ক্রাশের সাথে বিয়ে পার্ট ০২

0
4372

ক্রাশের সাথে বিয়ে পার্ট ০২

janntul_ferdous

রাগিনীর আব্বুর গুলি করার কথাটা শুনেই তনয়ার আব্বু-আম্মু আবারও অজ্ঞান হয়ে গেলো।

রাগিনী-বাবা গো এইটা কী বলছো তোমার একমাত্র জামাই সে।

রাগিনীর আব্বু-তুই আমার মান সম্মান সব ধূলোয় মিশিয়ে দিলি।

রাগিনীর আম্মু-আরে থাক ধূলোতে পানি ডেলে দিলে কাদা হয়ে যাইবো কিন্তু আমার মেয়ে কাউকে পছন্দ করে বিয়ে করছে তাতে এত মান সম্মান দেখে কী হবে।

রনি-হুম আম্মু পানি না হয় আমি ডালবো তারপরেও আপুর বিয়েটা মেনে নাও।

রোদ-পুরো পাগলের ফ্যামিলি।

রনি-না জিজু পাগল হলে তো পাবনা থাকতাম,আমার বোনেরও বিয়ে দিতাম না।তুমি জানো আমার আপুর যার সাথে বিয়ে ঠিক হইছিলো সে তো আপুকে দেখেই অজ্ঞান হয়ে গেছিলো।

রোদ-কেনো?

রনি-ওই যে আমার আপু কত্ত কিউট।

রোদ-তারপর শুনি।

রনি-কেনো জানি ছেলেটার জ্ঞান আসতেই বললো সে বিয়ে করবে না।তারপর বাবা বললো গুলি করবে, তারপর বিয়েতে রাজি হলো।ছেলেটা রাজি হচ্ছিলো না কারণ আপু জুসে ভুল করে মরিচের গুড়া দিয়ে দিছিলো।তা খেয়ে ঝালে উনি অজ্ঞান হয়ে গেছিলো।
পরে তো ছেলেটা রাজি হইছিলো কিন্তু আপু কেনো জানি পালিয়ে গেলো।আপু তো রাজি ছিলো।

রাগিনী-আরে রাতে ফেসবুকে আমার একমাত্র ক্রাশকে দেখছিলাম আবেগে পালাইছি।

রনি-এই রে তুমিই তো আপুর ক্রাশ।

রাগিনী-হুমম দেখলি ক্রাশ আমার বর হয়ে গেছে।

রোদ-আচ্ছা তুমি যদি জুসে মরিচের গুড়া দিয়ে দাও তাহলে তো মনে হয় না রান্না করতে পারো।

রনি-ভাইয়া তুমি জানো না আপু কত ভালো রান্না করে।একবার বাবা রান্না খেয়ে বাথরুমে ছিলো সারারাত।আরেকবার তো রান্না খেয়ে আম্মু এত ভালো খেলো যে অজ্ঞান হয়ে গেলো।পরে ডাক্তার এসে আম্মুর জ্ঞান আনলো।

;

এটা শুনে রোদের হেঁচকি উঠে গেলো।মনে মনে ভাবছিলো রোদ এই মেয়ের আর কত গুন জানি আছে।

রাগিনী-ধরো ক্রাশ বর পানি খাও।

পানি খেতে খেতে আড়চোখে রোদ রাগিনীর দিকে তাকাচ্ছিলো।

রাগিনী-ক্রাশ আমাকে ভালো লাগে নাই??তোমাকে আমি অনেক রান্না করে খাওয়াবো।শুধু তোমাকে না শাশুড়ি আন্টি আর শ্বশুড় আঙ্কেলকেও খাওয়াবো।

রোদের আব্বু-মা রে তোর রান্না করা লাগবো না।তোর গুনাগুন শুনেই আমার পেট ভরে গেছে।

রোদ-হুম না জেনে বিয়ে করিয়েছো তোমার ছেলেকে।এখন মজা বুজো।

রোদের আব্বু-আমি তো আমার ছেলের জন্য বউ মা না মেয়ে নিবো।

রাগিনী-শ্বশুড় আঙ্কেল তাহলে আমি বাড়ির মেয়ে আর ওইটা ঘর জামাই তাই না।

রোদের আব্বু-একদম ঠিক বলছোত মা।আচ্ছা এখন তো যেতে হবে।রোদের আম্মু তো অপেক্ষা করছে তার বউ মা দেখতে।

রাগিনীর আম্মু-হুম মা যা ভালো থাকিস।আর সবার খেয়াল রাখবি।

রনি-আপু সাবধানে যাবি।গিয়ে কল দিবি।

;

হঠাৎ করেই চোখের পানি গড়িয়ে পরলো রাগিনীর।চোখের পানি মুছে দিলো রাগিনীর আব্বু।তারপর জড়িয়ে ধরলো।
বাবা রা হয়তো এরকম-ই।বাইরের টা শক্ত তবে ভিতর টা নরম।তাই আজ নিজের মেয়ের বিদায় দিতে গিয়েও পারছে না।

রাগিনীর আব্বু-আরে রাগিনীর আম্মু কাঁদছো কেনো।মেয়ে বমার শ্বশুড়বাড়ি যাচ্ছে।হাসি মুখে বিদায় দাও।

(রনি এসে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো)

রনি-আপু তুই না থাকলে আমাকে চকলেট কিনে দিবে কে।আমার পিছনে লাগবে কে।

রাগিনী-একদম কাঁদিস না।আমি তো যাবো বাড়িতে।

রনি-হুম

(রাগিনী চোখের পানি মুছে দিয়ে আম্মুর কাছে গেলো)

রাগিনীর আম্মু-সবার কথা শুনবি। দুষ্টমি করবি না একদম।

(রাগিনী মাথা নাড়লো।রাগিনীর কপালে একটা চুমু দিলো ওর আম্মু)

কিছুক্ষন পর সবার থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে গেলো রাগিনী।গাড়িতে উঠে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে
গেলো রাগিনী।গাড়িতে ঘুমের ঘোরে পড়ে যেতে নিলেই রোদ ধরলো রাগিনীকে।জড়িয়ে রেখে বুকে ঘুমাতে দিলো রাগিনীকে।রাগিনীও বাচ্চাদের মত গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে গেলো।

রোদ-পাগলি মেয়ে একটা।আল্লাহ জানে এ কোনো পাগলীকে বিয়ে করলাম আমি।

গাড়ি এসে একটা বাড়ির সামনে থামলো।কিন্তু রাগিনী এখনো ঘুমাচ্ছে।বাধ্য হয়ে কোলে তুলে নিলো রোদ রাগিনীকে।

রোদের আব্বু-ওকে নিয়ে নিশাতের রুমে যা।সারাদিনের পরিশ্রমের পর একটু ঘুমাক।

রোদ-হুমম

রুমে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিলো রাগিনীকে।রাগিনী ঘুমোচ্ছে।

নিশাত-ভাইয়া ভাবি কিন্তু খুব কিউট।

রোদ-আস্তে আস্তে দেইখো।বাঁশও খাইতে পারো।পুরো ফ্যামিলিটাই পাগল।

নিশাত-হিহি।

রোদ-তুই হাসছিস?

নিশাত-পাগল মানুষ করে পেলবা।

রোদ-দেখছিস না এক পাগলী আমাকে চিনে না,জানে না শুধু ফেবু ক্রাশ বলে বিয়ে করে নিলো।

নিশাত-আচ্ছা ও ঘুমাক।আমরা বাইরে যায়।

রোদ আর নিশাত বাইরে চলো গেলো।রাগিনীর ঘুম ভাঙ্গতেই নিশাত সহ আরো কয়েকজন রুমে আসলো।

রাগিনী-আমি কোথায়?তোমরা কারা?

নিশাত-আমি তোমার ননদীনি।তোমার ক্রাশের বোন।

রাগিনী-আচ্ছা।

নিশাত-যাও ফ্রেশ হও।সাজাতে হবে তো তোমাকে।

রাগিনী-আচ্ছা।

রাগিনী ফ্রেশ হয়ে আসতেই নিশাত সহ সবাই মিলে সাজাতে বসলো রাগিনীকে।

চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে