি এর মানে এই না যে জড়িয়ে ধরবে।

নীলা বাচ্চাদের মত করে বলল আমার কি দোষ আমার যে ভিসন শীত করছে।

আবির:শীত তো করবেই এমন মশারীর মতো পাতলা জামা পরতে কে বলেছে তোমাকে।

আমি এখানে শীতে মরতেছি কিসের কি ব্লেজার টা খুলে আমাকে দিবে তা না এই বুদ্ধিজীবী আবার জ্ঞান দিতে শুরু করেছে নীলা মনে মনে বলল।

বেয়াদব মেয়ে সেদিন এতো গুলো কথা বললাম তাও তোমার লজ্জা হলোনা। আচ্ছা তুমি শুশরাবে কবে আমায় একটু বলবে।

নীলা: সেটা আমি নিজেও জানি না।

আবির তার পরনের ব্লেজার খুলে নীলাকে দেয়। আচ্ছা তোমার চুল গুলো যখন এতো সমস্যা করতেছে বেঁধে রাখতে পারছো না।

নীলা: কাঁটা টা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে কিভাবে বাঁধব ।

আবির: তাহলে খোঁপা করে রাখ।

নীলা: পারিনা তো।

আবির: তুমি আসলে মেয়ে নামে কলঙ্ক নামো বাইক থেকে।

আর আপনি পুরুষ নামে ঢেরশ । পেছনে এতো সুন্দর একটা মেয়েকে বসিয়ে ভদ্র ছেলের মত কোন প্রকার ব্রেক ছাড়াই বাইক চালাচ্ছে। কেন একটু ঘন ঘন ব্রেক কশলে কি এমন ক্ষতি হবে। আবুল একটা নীলা মনে মনে বললো ‌।

আবির: কি হলো হা করে দাঁড়িয়ে আছ কেন চুল খোঁপা করে দিয়েছি এখন উঠ।

নীলা অবাক হয়ে বলল আপনি চুলো খোঁপা করতে যানেন।

আবির: হুম মা যখন রান্না ঘরে কাজ করে আমি মার চুল খোঁপা করে দি।

আবিরের মুখে মায়ের কথা শুনে নীলার চোখে পানি চলে আসে। ইশ্ আজ আমার মা যদি বেঁচে থাকতো কথাটা ভেবে নীলা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

নীলা বাইকে উঠে আবার আবির কে জড়িয়ে ধরে।

আবির: এই তোমরা সমস্যা কি আবার জড়িয়ে ধরলে কেনো।

নীলা: আপনি চুপচাপ বাইক চালানতো। এতো বেশি কথা বলেন কেন আমার শীত করছে তাই ধরেছি। তাছাড়া আপনাকে জড়িয়ে ধরার আমার কোন ইচ্ছে নেই।

আবির তো নীলার ধমক শুনে চুপ হয়ে যায়। এরপর নীলাকে বলে একজন মেয়ে একজন বেগানা ছেলেকে এভাবে ধরতে পারেনা।ইসলামে এসব নিষিদ্ধ ‌।

নীলা: জীবন বাঁচান ফরজ কাজ । আমি আমার জীবন বাঁচাছি সো আপনি চুপ থাকেন।

আবির তো নীলাকে আচ্ছা মত বকা দিতে থাকে। কিন্তু নীলা মুগ্ধ হয়ে আবিরের কথা শুনছে। কেন জানি আজ আবিরের সব কথায় তার মধুর মত লাগছে।

নীলা এই নীলা ঘুমিয়ে পড়েছ নাকি । তোমার বাসা এসে গেছে।

নীলা বাইক থেকে নেমে আবিরকে বলল ধন্যবাদ স‍্যার আমাকে বাঁচানোর জন্য। আপনি না থাকলে আজ আমার যে কি হতো।

আবির: ধন্যবাদ দেওয়া কিছু নেই । আর আমি তোমাকে বাঁচানি। আল্লাহ তোমাকে বাঁচিয়েছেন আমি শুধু একটা মাধ্যম ছিলাম মাত্র।তাই যাও নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় কর।

নীলা আবিরের ব্লেজার না দিয়ে দৌড়ে বাসর মধ্যে চলে গেল।

নীলা সারা রাত ঘুমোতে পারিনি ‌।সে যে আবিরের প্রেমে পড়ে গেছে….

চলবে….

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে